তোর ব্যাঙ্কে কে এ্যাকাউন্ট খুলবে এই গ্রামের লোক, এরা দিন আনে দিন খায়।
আমি প্রথমে লোন দেবো, যাদের লোন দেবো তারাই এ্যাকাউন্ট খুলবে। দেখো মান্থলি ফাইভ পার্সেন্ট সুদের থেকে তো কম পাবে। তাছাড়া প্রথম প্রথম ছোটো ছোটো লোন দাও একহাজার থেকে পাঁজহাজার পযর্ন্ত তারপর রিকভার হলে বড়ো লোন। তোমাদের সরকার কৃষি লোন কতো দেয়। তার হেপা কতো বলোতো। যে ছেলেগুলো এই গ্রামে পরে পরে নষ্ট হচ্ছে তাদের কাজে লাগাতে পারবো তো।
তুই অনেক বড়ো স্কিম করেছিস।
তা বলতে পারো। আমি ইমপ্লিমেন্ট করবো, তোমরা সামলাবে।
আমি পার্টি ছেড়ে কি করে সময় দেবো বলতো।
তুমি চাওনা এখান থেকে তোমার সিট বারুক।
তা চাই।
তাহলে তোমায় কাজ করতে হবে। এটা একটা হাতিয়ার হিসাবে ধরো না। একনো তিনবছর বাকি আছে। আমি তোমায় বলছি, দাঁড় করিয়ে দেবো। তুমি অন্যান্য জায়গায় ব্রাঞ্চ ওপেন করো তারপ একটা সমবায় আন্দোলন করো, কেউ দাঁত ফোটাতে পারবে না। আমি তারপর একদিন কাগজে গল্পটা লিখে দেবো। দেখবে সেন্ট্রাল থেকে তুমি অনেক সাহায্য পাবে।
নিরঞ্জনদা হাসছে। তোর মাথায় আর কি কি আছে বলোতো।
সাতদিন পরে বোলবো। কলকাতায় যাই পর্শুদিন। ওখানে আমার ছেলেপুলেগুলোর সঙ্গে একটু কথা বলি তারপর বলবো।
আমি কবে যাবো। ইসলামভাই বললো।
তোমাকে যেদিন যেতে বলবো সেদিন যাবে।
ওরে আমার কিছু কাজকর্ম আছে।
মাথাতো অনেক খাটিয়েছো, এখান থেকে অপারেট করতে পারছো না।
করছি তো।
আরো কয়েকদিন করো। আমি গিয়ে একটু হাওয়া বুঝি।
তোর মিঃ মুখার্জী সুবিধার লোক নয়।
দেখো ইসলামভাই আমি বেড়ালকে রান্নাঘর দেখাই আবার রান্নাখাবারে বিষ মিশিয়ে রাখতে পারি বেড়াল জানতেও পারবে না।
অনি। ছোটোমা বললো।
আমি ছোটোমাকে জড়িয়ে ধরলাম, ভাবছো অনি কি বস্তু। আমি ধর্মনীতি রাজনীতি দুটোই করি। গীতা পরো সব বুঝতে পারবে।
বড়মা আমার পিঠে হাত বোলাচ্ছে।
জানিষ আমি ভাবছি ঘন্টা কানেক আগের অনি আর এই এখনকার অনির মধ্যে কত পার্থক্য।
ঠিক বলেছো নিরঞ্জনদা, তুমি ঘন্টা খানেক আগে ভেতরের অনি দেখেছো, এখন তুমি বাইরের অনিকে দেখছো। আমি ভাতর আর বাইর দুটো সত্বাকে কখনই এক হতে দিই না। বলতে পারো এ শিক্ষাটা দাদার কাছ থেকে পাওয়া।
তুই তো কালকে আমার যাওয়া বন্ধ করে দিলি। ভেবেছিলাম কালকে সকালে পালাবো। এখন দেখছি পালানো যাবে না।
ঝেঁটা মারি তোর মুখে লজ্জা করে না তোর, কয়েকঘন্টাক জন্য তোকে কে আসতে বলেছে।
সবাই হেসে ফেললো।
তুমি বুঝছো না দিদি।
ঢং রাখ, ছেলেটা কথা বলছে তার উত্তর দে।
আমি কি উত্তর দেবো। ও সব প্ল্যান প্রোগ্রাম করে রেখেছে, আমি না বললেও ও করবে হ্যাঁ বললেও করবে। ওর এ্যাডামেন্টটা লক্ষ করেছো।
আমি মুখ নীচু করে আছি। ইসলামভাই মুচকি মুচকি হাসছে।
তোর কাছে রেডি ক্যাশ আছে। নিরঞ্জনদা বললো।
কতো।
লাখ দশেক টাকা।
এখুনি হবে না, কালকের দিনটা সময় দাও পর্শুদিন অফিস থেকে নিয়ে চলে আসবো।
একটা কথা বলবো অনি। ইসলামভাই বললো।
বলো।
টাকাটা যদি আমি দিয়ে দিই।
তুমি কি এতো টাকা ক্যারি করছো নাকি।
জানিনা তবে মনে হয় রতন এর বেশিই আমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ওকে তো বলি নি কোথায় যাবো। খালি বললো ফোন করে দেবে পৌঁছে দেবো। তা এখানে এসে যা দেখছি রতনের সাধ্য নেই পৌঁছায়, আর এখানে খরচ করার জায়গাই বা কোথায়, জিলিপি খেতে গেলাম পয়সা লাগলো না।
তোমার পরিচয় ওরা জানে নি তো।
না এখনো গোপন আছে, তবে জানিনা জেনে ফলবে হয়তো।
নীপা।
না। যদি মিত্রা বলে না থাকে।
ওটা মিত্রা করবে না। এসব দিকে ওর মাথাটা একটু বেশি কাজ করে, আরে বাবা ব্লাডটা আছে তো। তাহলে ওই সময় ও তিনশো ষাটডিগ্রী ঘুরে যেতো না। ওর জেদ প্রচন্ড বোঝো না। এমনি ঠিক আছে, খেপে গেলে ডেঞ্জার, নীপা দেখেছে সেই বারে।
ও তোর জিনিষ তুই বুঝবি।
সে তো বলবেই কাজ গুছিয়ে নিয়েছো না প্ল্যান করে।
ছোটোমা আমার কানটা ধরে নেড়ে দিলো।
আঃ লাগবেরে ছোটো।
দেখলি মুন্না, নিজে ধরলে কিছু না আমি ধরলে লাগবে।
নিরঞ্জনদা ইসলামভাই হাসছে।
চল খাওয়া দাওয়া করি কাল সকালে দেখা যাবে, বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা পরছে।
কি হলো বলবি তো। বড়মা বললো।
অনি যা বললো তাই হবে।
তোর দাদাকে ফোন করে জানা।
আরে বাবা জানাবো খোন। এখনো অনেক সময় আছে, নিরঞ্জনদা ঘড়ির দিকে তাকালো, বাবাঃ সাড়ে দশটা বাজে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। ওরা সবাই উঠলো। একসঙ্গে এ বাড়িতে এলাম।
বারান্দায় অনাদিরা সবাই বসে আছে, আমাদের দেখে ওরা উঠে দাঁড়ালো, নিরঞ্জনদা বললো অনাদি।
হ্যাঁ দাদা।
ঠিক আছে থাক খেতে বসে বলবো।
ভেতরে এলাম, অনাদি আমার পাশে, মুখটা শুকনো করে বললো, কিরে কিছু গরবর।
আমি ইশারায় বললাম না।
অনাদি হাসলো। যেনো ধরে প্রাণ এলো।
মিত্রার গলা শুনতে পাচ্ছি, ফুল ফ্লেজে ব্যাট করছে, বড়মাকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো, দারুন মজা হচ্ছে যানো।
তাই।
হ্যাঁ গো ভজু গান গাইছে। বলে কিনা বুবুন টিন নিয়ে তবলা বাজাতো ও গান করতো।
বড়মা তাকালো মিত্রার দিকে এই ঠান্ডাতেও ওর কাপালে হাল্কা ঘামের ছোঁয়া।
অনেক দৌড়ো দৌড়ি করেছিস এবার একটু থাম।
আমি তো থেমেই আছি।
খাবি তো।
হ্যাঁ।
জায়গা কর। সুরমাসি হলো গো।
হ্যাঁ দিদি হয়ে গেছে।
কাঞ্চন লতা ভজু একসঙ্গে বসে ছিলো। ভজু উঠে এলো। বড়মা তোমার হাঁটু মালিশ করা হলো না।
শোয়ার সময় একটু করে দিস।
ঠিক আছে। বসে বসে গা ব্যাথা হয়ে গেলো।
বড়মা ভজুর কথায় হাসছে।
দেখলাম ছোটোমা কোমরে কাপর জড়ালো, বুঝলাম এবার রান্না ঘরে ঢুকবে। দালানে টানা আসন পাতা হচ্ছে। মিত্রা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আমার হাতটা ধরলো। আমি ওর দিকে তাকালাম, চোখে খুশির ছোঁয়া ক্লান্তি সারা মুখ জুড়ে।
কি।
আমি যাবো।
রান্নাঘরে।
হ্যাঁ।
পারবি।
পারবো।
যা।
কোমরে কাপরটা গুঁজে নিলো। ছুটে চলে গেলো। ছোটোমা ওকে দেখে বললো, আমি বেরে দিই তুই আর নীপা দিয়ে আয়।
মিত্রা খুব খুশি।
রাতে কলা পাতা আর থালা নয়।
আমি সুরমাসিকে বললাম কাকার খাওয়া হয়ে গেছে।
হ্যাঁ খাইয়ে শুইয়ে দিয়েছি।
বেশ করেছো।
আমি একবারে ধারে আমার পাশে বড়মা তারপাশে মিত্রা তার পাশে ছোটোমা তারপাশে নিরঞ্জনদা তারপাশে ইসলামভাই তারপাশে নীপা এরপর সবাই লাইন দিয়ে বসেছে, অনাদিরা আমাদের ঠিক অপজিটে বসেছে। কাঞ্চন লতা দেখলাম বোসলো না। কাকীমা, ছোটোমা নীপা মিত্রাকে ঠেলে রান্নাঘর থেকে বের করে দিয়েছে। ওরা এসে বসলো।
তুই এখানে কেনো।
কেনো তুইতো বড়মা ছোটোমার মাঝখানে বসছিস।
না। তুই আমি বড়মা ছোটোমার মাঝখানে বসবো।
বুঝেছি, মাথায় রাখবি আমার পাতে হাত দিতে পারবি না।
এই শুরু করলি দুজনে।
ইসলামভাই নিরঞ্জনদা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমি বসে পরলাম, বড়মা আমার আসনে গেলো।
খাওয়া শুরু করলাম।
নিরঞ্জনদা বললো মিত্রা তুই তো সব টেস্ট করেছিস।
মিত্রা মাথা দোলালো।
কোনটা সবচেয়ে ভালো হয়েছে।
এখন বলবো না।
কেনো রে।
বুবুন নেবে না, ওর পাতেরটা খেতে হবে না।
নিরঞ্জনদা বিষম খেলো। বড়মা হাসছে। ছোটোমা মুখে হাত চাপা দিয়েছে। আমি গম্ভীর। নীচু হয়ে খেয়ে যাচ্ছি।
কটা মাছের ডিমের বড়া খেয়েছিস।
বেশিনা পাঁচটা।
সকাল থেকে পটি করেছিস।
না।
এখানে কিন্তু এ্যাটাচ বাথরুম নেই।
জানি তোকে বক বক করতে হবে না। মাঠেতো যেতে হবে না। আবার ঝক ঝকে লাইট আছে।
অনি। ছোটোমা ডাকলো।
আমি ছোটোমার দিকে তাকালাম।
তুই ওর পেছনে লাগছিস কেনো।
আমি প্রথমে লোন দেবো, যাদের লোন দেবো তারাই এ্যাকাউন্ট খুলবে। দেখো মান্থলি ফাইভ পার্সেন্ট সুদের থেকে তো কম পাবে। তাছাড়া প্রথম প্রথম ছোটো ছোটো লোন দাও একহাজার থেকে পাঁজহাজার পযর্ন্ত তারপর রিকভার হলে বড়ো লোন। তোমাদের সরকার কৃষি লোন কতো দেয়। তার হেপা কতো বলোতো। যে ছেলেগুলো এই গ্রামে পরে পরে নষ্ট হচ্ছে তাদের কাজে লাগাতে পারবো তো।
তুই অনেক বড়ো স্কিম করেছিস।
তা বলতে পারো। আমি ইমপ্লিমেন্ট করবো, তোমরা সামলাবে।
আমি পার্টি ছেড়ে কি করে সময় দেবো বলতো।
তুমি চাওনা এখান থেকে তোমার সিট বারুক।
তা চাই।
তাহলে তোমায় কাজ করতে হবে। এটা একটা হাতিয়ার হিসাবে ধরো না। একনো তিনবছর বাকি আছে। আমি তোমায় বলছি, দাঁড় করিয়ে দেবো। তুমি অন্যান্য জায়গায় ব্রাঞ্চ ওপেন করো তারপ একটা সমবায় আন্দোলন করো, কেউ দাঁত ফোটাতে পারবে না। আমি তারপর একদিন কাগজে গল্পটা লিখে দেবো। দেখবে সেন্ট্রাল থেকে তুমি অনেক সাহায্য পাবে।
নিরঞ্জনদা হাসছে। তোর মাথায় আর কি কি আছে বলোতো।
সাতদিন পরে বোলবো। কলকাতায় যাই পর্শুদিন। ওখানে আমার ছেলেপুলেগুলোর সঙ্গে একটু কথা বলি তারপর বলবো।
আমি কবে যাবো। ইসলামভাই বললো।
তোমাকে যেদিন যেতে বলবো সেদিন যাবে।
ওরে আমার কিছু কাজকর্ম আছে।
মাথাতো অনেক খাটিয়েছো, এখান থেকে অপারেট করতে পারছো না।
করছি তো।
আরো কয়েকদিন করো। আমি গিয়ে একটু হাওয়া বুঝি।
তোর মিঃ মুখার্জী সুবিধার লোক নয়।
দেখো ইসলামভাই আমি বেড়ালকে রান্নাঘর দেখাই আবার রান্নাখাবারে বিষ মিশিয়ে রাখতে পারি বেড়াল জানতেও পারবে না।
অনি। ছোটোমা বললো।
আমি ছোটোমাকে জড়িয়ে ধরলাম, ভাবছো অনি কি বস্তু। আমি ধর্মনীতি রাজনীতি দুটোই করি। গীতা পরো সব বুঝতে পারবে।
বড়মা আমার পিঠে হাত বোলাচ্ছে।
জানিষ আমি ভাবছি ঘন্টা কানেক আগের অনি আর এই এখনকার অনির মধ্যে কত পার্থক্য।
ঠিক বলেছো নিরঞ্জনদা, তুমি ঘন্টা খানেক আগে ভেতরের অনি দেখেছো, এখন তুমি বাইরের অনিকে দেখছো। আমি ভাতর আর বাইর দুটো সত্বাকে কখনই এক হতে দিই না। বলতে পারো এ শিক্ষাটা দাদার কাছ থেকে পাওয়া।
তুই তো কালকে আমার যাওয়া বন্ধ করে দিলি। ভেবেছিলাম কালকে সকালে পালাবো। এখন দেখছি পালানো যাবে না।
ঝেঁটা মারি তোর মুখে লজ্জা করে না তোর, কয়েকঘন্টাক জন্য তোকে কে আসতে বলেছে।
সবাই হেসে ফেললো।
তুমি বুঝছো না দিদি।
ঢং রাখ, ছেলেটা কথা বলছে তার উত্তর দে।
আমি কি উত্তর দেবো। ও সব প্ল্যান প্রোগ্রাম করে রেখেছে, আমি না বললেও ও করবে হ্যাঁ বললেও করবে। ওর এ্যাডামেন্টটা লক্ষ করেছো।
আমি মুখ নীচু করে আছি। ইসলামভাই মুচকি মুচকি হাসছে।
তোর কাছে রেডি ক্যাশ আছে। নিরঞ্জনদা বললো।
কতো।
লাখ দশেক টাকা।
এখুনি হবে না, কালকের দিনটা সময় দাও পর্শুদিন অফিস থেকে নিয়ে চলে আসবো।
একটা কথা বলবো অনি। ইসলামভাই বললো।
বলো।
টাকাটা যদি আমি দিয়ে দিই।
তুমি কি এতো টাকা ক্যারি করছো নাকি।
জানিনা তবে মনে হয় রতন এর বেশিই আমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ওকে তো বলি নি কোথায় যাবো। খালি বললো ফোন করে দেবে পৌঁছে দেবো। তা এখানে এসে যা দেখছি রতনের সাধ্য নেই পৌঁছায়, আর এখানে খরচ করার জায়গাই বা কোথায়, জিলিপি খেতে গেলাম পয়সা লাগলো না।
তোমার পরিচয় ওরা জানে নি তো।
না এখনো গোপন আছে, তবে জানিনা জেনে ফলবে হয়তো।
নীপা।
না। যদি মিত্রা বলে না থাকে।
ওটা মিত্রা করবে না। এসব দিকে ওর মাথাটা একটু বেশি কাজ করে, আরে বাবা ব্লাডটা আছে তো। তাহলে ওই সময় ও তিনশো ষাটডিগ্রী ঘুরে যেতো না। ওর জেদ প্রচন্ড বোঝো না। এমনি ঠিক আছে, খেপে গেলে ডেঞ্জার, নীপা দেখেছে সেই বারে।
ও তোর জিনিষ তুই বুঝবি।
সে তো বলবেই কাজ গুছিয়ে নিয়েছো না প্ল্যান করে।
ছোটোমা আমার কানটা ধরে নেড়ে দিলো।
আঃ লাগবেরে ছোটো।
দেখলি মুন্না, নিজে ধরলে কিছু না আমি ধরলে লাগবে।
নিরঞ্জনদা ইসলামভাই হাসছে।
চল খাওয়া দাওয়া করি কাল সকালে দেখা যাবে, বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা পরছে।
কি হলো বলবি তো। বড়মা বললো।
অনি যা বললো তাই হবে।
তোর দাদাকে ফোন করে জানা।
আরে বাবা জানাবো খোন। এখনো অনেক সময় আছে, নিরঞ্জনদা ঘড়ির দিকে তাকালো, বাবাঃ সাড়ে দশটা বাজে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। ওরা সবাই উঠলো। একসঙ্গে এ বাড়িতে এলাম।
বারান্দায় অনাদিরা সবাই বসে আছে, আমাদের দেখে ওরা উঠে দাঁড়ালো, নিরঞ্জনদা বললো অনাদি।
হ্যাঁ দাদা।
ঠিক আছে থাক খেতে বসে বলবো।
ভেতরে এলাম, অনাদি আমার পাশে, মুখটা শুকনো করে বললো, কিরে কিছু গরবর।
আমি ইশারায় বললাম না।
অনাদি হাসলো। যেনো ধরে প্রাণ এলো।
মিত্রার গলা শুনতে পাচ্ছি, ফুল ফ্লেজে ব্যাট করছে, বড়মাকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো, দারুন মজা হচ্ছে যানো।
তাই।
হ্যাঁ গো ভজু গান গাইছে। বলে কিনা বুবুন টিন নিয়ে তবলা বাজাতো ও গান করতো।
বড়মা তাকালো মিত্রার দিকে এই ঠান্ডাতেও ওর কাপালে হাল্কা ঘামের ছোঁয়া।
অনেক দৌড়ো দৌড়ি করেছিস এবার একটু থাম।
আমি তো থেমেই আছি।
খাবি তো।
হ্যাঁ।
জায়গা কর। সুরমাসি হলো গো।
হ্যাঁ দিদি হয়ে গেছে।
কাঞ্চন লতা ভজু একসঙ্গে বসে ছিলো। ভজু উঠে এলো। বড়মা তোমার হাঁটু মালিশ করা হলো না।
শোয়ার সময় একটু করে দিস।
ঠিক আছে। বসে বসে গা ব্যাথা হয়ে গেলো।
বড়মা ভজুর কথায় হাসছে।
দেখলাম ছোটোমা কোমরে কাপর জড়ালো, বুঝলাম এবার রান্না ঘরে ঢুকবে। দালানে টানা আসন পাতা হচ্ছে। মিত্রা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আমার হাতটা ধরলো। আমি ওর দিকে তাকালাম, চোখে খুশির ছোঁয়া ক্লান্তি সারা মুখ জুড়ে।
কি।
আমি যাবো।
রান্নাঘরে।
হ্যাঁ।
পারবি।
পারবো।
যা।
কোমরে কাপরটা গুঁজে নিলো। ছুটে চলে গেলো। ছোটোমা ওকে দেখে বললো, আমি বেরে দিই তুই আর নীপা দিয়ে আয়।
মিত্রা খুব খুশি।
রাতে কলা পাতা আর থালা নয়।
আমি সুরমাসিকে বললাম কাকার খাওয়া হয়ে গেছে।
হ্যাঁ খাইয়ে শুইয়ে দিয়েছি।
বেশ করেছো।
আমি একবারে ধারে আমার পাশে বড়মা তারপাশে মিত্রা তার পাশে ছোটোমা তারপাশে নিরঞ্জনদা তারপাশে ইসলামভাই তারপাশে নীপা এরপর সবাই লাইন দিয়ে বসেছে, অনাদিরা আমাদের ঠিক অপজিটে বসেছে। কাঞ্চন লতা দেখলাম বোসলো না। কাকীমা, ছোটোমা নীপা মিত্রাকে ঠেলে রান্নাঘর থেকে বের করে দিয়েছে। ওরা এসে বসলো।
তুই এখানে কেনো।
কেনো তুইতো বড়মা ছোটোমার মাঝখানে বসছিস।
না। তুই আমি বড়মা ছোটোমার মাঝখানে বসবো।
বুঝেছি, মাথায় রাখবি আমার পাতে হাত দিতে পারবি না।
এই শুরু করলি দুজনে।
ইসলামভাই নিরঞ্জনদা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমি বসে পরলাম, বড়মা আমার আসনে গেলো।
খাওয়া শুরু করলাম।
নিরঞ্জনদা বললো মিত্রা তুই তো সব টেস্ট করেছিস।
মিত্রা মাথা দোলালো।
কোনটা সবচেয়ে ভালো হয়েছে।
এখন বলবো না।
কেনো রে।
বুবুন নেবে না, ওর পাতেরটা খেতে হবে না।
নিরঞ্জনদা বিষম খেলো। বড়মা হাসছে। ছোটোমা মুখে হাত চাপা দিয়েছে। আমি গম্ভীর। নীচু হয়ে খেয়ে যাচ্ছি।
কটা মাছের ডিমের বড়া খেয়েছিস।
বেশিনা পাঁচটা।
সকাল থেকে পটি করেছিস।
না।
এখানে কিন্তু এ্যাটাচ বাথরুম নেই।
জানি তোকে বক বক করতে হবে না। মাঠেতো যেতে হবে না। আবার ঝক ঝকে লাইট আছে।
অনি। ছোটোমা ডাকলো।
আমি ছোটোমার দিকে তাকালাম।
তুই ওর পেছনে লাগছিস কেনো।