What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected “ডেলিভারী ম্যান” (2 Viewers)

dukhopakhi

Global Moderator
Staff member
Global Mod
Joined
Mar 3, 2018
Threads
102
Messages
12,090
Credits
112,008
Calculator
Mosque
Calculator
LittleRed Car
LittleRed Car
LittleRed Car
“ডেলিভারী ম্যান”

লেখকঃ আসিফ রহমান জয়




দৃশ্য-১


আজ প্রচন্ড গরম পড়েছে। রাশেদ চট করে ঘড়ি দেখলো। দুপুর বারোটা পেরিয়ে গেছে দশ মিনিট হলো। এখনো আরো তিনটা ডেলিভারী বাকী আছে। রাশেদের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। ডেলিভারীর বড় কালো ব্যাগ পিঠে নিয়ে সে দর দর করে ঘামছে। এক গ্লাস পানি খেতে পারলে খুব ভালো হতো। পিছনের রাস্তায় একটা টংগের দোকান ছিলো কিন্তু চলমান এই লকডাউনে দোকানের ঝাঁপ ফেলা। আর অভিজাত এই এলাকায় যতোদূর চোখ যায় রাস্তার পাশে ছোট-বড় কোনো দোকানও নেই যে বাইকটা রেখে একটু চা-পানি খাবে। সে পানি খাবার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে পথচলতি একজনকে ঠিকানা জিজ্ঞেস করলো
-ভাই, ২৩/এ বাড়ীটা এই রাস্তার কোন মাথায়?




দৃশ্য-২


পাপিয়ার আজ সকাল থেকে করার কিছু নেই। টানা লকডাউনে ছেলেদের স্কুল বন্ধ রয়েছে। মাহতাব সকালেই অফিসের কাজে বেরিয়ে গেছে, ফিরতে বিকাল হবে। আজ বিকালে তাদের বাসার ছাঁদে একটা ঘরোয়া পার্টি আছে। খুব সিলেক্টিভ কিছু গেস্ট আসবে। পার্টির জন্য অবশ্য তার নিজের কিছুই করতে হবে না। ফ্রি-ডিপ ফ্রিজ ভর্তি বাজার আছে। এই বাড়িতে একজন কুক, একজন মালি ছাড়াও দুইজন পার্মানেন্ট কাজের বুয়া আছে। খাবার-দাবারের আয়োজন সব তারাই করবে।
তার দায়িত্ব হলো, ছেলে দু’টোকে রেডি করা আর পার্টির জন্য নিজে রেডি হওয়া। সে তাই করছে। আলমিরা থেকে একগাদা শাড়ী নামিয়ে আয়নার সামনে বসে আছে। শাড়ি বাছাই শেষ হলেই সে চুলের সেটিং ঠিক করতে বসবে। করোনার জন্য এখন আর পার্লারে যাওয়া যাচ্ছে না।
গতপরশু সে অনলাইনে নতুন একটা ফেয়ারনেস ক্রীমের অর্ডার দিয়েছে। আজ সকাল সকালই ক্রীম চলে আসার কথা। এই পেজের অন্যান্য প্রোডাক্টগুলোর রিভিউ বেশ ভালো। এরা সরাসরি কোরিয়া থেকে ইম্পোর্ট করে। পাপিয়া অবশ্য দেশ-বিদেশের অনেক ক্রীমই ট্রাই করেছে। তবে এতে তার গায়ের চাঁপা কালো রঙের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
পাপিয়া ঘড়ি দেখলো। দুপুর বারোটা পেরিয়ে গেছে। অপেক্ষা করতে করতে তার চরম বিরক্তি ধরে গেছে। সে রেগে গিয়ে ফোন দিলো। ঝাঁঝের সাথে বললো-
-কি ব্যাপার? আপনাদের প্রোডাক্ট তো এখনো এলো না?




দৃশ্য-৩


রাশেদ বাড়ির গেটের সামনে পৌছে গেছে। ওরেব্বাবা... এ যে বিশাল বাড়ি! বাড়ির গেট থেকে সদর দরজা পর্যন্ত হেঁটে যেতেই তো মিনিট খানেক লেগে যাবে মনে হয়!
রাশেদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে ভাবলো-
-কিছু কিছু মানুষের কেন এতো টাকা থাকবে? আর কিছু কিছু মানুষ কেন সকাল থেকে শুধু একটা পাউরুটি আর একটা কলা খেয়ে থাকবে?
সে দারোয়ানকে বললো-
-ভাই, এই ঠিকানা থেকে একটা অর্ডার ছিলো। আমি পার্সেল নিয়ে এসেছি, ডেলিভারী করতে হবে।
দারোয়ান অবহেলা ভরে বললো-ভিতরে ফোন করেন। ভিতর থেকে পারমিশন পাইলে গেট খুলুম।




দৃশ্য-৪


রাশেদ ফোন করলো। অনেকবার রিং হবার পর ওপাশ থেকে পাপিয়া ফোন ধরলো।
-স্লামালিকুম ম্যাডাম। আমি “গ্লো-স্কিন” কোম্পানির পক্ষ থেকে এসেছি। আপনার একটা ডেলিভারীর অর্ডার ছিলো। আমি পার্সেলটা নিয়ে এসেছি।
পাপিয়া রাগের সাথে বললো-
-আপনার তো আরো আগে আসার কথা। আপনাদের কি কোনো সময়জ্ঞান আছে?
-সরি ম্যাডাম। আপনি ঠিকই বলেছেন। আমার আসলেই দেরী হয়ে গেছে।
পাপিয়ার রাগ একটু কমলো-
-আচ্ছা। আমি গেটে ফোন করে জানাচ্ছি।


চলবে...
 
মনে হচ্ছে ভাবছেন আর লিখছেন
ভাবনা আমার নয় মামা, যিনি লিখেছেন তিনিই ভাবছেন 🙂। থ্রেড পরিদর্শনের জন্য অনেক ধন্যবাদ
 
শুরুটা ভালো, বাকিটুকুর অপেক্ষায় আছি...

বাকিটুকু আগামীকাল পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
থ্রেড পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ মামা
 
বাকিটুকু আগামীকাল পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
থ্রেড পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ মামা

অপেক্ষায় রইলাম...
অনেক ধন্যবাদ মামা...
 
দৃশ্য-৫




রাশেদ বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। পিঠের কালো ভারী ব্যাগটা সে রিশেপশনে রেখে এসেছে। ওখানে দারোয়ান তাকে দুই দফা স্যানিটাইজ করেছে। হাতে-পায়ে, জুতার তলায় স্প্রে করেছে। সে মাস্ক খুলে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলো, তাকে মাস্ক পরিয়েছে।

মূল গেট থেকে বাড়ির সদর দরজা পর্যন্ত রাস্তাটা আসলেই বেশ দূর। রাস্তার দু-পাশে চমৎকার সব ফুলের গাছ। রাশেদ হাটতে হাটতে পকেটের রুমাল দিয়ে ঘাম মুছলো। মাথায় চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে-

-এতো বিশাল জায়গা নিয়ে এই বাড়ি করার কি মানে? কেন একজন মানুষের এতো টাকা থাকবে আর কেন সে সকাল থেকে শুধু একটা পাউরুটি আর একটা কলা খেয়ে আছে?

রাশেদ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল টিপলো। মাস্ক আবার গলায় ঝুলিয়েছে। আরেকটু ঝুলে থাক। সে দরজার কী-হোলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দরজা খুলতে শুরু করলে সে মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলবে। ততোক্ষন একটু শ্বাস নেয়া যাক।


দরজার মাথার কাছে কোণাকুনী ভাবে বসানো সিসি ক্যামেরা তার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে, সেটা সে টের পেলো না।





দৃশ্য-৬



দরজার ওপাশে পাপিয়া স্তব্ধ হয়ে সিসিটিভির স্ক্রীণের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে। সে একাধারে বিস্মিত এবং স্তম্ভিত! এ সে কি দেখছে! এ সে কাকে দেখছে!

এ যে রাশেদ! তার রাশেদ! তার প্রথম প্রেম। প্রথম প্রেম নাকি ভোলা যায় না! সে তো ভুলেই ছিলো। কিন্তু সেই প্রথম প্রেম এভাবে তার সামনে ডেলিভারী ম্যান হিসাবে দাঁড়াবে...

পাপিয়া ঠিকমতো চিন্তা করতে পারছে না...

দরজার ওপাশে রাশেদ গরমে ঘামছে। দরজার এপাশে পাপিয়া দুই টন এসির ভেতরে থেকেও ঘামছে।

কি করবে সে?

সে দরজা ছেড়ে টলতে টলতে সোফায় যেয়ে বসলো। সে কীভাবে রাশেদের সামনে যাবে?

রাশেদকে এই মুখ কীভাবে দেখাবে? তার কালো মুখ?

রাশেদের বাবা আর মামা নিজেরাই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলো। রাশেদের বাবা কি কি বলেছিলেন তা পাপিয়ার এখনো স্পষ্ট মনে আছে। সে এখনো মুখস্থ বলতে পারবে। রাশেদের বাবা বলেছিলেন-

-মেয়ে তো ভাই দেখলাম। গায়ের রঙ্গটা একটু চাঁপা... এই আর কি। হে হে... তা...আর আমার ছেলেকে দেখেন। ছেলে আমার মাশাল্লাহ রাজপুত্র। নিজের ছেলে বলে বলছি না কিন্তু এমন সুদর্শন, সুপুরুষ আপনি অত্র অঞ্চলে আর পাবেন না। তা... ওর গায়ের টকটকে ফর্সা রংগের সামনে আপনার মেয়ের গায়ের রং কিন্তু একেবারেই যায় না। তারওপর ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে। বুঝলেন কিনা? পাস করলেই এমপি সাহেব কে ধরে সরকারী চাকরী নিশ্চিত! ঠিক আছে... বুঝলাম ছেলে মেয়ে দুইজনেই দুজনকে ভালোবাসে। কিন্তু আমরা যারা মুরুব্বি তাদের তো আর এসব ভালোবাসাবাসি দেখলে হবে না। আরে বাবা, ছেলেকে ছোট থেকে বড় করতে তো আর খরচা কম হয়নি... বুঝলেন তো ভাই। দিন...পান দিন। পান খেয়ে আসুন দেনা-পাওনার কথা বলি।

ফর্সা ধবধবে সাদা ছেলের সাথে, কালো মেয়ের বিয়ের যে দেনা পাওনার কথা রাশেদের বাবা সেদিন বলেছিলেন, তা পূরণ করার সামর্থ্য পাপিয়ার পরিবারের ছিলো না। লজ্জায়-অপমানে পাপিয়ার সহজ-সরল গরীব বাবা সেদিন অনেক রাত পর্যন্ত নিজের রুমের দরজা আটকে ছিলেন। কালো মেয়ের বাবা হওয়া হয়তো অনেক কষ্টের ব্যাপার! অনেকদিন পর্যন্ত পাপিয়ার দিকে চোখ তুলে কথা বলেননি। একদিন পাপিয়ার মায়ের হাতে ফেয়ার এন্ড লাভলীর ক্রিম দিয়ে পাঠিয়েছিলেন।

আশে-পাশের পাড়া-প্রতিবেশী সবাই তখন জানতো রাশেদ আর পাপিয়ার প্রেমের কথা। কেউ তো আর রাশেদের বাবার লোভের কথা জানতো না।

বছর দু’য়েক পর হুট করে পাপিয়ার বিয়ে হয়ে যায় বিদেশ ফেরত কোটিপতি মাহতাবের সাথে। মাহতাব তাদের মহল্লাতেই থাকতো, কোনাকুনি বাসা, বয়সে দশ বছরের বড়। পাপিয়া তখন জানতো না, পরে শুনেছে যে, মাহতাব নাকি তাকে সেই ছোট বেলা থেকেই পছন্দ করতো।

দরজার ওপাশে রাশেদ অধর্য্য হয়ে আবার কলিং বেলে চাপ দিলো।


দরজার এপাশে পাপিয়া চমকে উঠলো। নাহ, এভাবে সে রাশেদের সামনে যেতে পারবে না। কিছুতেই না।





দৃশ্য-৭




দরজা খুললো কাজের পরিচারিকা রেশমা। রেশমা এই বাড়ির পার্মানেন্ট কাজের লোক।

রাশেদ পার্সেলের ডেলিভারী চালান আর ক্যাশ মেমো ঠিকমতো রেশমাকে বুঝিয়ে দিলো। ভাবলো

-হায়রে, এরা কেন যে এতো টাকা খরচ করে ফর্সা হতে চায়। এই যে সে এতো ফর্সা, তাতে বিশেষ কি লাভ হয়েছে?

ছোটবেলা থেকেই সবার মুখে শুনে আসছে, সে নাকি দেখতে সুন্দর, সুদর্শন। নিয়তির কি পরিহাস।! ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় রাশেদের বাবা হঠাৎ করেই মারা যায়। তার সৎ চাচাদের কুট-কাচালী ও অসৎ জমিবন্টনের কারনে রাশেদেদের থাকার জন্য একতলা বাড়িটা ছাড়া আর কিছু রইলো না। ভাগ্যের চক্রে, পড়াশোনা শেষ না করেই সে ঢাকায় চলে আসে। অনেক চেষ্টা-চরিত্র করে একটা গার্মেন্টস ফ্যাকটরীতে এডমিন অফিসার হিসাবে মোটামুটি একটা চাকরী করছিলো। কিন্তু করোনার দীর্ঘ লক ডাউনে তাদের গার্মেন্টসটা হঠাৎ’ই লোক ছাটাই শুরু করে। বিনা নোটিশে চলে যাওয়া চাকরীর ধাক্কায় প্রথম চার-পাচ মাসেই তার জমানো সব টাকা শেষ হয়ে যায়। নিজের মোটর সাইকেল থাকায়, কিছুদিন পাঠাও চালিয়েছিলো। কিন্তু এই লক ডাউনে পাঠাও এর যাত্রী পাওয়াটাও কঠিন হয়ে দাঁড়ালো। তাই এখন পাঠাও এর পাশাপাশি এই ডেলিভারী ম্যানের চাকরীটা হুট করে সামনে চলে আসায় সে না করতে পারেনি। তাছাড়া, মুখে মাস্ক থাকায় কেউ নিশ্চয়ই তাকে চিনে রাখবে না।

রেশমা সব বুঝে নিয়ে রাশেদকে বললো-

-আপনি একটু বসেন। আপা বলছে আপনাকে চা খেয়ে যেতে।

রাশেদ মিষ্টি করে হাসলো। এ ধরনের অফার সাধারনত কেউ করে না। ভদ্রমহিলা যেভাবে তাকে ফোনে বকা দিলো তাতে তাঁর কাছ থেকে এরকম ব্যবহার আশা করা যায় না।


সে বললো-গলাটা একেবারে শুকিয়ে গেছে। চা না দিয়ে একটু শরবত দেয়া যাবে?

চলবে...
 
খুব ভালো, সুন্দর বিল্ডআপ...
ধন্যবাদ মামা। অবশিষ্ট অংশ আগামীকাল পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ
 
দৃশ্য-৮



পাপিয়া নিজের হাতে শরবত বানাতে বসেছে। উপকরন তেমন কিছুই নেই। লেবু, চিনি আর ঠান্ডা পানির শরবত। সবসময় বাসায় বিদেশী প্যাকেট জুসের বন্যা বয়ে যায়। কিছু না থাকলেও অন্তত এপেল জুস বা ম্যাঙ্গো জুস থাকে। আর আজ এমনকি সিভিটাও নেই। সামান্য লেবু আর চিনি দিয়ে সে তার প্রিয় মানুষটাকে কীভাবে শরবত বানিয়ে দেবে?

রেশমা অবাক হয়ে পাপিয়াকে শরবত বানাতে দেখছে। পাপিয়া ক্রমাগত চোখ মুখে যাচ্ছে।






দৃশ্য-৯



রাশেদ ড্রইং রুমে বসে আছে। বিশাল ড্রইং রুম। দুই মাথায় দুটো এসি চলছে। সুবিশাল তিন-সেট সোফা, বাহারী কালারের সো-পিস। দেয়ালে টাংগানো নামী-দামী বিশাল সব পেন্টিং। চারপাশে প্রাচুর্যের ছড়াছড়ি। একপাশের দেয়াল জুড়ে ফ্যামিলি এলবাম, আর অনেক মেডেল ঝোলানো আছে। রাশেদ ফ্যামিলি পোট্রেটের দিকে তাকিয়ে জমে গেলো! তাঁর শিড়দাড়া বেয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে এলো!

পাপিয়া! তার প্রথম প্রেম পাপিয়া! মাই গড!

একটা ছবিতে পাপিয়া আর মাহতাব! আরেকটা ছবিতে পাপিয়া-মাহতাব আর ছোট দুই ফুটফুটে ছেলে। এটা পাপিয়াদের বাসা!

এই জন্য কি ফোনে গলাটা একটু চেনা চেনা লাগছিলো?

পাপিয়া কি তাকে দেখেছে? চিনতে পেরেছে? অনেকটা সময় সে মাস্ক ছাড়া ছিলো।

এই জন্যই কি তাকে বসিয়ে শরবত খাওয়াতে চায়?

তারপর নিশ্চয়ই গুছিয়ে অপমান করবে। সেদিনের সুদর্শন, সুপুরুষ রাশেদ আজ ভাগ্যের পরিহাসে ডেলিভারী ম্যান হয়ে পাপিয়ার বাসায় এসেছে। অপমান তো সে করতেই পারে। অপমান করার পুরো অধিকার তাঁর আছে। সেদিন রাশেদ লজ্জায় মাথা নীচু করে ছিলো। কিন্তু বাবার মুখের ওপর কোন কথা বলেনি। পরেও আর পাপিয়ার সাথে যোগাযোগ করে নি। অপমান তো করাই উচিত।

রাশেদ উঠে পড়লো। তাঁর খুব দ্রুত চলে যেতে হবে। সে কিছুতেই পাপিয়ার মুখোমুখি হতে পারবে না।





দৃশ্য-১০


পাপিয়া ড্রইং রুমে বসে আছে। সামনে ঠান্ডা শরবতের জগ আর গ্লাস। পাপিয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।






দৃশ্য-১১



পরদিন।

ক্রিং ক্রিং...

মোবাইল বাজছে। আনসেভ করা, অপরিচিত ফোন নাম্বার।

রাশেদ ভালো করে দেখলো, নাহ, এটা পাপিয়ার নাম্বার না, ধরা যায়।

ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বললো-

-তুমি শরবতটা খেয়ে গেলেই পারতে। আমি অনেক শখ করে বানিয়েছিলাম।

রাশেদ চমকে গেলো। পাপিয়া অন্য নাম্বার থেকে ফোন করেছে।

-এটা তো তোমার নাম্বার না।

-আমি জানি, আমার নাম্বার থেকে ফোন করলে তুমি ফোন ধরবে না। তাই অন্য নাম্বার থেকে...

-পাপিয়া আমি খুব লজ্জিত। আমি চলে এসেছি... আমি...

-সেদিন তুমি লজ্জিত ছিলে, আজ যে আমি লজ্জিত।

অনেকক্ষণ দু’জনেই চুপ থাকলো। মাঝে মাঝে নিস্তব্ধতা বড় বেশী শব্দ করে।

কিছুক্ষণ পর রাশেদ বললো

-একটা কথা বলি-

-বলো।

-তুমি আর আমার নাম্বারে ফোন করো না। আমার খুব লজ্জা লাগবে।

পাপিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

-আচ্ছা, আর ফোন দেবো না।

-আর...

-আর?

-তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে। তুমি ঠিক জায়গাতেই আছো। তোমার ফর্সা হবার জন্য কোনো ক্রিম ব্যবহার করার দরকার নেই। তোমার মন ধবধবে ফর্সা আর মন ফর্সা করার কোন ক্রিম পাওয়া গেলে আমি নিজেই সেটা মাখতাম।


কিন্তু মন ফর্সা করার জন্য কোন ক্রিম এখনো বের হয়নি।

সমাপ্ত...
 

Users who are viewing this thread

Back
Top