What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ডেঙ্গু এখন ‘সারা বছরের’ রোগ (1 Viewer)

Son Goku

Expert Member
Joined
Nov 20, 2018
Threads
125
Messages
1,627
Credits
73,289
Billed Cap
Rose
Lipstick
Red Apple
Laptop Computer
Euro Banknote
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাড়তে থাকা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ডিসেম্বরে এসেও শেষ হয়নি। এখনও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন ডেঙ্গু রোগী।

এ বছর ডেঙ্গুর জীবাণু বাহক এইডিস মশার বিস্তার ঘটেছে দেশের প্রায় সব এলাকায়। এ কারণে এখন থেকে ডেঙ্গু সারাবছরই কমবেশি থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আগে এইডিস মশার বিচরণ শহর এলাকাতেই বেশি ছিল। এখন গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ায় আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে বিপদ এড়াতে দেশজুড়ে সারা বছর মশক নিধন কার্যক্রম চালানোর তাগিদ দিয়েছেন তারা ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার হিসেবে, বছরের শুরু থেকে ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৯২৩ জন। মশাবাহিত এ রোগে এখন পর্যন্ত ১৩৩ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা- দুটোই বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০২ সালে সবচেয়ে বেশি ৬ হাজার ২৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর ২০০০ সালে সবচেয়ে বেশি ৯৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ডেঙ্গুর জীবানুবাহী মশা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় এ বছর শীতের শুরুতেও ডেঙ্গু আছে।
“এ বছর বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ছিল এইডিস মশার প্রজননের জন্য খুবই সহায়ক। এটা শুধু বাংলাদেশে না, আশপাশের দেশগুলোতেও একই পরিস্থিতি ছিল। মশা যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতে এখন থেকে মোটামুটি সারাবছরই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।”
সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছিল। এ সময় ১৫ হাজার ১২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, মারা যান ২৩৩ জন।
২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমে আসে। সে সময় মোট আক্রান্ত হন ৬ হাজার ৬৫৬ জন; মারা যান ৯ জন।
২০১৫ সাল থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ আবার বাড়তে থাকে। ২০১৫ থেকে ২০১৮- এই চার বছরে ২২ হাজার ১৩৯ জন আক্রান্তের পাশপাশি ৫৪ জনের মৃত্যু হয়।
২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ১৪৮ জনের ডেঙ্গুর চিকিৎসা নেওয়ার তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে সরকারের খাতায়। আর ২০১৯ সালে এর দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।

এ বছর মে মাস থেকেই ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়, জুন ও জুলাইয়ে ক্রমশ বেড়েছে অগাস্টে তা মারাত্মক রূপ নেয়।
তখন সমালোচনার মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক তৎপরতা নেয়। দুই বেলা ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়।
সেই কার্যক্রম এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে মন্তব্য করে কবিরুল বাশার বলেন, “ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষকে সচেতন করার কাজটি আর সেভাবে হচ্ছে না। কিন্তু চেষ্টাটা ধরে রাখতে হবে।
“এইডিস ও কিউলেক্স মশা নিধনের জন্য আলাদা আলাদা কর্মসূচি রাখতে হবে। স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষাসহ সব বিভাগের মধ্যে সমন্বিত একটি উদ্যোগ দরকার, যা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।”
যখন কোনো রোগ নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়িয়ে নিয়মিত সাধারণ রোগে পরিণত হয়, তখন তাকে বলা হয় ‘এনডেমিক’। বাংলাদেশে ডেঙ্গু এখন ‘এনডেমিক’ হয়ে গেছে বলে জানান সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইডিসিসিআরের পরিচালক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরের মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এটা ‘বাড়তি সমস্যা’ হয়ে থাকবে।
“আমরা বারবার বলেছি ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে এইডিস অ্যালবোপিক্টাস। এ মশার নেচারটা এজিপ্টির চেয়ে ভিন্ন। ডাবের খোসা, গাছের খোড়ল- এরকম প্রাকৃতিক কন্টেইনার তারা বংশ বৃদ্ধির জন্য বেশি পছন্দ করে। নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যতক্ষণ না ওই পর্যায়ে যাবে, এইডিস অ্যালবোপিক্টাস নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের জন্য কঠিন হবে।”
সেব্রিনা ফ্লোরার মতে, দেশজুড়ে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা হওয়া উচিৎ বেশি।
“শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দুর্বল। এগুলো আমাদের চ্যালেঞ্জের জায়গা। এটা রিয়েলি চ্যালেঞ্জিং, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আগামী সিজন আসার আগেই আমরা যত বেশি কাজ করত পারব, তত ভালো। বছর জুড়ে কার্যক্রমে ঢিলে দেওয়ার কোনো উপায় নেই।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত তিন বছরের তথ্যে দেখা গেছে, ডেঙ্গু কমবেশি সারাবছরই ছিল। তবে এ ধারা ক্রমাগত বাড়ছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ৯২, ফেব্রুয়ারিতে ৫৮, মার্চে ৩৬, এপ্রিলে ৭৩, মে মাসে ১৩৪, জুনে ২৬৭, জুলাইয়ে ২৪৬, অগাস্টে ৩৪৬, সেপ্টেম্বরে ৪৩০, অক্টোবরে ৫১২, নভেম্বরে ৪০৯ এবং ডিসেম্বরে ১২৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে গেছেন চিকিৎসা নিতে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ২৬, ফেব্রুয়ারিতে ৭, মার্চে ১৯, এপ্রিলে ২৯, মে মাসে ৫২, জুনে ২৯৫, জুলাইয়ে ৯৪৬, অগাস্টে ১ হাজার ৭৯৬, সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার ৮৭, অক্টোবরে ২ হাজার ৪০৬, নভেম্বরে ১ হাজার ১৯২ এবং ডিসেম্বরে ২৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এ রোগে।
আর এ বছরে জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে গেছেন। এরপর ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, অগাস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬, সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ৮৫৬, অক্টোবরে ৮ হাজার ১৪৩ এবং নভেম্বরে ৪ হাজার ১১ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডিসেম্বরের প্রথম ১৩দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৬ জন।
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর এ বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে বিভিন্ন আবাসিক, বাণিজ্যিক ও নির্মাণাধীন বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান চালানো হয়।
এইডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় বাড়ি মালিকদের জরিমানাও করা হয়। মসজিদ, স্কুলে চালানো হয় ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচার। তবে এসব কার্যক্রম এখন প্রায় বন্ধ।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন দাবি করেন, মাঝখানে কিছুদিন শিথিল থাকলেও এইডিস মশা নির্মূলে আবার কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা।
“আমরা এইডিস নিয়ন্ত্রণে কাজ যে করিনি এমন না। তবে কিউলেক্স মশাটা নিয়ন্ত্রণে কিছুটা জোর দিয়েছিলাম। কিউলেক্স যতটা নিয়ন্ত্রণ আনার তা হয়েছে। এখন আবার এইডিসের ওপর প্রায়োরিটি দিচ্ছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের ১০ জন করে কর্মী মশক নিয়ন্ত্রণ এবং উৎসস্থল ধ্বংসে কাজ করছে।”
ডেঙ্গুর বিষয়টি আর ‘হালকা করে’ দেখছেন না জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে পাওয়া না গেলেও ডেঙ্গু এখন ‘অফ সিজনে’ পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্য ‘বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা’ নিয়ে কাজ করছে সরকার। “আমরা একটা কর্মপরিকল্পনা করে এগোনোর চেষ্টা করছি। ডেঙ্গুর জন্য দায়ী মশার বাহক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। এজন্য ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা শহরকে এই পরিকল্পনার অংশ করেছি।”
এখন মশা মারার চেয়ের মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের দিকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “মশার ওষুধ মশা মারার সঙ্গে অন্যান্য উপকারী কীটপতঙ্গেরও ক্ষতি করে। এ কারণে মশা মারতে শুধু কীটনাশক ব্যবহার করলেই হবে না। আমরা ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা নিয়ন্ত্রণে বেশি জোর দিচ্ছি।”


ডেঙ্গু নিয়ে আপনাদের কি মতামত?
 
Aedis masar bongsobriddhi rukhte have.masar satru aemon prani culture Korte habe.pasapasi protisedhak abiskare gurutwo dite habe.
 
ডেঙ্গু খুব সিরিয়াস রোগ। আমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top