আমি ছোটোমার দিকে তাকালাম, চোখদুটো ঝাপসা।
মিত্রা কাপর তুলে হাঁটছে।
তুই ওই ভাবে হাঁটছিস কেনো।
একবার শিক্ষা হয়েছে, আবার।
কি। ছোটোমা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো।
ওই চোর কাঁটা।
সবাই ওর দিকে তাকালো, বড়মা হেসে বললো ও মিত্রা একটু নামা।
তুমি থামোতো, কেউ দেখবে না।
আরে মুন্না আছে।
থাকুক মুন্নাভাই।
সবাই হাসছে।
আমরা বাঁশবাগানের ভেতরে এসে পরলাম। থমথমে পরিবেশ। হাওয়ায় বাঁশের গায়ে ঘষা লেগে কেঁচর কেঁচর আওয়াজ হচ্ছে। আমি বললাম এখানে একটু দাঁড়াও, কান খাঁড়া করে রাখো শুনতে পাবে কত রকমের আওয়াজ। ওরা দাঁড়ালো, তুই এখানে রাতের অন্ধকারে একা একা ঘুরিস।
হ্যাঁ।
তোর ভয় করে না।
ভয় করলেই ভয়, না করলে নয়।
তোদের এখানে বাঘ ভাল্লুক নেই।
না, শেয়াল আছে।
কোথায়।
আশেপাশে কোথাও আছে, ভাগ্য ভালো থাকলে দেখতেও পারো।
তুই থাম বাপু চল তাড়াতাড়ি।
আমরা গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে নদীর ধারে এসে পরলাম। জল কমে যেতে নদীর খাঁড়িটা অনেকটা নীচু হয়ে গেছে। ঢালটা একটু বেশি।
জানো বড়মা ভরা বর্ষায় তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছো, সেখানে দুমানুষ জল থাকে।
কি বলিস রে।
সে এক অদ্ভূত দৃশ্য। বাঁধ ছাপিয়ে জল গ্রামে ঢুকে পরে, যে রাস্তা দিয়ে তুমি এতোক্ষণ গাড়ি চেপে এলে, ওই রাস্তার ওপর এক মানুষ জল।
আমরা সেই সময় কতো মাছ ধরি তেলের জন্য খাওয়া হয় না।
তার মানে।
এতো মাছ হয়ে যায়, মাছ ভাজার তেল থাকে না।
এসো আমার হাত ধরে আস্তে আস্তে নামো।
আমি বড়মাকে ধরলাম, ইসলামভাই ছোটমাকে ধরেছে, ভজু মিত্রাকে ধরতে গেলো।
তুই থাম ও যেমন এই পথ দিয়ে নিয়ে এসেছে, ও ধরে নামাবে।
আমি চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম, মোটা মাথা।
দেখছো বড়মা, সত্যি তুমি ওদের গ্রামে এসেছো বলে ও যা বলবে তাতেই তুমি সায় দিচ্ছ।
তুই ভজুর হাতটা ধরে নাম না।
ভজু নিজেকেই সামলাতে পারছে না আবার আমাকে সামলাবে। ভজুর কীর্তিটা দেখ একবার।
পেছন ফিরে দেখলাম ভজু বসে বসে নামছে।
কিরে।
না অনিদা হরকে যাবো। বলতে বলতেই ভজু হরকালো। দুম ফটাস।
দেখলে।
আমরা নদীর মধ্যে দাঁড়িয়ে হাসছি।
তোমরা দাঁড়াও ওটাকে নামিয়ে নিয়ে আসি।
আমি আবার ওপরে গেলাম, জুতো খোল।
কেনো।
তোর এই হিল তলা জুতো হরকাবে। দেখছিস কতো নুরি পরে আছে।
এতো হাঁড়ি ভাঙা।
হ্যাঁ তোকে বলেছে।
বল এরও একটা গল্প আছে।
আছেতো।
আমি ওর হাতটা ধরে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনলাম।
বাবাঃ কি ঢালু দেখেছো বড়মা, ওপরটা আর দেখা যাচ্ছে না।
বর্ষাকালে এর যা স্রোত দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায়।
এই টুকু পার হতে হবে। তার জন্য তুই যা গল্প ফাঁদলি ওখানে।
ঠিক আছে, তুই আগে চলে যা। আমরা দাঁড়িয়ে আছি।
বড়মা মুচকি মুচকি হাসছে। যা।
মিত্রা দাঁড়িয়ে রইলো।
কিরে যা।
তুই চল।
দাঁড়া আমি আগে নেমে দেখে আসি, কতটা জল।
তার মানে।
পথটা ঠিক করে আসি, একটু এদিক ওদিক হলে একেবারে কাতলা মাছ ধরবি।
তুই জেনেও আমাকে আগে পাঠাচ্ছিলি।
আমি। দেখলে বড়মা, ঝপ পাল্টি।
ইসলামভাই হাসছে। ভজু বললো আমি পরে গেলে স্নান করে নেবো।
আমি এগিয়ে গিয়ে আস্তে আস্তে দেখে নিলাম, আমার হাঁটু জলই আছে। প্রথমে আমি বড়মাকে পার করে ওপারে রেখে এলাম, বড়মা আমাকে শক্ত করে ধরেছিল, এমন আবস্থা আমিই নিজেই নরতে চড়তে পারছিলাম না।
ভজুকে বললাম আমি যেমন ভাবে পার হলাম সেই ভাবে পার হয়ে ওপারে চলে যা।
ভজু মহা উতসাহে নাচতে নাচতে গেলো, সত্যি সত্যি কাদায় হরকে জলে আছাড় খেলো। জামা পেন্ট সব ভিজে একসা। আমি তাড়াতাড়ি করে গিয়ে ভজুকে তুলে ওপারে রেখে আসলাম।
ইসলামভাইকে বললাম যাও।
তুই চল।
আমি ইসলামভাইকে ধরে ওপারে নিয়ে গেলাম, অসুবিধে হলো না, ইসলামভাই বললো খুব কাদা রে।
আমি বললাম কাদা না, এই যে গাছের পাতা পরেছে, পচে গেছে। সেই জন্য এত হরকা।
এবার ছোটোমার পালা, ছোটোমা আমার হাত ধরে জলে নেমেই আবার উঠে গেলো।
কি হলো।
দাঁড়া কাপরটা একটু তুলে নিই।
বড়মা হাসছে, আমিই সবচেয়ে ভালো এসেছি।
ছোটোমা তুমি বরং দাঁড়াও আমি আগে পার হয়ে যাই।
কেনো।
যদি শেয়াল আসে।
ঠিক বলেছিস, এতোক্ষণ মনে ছিলো না।
মুন্নাভাই-এর উচিত ছিলো সবার শেষ যাওয়া।
চল দুজনে যাই।
চলো।
আমি যেখানে যেখানে পা ফলবো সেখানে সেখানে পা ফলবি, না হলে ভজুর দশা হবে।
তুইতো আগেই ভয় পাইয়ে দিচ্ছিস।
বেরো তোকে যেতে হবে না।
ওরকম করছিস কেনো।
ওপারে বসে বড়মা ইসলামভাই ভজু হেসে কুটি কুটি হচ্ছে।
আমি দুজনকে নিয়ে জলে নামলাম, দুজনে আমার দুহাতে। আমি আস্তে আস্তে এগোচ্ছি ওরাও এগোচ্ছে।
আমি জানি অনিদা এই কীর্তি করবে, যখনই গারিটা হুশ করে বেরিয়ে গেলো তখনি বুঝেছি, অনাদিদা চেঁচিয়ে বললো বলে, ওগো তোমরা আছাড় খাবে, খুব হরকা এই জায়গাটা, নীপা ধুপ ধাপ করে নদীর ভেতরে নেমে আসছে।
এই গেলো গেলো গেলো।
কি হলো রে।
কাপরটা কোমর থেকে খুলেগেলো।
আমি ছোটোমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে মিত্রা আমার হাত ছেড়ে কাপর ঠিক করতে গেলো, পা হরকালো, আমি কোনো প্রকারে ধরে ফেললাম।
শয়তান, আর জায়গা পেলিনা নিয়ে আসার।
আমি হাঁসছি।
গাঢ়ল, হাঁসছিস আবার। এখুনি আছাড় খাচ্ছিলাম।
বড়মা হেসে খুন। ও ছোটো তুই চলে আয়, ওরা থাকুক।
ছোটোমা কোনো কথা বলছে না, আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ওটা কি পোকা রে।
মাছ খেকো মাকড়সা।
উরি বাবারে। মিত্রা আমাকে জাপ্টে ধরলো।
ওরে মিত্রা অনিকে ছার আমি আছাড় খাবো।
খাবো, পোকাটা কই।
তোকে দেখতে হবে না। কাপর গোঁজা হলো।
হলো কই তুমি কি পোকার কথা বললে।
আর তোকে গুঁজতে হবে না
নীপা জলে নেমে এসেছে। মিত্রা একটা হাতে আমাকে ধরেছে, আর একটা হাতে নীপাকে ধরেছে।
ওর বুদ্ধি শুনতে গেছো কেনো।
আমি শুনেছি, বড়মা বড়মা এই পাশ দিয়ে গেলে দশ মিনিট লাগবে। মিত্রা ভেংচি কাটলো।
আমি হাঁসবো না কাঁদবো। কোনো প্রকারে জল থেকে ওদের টেনে তুললাম।
উঠেই মিত্রার প্রথম ডায়লগ, বড়মা দারুন এক্সপিরিয়েন্স তুমি না থাকলে এই ভাবে যে বৈতরনী পার হওয়া যায়, জানাই যেতো না।
সেকিরে, এই তো তুই অনির সাপ সাপান্তর করছিলি।
তাই নাকি, কই নাতো। অনি তো ভালো ছেলে। আমার গালে দুবার খামচি মারলো। সোনামনা সোনামনা।
ছোটোমা হাসছে, বড়মা হাসছে।
পায়ে পায়ে সকলে চলে এলাম, সুরমাসি কাকীমা বাঁশবাগানে দাঁড়িয়েছিলো, আমাদের দেখে এগিয়ে এলেন, সবার চোখেই একই বিষ্ময়, ইসলামভাই, ভজু। ভজু তবু চলেবেল, কিন্তু ইসলামভাই।
বড়মাকে সবাই প্রণাম করলো, থাক থাক ভাই তোমাদের বাড়িতে আসা হলো, এই মর্কটটার জন্য। বড়মা আমার দিকে দেখছেন।
অনি আমি কিন্তু ফার্স্ট ফিতে কাটবো।
কিসের।
ওই যে দেখতে পাচ্ছিস।
মিত্রা বাথরুমের দিকে আঙুল তুলে দেখালো।
ওটাকি তোর ফিতে কাটার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
তুমি জানলে কি করে, অনাদিদা বলেছে, ওরা এসে আগে ব্যবহার করবে তারপর তোরা। নীপা বললো।
মিত্রা আমার দিকে চোখ মারলো, দেখছিস এখানে তোর পপুলারিটির থেকে আমার পপুলারিটি একটু হলেও বেশি। তোর পালের হাওয়া এবার আমি কেরে নেবো।
আবার শুরু করলি। বড়মা মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো।
বাড়ির ভেতর এলাম। বড়মা সব অবাক হয়ে দেখছে, ছোটোমাও তাই, ইসলামভাই-এর চোখের পাতা পরছে না।
মিত্রা কাপর তুলে হাঁটছে।
তুই ওই ভাবে হাঁটছিস কেনো।
একবার শিক্ষা হয়েছে, আবার।
কি। ছোটোমা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো।
ওই চোর কাঁটা।
সবাই ওর দিকে তাকালো, বড়মা হেসে বললো ও মিত্রা একটু নামা।
তুমি থামোতো, কেউ দেখবে না।
আরে মুন্না আছে।
থাকুক মুন্নাভাই।
সবাই হাসছে।
আমরা বাঁশবাগানের ভেতরে এসে পরলাম। থমথমে পরিবেশ। হাওয়ায় বাঁশের গায়ে ঘষা লেগে কেঁচর কেঁচর আওয়াজ হচ্ছে। আমি বললাম এখানে একটু দাঁড়াও, কান খাঁড়া করে রাখো শুনতে পাবে কত রকমের আওয়াজ। ওরা দাঁড়ালো, তুই এখানে রাতের অন্ধকারে একা একা ঘুরিস।
হ্যাঁ।
তোর ভয় করে না।
ভয় করলেই ভয়, না করলে নয়।
তোদের এখানে বাঘ ভাল্লুক নেই।
না, শেয়াল আছে।
কোথায়।
আশেপাশে কোথাও আছে, ভাগ্য ভালো থাকলে দেখতেও পারো।
তুই থাম বাপু চল তাড়াতাড়ি।
আমরা গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে নদীর ধারে এসে পরলাম। জল কমে যেতে নদীর খাঁড়িটা অনেকটা নীচু হয়ে গেছে। ঢালটা একটু বেশি।
জানো বড়মা ভরা বর্ষায় তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছো, সেখানে দুমানুষ জল থাকে।
কি বলিস রে।
সে এক অদ্ভূত দৃশ্য। বাঁধ ছাপিয়ে জল গ্রামে ঢুকে পরে, যে রাস্তা দিয়ে তুমি এতোক্ষণ গাড়ি চেপে এলে, ওই রাস্তার ওপর এক মানুষ জল।
আমরা সেই সময় কতো মাছ ধরি তেলের জন্য খাওয়া হয় না।
তার মানে।
এতো মাছ হয়ে যায়, মাছ ভাজার তেল থাকে না।
এসো আমার হাত ধরে আস্তে আস্তে নামো।
আমি বড়মাকে ধরলাম, ইসলামভাই ছোটমাকে ধরেছে, ভজু মিত্রাকে ধরতে গেলো।
তুই থাম ও যেমন এই পথ দিয়ে নিয়ে এসেছে, ও ধরে নামাবে।
আমি চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম, মোটা মাথা।
দেখছো বড়মা, সত্যি তুমি ওদের গ্রামে এসেছো বলে ও যা বলবে তাতেই তুমি সায় দিচ্ছ।
তুই ভজুর হাতটা ধরে নাম না।
ভজু নিজেকেই সামলাতে পারছে না আবার আমাকে সামলাবে। ভজুর কীর্তিটা দেখ একবার।
পেছন ফিরে দেখলাম ভজু বসে বসে নামছে।
কিরে।
না অনিদা হরকে যাবো। বলতে বলতেই ভজু হরকালো। দুম ফটাস।
দেখলে।
আমরা নদীর মধ্যে দাঁড়িয়ে হাসছি।
তোমরা দাঁড়াও ওটাকে নামিয়ে নিয়ে আসি।
আমি আবার ওপরে গেলাম, জুতো খোল।
কেনো।
তোর এই হিল তলা জুতো হরকাবে। দেখছিস কতো নুরি পরে আছে।
এতো হাঁড়ি ভাঙা।
হ্যাঁ তোকে বলেছে।
বল এরও একটা গল্প আছে।
আছেতো।
আমি ওর হাতটা ধরে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনলাম।
বাবাঃ কি ঢালু দেখেছো বড়মা, ওপরটা আর দেখা যাচ্ছে না।
বর্ষাকালে এর যা স্রোত দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায়।
এই টুকু পার হতে হবে। তার জন্য তুই যা গল্প ফাঁদলি ওখানে।
ঠিক আছে, তুই আগে চলে যা। আমরা দাঁড়িয়ে আছি।
বড়মা মুচকি মুচকি হাসছে। যা।
মিত্রা দাঁড়িয়ে রইলো।
কিরে যা।
তুই চল।
দাঁড়া আমি আগে নেমে দেখে আসি, কতটা জল।
তার মানে।
পথটা ঠিক করে আসি, একটু এদিক ওদিক হলে একেবারে কাতলা মাছ ধরবি।
তুই জেনেও আমাকে আগে পাঠাচ্ছিলি।
আমি। দেখলে বড়মা, ঝপ পাল্টি।
ইসলামভাই হাসছে। ভজু বললো আমি পরে গেলে স্নান করে নেবো।
আমি এগিয়ে গিয়ে আস্তে আস্তে দেখে নিলাম, আমার হাঁটু জলই আছে। প্রথমে আমি বড়মাকে পার করে ওপারে রেখে এলাম, বড়মা আমাকে শক্ত করে ধরেছিল, এমন আবস্থা আমিই নিজেই নরতে চড়তে পারছিলাম না।
ভজুকে বললাম আমি যেমন ভাবে পার হলাম সেই ভাবে পার হয়ে ওপারে চলে যা।
ভজু মহা উতসাহে নাচতে নাচতে গেলো, সত্যি সত্যি কাদায় হরকে জলে আছাড় খেলো। জামা পেন্ট সব ভিজে একসা। আমি তাড়াতাড়ি করে গিয়ে ভজুকে তুলে ওপারে রেখে আসলাম।
ইসলামভাইকে বললাম যাও।
তুই চল।
আমি ইসলামভাইকে ধরে ওপারে নিয়ে গেলাম, অসুবিধে হলো না, ইসলামভাই বললো খুব কাদা রে।
আমি বললাম কাদা না, এই যে গাছের পাতা পরেছে, পচে গেছে। সেই জন্য এত হরকা।
এবার ছোটোমার পালা, ছোটোমা আমার হাত ধরে জলে নেমেই আবার উঠে গেলো।
কি হলো।
দাঁড়া কাপরটা একটু তুলে নিই।
বড়মা হাসছে, আমিই সবচেয়ে ভালো এসেছি।
ছোটোমা তুমি বরং দাঁড়াও আমি আগে পার হয়ে যাই।
কেনো।
যদি শেয়াল আসে।
ঠিক বলেছিস, এতোক্ষণ মনে ছিলো না।
মুন্নাভাই-এর উচিত ছিলো সবার শেষ যাওয়া।
চল দুজনে যাই।
চলো।
আমি যেখানে যেখানে পা ফলবো সেখানে সেখানে পা ফলবি, না হলে ভজুর দশা হবে।
তুইতো আগেই ভয় পাইয়ে দিচ্ছিস।
বেরো তোকে যেতে হবে না।
ওরকম করছিস কেনো।
ওপারে বসে বড়মা ইসলামভাই ভজু হেসে কুটি কুটি হচ্ছে।
আমি দুজনকে নিয়ে জলে নামলাম, দুজনে আমার দুহাতে। আমি আস্তে আস্তে এগোচ্ছি ওরাও এগোচ্ছে।
আমি জানি অনিদা এই কীর্তি করবে, যখনই গারিটা হুশ করে বেরিয়ে গেলো তখনি বুঝেছি, অনাদিদা চেঁচিয়ে বললো বলে, ওগো তোমরা আছাড় খাবে, খুব হরকা এই জায়গাটা, নীপা ধুপ ধাপ করে নদীর ভেতরে নেমে আসছে।
এই গেলো গেলো গেলো।
কি হলো রে।
কাপরটা কোমর থেকে খুলেগেলো।
আমি ছোটোমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে মিত্রা আমার হাত ছেড়ে কাপর ঠিক করতে গেলো, পা হরকালো, আমি কোনো প্রকারে ধরে ফেললাম।
শয়তান, আর জায়গা পেলিনা নিয়ে আসার।
আমি হাঁসছি।
গাঢ়ল, হাঁসছিস আবার। এখুনি আছাড় খাচ্ছিলাম।
বড়মা হেসে খুন। ও ছোটো তুই চলে আয়, ওরা থাকুক।
ছোটোমা কোনো কথা বলছে না, আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ওটা কি পোকা রে।
মাছ খেকো মাকড়সা।
উরি বাবারে। মিত্রা আমাকে জাপ্টে ধরলো।
ওরে মিত্রা অনিকে ছার আমি আছাড় খাবো।
খাবো, পোকাটা কই।
তোকে দেখতে হবে না। কাপর গোঁজা হলো।
হলো কই তুমি কি পোকার কথা বললে।
আর তোকে গুঁজতে হবে না
নীপা জলে নেমে এসেছে। মিত্রা একটা হাতে আমাকে ধরেছে, আর একটা হাতে নীপাকে ধরেছে।
ওর বুদ্ধি শুনতে গেছো কেনো।
আমি শুনেছি, বড়মা বড়মা এই পাশ দিয়ে গেলে দশ মিনিট লাগবে। মিত্রা ভেংচি কাটলো।
আমি হাঁসবো না কাঁদবো। কোনো প্রকারে জল থেকে ওদের টেনে তুললাম।
উঠেই মিত্রার প্রথম ডায়লগ, বড়মা দারুন এক্সপিরিয়েন্স তুমি না থাকলে এই ভাবে যে বৈতরনী পার হওয়া যায়, জানাই যেতো না।
সেকিরে, এই তো তুই অনির সাপ সাপান্তর করছিলি।
তাই নাকি, কই নাতো। অনি তো ভালো ছেলে। আমার গালে দুবার খামচি মারলো। সোনামনা সোনামনা।
ছোটোমা হাসছে, বড়মা হাসছে।
পায়ে পায়ে সকলে চলে এলাম, সুরমাসি কাকীমা বাঁশবাগানে দাঁড়িয়েছিলো, আমাদের দেখে এগিয়ে এলেন, সবার চোখেই একই বিষ্ময়, ইসলামভাই, ভজু। ভজু তবু চলেবেল, কিন্তু ইসলামভাই।
বড়মাকে সবাই প্রণাম করলো, থাক থাক ভাই তোমাদের বাড়িতে আসা হলো, এই মর্কটটার জন্য। বড়মা আমার দিকে দেখছেন।
অনি আমি কিন্তু ফার্স্ট ফিতে কাটবো।
কিসের।
ওই যে দেখতে পাচ্ছিস।
মিত্রা বাথরুমের দিকে আঙুল তুলে দেখালো।
ওটাকি তোর ফিতে কাটার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
তুমি জানলে কি করে, অনাদিদা বলেছে, ওরা এসে আগে ব্যবহার করবে তারপর তোরা। নীপা বললো।
মিত্রা আমার দিকে চোখ মারলো, দেখছিস এখানে তোর পপুলারিটির থেকে আমার পপুলারিটি একটু হলেও বেশি। তোর পালের হাওয়া এবার আমি কেরে নেবো।
আবার শুরু করলি। বড়মা মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো।
বাড়ির ভেতর এলাম। বড়মা সব অবাক হয়ে দেখছে, ছোটোমাও তাই, ইসলামভাই-এর চোখের পাতা পরছে না।