What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review ভারতীয় সিরিজ পর্যালোচনা (চতুর্থ পর্ব): Delhi Crime- নির্ভয়া কেস ও বর্বর সমাজের আলাপন (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
lvGC6wX.jpg


২৭ নভেম্বর ২০১৯। ডিউটি শেষে নিজ স্কুটারে ঘরে ফেরার কথা ডাক্তার প্রিয়াংকা রেড্ডির। হায়দ্রাবাদের টোল প্লাজার সামনে রাখা সেই স্কুটারের চাকা পূর্ব পরিকল্পনানুসারে পাংচার করে রাখে এক দুর্বৃত্ত, পরে তার সাথে যোগ দেয় আরও তিনজন। রাত ৯:৪০ এ প্রিয়াংকাকে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। এরপর তাঁর দেহে আগুন ধরিয়ে দেয় চার ধর্ষক। সবশেষে পোড়া দেহটাকে প্লাজা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ফেলে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যায় তারা।

গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এই রোমহর্ষক ঘটনা আবারও কাঁপিয়েছে গোটা ভারতকে, স্তম্ভিত করেছে মানবতাকে। পুনরায় প্রমাণ করেছে 'নারী প্রতি সহিংসতা এই উপমহাদেশে শুধু জায়েজই নয়, ঐতিহ্যও।'

২০১২ সালে এমনই 'নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডে' হতচকিত হয়েছিল গোটা ভারত। সেই ঘটনা এবং তৎকালীন তদন্তের ঘাত প্রতিঘাতকে উপজীব্য করেই নির্মিত হয়েছে সাত পর্বের সিরিজ 'দিল্লি ক্রাইম'। এ বছরের ২২ মার্চ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় এটি।

কাহিনি সংক্ষেপ

দিল্লি- ভারতের রাজধানী। যদিও এখন সেই তকমার চাইতে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে 'দূষণের শহর' পরিচয়। কিন্তু এর বাইরে আরেক রূপও উন্মোচিত হয়েছিল এর- ২০১২ সালে।

১৬ ডিসেম্বরের রাত। হালকা ঠাণ্ডার চাদর বুনে ফেলেছে প্রকৃতি। কিন্তু ব্যস্ত-চঞ্চল শহুরে জীবন তো থেমে থাকবার নয়। তেমনিই দিল্লির তরুণী জ্যোতি সিং পাণ্ডে ও তাঁর বন্ধু অইন্দ্র প্রতাপ সেদিন সিনেমা হল থেকে ফিরছিলেন। বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও মুনিরকা থেকে দ্বারকাগামী কোন অটোরিক্সাই জুটলো না। শেষে এক অটোরিক্সা চালক তাদের সামনের বাসস্ট্যান্ডে ছেড়ে দেবার প্রস্তাব দিলেন। রাত ৯:২৩ এ বাস মিলেও গেলো। নিশ্চিন্ত মনেই সদ্য দেখা 'লাইফ অফ পাই' নিয়ে আলাপ জমে উঠলো জ্যোতি আর অইন্দ্রর মধ্যে। তখন তারা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি প্রাণঘাতী এক ঘটনা অপেক্ষা করছে তাদের সম্মুখে।

বাসে ড্রাইভারসহ ছয়জন লোক ছিল। একসময় তারা বাসের সব বাতি নিভিয়ে দরজা আটকে দেয়। তখনই বিষয়টি নজরে আসে অইন্দ্রের। লোকগুলোর সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে সে। ক্রমে এর মাত্রা বাড়তে থেকে এবং শেষমেশ তারা লোহার রড দিয়ে প্রহার করতে থাকে। অইন্দ্রকে বাঁচাতে জ্যোতি এগিয়ে আসলে ছয় দুর্বৃত্ত তাঁকে টেনে নিয়ে যায় বাসের পেছনে। এরপর ঘণ্টা খানেক চলন্ত বাসে গণ ধর্ষণের শিকার হন জ্যোতি। তবে এতেই শেষ নয়। পাশবিক যৌন লালসা মেটাবার পরও থামেনি পশুরা। জ্যোতির যোনিতে বড় লোহার রড উপর্যুপরি ঢুকিয়ে অভ্যন্তরীণ নাড়ি, অন্ত্র ছিঁড়ে ফেলে তারা। এমনকি এদের একজন হাত ঢুকিয়ে টেনে বের করে আনে সেগুলো।

WyQZkqq.jpg


সিরিজে ধর্ষণ ও নির্যাতনের সরাসরি দৃশ্য না থাকলেও বিবরণই ছিল রোমহর্ষক; Photo Source : IMDb

অবস্থা শোচনীয় টের পেয়ে তারা জ্যোতি ও অইন্দ্রের মালামাল ও কাপড় খুলে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। বাস ঘুরিয়ে চাপা দেবার চেষ্টাও করে তারা। অইন্দ্রের খানিকটা চেতনা থাকায় জ্যোতিকে নিয়ে সরে যায় সে। রাত ১১ টায় স্থানীয়রা রক্তাক্ত ও নগ্ন অবস্থায় দুজনকে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে নিকটবর্তী সাফদারজং হাসপাতালে নেয়া হয় তাদের এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন বিভাগ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের ডেপুটি চিফ ছায়া শর্মা তৎক্ষণাৎ অপরাধের বিশ্লেষণ করেন এবং তদন্তের নির্দেশ দেন। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের সনাক্ত ও আটকের ছকও কষে ফেলেন সেখানেই।

টানা পাঁচদিনের চেষ্টায় বাসচালক রাম সিং, তার ভাই মুকেশ সিং, জিম প্রশিক্ষক বিনয় শর্মা, ফলবিক্রেতা পাওয়ান গুপ্তা, অক্ষয় ঠাকুর এবং নাম গোপনকৃত এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এরই মধ্যে গোটা দেশের জনতা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। মিছিল, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে মামলা দ্রুত তদন্তের চাপ দিতে থাকে। এদিকে অইন্দ্র অপরাধীদের সনাক্ত করে এবং যথাযথ সমর্থন জানায় এই তদন্তে। তবে জ্যোতির কাছে এসবের কিছুই খুব একটা অর্থবহ ছিলনা। জীবন লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে ২৯ ডিসেম্বর মারা যায় সে। আর গোটা দেশের কাছে রেখে যায় একবুক অভিমান আর জিজ্ঞাসা।

xDwDlZs.jpg


পুলিশদের ত্যাগ ও আবেগের ভিন্ন উপস্থাপন ছিল 'দিল্লি ক্রাইমে'; Photo Souce: Netflix

গল্প নয়, বাস্তব

সাত বছর আগের এই বীভৎস ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিরিজ তৈরির সিদ্ধান্তটা সহজ ছিলনা। এর পরিচালক রিচি মেহতা টানা ছয় বছর এই মামলার সাক্ষ্য, প্রমাণ, উপাদান, সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করেছেন ,পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছেন। নতুন করে সংশ্লিষ্ট অনেকের সাক্ষাৎকার নিতে হয়েছে তাঁকে। সিরিজে মূল ঘটনার বিস্তারিত না দেখিয়ে পুলিশি তদন্তের ধাপগুলোতেই মন দিয়েছেন। এই কাজে তাঁকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন দিল্লি পুলিশের সাবেক কমিশনার নিরাজ কুমার। মাত্র পাঁচদিনের ভেতর অক্লান্ত শ্রম দিয়ে দিল্লি পুলিশ যে অসামান্য কাজটি করেছে- তা জানানোই ছিল মূল লক্ষ্য।এ প্রসঙ্গে রিচি বলেন, ' তাঁদের অভিজ্ঞতাগুলো শোনার পাশাপাশি বুঝলাম সীমাবদ্ধতাও কম নয় এখানে। সত্যিই কিন্তু তাঁরা গোটা সপ্তাহে ঘরে ফেরেনি। রাত-দিন এক করে কাজ করেছে। এমনকি তাঁদের যানবাহনও ছিল অপ্রতুল।'

এক ডজন প্রযোজকের অর্থায়নে কাজ করাটা বেশ কঠিন হলেও উপভোগও করেছেন ইন্দো-কানাডিয়ান রিচি। সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন জোহান হোরলিন। অধিকাংশ দৃশ্যই ছিল রাতের পটভূমিতে, অতএব লাইট- সেটআপেও বাড়তি শ্রম দিতে হয়েছে 'দিল্লি ক্রাইম' দলকে। লিজ গ্রুজস্কি তার মেকআপ দল নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য কাজই করেছেন। গল্পটাকে ক্যামেরায় আনার ক্ষেত্রে Zodiac (২০০৭) এবং The French Connection (১৯৭১)- এই দুই ছবি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন রিচি।

MUaRRvP.jpg


নিতি সিং চরিত্রে রাসিকা দুগাল; Photo Source: IMDb

৪৫-৬৪ মিনিট রানটাইমের প্রতিটি পর্বই দর্শককে বীভৎস সত্যের স্বাদ দেবে। ইতোমধ্যেই IMDb রেটিং এ ৮.৫ এবং Rotten Tomatoes এ ৯২% রেটিং আদায় করে নিয়েছে ক্রাইম জনরার সিরিজটি। মূল গল্পে পুলিশি তদন্তকে গুরুত্ব দেয়া হলেও সেসময়ের আন্দোলন, সাংবাদিকতা ও গণমানুষের চিন্তাধারাকে বাদ দেননি পরিচালক। নিরাজ কুমার সিরিজ প্রসঙ্গে বলেন, ' এখানে যা দেখানো হয়েছে তার ৬০-৬৫% হচ্ছে সত্য। বাকিটা চিত্রনাট্যকার মনগড়া গল্প লিখেছেন, তবে সেটা সিরিজ উপভোগ্য করার স্বার্থেই। সবচেয়ে বড় কথা, লোকে বুঝতে পারছে পুলিশকে কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।'

এই ব্যাপারে জ্যোতির বাবা বদ্রিনাথ সিংয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'দেখুন, এই সিরিজের সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। যেই দুঃসহ স্মৃতির মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি সেটা আবার পর্দায় দেখার কোন ইচ্ছে আর নেই। তবে সত্যটা সামনে আসা প্রয়োজন। আমি এর পক্ষে বা বিপক্ষে- কোন অবস্থানেই নেই।'

কুশীলবদের কথা

সিরিজে বর্তিকা চতুর্বেদী চরিত্রটি গঠিত হয়েছে তৎকালীন পুলিশের ডেপুটি চিফ কমিশনার ছায়া শর্মার আদলে। সিরিজের প্রাণই ছিলেন এই বর্তিকা। উক্ত চরিত্রে শেফালি শাহের বিকল্প সম্ভবত খুব কমই আছে। পাশাপাশি আরেক আন্ডাররেটেড অভিনেতা রাজেশ তাইলাং ছিলেন ভুপেন্দ্র সিংয়ের ভূমিকায়। রাজেশের কারিশমাতেই বর্তিকা আরও প্রস্ফুটিত হতে পেরেছেন। চলচ্চিত্র সমালোচক নম্রতা যোশি বলেন, 'তাইলাংয়ের পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত অভিনয়ের গুণেই শেফালিশাহের চরিত্রটি আরও গতিশীল হয়েছে। ভারতীয় শিল্পে এরকম যুগলবন্দীর সংখ্যা নগণ্য। 'রাজেশ এই সিরিজ সম্পর্কে তার মত জানান এভাবে, 'আমাদের ছবিগুলোতে মূল কাহিনীটা বলা হয় নায়কের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কিন্তু এখানে কেউ সেভাবে নায়ক নয়। পুলিশ কিংবা অন্যান্য চরিত্রেরও যে সুখ- দুঃখ আছে, সেটা চোখে পড়বে এতে।'

NYdQb4Z.jpg


মৃদুল সিং, শেফালি শাহ্‌ এবং রাজেশ তাইলাং; Photo SSource: Filmyshimy

সম্ভাবনাময় গুণী অভিনেত্রী রাসিকা দুগাল ছিলেন সদ্য পুলিশ ফোর্সে যোগ দেয়া তরুণী নিতি সিং পোট্রেয়ালে। মূল তদন্তে বড় কোন ছাপ না ফেললেও ভারতীয় নারীর অসহায়ত্ব এবং ক্ষোভের অংশগুলো পরিচালক দেখিয়েছেন তার মাধ্যমেই। জ্যোতির নাম বদলে এখানে 'দীপিকা' ব্যবহৃত হয়েছে। সিরিজে কম উপস্থিতি থাকলেও অভিলাষা সিং তার পরিমিত অভিব্যক্তিটাই দিয়েছেন। অইন্দ্রের স্থলে এতে 'আকাশ' চরিত্রকে রাখা হয়েছে। ঘটনার শুরু থেকে নানান মোড়ে আকাশের চারিত্রিক পরিবর্তন ও মিডিয়ার নজরে আসার প্রচেষ্টা- সমস্তটাকেই সঞ্জয় বিশনোয় পর্দায় এনেছেন। এছাড়াও যশ্বিনি দায়মা, ডেনজিল স্মিথ, আদিল হুসেইন, জয়া ভট্টাচার্য, বিনোদ শারাওয়াত, সিদ্ধার্থ ভরদ্বাজ প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে উল্লেখযোগ্য ছিল বাসচালক জয় সিং হিসেবে মৃদুল শর্মার হিমশীতল অভিনয়। ভাবলেশহীন মুখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিবরণ দেয়ার পরও নিজেকে নির্দোষ দাবির দৃশ্যটি ছিল আদতেই ভয়ংকর।

'যারা ধনী তারা আরও ধনী হচ্ছে, আর গরিবেরা আরও গরিব। এদেশে শিক্ষা বা চাকরি না মিললেও ফোনে ফোনে পর্ণ কিন্তু ঠিকই নাগালের মধ্যে। এই অশিক্ষিত গরিবেরা যখন দেখে তারা কিছুই পাচ্ছেনা, তখন তারা আরেক শ্রেণি থেকে কেড়ে নিতে চায়, কোন ফলের কথা চিন্তা না করেই। কারণ, তাঁদের হারানোর কিছু তো নেই।' সুধীর দত্ত চরিত্রে গোপাল কুমারের মুখে এই বৈষম্য এবং অপরাধ প্রবণতা নিয়ে সংলাপটিও দর্শককে দিয়েছে ভাবনার খোরাক।
তবুও ধর্ষণ

পত্রিকা খুললেই নারীর প্রতি বর্বরোচিত সহিংসতার খবর দৈনিকই দেখতে পাই আমরা। আইন পাস, পুলিশি তদন্ত প্রভৃতির পরেও কমছে না এই অপরাধ। তাই চাঁদনির এই সংলাপটাই যেন গোটা সমাজের নগ্নচিত্রকে উন্মোচিত করে,

'রাস্তায় চলতে গেলে প্রতিদিনই আমাকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়, প্রত্যেকটা পুরুষ আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। দিনকে দিন অবস্থা আরও করুণ হচ্ছে।'
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top