What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দেখি নাই ফিরে (উপন্যাস) (3 Viewers)

শালা বসে বসে ঘুমোচ্ছে বলে কিনা পাহারা দিচ্ছে।
আমি আড়মোড়া ভাঙলাম, ওরা কেউ খাটে কেউ চায়ার দখল করে বসলো।
জানিস অনি আমার একটাই দুঃখ মিত্রা আমাকে চিন্তে পারলো না।
শুধু তোকে না ওদের সবাইকে।
সবাইকে, তবে যাই বল মিত্রাকে আগের থেকে অনেক সেক্সি লাগছে।
কামরে খেয়ে নে।
শালা।
মিত্রা মুখ টিপে হাসলো।
দেখলাম ওরা ফুলের বুকে নিয়ে এসেছে, সঙ্গে ফল, মিষ্টি।
এ গুলো কিরে।
কিছুনা। টিনা বললো।
এগুলো এঘরে ঢোকালে কেনো।
কেনো।
এ ঘরটা নোংরা।
বেশতো পরিষ্কার দেখছি। দেবাশীষ বললো।
দেবাশীষ চেয়ারটা এগিয়ে নিয়ে এলো। আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, তুই এদের চিন্তে পারিস নি।
তুই বলনা সম্ভব, সেই দশ বছর আগে দেখেছি। তোর সঙ্গে এদের যোগাযোগ ছিলো তাই……
দাঁড়া চিনিয়ে দিচ্ছি।
অনিদা খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি। অদিতি চেঁচিয়ে উঠলো।
মিত্রার চোখে বিস্ময়।
কেনো।
এমনিতেই দেবাশীষ তোমার গল্প বলে আমাদের ওয়ার্লডে পপুলার হয়ে গেছে, সবাই তোমাকে দেখতে চাইছে।
সে তো ভালো কথা। একদিন কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া যাবে। পার্টি দাও। কিন্তু মিত্রাকে মনে করাতে গেলে ওই ব্যাপার গুলো এসেন্সিয়াল।
তুমি অদিতিরটা বলতে পারো আমারটা বলতে পারবে না। মিলি বললো।
তোমরা এরকম করলে, মিত্রাকে চেনাব কি করে।
তুই বলনা শুনি।
এই দেখো মালকিন তার কর্মচারীকে হুকুম করছেন শোনাবার জন্য, আমি না বলে পারি কি করে।
খুব খারাপ হয়ে যাবে বলছি। মিত্রা বললো।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, মনে পরে সেই সিঁড়ি দিয়ে একটা সুন্দরী মেয়ে উঠছে, পায়ে হিল তলা জুতো, ঠক ঠক আওয়াজ, একটা জিনসের পেন্ট পরা , টাইট গেঞ্জি, আমি তোকে বললাম…..
সেই পাছুতে হাত। মিত্রা খিল খিল করে উঠে বিছানায় গড়াগড়ি খায়।
অনিদা প্লিজ, আর না, তুমি সব কেলো করে দেবে।
তারপর সেই প্রেমপত্র, হেঁদুয়াতে….দেবাশীষের দিকে তাকিয়ে বললাম, তোকে তো দেখিয়েছিলাম, দেবাশীষ হ্যাঁ বললো।
এই সেই অদিতি, দেবাশীষের সহধর্মিনী।
বাবা এত হাসা হাসি, নিচ থেকে শোনা যাচ্ছে। ছোটমা সবার জন্য লাইম জুসের গ্লাস নিয়ে ঢুকলেন।
মিত্রা হাসতে হাসতে বললো তুমি বসো গল্পগুলো শুনে যাও একবার। ও অদিতির ব্যাপারটা রিপিড করলো। ছোটমা হেসে খান খান।
কি দির্বুদ্ধি রে বাবা।
নেক্সট বল। মিত্রা বললো।
দেখলাম বড়মা এসে হাজির হয়েছে, বাবা তোদের হাসির চোটে তো নিচে টেকা দায়।
ছোটমা গিয়ে বড়মাকে হির হির করে টেনে আনলো, শোনো তোমার ছেলের কলেজ লাইফের কীর্তি।
আমি বড়মাকে ইজি চেয়ার ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।
বড়মা ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো।
এবার আমি দেবাশীষকে কি ভাবে মাথায় বুদ্ধি নেই পাছায় আছে তার গল্প বললাম।
বড়মা বললেন, তোর পেটে পেটে এত বুদ্ধি।
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম পেটে নয়……..
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
এবার মিলির দিকে তাকালাম।
প্লীজ অনিদা, বড়মা, ছোটমার সামনে আমার প্রেসটিজটা ডাউন করে দিও না।
এই দেখ মিত্রাকে চেনাতে হবে তো। তবে কি জানো মিলি, সেদিন যদি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দৌড়বীর আমার সঙ্গে দৌড়তো আমা তাকে হারিয়ে দিয়ে সোনার মেডেল পেতাম। শ্রেফ পেঁদানি খাওয়ার ভয়ে। তারপর মিলিকে চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা ডিটেলসে বললাম, এও বললাম, সেজন্য পারিশ্রমিক হিসাবে পেয়েছি একটা মোগলাই পরোটা, সাক্ষী, মিত্রা। কেনোনা ওর ওপরেই আমার মোগলাই পরোটা নির্ভর করছিলো। আবার সারা ঘরে হাসির রোল। বড়মার হাসতে হাসতে চোখে জল এনে ফললো, বললো তুই থাম। আমার পেট ব্যাথা করছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, নে জল খা অনেক হেসেছিস।
অদিতি বললো, বাঃ এরকম সর্টিয়ালি করলে চলবে না, তুমি নির্মাল্যেরটা বলো।
এটারও সাক্ষী মিত্রাদি। মিলি বললো।
হ্যাঁ। তুমি যা বললে ঠিক বলেছো। নির্মাল্যের দিকে তাকালাম, কি রে।
নির্মাল্য মাথা নীচু করে ফিক ফিক করে হাসছে।
ওরো কি সেম ব্যাপার। ছোটমা বললো।
না ওরটা একটু অন্যরকম, দেবাশীষকে যেমন মাথা আর পাছু বুঝিয়েছিলাম, ওকে মুতে নাম লিখতে বলেছিলাম।
আবার হাসি, আমি ক্যারিকেচার করে দেখাচ্ছি আর ওরা হাসছে।
বড়মা হাসতে হাসতে বললেন, ও ছোটো, আমাকে ধরে তোল, হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যাথা হয়ে গেলো।
কি মালকিন এবার চিনতে পারলেন সবাইকে।
তুই আবার মালকিন মালকিন করছিস। মিত্রা খেঁকিয়ে উঠলো।
যা বাবা। ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, খিদে পেয়ে গেছে।
সে কি রে এই তো খেলি দুঘন্টা হয় নি।
এতোটা হাসালাম যে, বড়মা তুমি বলো তোমার খিদে পেয়ে গেছে না।
খিদে পায় নি, তবে অবেলায় খেয়ে উঠলাম, বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেলো।
সবাই হাসলো।
টিনারটা বললি না। মিত্রা বললো।
ওরটা তোকে পার্সোনালি বলবো।
হাসির হাট ভাঙলো। বড়মা ছোটমা বেরিয়ে গেলেন।
দেবাশীষ বললো, কি হয়েছে মিত্রার।
আমি এডিট করে সংক্ষেপে সমস্ত ব্যাপারটা বললাম।
দেবাশীষ বললো কি বলছিস তুই। ওদের চোখ কপালে উঠেছে। মিত্রা মাথা নীচু করে বসে আছে।
আর বলিস না। এবার সাতদিন গ্যারেজ। এই ডাক্তারবাবু এলেন বলে।
নাম কি।
পাশেই থাকেন দাদার বন্ধু ডাক্তার সামন্ত।
ডাক্তার সামন্ত! তুই চিনিস না।
চিনব কি করে, পেসেন্ট হয়ে কখনো যাই নি তো।
নিওরোর টপ। এশিয়ায় দশজনের মধ্যে একজন।
বলিস কিরে, ভদ্রলোককে দেখে একেবারে বোঝা যায় না।
বলতে বলতেই ডাক্তারবাবুর গলা পেলাম। কই আমার পেসেন্ট কোথায়।
আমি দরজার সামনে এগিয়ে গেলাম।
বাবা এতো বেশ বড় গল্পের আসর দেখছি।
কই মা কেমন আছো।
ভালো।
তোমার চোখমুখতো ভালো বলছে না।
বড়মা ঘরে এসেছেন সামন্ত ডাক্তারের পেছন পেছন।
ডাক্তারবাবু দেখলেন। ওর পায়ে কিসব ঠোকাঠুকি করলেন।
অনি বাবা একটা কাগজ পেন দেতো।
আমি টেবিলের ওপর থেকে কাগজ পেন এনে দিলাম। উনি ওষুধের নাম লিখলেন। নিচে নিজের ফোন নম্বরটা দিলেন।
শোন এই ওষুধটা তোকে হয়তো দেবে না, তবে তুই ফোন করতে বলবি আমায়, কোথা থেকে নিবি।
সকালে যে দোকান থেকে ইঞ্জেকসন নিয়ে এলাম সেই দোকান থেকে।
কোথায় বলতো দোকান টা।
ট্রাংগুলার পার্কের কাছে। এখুনি নিয়ে আসি।
যা। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললেন, মা তোমার সাতদিন রেস্ট, এবাড়ি থেকে একেবারে বেরোনো যাবে না। খালি খাওয়া দাওয়া আর ঘুম।
মিত্রা মাথা নীচু করে বসে আছে।
আমি দেবাশীষকে বললাম চলতো দেবাশীষ।
দেবাশীষ উঠে এলো। ওর গাড়ি নিয়ে ওষুধটা নিয়ে এলাম। ডাক্তারবাবু ওদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। আমায় দেখে বললেন, তোকে দিয়েছে।

 
হ্যাঁ। আপনার সইটা চিন্তে পেরেছে।
দেখি।
আমি ওঁর হাতে ওষুধটা দিলাম। ঠিক ওষুধ দিয়েছে। উনি কি ভাবে খেতে হবে বলেদিলেন। সাতদিন পর বাড়ির বাইরে বেরোবার পারমিশন দেবেন।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, শুনে নে, ঘ্যানর ঘ্যানর করবি না।
অনি ঠিক বলেছে মা। তুমি এই বাড়ির মধ্যে থাকবে, খুব বেশি হলে নিচের বাগানে ঘুরতে যাবে। আজ রাত থেকে ওষুধ চালু করে দাও। আমি যাই নিচে গিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে একটু আড্ডা মারি।
আমরা সবাই হেসে ফেললাম।
ডাক্তারবাবুকে নিচে পৌঁছে দিলাম, ছোটমা বললেন অনি দাঁড়া এগুলো একটু ধর।
আমি একবুক নিঃশ্বাস নিয়ে বললাম, কি দারুন গন্ধ।
দেবো কান মূলে।
ছোটমার সঙ্গে ট্রে ভাগাভাগি করে ওপরে নিয়ে এলাম, আমায় দেখে মিত্রা নামতে চাইছিলো, টিনা বললো তোমায় যেতে হবে না মিত্রাদি, আমি যাচ্ছি। টিনা আমার হাত থেকে একটা ট্রে নিয়ে বিছানার ওপর রাখলো। আমি ছোটমার হাত থেকে ট্রে নামিয়ে রাখলাম।
এবার একরাউন্ড চা। আমি বললাম।
ওটা গেল আগে, তারপর দিচ্ছি। ছোটোমা বললেন।
তথাস্তু।
টিনা, মিলি, অদিতি হেসে ফেললো।
ছোটমা চলে গেলেন। আমরা খেতে খেতে কথা বললাম, কলেজ লাইফের কথা কর্মজগতের কথা।
দেবাশীষ বলে উঠলো। কালকের ঘটনাটা তুই দারুন দিয়েছিস।
তুই কার কাছ থেকে শুনলি।
আবার কে চম্পক।
তোকে ফোন করে বললো!
হ্যাঁ। আক্ষেপ করছিলো, আমাকে দিলে না। দিয়েছি কাঁচা কাঁচা খিস্তি। তারপর বললো সব ঘটনা। আমিও বললাম, অনি বলে আপনার চাকরিটা গেলো না, না হলে কি হতো বুঝতে পারছেন, ওই হাউস থেকে কেউ বেরোয় না তাড়ানো হয়, আপনি আর কোথাও চাকরি পেতেন। চুপ করে গেলো। তারপরের ব্যাপরগুলো বল।
সে অনেক কথা, তোকে একদিন গিয়ে বলবো।
আমি কিছু কিছু জানি। তবে মালটাকে তুই দারুন টাইট দিয়েছিস। তোকে আমার প্রয়োজন হবে।
যখন প্রয়োজন হবে বলিস, অবশ্যই সাহায্য করবো।
আমিতো টিনার মুখ থেকে শুনলাম, খবরটা। মিত্রার শরীর খারাপ, সঙ্গে সঙ্গে ডিসিসান।
আমারি জানানো উচিত ছিলো।
তোর সকালের ম্যাসেজটা পড়লাম, ১১টার পর। ওই কানা রাতে কি করছিলি।
ফিরছিলাম।
কোথা থেকে।
বিশ্বযুদ্ধ করে।
মিত্রা মাথা নীচু করে মুচকি মুচকি হাসছে।
দেবাশীষ ইশারায় একটা ইঙ্গিত করছিলো, আমি ইশারাতেই ওকে বললাম না।
ও হাসছে কেনো রে।
তুই জিজ্ঞাসা কর।
আমি তো ভাবলাম, কাল রাতেই কিছু একটা হয়েছে।
ঠিকই ধরেছিস, কাল থেকেই চলছিলো। আজ বাস্ট আউট হলো। সকালের সেই দৃশ্য দেখলে তুই ঘাবড়ে যেতিস।
মিত্রা তোর ফোন নম্বরটা দে।
মিত্রা ওদের ফোন নম্বর দিলো। প্রত্যেকে মোবাইলে ফোন নম্বরটা সেভ করে নিলো। দেখতে দেখতে নটা বেজে গেলো। ওরা উঠলো। আমি মিত্রা নিচ পযর্ন্ত ওদের এগিয়ে দিলাম। গুডনাইট বলে সবাই চলে গেলো।
আমরা দুজনে নীচে এসে বসলাম, বড়মা রান্নাঘরে, ছোটমা টিভি দেখছে, সিরিয়াল। কিছুক্ষণ বসে দেখলাম, ছোটমা কথার ফাঁকে ফাঁকে বললেন, হ্যাঁরে অনি, তুই যে কলেজ লাইফে এই তেঁদড়ামো করতিস, কে শেখাতো তোকে, মিত্রা।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে, না মিথ্যে বলবো না, আমার মাথায় তখন নিত্য নতুন বুদ্ধি আসতো, ইনস্টেন্ট, একচুয়েলি গ্রামের ছেলে তো শহরে এসে দাদা হতে হবে, তাই এসব আর কি।
তোর কি ছোট থেকেই দাদা হবার সখ।
কেনো।
মিত্রার মুখ থেকে ওখানকার গল্প শুনছিলাম, ওখানে তোকে সবাই দেবতা হিসাবে মানে।
ঠিক তা নয়। একটা সময় ছিল, যখন যে কেউ দায়ে অদায়ে ডাকলেই আমাকে পেতো। তাছাড়া আমার একটা প্লাস পয়েন্ট ছিলো আমি মা-বাপ হারা ছেলে। যেখানে খুশি চলে যেতাম বাধা দেবার কেউ নেই।
বাজে বকিস না।
এই দেখ সত্যি কথা বললেই বাজে বকা হয়ে গেলো।
ছোটো, কি বক বক করছেরে অনি।
দেখনা যা জিজ্ঞাসা করছি তার উত্তর না দিয়ে উল্টো গল্প ফাঁদছে।
ওটা ওর দাদার থেকে পেয়েছে। কিছুতো পেতে হবে, সোজা কথা কোনোদিন সোজা করে বলে না।
আমি উঠে রান্না ঘরে চলে গেলাম।
ছোটমা মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো, চললেন তেল মারতে।
আমি হাসলাম।
রান্নাঘরে গিয়ে বড়মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
ওরে ছার ছার পুরে মরবো।
কি ভাজছো।
মাছের ডিমের বড়া, খাবি।
দেখলাম, মিত্রাও আমার পেছন পেছন উঠে এসেছে।
ওকে একা নয়, আমিও পেছনে আছি।
ছোটোরে, ওদের একটা প্লেটে দেতো।
ছোটোমা উঠে এলেন।
দুর তোমার প্লেট, আমি থালা থেকে দুটো বড়া তুলে নিয়ে চলে এলাম।
আমাকে দে।
তোর জন্য প্লেট।
বড়মা ফিরে তাকালেন, তোকে দেয় নি।
না।
কি বদমাশ ছেলেরে বাবা। স্বার্থপর একের নম্বরের।
আমি বড়া খাচ্ছিলাম। মিত্রা আমার পাশে এসে বসলো। দেখলাম ওর প্লেটে চারটে। দিলাম একটা খাবলা। মিত্রা না না করে উঠলো। বড়মা চেঁচিয়ে উঠলেন কি হলো রে আবার।
দেখনা, আমার প্লেট থেকে দুটো তুলে নিল।

 
অনি।
না গো বড়মা মিথ্যে কথা বলছে।
মিত্রা, তুই আয় আমি দিচ্ছি।
মিত্রা রান্নাঘরে গেলো।
বাইরে হর্ন বেজে উঠলো, বুঝলাম সাহেবরা ঢুকলেন।
আমি হাত মুখ মুছে, সোফার এক কোনে বসলাম। মিত্রা বড়মার সঙ্গে রান্নাঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ফুসুর ফুসুর গুজুর গুজুর করছে।
মল্লিকদা ঘরে ঢুকলেন, কি অনিবাবু স্যার আজ সারাদিন গ্যারেজ।
কোনো কথা বললাম না।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন।
জীবনে প্রথম, বুঝলে ছোটো।
সারাদিন ওর কীর্তিকলাপ শুনলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে।

তাই। রাতে দুঘন্টা সময় দিও।
ছোটমা ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক দাঁড়াচ্ছে না।
বাবা, অনিবাবুর দেখি রাগও আছে। মল্লিকদা বললেন।
থাকবে না, যতই হোক রক্তমাংসের শরীর বলে কথা। ছোটমা বললেন।
কইগো শুনছো। অমিতাভদা চেঁচিয়ে উঠলেন।
দেখছিস মিত্রা দেখছিস, কেমন শাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছে, যেন বিশ্বজয় করে এলো।
আরে এদিকে এসো আগে।
আমি অমিতাভদার দিকে তাকালাম, মল্লিকদা সোফায় হেলান দিয়েছেন, ছোটমা, ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জলের বোতল বার করে গ্লাসে ঢালছেন। বড়মা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন, পেছন পেছন মিত্রা।
বড়মার দিকে তাকিয়ে বললেন, আজ অনি ফাটা ফাটি করে দিয়েছে। আমার দিকে ঘুরে, তুই কাল সারারাত অফিসে ছিলি বলিসনি তো কই।
আরো অনেক জায়গায় ছিলেন। ছোটমা বললেন, জুরি বেঞ্চে গোপন জবানবন্দী দিয়েছে।
তাই নাকি, কি করে জানবো।
ন্যাকা জানেনা যেন কিছু। কালকে যেগুলো ফুস ফুস করছিলে, আজ পুরোপুরি বললো। মনটা শান্তি হলো।
বলেছে বুঝি। তা ভালো, তা ভালো।
মিত্রা মুখে কাপর চাপা দিল।
হ্যাঁরে তুই তো মল্লিকের কাজ বারিয়ে দিলি।
দাদার দিকে তাকালাম।
কাল সারারাত যে ছেলেগুলোকে বুদ্ধি দিয়েছিলি, তারা আজ ১টার থেকে হাজির। আমাকে জালিয়ে পুরিয়ে মারলে, তোর কথা বলে, শেষে আমি বললাম, ও হঠাত আজ সকাল বেলা কলকাতার বাইরে চলে গেছে, এক সপ্তাহ বাদে আসবে। বেশ মল্লিকের টেবিলে চলে গেলো, তুই বেশ ভালো ভালো সাবজেক্ট দিয়েছিলি ওদের, লিখেছেও বেশ, আমি মল্লিককে বলেছি, একটু কারেকসন করে দে, কাউকে বল ছবিটবি তুলে আনতে। সুনীত তো থ তুই কাল ওই রাতের বেলা অফিস গেছিস শুনে।
ওর লেখাটা বলো।
মার্ভেলাস নামিয়েছিস। আমি সার্কুলেসনের ছেলেটাকে ডেকে বললাম যদি পারিস একটু বেশি ছাপিস।
কেনো বললে। রিটার্ন হলে তুমি কিনবে। আমি বললাম।
আচ্ছা আচ্ছা আর বলবো না।
বড়মা আমার আর মিত্রার মাঝখানে বসেছে, আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, যেটা তুই বললি, ওই মিউজিয়াম না কি।
হ্যাঁ।
তার জন্য এতো চেঁচামিচি।
তুমি নিউজের কিছু বোঝ।
দেখ কথা, শোনো, সাতকান্ড রামায়ন পরে বলে শীতা কার বাপ, আজ তিরিশ বছর তোমার সঙ্গে ঘর করছি, আমি বুঝবোনা কি তুমি বুঝবে।
বড়মা এমন ভাবে কথা বললেন সবাই হো হো করে হেসে ফললো।
এই বলে রাখি শোনো, মেয়েটা অসুস্থ সামন্ত ডাক্তার বলে গেছে, সাতদিন বেরোনো বন্ধ, অনিকে একেবারে বিরক্ত করবে না। যদি করো অনর্থ হয়ে যাবে।
ঠিক কথা একেবারে মনে ছিল না, কেমন আছিসরে। দাদা মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললেন।
মিত্রা মাথা দুলিয়ে বললো, ভালো।
এখন উঠে পরোতো দেখি, তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পরতে হবে।
অমিতাভদা ছোটমার দিকে তাকালেন, দিচ্ছি দাঁড়ান।
একেবারে দিবি না।
ছোটমা আমার জন্য একটু। আমি বললাম।
ছোটমা মিত্রার দিকে তাকালেন, কি রে তোরও লাগবে।
মিত্রা হেসে ফেললো।
বড়মা মুখ ভেটকে বসে রইলেন।
বড়মা অমিতাভদা যখন কথা বলেন বেশ মজা লাগে, মাঝ মাঝে, বড়মার কথা জানতে ইচ্ছে করে, কিন্তু কখনো তা প্রকাশ করি নি। এদের মধ্যেও একটা সুইট রিলেসন আছে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, ছোটমা মল্লিকদা অনেক রিজার্ভ। আমি বশে বশে নিউজ চ্যানেল দেখছি, মল্লিকদা দাদা কথা বলছেন, মিত্রা বড়মা কথা বলছেন।
ছোটমা চা নিয়ে এলো।
বুঝলে কাগজের অফিসে যারা কাজ করে তাদের চা খেতেই হবে। সেখানে কোনো লিমিট নেই। তাই না অনি।
তুমি এক কাজ করলে পারো। আমি দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম।
বল।
তুমি কিছু দিন অফিসে না গিয়ে বড়মাকে তোমার টেবিলে পাঠিয়ে দাও, বড়মার চা খাওয়া অভ্যাস হয়ে যাবে, তাহলে আর তোমার কোনো অসুবিধে হবে না।
বড়মা আমার কানটা ধরতে যাচ্ছিলেন আমি কান সরিয়ে নিয়ে বললাম, গায়ে চা পরে যাবে।
মিত্রা মুখ টিপে হাসতে গিয়ে কাপরে চা ফেললো।
ছোটমা বলে উঠলো তুই হাসতে গেলি কেনো, ওদের মা বেটার যুদ্ধ হচ্ছে হতে দে। দাঁড়া রাতে তোর মল্লিকদাকে তোর কীর্তি কলাপ বলবো।
দারুন নিউজ না। মল্লিকদা বললেন।
দারুন মানে। তুমি স্কুপ হিসাবে ট্রিট করতে পারো। আবার সাক্ষী কে মিত্রা।
আমি নিউজ গুলো লিখে দিতে পারি। মিত্রা বললো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। কালকের থেকে একলা থাকবি। আমি বেরোবো।
না না এরকম করিস না।
উইথড্র কর।
আচ্ছা উইথড্র।
চায়ের আসর ভাঙলো। তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পরলাম, আমার আর মিত্রার বিছানা আমার ওপরের ঘরে। আমি আগে ভাগে ঘরে চলে গেলাম। মিত্রা এলো একটু দেরি করে।
এসেই দরজা বন্ধ করে বললো, সবাই শুয়ে পরেছে। পটা পট করে ব্লাউজ, কাপর খুলে ফেল, বাথরুমের দিকে দৌড়ালো।
কি হলো রে।
তুই টাওয়েলটা দে।
আমি এগিয়ে দিলাম।
মিত্রা বাথরুমে ঢুকলো। কিছুক্ষণ পরে চেঁচিয়ে ডাকলো। বুবুন।
আমি বাথরুমের গেটের কাছে গেলাম। কি হলরে।
কি শীত করছে।
তার মানে।
জানি না।
বেরো তাড়াতাড়ি।
তুই আয়, দরজা খোলা।
আমি দরজা খুলে দেখি, মিত্রা নেংটো হয়ে দাঁড়িয়ে।
কি করছিলি।
পটি।
পাছু ধুয়েছিস।
ধুতে গিয়েই তো শীত লাগলো।
হাত পা মুছে নে। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপছে।
শায়া পরে বেরিয়ে এলো। কাপরটা কোনো প্রকারে জড়িয়ে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো।
ওষুধটা কে খাবে।
দে।
আমি একটা ট্যাবলেট আর জলের গ্লাস এগিয়ে দিলাম।
ও ট্যাবলেটটা মুখে দিয়ে জল খেলো।
নে এবার শুয়ে পর, আমি চাপা দিয়ে দিচ্ছি।
তুই শুবি না।
শোবো।
মিত্রার গায়ে একটা কম্বল চাপা দিলাম। ও বললো তুই চলে আয় তোকে জাপ্টে ধরে শুই, তাহলে শীতটা কমবে।
দাঁড়া লাইটটা নিবোই আগে।
আমি লাইটা অফ করে ছোটো লাইট জালালাম। ওর কম্বলের তলায় গিয়ে শুয়ে পরলাম।
কিরে শরীর খারাপ লাগছে নাকি।
না। মাথাটা একটু যন্ত্রণা করছে।
দাঁড়া টিপে দিই।
উঠে বসলাম, ওর মাথাটা টিপে দিলাম, ও উপুর হয়ে শুয়ে বললো কোমরটা টিপে দে, তাও দিলাম, তারপর বললো পা দুটো একটু টিপে দে, তাও দিলাম। কখন যে ও ঘুমিয়ে পরেছে বুঝতে পারলাম না। আমার গরম লাগছে, তবু আমি পাখাটা একটু কমিয়ে দিয়ে মিত্রার পাশে শুয়ে পরলাম ওর মাথায় হাত রেখে। কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। হঠাত প্রচন্ড গরম লাগলো, ঘুম ভেঙে গেলো। মিত্রার মাথায় হাত দিয়ে দেখি, গা পুরে যাচ্ছে, বড় লাইটটা জাললাম, ঘড়ির দিকে তাকালাম, দেড়টা বাজে। মাথাটা বন বন করে ঘুরেগেলো, টেবিলে একটা থার্মোমিটার ছিলো, কাগজের ডাঁই থেকে তাকে খুঁজে বার করলাম। মিত্রাকে ডাকলাম, ও গঁ গঁ করছে। বাধ্য হয়ে ওর বুকের কাপর সরিয়ে ব্লাউজের বোতাম খুলে বগলে থার্মোমিটার গুঁজলাম, সাড়েতিন জ্বর। এতরাতে কাকে ডাকি, মিত্রাকে কোনো প্রকারে জাগালাম, বললাম, জ্বর এসেছে, আমাকে একটু হেল্প কর। চোখ জবা ফুলের মতো লাল।
আমার শীত করছে।
ঠিক আছে।
মানিপার্টসের ভেতর সব সময় কেলপোল নিয়ে ঘুরি, ভাবলাম একটা দিয়ে দিই। তারপর ভাবলাম না আগে মাথায় জল ঢালি। আর জল পট্টি দিই। মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
কি ভাবছিস।
কিছু না। তুই মাথাটা এদিকে নিয়ে এসে শো। মাথাটা একটু ধুইয়ে দিই।
শীত করবে।
করলে কি করবো বল, জ্বরটা তো নামাতে হবে।
ওকে ধরে ধরে এপাশে শোয়ালাম। একটা পলিব্যাগ জোগার করে তাকে কেটে দুটুকরো করে ওর মাথার তলায় দিলাম। চুলগুলো যাতে না ভেঁজে তার ব্যবস্থা করলাম। তারপর বাথরুম থেকে বালতি করে জল এনে ওর মাথায় ঢাললাম। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে ঢালার পর ও বললো, অনি এবার তুই বন্ধ কর।
কেনো! কি হয়েছে বল, অশ্বস্তি হচ্ছে।
না শীত করছে। ওর দাঁত ঠক ঠক করে কাঁপছে।
চোখের লালাভাবটা কিছুটা কম, ছল ছল করছে। আমি ওর মাথা শুকনো করে মুছিয়ে দিলাম, মুখটা ভিঁজে টাওয়েল দিয়ে মুছিয়ে দিলাম।

আর দিসনা, শীত।
 
বাধ্য হয়ে মানিপার্টস থেকে কেলপোল বার করে দিলাম। নে এই ট্যাবলেটটা খেয়ে নে।
ওকে মুখের মধ্যে ট্যাবলেটটা দিয়ে জল ঢেলে দিলাম এক ঢোক খেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
আর না।
এই জন্যই তোদের এত রোগ, জলখাবি না মুতবিও না।
মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো।
হাসিস না গা জ্বলে যায়।
মিত্রা দুচারবার হাঁচি মারলো।
বুঝলাম ঠান্ডা লেগেছে।
মগে করে জল এনে যে পাঞ্জাবীটা সকালে ছিঁড়েছিলো তার থেকে দুটুকরো ছিঁড়ে নিলাম। খুঁজে খুঁজে একটা পিচবোর্ড বার করলাম।
কি করবি।
হাত পাখা পাবো কোথায় এই কানা রাতে, হাওয়া দিতে হবে তো।
ওর মাথার শিয়রে বসে জল পট্টি দেওয়া শুরু করলাম।
মিত্রা ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
তোকে খুব কষ্ট দিচ্ছি না।
একেবারে না। কথা বলিস না।
দেখিস আমার কিছু হবে না। কই মাছের জান।
জ্ঞান দিস না। জ্বরটা আগে নামাই তারপর তোর কথা শুনবো, এখন ঘুমোবার চেষ্টা কর।
ঘুম আসছে না।
আসবে।
দেখতে দেখতে এক ঘন্টা হয়ে গেলো। আবার থার্মোমিটার বগলে গুঁজলাম।
কিরে আমার ব্লাউজের বোতাম খোলা কেনো।
তোর মুনু চুষছিলাম।
একবার ডাকবি তো। আমিও একটু চুষতাম।
তুই থামবি।
টেনসন করছিস কেনো, দেখবি কিচ্ছু হবে না।
জ্বর এখন আড়াই।
আবার জলপট্টি দেওয়া শুরু।
আবার এক ঘন্টা পর দিলাম, দেখলাম জ্বরটা নিরানব্বই। জলপট্টি দেওয়া থামালাম।
বুবুন গরম লাগছে।
লাগুক কম্বল খোলা যাবে না।
ঠিক আছে তুই একটা পাতলা চাদর গায়ে দে।
ওর কথা মতো তাই করলাম।
একবারে উঠবি না আমি একটু নীচ থেকে আসছি।
কেনো।
তোমার সেবা করার জন্য।
নীচে গিয়ে রান্নাঘর থকে সরষের তেল বার করলাম, গ্যাস জালালাম, তেলটা গরম করে সাঁড়াসি দিয়ে ধরে ওপরে নিয়ে এলাম।
বুবুন বাথরুমে যাবো।
এর মধ্যে তোর আবার বাথরুম পেলো। যেতে হবে না আমি মগ এনে দিচ্ছি মোত।
মিত্রা আমার কথা শুনে হেসে ফেললো।
তুই আমাকে একটু ধর আমি যেতে পারবো।
আবার ওকে ধরলাম। ও আমার কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, বাথরুমের সামনে গিয়ে বললাম ভেতরে যেতে হবে না, এখানে মোত।
ঠিক আছে তুই চোখ বন্ধ কর।
ন্যাকামো করিস না। সব দিয়ে থুয়ে এখন বলে চোখ বন্ধ কর।
আমার হবে না।
ঠিক আছে বন্ধ করলাম।
আওয়াজ হলো। থামলো। বুঝলাম শেষ হয়েছে। কি হলো রে।
একটু মগে করে জল এনে দে।
কেনো।
ধুতে হবে না।
উঃ।
আবার মগে করে জল দিলাম। ধরে ধরে খাটে এনে শুইয়ে দিলাম। দাঁড়া থার্মোমিটারটা দিই।
কতবার দিতে লাগে।
তোর জানার দরকার আছে।
এবার জরটা দেখলাম, সারে আটানব্বই।
কত।
সামান্য আছে। পাখাটা বন্ধ করলাম।
পাখা বন্ধ করছিস কেনো, সেবা করবো।
মিত্রা হেসে ফেললো।
কাপর খোল।
ও কাপর খুললো।
ব্লাউজ খোল।
করবি।
হ্যাঁ করবো, আমার নুনু তোকে দেখে এই সময় শাল গাছ হয়েছে কিনা।
দেখি দেখি বলে আমার নুনুতে হাত দিলো, কোথায়রে এতো ছোট্ট হয়ে আছে।
থাক।
টেবিলের ওপর থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে এলাম, এখনো গরম আছে, আমি ফুটিয়ে নিয়ে এসে ছিলাম, প্রথমে ওর কোমর পিঠটা মালিশ করে দিলাম, তারপর বুকটা দিলাম, ও বদমাইশি করছে, মাঝে মাঝে আমার নুনুতে হাত দিচ্ছে, তারপর ওর চোখ মুখ কপাল ঘার মালিশ করলাম, তারপর বললাম, নে শায়া তোল।
ওখানে তেল লাগাবি নাকি।
হ্যাঁ। না হলে ঢুকবে না।
তোরটা দে একটু তেল লাগাই।
মিত্রা শায়া তুললো, ভালো করে দুটো পা পায়ের চেটো তেল মালিশ করলাম এবার বললাম ব্লাউজ পর।
এই তেল গায়ে।
যা বলছি কর।
তুই কিন্তু দারুন ম্যাসেজ করতে পারিস।
কেনো ভালো করতে পারি না।
ওতে তুই মাস্টার।
মিত্রা কাপর ব্লাউজ পরলো।
নে এবার শুয়ে পর।
ও শুয়ে পরলো, আমি ওর পাশে শুয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম, ও আমাকে জাপ্টে ধরেছে।
বুবুন।
উঁ।
তোকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি না।
ঘুমোবার চেষ্টা কর।
জানিস বাবার কথা মনে পরে যাচ্ছে।
কেনো।
অসুস্থ হলে বাবাও ঠিক তোর মতো রসুন তেল দিয়ে সারা শরীর মালিশ করে দিতো। বড়ো হওয়ার পর খালি পা দুটো মালিশ করে দিতো।
ও।
আজ তোর মালিশ করা দেখে বাবার কথা মনে পরে গেলো।
বুঝলাম মিত্রা কাঁদছে।
আবার কাঁদে।
জানিস আজ সারা দিন কেঁদেছি। ছোটমার কাছে আমিও কনফেস করেছি।
ভালো করেছিস।
তুই আমাকে ভীষণ ভালোবাসিস না।
একেবারে না।
ভালো না বসলে কেউ এই ভাবে করতে পারে না।
সম্পত্তি দিয়েছিস, করতে হবে।
মিত্রা চুপচাপ।
পাখাটা একটু চালিয়ে দিবি।
না। আমি হাওয়া দিচ্ছি।
আমি পিচবোর্ডটা নিয়ে হাওয়া দিতে আরম্ভ করলাম।
বুবুন।
উঁ।
আমাকে এখান থেকে কোথাও দূরে নিয়ে যাবি।
যাবো।
কোথায় বল।
একটু ভালো হয়ে ওঠ নিয়ে যাব।
সেখানে তুই আর আমি, আর কেউ থাকবে না।
সেতো সমুদ্রের মাঝখানে যেতে হয়, কিংবা কোনো নির্জন দ্বীপে।
তাই যাবো।
আচ্ছা।
কোথায় নিয়ে যাবি।
ভেবে দেখি।

 
ও আমার হাতটা টেনে বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলো। চোখ বন্ধ। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। কথা বলতে বলতে কখন ঘুমিয়ে পরলো বুঝতে পারলাম না। আমি ওর গায়ে একটা পাতলা চাদর চাপা দিয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলাম।
ওর পাশ থেকে সরে এসে ইজিচেয়ারে বসলাম।
সাড়ে চারটে বাজে। জ্বর দেখলাম, না এখন নেই।
একটু তন্দ্রা মতে এসেছিলো।
দরজা ঘট ঘট করতে তাকালাম, সোয়া পাঁচটা, পূব আকাশ সবে ফর্সা হয়েছে।
দরজা খুললাম, ছোটমা। চায়ের কাপ হাতে।
লাইট জেলে ঘুমোচ্ছিস। ভেতরে এলেন, কিরে এসব কি, বালতি মগ তেলের বাটি সাঁড়াসি, জলপট্টি।
ছোটমাকে ইসারায় চুপ করতে বললাম।
তারপর চা খেতে খেতে সব বললাম, এই মাত্র চারটে নাগাদ ঘুম পারিয়েছি। ছোটমা আমাকে বুকে জরিয়ে ধরলেন, কাপরের খুঁট দিয়ে চোখ মুছলেন। ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, দাদা এসে হাজির। সবাই চুপচাপ। থম থমে মুখ। ছোটমা বললেন, যা আমার ঘরে গিয়ে একটু শুয়ে পর। দুরাত তোর ঘুম হলো না, শরীর খারাপ করবে।
দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, ডাক্তারবাবুকে একবার ডাকো।
দাঁড়া, আলো ফুটুক, ডাকছি।
ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমাকে একটু চা খাওয়াবে।
চা কেনো, ছোটো ওকে একটু হরলিক্স করে দে। বড়মা বললেন।
ছোটমা বেরিয়ে গেলেন। দাদা ইজি চেয়ারে, আমি দাদার পাশে মাটিতে, বড়মা মিত্রার মাথার শিয়রে। মল্লিকদা চেয়ারে।
মল্লিক আমার সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে আয় তো।
মল্লিকদা বেরিয়ে গেলেন। সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে এসে দাদাকে দিলেন। দাদা একটা সিগারেট ধরালেন। বুঝেছো।
বলো।
তোমরা কয়েকদিনের জন্য কোথাও ঘুরে এসো। আমি মল্লিক ঠিক ম্যানেজ করে নেবো।
সেই ভালো।
কিরে মল্লিক পারবো না।
খুব পারবো।
কোথায় যাই বলোতো।
অনির বাড়ি চলে যাও। মিত্রা ওখানে গিয়ে কয়েকদিন বেশ ফুরফুরে ছিলো লক্ষ করেছিলাম।
কিরে অনি যাবি।
যাওয়া যায় তবে আগে ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞাসা করো উনি কি বলেন।
মেয়েটার নার্ভের ওপর খুব চাপ পরে গেছে। সহ্য করতে পারে নি।
সামন্ত তাই বলছিলো, বিকেলে এসেছিলো দেখে বললো, মা তোমার চোখটা ভালো ঠেকছে না, ওষুধ লিখে দিলো। আমার দিকে তাকিয়ে বড়মা বললেন হ্যাঁরে ওষুধটা খাইয়েছিস।
আমি মাথা দোলালাম।
জ্বরটা কখন এলো।
দেড়টা।
ডাকলিনা কেনো।
শুতে গেলে সাড়ে এগারোটা, ডাকি কি করে।
পাকামো করিস না। একা একা সব করলি।
কি করবো।
মল্লিক তোরাও কিছু জানতে পারিস নি।
হ্যাঁ বাথরুমে আওয়াজ হচ্ছিল, ভাবলাম কেউ বাথরুম ইউজ করছে। প্রায় দুটো পযর্ন্ত জেগেছি, ছোটো অনি আর মিত্রার সম্বন্ধে গল্প করছিলো।
ছোটমা চা হরলিক্স নিয়ে এলেন। সবাইকে চা দিলেন আমাকে হরলিক্সের গ্লাসটা এগিয়ে দিলেন। এখান থেকে দুটো বিস্কুট নে।
নিলাম।
তোমায় বলছিলাম, দেখো বাখরুমে ঘট ঘট শব্দ হচ্ছে।
হ্যাঁ।
তখন অনি মিত্রার মাথায় জল ঢালছিলো, সাড়ে তিন জ্বর উঠেছিলো।
সব্বনাশ।
তুই কি করলি সেই সময়। দাদা বললো।
আমি প্রথমে জল ঢাললাম মাথায়, তারপর আমার কাছে ক্যালপল ছিলো দিলাম, সারারাত জলপট্টি দিলাম, রান্নাঘর থেকে তেল গরম করে এনে মুখে কপালে, পায়ে পায়ের চেটো, আর হাতে মালিশ করলাম। এই তো ঘন্টা খানেক হলো ঘুমিয়েছে।
তুই তো ট্রেন্ড নার্স ।
ছোটমা মুখ টিপে হাসলো।
বড়মা দাদার দিকে তাকিয়ে বললো মস্করা হচ্ছে।
তুমিই বলো বড়, ওই সময় মাথা ঠিক রেখে অনি ঠিক ঠিক কাজ করেছে কিনা।
তোমার মতো তো নয় কিছু হলেই দশবার পায়খানায় দৌড়বে। ও ছোট আর আমার ছেলে।
মিত্রা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো।
মেয়েটা জেগে গেলে ঘার মটকাবো।
যাই ডাক্তারকে ধরে নিয়ে আসি।
দাদা চলে গেলেন। ছোটমা ইজি চেয়ারে বসলেন। আমি ছোটমার কোলে মাথা দিলাম, ছোটমা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
যা না অনি, আমরা তো আছি, ছোটোর ঘরে গিয়ে একটু শুয়ে নে। বড়মা বললেন।
না ঘুম পাচ্ছে না।
থাক। ছোটমা বললেন।
কি বিপদে ফেললে বলতো মেয়েটা। বড়মা ছোটোর দিকে তাকিয়ে বললো।
সবই ওপর ওয়ালার ইচ্ছে, না হলে আমাদের কাছেই বা আসবে কেনো।
ঠিক বলেছিস, কাল থেকে যেন একটা ঝড় যাচ্ছে।
অমিতাভদা, ডাক্তারবাবুর গলা পেলাম।
কি অনিবাবু ধূম জ্বর এসেছিলো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম, ছোটমা ইজিচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন, ডাক্তারবাবু ইজি চেয়ারে বসলেন। মল্লিকদা চেয়ারটা দাদার দিকে এগিয়ে দিলেন, ওরা দুজনে মিত্রার পায়ের দিকে বসলো।
বলোতো কি কি হয়েছিলো, আমি একটু মিলিয়ে নিই আমার সঙ্গে।
আমি পঙ্খানুপুঙ্খরূপে যা হয়েছিলো, তাই বললাম।
তুমি কি ওর বুকে পিঠে তেল মালিশ করেছিলে।
মাথা নীচু করলাম।
লজ্জার কিছু নেই তখন তুমি নার্স।
মাথা দেলালাম।
দ্যাটস গুড।
এমনি তেল না গরম তেল।
বললাম তেল গরম করে মালিশ করেছি।
ওঃ ওয়ান্ডারফুল। ঝড়টা কাটলো। বুঝলে এডিটর।
মস্করা রেখে আসল ব্যাপারটা বলো তো সামন্ত। বড়মা বললেন।
কি হয়েছিলো জানো। ওর নার্ভগুলো হঠাত ক্র্যাম ধরে গেছিলো, তাই ও অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলো। ওটা কিন্তু ও করে নি, ওর নার্ভগুলো করেছিলো। কাল আমি একটা ইঞ্জেকসন দিলাম, নার্ভগুলোকে জাগাবার জন্য আর একটা দিলাম ঘুমোবার জন্য, তাহলে নার্ভগুলো তাড়াতাড়ি সতেজ হবে। বিকেলে যে ট্যাবলেটটা দিলাম, সেটা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য, কিন্তু নার্ভগুলো ঘুমিয়ে পরেছিলো, যখন জাগতে আরম্ভ করলো, তখন আড়মোড়া ভাঙলো, জ্বর এলো, ধুম জ্বর। সেই সময় যা যা করার দরকার অনিবাবু তা করেছে। আজ দেখবে ও অনেক সতেজ থাকবে। কিন্তু একটা কথা এখান থেকে নড়ানো যাবে না। সাতদিন। তারপর তোমরা যেখানে যাবার যাও। তখন ঝড় একেবারে কেটে যাবে, ভবিষ্যতে ওকে একেবারে বেশি স্ট্রেইন দেওয়া যাবে না। একবার ব্রেক ডাউন করলেই, পঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা। ছোট এবার একটু চা হোক। তারপর মাকে দেখছি। ছোটমা বেরিয়ে গেলেন।
তুমি আগে একবার দেখো, তারপর চা খাবে। বড়মা বললেন।
আর একটা ব্যাপার এর মধ্যে ঘটেছে। আমি বললাম।
বলো।
কালকে ও ক্লাবে গেছিলো……..
হ্যাঁ তোমার ছোটমা আমাকে বৈকালে ঘটনাটা বলেছেন। ওটাও তুমি ভালো কাজ করেছো। সবই ফাস্টট্রেসন বুঝলে অনিবাবু। কখনো হতাশায় ভুগবে না, ভুগলেই বিপদ। কি থেকে কি হয় বলা মুস্কিল। আমরা পযর্বেক্ষণ করে যতটা পারি ওষুধ দিই।
ছোটমা চা নিয়ে ঘরে ঢুকলেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোকে কম করে দিলাম, দুরাত তোর জাগা হয়ে গেলো।
তাতে কিছু হবে না। ও খুব স্ট্রং ম্যান।
থামো তুমি। ছেলেটাকে পিষে মেরে দিলে এরা। বড়মা বললেন।
বুবুন। মিত্রা চোখ চাইলো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। মিত্রা আমার দিকে তাকালো।
বড়মা মিত্রার মাথায় হাত রাখলো। তোকে চিন্তা করতে হবে না আমরা সবাই আছি।
ডাক্তার চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, বুবুন কে।
বড়মা বললেন, অনির আর এক নাম। মিত্রা ওকে বুবুন বলে ডাকে।
বাঃ বেশ মিষ্টি তো নামটা, অনি এ নামটা তোমার কে রেখেছিলো।
আমার মা।
ও।
মিত্রার চোখ দুটো ছল ছলে।
কাঁদছিস কেনো। বড়মা ওর কপালে চুমু খেলেন।
তোমাদের অনেক কষ্ট দিচ্ছি।
মেলা বকিস না আর। একবার পাঁঠাটাকে জোর করে ডাকতে বলতে পারতিস। তাহলে এতোটা কষ্ট হতো না।
মিত্রা হেসে ফেললো।
কি কষ্ট হচ্ছে মা।

 
মিত্রা শুয়ে শুয়ে কাপেলের দিকে চোখ তুলে, ডাক্তার বাবুর দিকে তাকালো। না কষ্ট হচ্ছে না।
ডাক্তারবাবু এগিয়ে গেলেন।
স্টেথো দিয়ে বুকটা দেখলেন। একটু কফ হয়েছে বুকে, আমি একটা ওষুধ লিখে দিচ্ছি। হাত পায় যন্ত্রনা করছে।
করছিলো কাল রাতে, এখন করছে না।
ঠিক আছে, স্নানের আগে ভালো করে তেল মেখে স্নান করবে, গরমজল ঠান্ডাজল মিশিয়ে। নর্মাল ডায়েট। পারলে একটু দুধ খাওয়াতে পারবে।
এখানে গোয়াল ঘর পাই কোথায় বলতো।
সেও ঠিক। আমাদের বাজারে যে দুধ পাওয়া যায় তাই দাও।
অমিতাভদার ফোনটা বেজে উঠলো।
আরে আপনি আর ফোন করার সময় পেলেন না, এই সাত সকালে। ধরুন যে লিখেছে তার সঙ্গে কথা বলুন।
অমিতাভদা ফোনটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন, হ্যালো।
শোনো তোমার মতো দুটাকার সাংবাদিককে উড়িয়ে দেবার ক্ষমতা আমি রাখি, আজই লেখাটার সম্বন্ধে একটা অবজেকসন পাঠাচ্ছি, অমিতাভকে বলে ছেপে দেবে।
মাথাটা, গরম হয়ে গেলো, শোনেন আপনার মতো মন্ত্রীকে আমি জন্ম দিই, আপনার নাম করে এবার সিরিয়াল লিখবো, দেখি আপনার চেয়ারটা আপনি কি করে ধরে রাখেন, সাতদিনের মধ্যে আপনাকে রিজাইন দিতে বাধ্য করাবো, তখন লালাবাতি নিয়ে ঘোরা বেরিয়ে যাবে, আর কালকের সকালের কাগজে আপনার ছেলের মধুচক্রের ব্যাপারটা ছাপবো উইথ ফটো, দেখি আপনার কেমন ক্ষমতা, আপনার দম থাকলে আপনি আমাকে আটকান। আর একটা কথা শুনে রাখুন যার কাছে নাম লিখিয়ে আপনি মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন, ওই লিস্টে সবার প্রথম আমার নামটা আছে, একটু ভালো করে জেনেনেবেন। ফোনটা কেটে দিলাম।
সবাই আমার কথা শুনে থ। মল্লিকদা আমার চোখ মুখ দেখে ভয় পেয়ে গেছে, বুঝতে পারছে, অনি এবার একটা কেলোর কীর্তি করবে, এটা মল্লিকদা অনেকবার টের পেয়েছে।
আবার ফোনটা বেজে উঠলো। দাদা ধরলেন।
হ্যাঁ বলো।
এ্যাঁ। হ্যাঁ ও আমাদের নতুন মালিক। নিজেই লিখেছে। আমি কে বলবো বলো, আমি একজন সম্পাদক, ও লেখা দিলে আমাকে ছাপতে হবে, মালিক বলে কথা। একটা কাজে কাল এসেছিলো। ধরো।
হ্যাঁ বলুন।
আরে ভাই তুমি মাথা গরম করছো কেনো।
কি হলো আপনার ক্ষমতা শুকিয়ে গেলো।
না। মানে।
নিগোশিয়েসনে আসুন।
বলো।
এ মাসে আপনার দপ্তর থেকে ৩ কোটি টাকার এ্যাড বেরোচ্ছে, ২ কোটি আমার কাগজের নামে পাঠিয়ে দেবেন আজকের মধ্যে। না হলে কাল থেকে সিরিয়াল চলবে, আর আপনার চেয়ারটা পাওয়ার জন্য যে ওঁত পেতে রয়েছে, তার নামে ভালো ভালো কথা বলে, চেয়ারটা পাইয়ে দেবো।
ঠিক আছে, ঠিক আছে।
আর কিছু।
কোনো ফোনটন যেন করতে না হয়। ধরুন।
আমি অমিতাভদার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বাথরুমে গেলাম।
আমি বাথরুম থেকে শুনতে পাচ্ছি অমিতাভদার কথা, মন্ত্রীমহাশয় পারলে এখুনি এসে অমিতাভদার কাছে এসে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু আমি যেন আর যেন না লিখি ওনার সম্বন্ধে। এটা অমিতাভদাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি যা বলেছি উনি মেনে নেবেন।
ডাক্তারবাবু বললেন, এডিটর ছেলেটা খাঁটী ইস্পাত খুব সাবধানে ব্যাবহার করো, না হলে হাত কেটে ফালাফালা হয়ে যাবে। কি আগুন দেখেছো। একটা মন্ত্রীকে পযর্ন্ত ঠুসে দিলে।
বলনা বলো, এবার সামন্তর কথার উত্তর দাও। বোবার মতো বসে আছো কেনো, বোবার শত্রু নেই, মনে রাখবে ও আমার ছেলে একটাও ভুল কাজ করবে না, প্রয়োজনে ভুল কাজ করবে, আবার স্বীকারও করে নেবে। এতদিন হলো এই ভাবে কোনোদিন কোনো মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছো। কি বল মিত্রা।
মিত্রা কি বললো, শুনতে পেলাম না। বাথরুম থেকে চোখে মুখে জল দিয়ে বেরোলাম।
বাবা। তুই সকাল বেলা ভালো সওদা করলি তো। মল্লিকদা এমন ভাবে বলে উঠলেন, আমিও না হেসে পারলাম না।
যাই বল মল্লিক অনির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, কিরে অনি মন্ত্রী পুত্রের কেলাঙ্কারিটা দে, ছেপে দিই।
মরন। বড়মা এমন ভাবে বললেন, সকলে হেসে ফেললো।
অফিসে যাও আজই যদি এ্যাডের ব্যাপারটা কনফার্ম না করে কাল দেবো। আমার অনেক টাকার দরকার।
একটা নিউজের দাম দু কোটি, তুই তো চম্পকের চাকরি খেয়ে নিবি।
তোমরাইতো বাঁচিয়েছো চাকরিটা, কালকে ও বলছিলো।
শুধু আমায় একা দোষ দিও না।
লক্ষণও বুঝি দোসর ছিলো।
ছোটমা ফিক করে হেসে ফেললো। মল্লিকদার মাথা নীচু।
চলো আমরা বুড়ো বুড়িরা এখন নিচে যাই। ডাক্তারবাবু বললেন।
ওকে এখন কি দেবো। বড়মা বললেন।
ডিমটোস্ট বা বাটার টোস্ট, ভালো করে সেঁকে, আর দুধ না হলে হরলিক্স বা বোর্নভিটা।
অনি, ওকে হাতমুখ ধুইয়ে দে নিয়ে আসছি। ছোটমা বললেন।
কিছুক্ষণ পর ছোটমা ফিরে এলেন, হাতে মিত্রার কাপর শায়া ব্লাউজ। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললেন, ওগুলো ছেড়ে রাখিস, লন্ড্রীর ছেলেটা আসবে দিয়ে দেবো।
মিত্রা ছোটমার দিকে তাকালো।
আর তাকাস নি ওই ভাবে, খালি একা একা মজা নিয়ে যাচ্ছিস, আমরা ফাঁকে পরে যাচ্ছি। ছোটমা বেরিয়ে গেলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। কিরে ছোটমা কি বলে।
শুনলি তো।
তার মানে, আমার প্রেসটিজে পুরো গ্যামাকসিন।
বেশ করেছি।
ভালো। ওঠ।
দরজাটা বন্ধ কর।
কেনো।
কাপরটা কাল পরিয়েছিস। খালি জড়িয়ে দিয়েছিলি।
ও।
বাইরের দরজাটা বন্ধ করলাম।
ধর একটু।
কেনো।
সব কেনোর উত্তর দেওয়া যায়।
এগিয়ে আয়।
ও বিছানা থেকে এগিয়ে এলো। আমি ওর হাতদুটো ধরে দাঁড় করালাম, ও আমার বুকে ঢলে পরলো। আমি ওকে শক্ত করে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলাম। মিত্রা!
উঁ।
কি হলো।
মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো।
একটু খেয়ে নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পর।
মিত্রা বুক থেকে মাথা তুলছে না, কিরে বাথরুমে যেতে পারবি, না এখানে এনে দেবো।
না যাবো।
দাঁড়া।
আমি ওকে কোলে তুলে নিয়ে বাথরুমের দরজার সামনে নিয়ে গেলাম, এখানে বোস।
না, কমে গেছে। আমি ভেতরে যাই, তুই দরজাটা ভেজিয়ে দে।
আমি দরজাটা ভেজিয়ে দিলাম।
কি রে হলো।
হ্যাঁ।
দেখলাম ও বসে আছে। দাঁড়া।
উঠতে পারছি না।
আমি ওকে তুলে ধরলাম। উঃ কি ভাড়িরে বাবা।
মিত্রা হেসে ফললো।
নে দাঁত মাজ। আমি ডাক্তারবাবুকে তোর নতুন উপসর্গটা বলি।
ও কিছু না, বলতে হবে না।
ও দাঁত মাজলো, মুখ ধুলো আমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছি।
তোর এতো রাগ।
তুই বল মানসিক পরিস্থিতি এরকম, সাত সকালে ফোন, মাথাটা গরম হবে না।
ভালোই হলো। দেবে।
ওর বাপ দেবে, অমিতাভদা অফিসে পৌঁছলে ওর সচিবকে পাঠিয়ে দেবে।
তাই বলে দু কোটি!
ওটা তোর।
শুধু আমার একার।
থাক এখন এসব আলোচনা।
কাল নীপা ফোন করেছিলো।
কখন।
যখন পেয়ারা পারছিলাম, তুই রবীনের সঙ্গে কথা বলছিলি তখন।
কি বললি।
বোললাম, তোর শরীর খারাপ। জিজ্ঞাসা করলো সব বললাম।
তোরটা আমার ঘারে চাপিয়ে দিলি।
কি মজা বলতো, আজ ওরা চলে আসবে।
ঠিক আছে, তাড়া তাড়ি কর। ছোটমা এসে দরজায় দাঁরিয়ে আছে।
থাকুক।
থাকুক কিরে। তুই তো আমাকে ফুল ঢিলে করে দিচ্ছিস।
বেশ করছি।
ওকে ঘরে নিয়ে এলাম।
ওদিকে মুখ করে দাঁড়া।
আমি ফিরে দাঁড়ালাম।
ও শায়া ব্লাউজ পরে নিলো। দরজা খুললাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছোটমা এলেন, দুজনের জন্য খাবার নিয়ে।

 
তুই মুখ ধুয়েছিস।
আমি! কেনো!
মুখ ধুবি না।
কাল রাতে ঘুমিয়েছি।
না ঘুমলে মুখ ধুতে নেই। পিচাস। বেরো আগে।
ছোটমার ধমকানিতে ব্রাস নিয়ে গেলাম।
তুমি মুখে বললে কেনো, পিঠে দুচারঘা দিতে পারলে না।
ছোটমাকে বল, ডাক্তারবাবু এখনো যান নি।
আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম, ছোটমা নেই।
কিরে ছোটমা গেলো কোথায়।
তুই বলতে বললি, আমি বললাম, ছোটমা দৌড়ে নিচে চলে গেলো।
ও।
ঘড়ির দিকে তাকালাম, আটটা বাজে।
খেয়ে নে।
নিচে আওয়াজ পেলাম, অনি আমার সাক্ষাত দেবতারে এযাত্রায় মেয়েটা বেঁচে গেলো। কাল আমায় কি গালাগালটাই না দিলে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
বুড়ীমাসি।
তুই গালাগাল করেছিস।
না।
ওই যে বলছে।
দাঁড়া আসুক।
কোন কথা বলবি না। তোর প্রতি ওরও একটা অধিকার আছে।
মিত্রা মাথা নীচু করলো।
কিছুক্ষণ পর বুড়ীমাসি, ছোটমা ঢুকলেন। বুড়ীমাসির চোখের কোল ভারি, মিত্রা বুড়ীমাসির দিকে একবার তাকিয়ে মুখ নীচু করলো, বুড়ীমাসি, মাটিতে বসলো।
তুমি জানোনা ছোটমা, পই পই করে বারন করেছি, কে কার কথা শোনে।
আমি বুড়ীমাসির দিকে তাকালাম। বুড়ীমাসি চুপ করে গেলো। দেখেছো তোমার মিত্রাকে, যাও নিচে গিয়ে বোসো।
বুড়ীমাসি কিছুক্ষণ বসে নিচে চলে গেলো।
ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, ডাক্তার কি বললো।
সাবালক মেয়ে, শরীরের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে, সময় লাগবে। খাবার চার্ট দিয়ে গেলেন।
আমি গ্যারেজ।
দেবো কান মূলে, কি কাজ আছে রে তোর।
দাওনা দাও মুখে বলছো কেনো।
দেখলে তো কেশটা সকালে, তাহলে বলছো কেনো।
সত্যি অনি আমরা তো অবাক হয়ে গেছিলাম, তুই হয়তো ত ত করবি। তোকে নিয়ে নিচে তিনজনে যা হৈ চৈ করছে না, বড়োর বুকটা ফুলে ছাপান্ন ইঞ্চি।
আমি ছোটমাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তোমার।
ছোটমা আমার কপালে চুমু খেলো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলো।
বুঝেছি। মিত্রা বললো।
কি বুঝেছিস।
তোকে বুঝতে হবে না।
ছোটমা মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমার খাওয়া শেষ ট্রেটা ছোটমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, চা।
নিয়ে আসা হচ্ছে। ওরটা শেষ হোক।
ভোর হয়ে যাবে।
তার মানে।
কয়লার ইঞ্জিন।
খুব কথা না। দিল আমার চুলে মুঠি ধরে।
মিত্রা হাসলো।
ছোটমা আমার ট্রেটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
দাঁড়া আজ স্নান করার সময় তোর শরীর একেবারে ঠিক করে দেবো।
দিবি।
আমি চুপ থাকলাম।
চা এলো, ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, অনাদিরা আসতে পারে।
কেনো।
কাল ফোন করেছিলো, উনি বলেছেন, আমার শরীর খারাপ। বুঝলে এবার।
কি দুষ্টু বুদ্ধিরে তোর মিত্রা।
অতএব আমি চা খেয়েই তোমার ঘরে গিয়ে ঘুমোবো। দু রাত অনেক জালাতন সহ্য করেছি। রবিন নিচে আছে, বুড়ীমাসিও এসে গেছে, ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও।
না আমি যাবো না।
কেনো যাবি না।
তাহলে তোকেও যেতে হবে।
হুঁ।
দাঁড়া নিচে গিয়ে বড়মাকে বলছি, তুই এইসব বলছিস।
বল না বয়েই গেছে।
আমি উঠে পরলাম।
কি রে সত্যি চলে যাচ্ছিস।
হ্যাঁ।
এখন ঘুমোস না, দুপুরে। তুই তো স্ট্রং ম্যান।
ওঃ এদিকে তো টনটনে জ্ঞান আছে দেখছি।
ছোটমা আমাদের কথা শুনে মুখে কাপর চাপা দিয়ে হাসছেন।
দে ট্রেটা দে, নিচে অনেক কাজ। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুই একটু বোস, আমি ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে আসবো।
অগত্যা আবার ইজি চেয়ার।
মিত্রার খাওয়া শেষ হতে ওকে ওষুধটা দিলাম।
কিরে কত খাবো।
রোগ বাধিয়েছিস খেতে হবে।
অনাদিরা যথা সময়ে এলো। সব জানলো। ওদের চোখ ছানা বড়া বলিস কি, কাকার সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দিলো, কাকাকে সব জানালাম, নীপা কাঁদছে, আমি মিত্রার সঙ্গে ওকে কথা বলিয়ে দিলাম, অনাদিকে বললাম, আমরা যাবো আগামী সপ্তাহে, বড়মা ছোটমাও যাবে, তুই ওই কয়দিন জেনারেটরের ব্যবস্থা কর, আর একটা বাথরুম বানাবার ব্যবস্থা কর। বুড়োবুড়ী সব যাবে কোথায় কি হবে। একটা ট্রলির ব্যবস্থা রাখিস। এদিক ওদিক ঘোড়ার জন্য।
অনাদি বললো তোকে চিন্তা করতে হবে না।
বাসু মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আমাকে একেবারে জালিয়ে পুরিয়ে মারছে।
হ্যাঁ বলেছে।
অনাদিকে বললাম, চিকনার খবর কি।
তোর বাড়িতে বসিয়ে এসেছি, বলেছি আমি না যাওয়া পযর্ন্ত কোথাও বেরোবি না।
অনাদিকে বললাম আমি চিকনার জন্য একটা ব্যবস্থা ভেবেরেখেছি, তুই বল ঠিক না ভুল, মিত্রাকে বাসুকেও বললাম আমাকে এ্যাটাক করিস। ভুল হলে।
আমি একটা মিনি রাইস মিলের কথা ভাবছি। এই মুহূর্তে চিকনা এখন আমাদের গ্রাম, পাসের গ্রাম থেকে ধান কিনবে কিছু নিজে চাল তৈরি করবে, বাকিটা ধান রাইস মিলে বিক্রি করবে। আমি মিত্রা চিকনা থাকবো এই ব্যবসায়। চিকনার চল্লিশ ভাগ আমার তিরিশ মিত্রার তিরিশ, তারপর যখন দেখবো একটু দাঁড়িয়েছে। রাইস মিল বানাবো, আমাদের ওখানে পঞ্চাশ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো রাইস মিল নেই।
জায়গা। অনাদি বললো।
কেনো আমার বাড়িটা এখন কাজে লাগাক। অতো বড়ো বাড়ি খালি পরে রয়েছে।
স্যার রাজি হবে।
সে আমি বুঝিয়ে বলবো।
আর আমার ভাগের জমি জমা আমি বাসন্তীমাকে দিয়ে দেবো, ওটা নিয়ে আমার একটা প্ল্যান আছে, আমি ওখানে যাই গিয়ে বড়দের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো।
বাসু আমার দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকালো।
তুই ওখানে আর যাবি না।
কেনো যাবো না।
তাহলে সব দিয়ে দিবি বলছিস।
ওঃ এই বুদ্ধি নিয়ে তুই কি করে ব্যবসা করিস।
মিত্রা হাসলো।
চিকনার পয়সা কোথায়।
তোকে কি পয়সার কথা বললাম।
না, ওর চল্লিশ ভাগ মানে ওকে শেয়ারের চল্লিশ পার্সেন্ট দিতে হবে তো।
কেনো, আমরা শেয়ারের ষাট ভাগ দিচ্ছি, কাজ তো আমরা কোরবো না, ও করবে, তার জন্য ও একটা মাসে মাসে মাইনে পাবে, তাছাড়া লভ্যাংশ ও নেবে না, যতোক্ষণ পযর্ন্ত ওর চল্লিশভাগ কোম্পানীতে জমা না পরছে।
তুই এতো ভাবিস।
ভাবতে হয়। আর একটা কথা শোন মনে পরে গেলো, অমলের কাছ থেকে তুই সাবধানে থাকিস।
কেনো।
মালটা তোর এ্যারাইভাল হয়ে গেছে।
তুই জানলি কি করে।
তুই পার্টি করিস কেনো, চাষ কর।
বলনা বল, তোর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়, তাই তো তুই সকলের গুরু।
গ্যাস খাওয়াস না।
সত্যি বলছি অনি, আমিও সেরকম বুঝছি তাই তোকে বলছি।
কি রকম।
ও ঠিক আগের মতো বিহেব করছে না।
কেনো জানিস।
বল।
তোর কিছু হলে অনি বেক করবে, প্রয়োজনে তোকে একলাফে অনেক ওপরেও তুলে দিতে পারে, অমল সেটা জেনে ফেলেছে।
সত্যি বলছি অনি এতোটা ভাবি নি।
তুই ভাবিস নি, আমি ভাবি।
তোকে দিয়ে আমি একটা কাজ করাবো, যেটা কামিং ইলেকসনে আমি কাজে লাগাবো, হয়তো তোকে এমএলএ বানাতেও পারি।
যাঃ কি বলছিস।
যা বলছি এখানে বলছি ওখানে কিছু বলবো না। তুই খালি তোর কমিউনিকেসন বাড়িয়ে যা, এমন কোনো কাজ করবি না, যাতে ব্যাড রিপার্কেসন হয়। বাসু কথাটা যেন পাঁচ কান না হয়।
তুই বিশ্বাস করতে পারিস আমি দিবাকর হবো না।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো।
তোদের বাজারে, তিনকাঠা মতো জায়গা পাওয়া যাবে।
আছে। একটু বেশি দাম পরবে।
কতো।
লাখ চারেক টাকা।
কাদের জায়গা।
সুতনু বেরা আছে না, আমাদের পাশের গ্রামের, তার।
তুই একটু কথা বলে রাখ। জায়গাটা আমার দরকার।
ঠিক আছে, প্রয়োজন পরলে, কিছুটাকা হাতে গুঁজে ধরে রাখ।
কি করবি।
সব বলে দিলে হয়। ওখানে গিয়ে বলবো। চিকনার ব্যাপারটা ফাইন্যাল কর।
ওখানে যাই কথা বলি, কাল তোকে জানাবো।
আমাকে না পাস মিত্রার ফোনে জানাস।
কিরে মিত্রা, তোর কি মত বল।
ভালোই হবে মাসে একবার করে যাওয়া যাবে, তুই তো এমনি যাবি না।
যার যা ধান্দা, ওটা হলে তুই আর চিকনা কন্ট্রোল করবি।
অনাদি একটা থাকার ব্যবস্থা করো, বাথরুম আগে।
কোনো চিন্তা নেই ম্যাডাম, আপনি আসুন দেখবেন বাথরুম রেডি।
আমি দেয়াল আলমাড়ি থেকে ব্যাগটা বার করলাম, দেখলাম, বেশি পয়সা নেই। মিত্রাকে বললাম নোট দে।
আমার পারস নিচে, বড়মার ঘরে।
যা নিয়ে আয়। উঠতে পারবি তো।
পারবো।
মিত্রা নিচে গিয়ে ওর পারস নিয়ে এলো। কতো নিবি।
হাজার পনেরো দে।
অতো নেই।
কতো আছে।
বারো।
তাই দে।
আমি অনাদির হাতে সতেরো হাজার দিলাম। কাজ চালা তারপর আমি যাচ্ছি।

 
থাক না, তোকে চিন্তা করতে হবে না।
আরে রাখ, আমি দুপুরে এক ফাঁকে বেরিয়ে তুলে আনবো।
ওরা খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলো। বুড়ীমাসি চলে গেছে, ছোটোমা ওবাড়ি গেছে, বড়মা বললো, পাঁচ-ছদিন যায়নি, ফেরার পথে ব্যাঙ্ক হয়ে আসবে।
কখন ফিরবে।
খাওয়ার আগে ফিরবে বলেছে। তুই এক কাজ কর, মিত্রার জন্য এটা নিয়ে যা।
কি।
ভেজিটেবিল স্টু আছে।
এটা কেনো।
কথা বলিস না।
দাও। দাদারা বেড়িয়ে গেছে।
হ্যাঁ। আর শোন স্টুটা খাইয়ে ওকে স্নান করতে বল, তেল গরম করে দিচ্ছি।
ঠিক আছে।
স্টুয়ের বাটি নিয়ে ওপরে এলাম।
এটা কি করে।
ভেজিটেবিল স্টু, ডাক্তারের হুকুম। তারপর তেল গরম হচ্ছে, স্নান। দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুম।
মিত্রার চোখ দুটো ভারি হয়ে এলো।
আবার কি হলো।
না। কিছু না।
নে খেয়ে নে।
তুই একটু খা।
এক চামচ।
মিত্রার চোখ দুটো চিক চিক করে উঠলো।
ও আমাকে এক চামচ নিয়ে খাইয়ে দিলো।
দারুন খেতে রে।
নিজে একচামচ খেলো।
আর একবার নে।
না।
নে না।
আর একবার, থার্ড রিকোয়েস্ট বড়মাকে ডাকবো।
ঠিক আছে আর বলবো না।
আমি নিচ থেকে মিত্রার জামা কাপর নিয়ে এলাম, পেন্টিটা কাপরের ভেতরে নিয়ে এলাম, ভুললাম না। বড়মা রান্নাঘর থেকে বললো, তেল গরম করবো।
দাঁড়াও খাওয়া হোক।
আমি ওপরে গেলাম।
কিরে খাওয়া হয়েছে।
তুই কাপর নিয়ে এলি।
কি নিয়ে আসবে। কেউ নেই। আমি তুই বড়মা। সবাই কাজে বেরিয়েছে।
কি মজা।
তার মানে।
আমি তুই ওপরে, বড়মা নিচে।
বুঝেছি, আনন্দ রাখ। বড়মা তেল গরম করেছে, নিয়ে আসছি, স্নান কর।
আমি মিত্রার কাছ থেকে বাটিটা নিয়ে নিচে চলে এলাম। রান্নাঘরের বেসিনে রেখে বললাম, তেল গরম করেছো।
একটু দাঁড়া।
বড়মা ধোঁকা তৈরি করছে, আমি একটা ধোঁকা ভাজা তুলে খেয়ে নিলাম। নিজে খেলি ওর জন্য নিয়ে যা।
ছাড়ো তো, খেলে শরীর খারাপ করবে।
কি আহম্মকরে তুই।
ঠিক আছে দাও।
বড়মা একটা থালার ওপর গরম তেলের বাটি বসিয়ে দিলো, আজকে বেশ ঝাঁজ বেরোচ্ছে, তুমি কি রসুন দিয়েছো।
হ্যাঁ।
ওপরে চলে এলাম। মিত্রা মাথা নীচু করে বসে আছে।
কিরে কি চিন্তা করছিস।
কিছু না।
আমি টেবিলের ওপর থালাটা রেখে, ওকে ধোঁকার বড়া দিলাম।
কে দিলো রে।
কে দেবে, বড়মা।
তুই নিয়ে এলি না বড়মা দিলো।
আমি আনতে চাই নি, আমাকে আহম্মক বললো, নিয়ে এলাম।
মিত্রা একটা গোটা খেলো, আর একটা হাফ কামরিয়ে আমাকে দিলো। আমি খেয়ে ফেললাম।
নে রেডি হ। তৈল মর্দন শুরু হবে।
দরজা বন্ধ কর।
কেনো। কেউ তো নেই।
আমি দরজা বন্ধ করলাম।
মিত্রা নীচে নেমে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, এখন শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছে।
এই কদিন একটু ঠিক করে থাক। কালকে খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি।
তোর চোখমুখ দেখে বুঝেছিলাম।
তাহলে কেনো অবুঝপানা করিস।
তোকে দেখলে আমি ঠিক থাকতে পারিনা।
ঠিক থাকতে হবে।
তুই আছিস আমার আর ভয় নেই, তোর কাছে আমাকে কনফেস করতে হবে।
ঠিক আছে, সময় হলে করিস।
মিত্রা আমার ঠোঁটে চুমু খেলো।
তেল ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
যাক, আমার এখন যা খুশি তাই করবো।
কর।
তুই পাজামা পাঞ্জাবী খুলে টাওয়েল পর।
কেউ চলে এলে।
আসুক।
আচ্ছা।
আমি পাজামা পাঞ্জাবী খুলে টাওয়েল পরলাম। মিত্রা কাপর ব্লাউজ খুললো। আমি ওকে টেবিলটা ধরে পেছন ফিরে দাঁড়াতে বললাম, ভালো করে ওর পিঠে শিড়দাঁড়ায় গরম তেল মালিশ করলাম, তারপর ওর পাদুটোয় তেল মাখালাম, মাঝে মাঝে ওর পুসিতে হাত চলে যাচ্ছে।
আমার কিন্তু শির শির করছে।
আমি কোনো কথা বললাম না। নিজের কাজ করে চলেছি। উঠে দাঁড়ালাম, ঘুরে দাঁড়া। ও ঘুড়ে দাঁড়ালো, আমি তেল নিয়ে ওর বুকে পিঠে ভালো করে ডলছি।
বুবুন তুই ইচ্ছে করে নিপিলে হাত দিচ্ছিস।
আমি চুপচাপ। ও আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর বুকে তেল ঘোসছি। মাঝে মাঝে যে ওর নিপিলটা ধরে নারাচ্ছি না তা নয়, তবু খুব গম্ভীর হয়ে কাজ করছি। ওর কাঁধে হাত দিলাম, গলায় তেল মাখাচ্ছি।
তবে রে। দিল আমার টাওয়েলে টান। খুলে গেলো। ও হাঁটু মুরে আমার পায়ের কাছে নীলডাউন হয়ে বসলো, আমার নুনুতে হাত দিলো। চামরাটা সরিয়ে দিলো।
শয়তান, আমার ভেঁজে না। এটা কি। এটা কি আমার।
আমি হাসছি।
ওঠ।
না উঠবো না।
ও টাওয়েলটা টেনে নিয়ে আমার নুনুর মুন্ডিটা মুছে নিয়ে একটা চুমু খেলো, তারপর মুখে পুরে দিলো, আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে। আমি ইশারায় বললাম, ছার বড়মা এসে পরলে একটা কেলেঙ্কারি হবে।
ও মাথা দোলাচ্ছে, আমার বিচিতে হাত দিয়েছে।
আমি ওকে জোর করে তুলে ধরে ওর ঠোঁটে চুমু খেলাম।
তোর শরীর খারাপ।
একবার, প্লিজ একবার।
না। শরীর ঠিক হোক তারপর।
প্লিজ। ও আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো।
আমি ওর বুকে হাত রেখেছি। ওর সারা গায়ে রসুন তেলের গন্ধ, পিছলে পিছলে যাচ্ছে।
আমার গায়ে রসুন তেলের গন্ধ হয়ে গেলো।
থাক বড়মাকে বলবো বেশি হয়ে গেছিল তুইও মেখেছিস।
হ্যাঁ ওরা তো ঝিনুক মুখে দিয়ে চলে না। আমাদের মতো কত হাজার বার করেছে, তা জানিস।
মিত্রা হাসলো।

তোকে নিয়ে পারা যাবে না।
 
মিত্রাকে টেবিলের ওপর বসালাম, আমি হাঁটু মুরে নীচে বসলাম।
পা দুটে ফাঁক কর।
তুই মুখ দিবি।
না চুষবো।
আমি ওর পুশিতে মুখ দিলাম, তেল জব জব করছে, আমি মাখিয়েছি, বেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই জিভের খেলায় ওকে পাগল করে দিলাম, বুবুন আর না এবার কর।

আমি উঠে দাঁড়ালাম, আমারটা তখন তাগড়াই ঘোঁড়ার মতো, আমি ওকে কাছে টেনে নিলাম, একবারে মাপে মাপে, টেবিলের ওপর দুহাত রাখলাম, ও দুটো পা আমার দুহাতের ওপর দিয়ে দুপাশে রাখলো, আমি বললাম, আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে পেছন দিকে ঝুলে পর, ও তাই করলো, ওর পুশিটা হাঁ হয়ে গেছে, আমার নুনুকে যেন ডাকছে, আয় আয়। আমি নুনুটা ধরে চামড়াটা টেনে সরালাম, আস্তে করে ওর পুশির মুখে রেখে দু তিনবার ওপর নীচ করলাম, ও দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামরে ধরেছে। আমি চাপ দিলাম, টেবিল নড়ে উঠলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম। ওর চোখে সেক্সের প্রবল ইচ্ছা। আমি আর একবার চাপ দিলাম, পুরোটা চলে গেলো, আমি কোমরটা ধরে একটু কাছে টেনে নিলাম, মিত্রা আমার গলা ছেড়ে দিয়ে আমাকে জাপ্টে ধরলো।
কিরে লাগলো।
না।
আজ ভেতরটা ভীষণ জ্বালা করছে রে।
ওই যে রসুন তেল।
না।
তাহলে।
হবে মনে হয়। তুই কর দাঁড়িয়ে রইলি কেনো।
জাপ্টে ধরলে করবো কি করে।
ও হাত ছেড়ে দিয়ে পেছন দিকে হাতটা দিয়ে হেলে পরলো।
টেবিলটা এমন করে রেখেছিস হাত রাখার জায়গা পাচ্ছি না।
আমি কি করে জানবো তোর উঠল বাই তো কটক যাই।
নে কর।
আমি করতে আরম্ভ করলাম। দিনের বেলায় কোনোদিন করিনি, পরিষ্কার সব দেখতে পাচ্ছি, আমারটা পুরোটা ভেতরে যাচ্ছে আর বেরোচ্ছে। মিত্রাও দেখতে পাচ্ছে, আমার গোঁতানোর চোটে মিত্রার মাই দুলছে। আমি করে যাচ্ছি, মাঝে মাঝে ওর মাইতে হাত দিয়ে একটু টিপে দিচ্ছি। তেল বদবদে মাই হরকে হরকে যাচ্ছে।
বুবুন হয়ে যাবে।
হোক।
তোর হবে না।
দাঁড়া না।
জোরে কর।
ও পাদুটে আমার কোমর পেঁচিয়ে ধরলো। আমি নীচু হয়ে ওর ঠোঁট ছোঁয়ার চেষ্টা করলাম, ও মুখটা এগিয়ে নিয়ে এসে চুমু খেলো, তারপর হঠাত আমাকে জাপ্টে ধরে কোমর দোলাতে আরম্ভ করলো, আমার নুনুটাকে ওর পুশি দিয়ে এমন ভাবে চেপে চেপে ধরলো, আমি রাখতে পারলাম না, কি রে, তোরও বেরোচ্ছে আমারও বেরোচ্ছে।
আমি চুপচাপ।
মিত্রা আস্তে আস্তে কোমর দোলানো বন্ধ করলো। তারপর আমার বুক থেক মুখ তুলে আমাকে চুমু খেলো।
বার করবি না। এই ভাবে আমায় বাথরুমে নিয়ে চল।
তুই তো দেড় কুইন্টালের বস্তা।
তা হোক।
অগত্যা আমি ওই ভাবে ওকে কোলে তুলে নিয়ে গেলাম। ও আমার গলা জড়িয়ে চুমু খাচ্ছে। বাথরুমে গিয়ে বললাম নাম।
দাঁড়া না একটু।
আমার দম নেই।
ও নিচে নেমে দাঁড়ালো, আমার নুনু ওর পুশি থেকে বেরিয়ে এসেছে।
কি ছোটো হয়ে গেছে।
আমি হাসলাম।
আজ আর একটা সখ মিটলো।
আমি ওর দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকালাম।
সেদিন দিবাকরের টা দেখে ছিলাম, করা হয় নি। আজ করলাম।
তোর পেটে পেটে এত বুদ্ধি।
ও আমার ঠোঁট কামরিয়ে ধরলো।
ছোটমা এলো একটু দেরি করে, আমরা ছোটমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
কিরে তোরা খেয়ে নিস নি কেনো।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম, মুখের সেই হাসি হাসি ভাবটা কোথাও উধাও হয়ে গেছে, কেমন যেন ফ্যাকাশে।
কি হয়েছে তোমার।
কই কিছু না তো।
ওটা মুখে বলছো, তোমার মুখ অন্য কথা বলছে।
তোর সব সময়…..।
চুপ করে গেলাম। বড়মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে, মিত্রা আমার কথা বোঝার চেষ্টা করছে, ওর মুখ দেখে বুঝতে পারলাম।
ছোটো হাত মুখ ধুয়ে নে, ভাত বাড়ি। বড়মা বললেন।
হ্যাঁ দিদি আমি এখুনি রেডি হয়ে নিচ্ছি।
সবাই একসঙ্গে টেবিলে বসলাম। বড়মা খাবার বেরে দিলেন, ছোটমা বড়মাকে সাহায্য করছেন। খাওয়া শুরু হলো, কিন্তু নিস্তব্ধে, ব্যাপারটা আমার ভালো লাগলো না, কোথায় যেন তাল কেটেগেছে মনে হচ্ছে।
ও বাড়িতে কেনো গেছিলে।
যাবো না। চার পাঁচদিন যাই নি, ঘরদোর একটু পরিষ্কার করার দরকার আছেতো।
ফিরে আসার পর তোমার মুখটা গম্ভীর দেখাচ্ছে, কিছু হয়েছে।
না।
তুমিও কি আমার মতো।
ছোটোমা আমার দিকে তাকালো। চোখের ভাষা কিছু বলতে চায়। কিন্তু বলতে পারছে না।
জানো ছোটোমা আমার জীবনে কতগুলো মিশন আছে। বলতে পারো স্বপ্ন….
বল।
যেমন প্রথম হচ্ছে, আমার যারা খুব কাছের মানুষ, আমি তাদের হাসি খুশি দেখতে চাই, জানি তাদেরও অনেক কষ্ট আছে, হয়তো সব কষ্টের সমাধান আমি করতে পারবো না, তবে আশিভাগ চেষ্টা করলে পারবো। তোমার সমস্যা তোমায় বলতে হবে না, আমি যেনে নেবো।
অনি।
আমি ঠিক বলছি ছোটোমা।
না এ ভুল তুই করবি না, তাহলে আমার থেকে বড় কষ্ট আর কেউ পাবে না।
আমি ছোটমার দিকে তাকালাম, আর একটা কথা আমার কাছের মানুষের কাজে ভুল হলে সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কেউ যদি অপমান করে থাকে, তাহলে বুঝবে তাকে ওই মুহূর্তে জ্যন্ত পুঁতে ফেলবো। সেই সময় অনি ভীষণ হিংস্র।
তুই কেনো এই সব চিন্তা করছিস, আমার কিছু হয় নি।
একটা গল্প বলি এই প্রসঙ্গে, ভাল করে শোনো। তখন ক্লাস টেনে পরি, কৈশোর যৌবনের সন্ধিক্ষণে, চোখে অনেক স্বপ্ন, ডাক্তার হব বদ্যি হবো। প্রথম ব্যাঙ কাটা হবে স্কুলে। আগের দিন রাতে সারারাত ঘুমোলাম না, আমার কোনো বাইওলোজিক্যাল বাক্স ছিলো না, অনাদির ছিলো আর বাসুর ছিলো। উনা মাস্টার সাইন্সের টিচার, টিফিনের পর ব্যাঙ কাটা হবে, চিকনা ব্যাঙ ধরে আনল পচা পুকুর থেকে। একটা কলাগাছের চোকলায় ব্যাঙ রেখে, পিন ফুটিয়ে হাত পা বেঁধে তাকে কাটা হলো। স্কুলে একটা মাইকোস্ক্রোপ ছিল তাকে আনা হলো, স্লাইডে ব্যাঙের কি সব তুলে উনা মাস্টার সবাইকে দাখাচ্ছেন, কেউ ঠিক বলছে কেউ ভুল বলছে, আমাকেও ডাকলেন, আমি গেলাম, সত্যি বলতে কি ছোটোমা, আমি শুনে শুনে একটা কিছু বলতে পারতাম, কিন্তু আমি সত্যিটা বললাম, সবাই যা বললো, আমি তার ঠিক উল্টোটা বললাম, বললাম আমি হিজিবিজি ছাড়া কিছু দেখতে পাচ্ছিনা, উনা মাস্টার গুনে গুনে দশটা বেতের বাড়ি মারলো। কাঁদিনি কেনোনা আমার মনের কথা বোঝার মতো উনা মাস্টারের মানসিকতা ছিল না, ল্যাবোরেটরি থেকে বেরিয়ে এসে উনা মাস্টারকে প্রচুর গালাগাল দিলাম, মনেমনে, চলে গেলাম পীরসাহেবের থানে, ওখানে অনেকক্ষণ বসে থাকলাম, মনেমনে প্রার্থনা করলাম, সত্যি তুমি যদি থাকো, তুমি যদি সত্যি কেউ হও, তাহলে আমার চোখটাকে মাইকোস্ক্রোপ বানিয়ে দাও, আমি মানুষ চিনতে চাই, আর মানুষের ভেতরটা যেন দেখতে পাই, সত্যি বলতে কি কিছুক্ষণ পর হাওয়ায় ভেসে এলো একটা কথা, ওরে এতে অনেক বেশি কষ্ট, পারবি সহ্য করতে, তখন ছোটো ছিলাম, এখন হলে বলতাম না, তখন কিন্তু আমি বলেফেলছিলাম, হোক কষ্ট তবু তুমি আমায় এই শক্তি দাও।
সবাই চুপচাপ, বড়মা আমার মাথায় হাত রাখলেন, মিত্রা ছোটমা ভাতের থালা থেকে হাত তুলে আমার মুখের দিকে চেয়ে রয়েছে, আমি নিস্তব্ধে খেয়ে চলেছি। বুঝতে পারছি আমার চোখে মুখের চেহারায় পরিবর্তন ঘটেছে।
পাগল। বড়মা বললেন।
কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ, যে যার নিজের মতো খাচ্ছে।
শোন অনি তুই আজ সকাল বেলা যেভাবে ওই মন্ত্রীটার সাথে কথা বললি, তোর দাদা আজ তিরিশ বছরে ওই ভাবে কারুর সঙ্গে কথা বলেছে। এটা হচ্ছে উইল পাওয়ার, সবার থাকে না। পৃথিবীতে কজন মানুষের এরকমটা থাকে বল। বড়মা বললেন।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম।
একটা কথা তোমায় বলি বড়মা, বলতে পারো আবার রিপিড করছি, তোমাদের পাঁচ জনের কাছে আমি আমার জীবনের না পাওয়া অনেক জিনিষ পেয়েছি, যা মনামাস্টার, কাকীমা সারাজীবনে দিতে পারেনি, কিন্তু তাদের দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। আমার বাবারও কম ছিলো না।
জানি।
তোমাদের কাউকে কেউ যদি কোনো দিন অপমান সূচক কথা বলে থাকে, আর আমি আমার উপলব্ধি দিয়ে যদি বুঝতে পারি, সে ইচ্ছে করে এটা করেছে তার স্বার্থ সিদ্ধির জন্য, তাহলে মনে রাখবে, আমার কাছে তার শাস্তি, নৃশংস মৃত্যু, আমার হাত থেকে সে রেহাই পাবে না। তবে আমি তাকে নিজে হাতে কোনো দিন মারবো না।
অনি।
ছোটমা এঁটো হাতে আমার কাছে উঠে এলেন। আমার গলা জড়িয়ে ধরলেন, বাঁহাতে আমার থুতনিটা ধরে মুখটা নিজের দিকে ঘোরালেন, শোন বাবা, তুই পাগলামো করিস না, সত্যি বলছি, আমার, তোর মল্লিকদার কিছু হয় নি। পারিবারিক সমস্যা সকলের থাকে, আমারও আছে।
আমি তোমার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই নি। প্রয়োজন বোধ করলে জেনে নেবো।
পরিবেশ থম থমে, আমি ছোটমাকে বললাম, ভাত দাও।
ছোটমা আমার পাতে বাঁহাত দিয়ে দুহাতা ভাত দিলেন। একটু মাছের ঝোল নে।
দাও।
মিত্রা নিবি।
দাও একটু।
ছোটমা মিত্রাকে দিলেন। আমি বড়মার পাত থেকে একটা চিংড়িমাছ তুলে নিলাম, মিত্রা দেখলো।
কিরে তুই একলা একলা।
তুই খাবি। তারপর সারারাত পায়খানা করবি।
শয়তান। আবার জিজ্ঞাসা করছিস, লজ্জা করে না।
বড়মার তাহলে খাওয়া হবে না।
তুই খেলি কেনো।
তুই ছোটোর পাত থেকে নে। দুজনে ভাগাভাগি করি। দেখ বাটিতে সব ফুরুত।
তোর মতো রাক্ষস থাকলে।
আচ্ছা দাঁড়া দাঁড়া আমি দিচ্ছি।
বড়মা একটা চিংড়িমাছ মিত্রার পাতে তুলে দিলো।
তোর থেকে আমারটা সাইজে বড়।
তুই মালকিন, বড় হওয়া স্বাভাবিক।
মালকিন মালকিন করবিনা বলে দিচ্ছি।
হাসলাম।
খাওয়া চলছে।
জানো ছোটমা, তোমাদের আমার মানুষ দেখার কতকগুলো গল্প বলি, গল্পগুলো আমার বাস্তবে দেখা। তোমার এর নিরযাসটা বলবে, সবাইকে সাতদিন সময় দিলাম। তারপর আমার চিন্তাভাবনাটা তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।

বল।
 
একদিন অফিসে ঢুকলাম একটু দেরি করে, তখন আমি গণিকাপল্লীর বাসিন্দা, সারারাত ঘুম হয় না, ভোরের দিকে একটু ঘুমোই, তাছাড়া সারারাতের ফাইফরমাশ তো আছেই। সেদিন মনে হয় দাদার মন মেজাজাটা ভালো ছিল না। আমায় খুব বকাবকি করলো, তারপর বললো, এক কাজ কর, নিকোপার্কে এক ছোটদের কার্নিভাল চলছে, একজন ফটোগ্রাফার গেছে, তুই লেখাটা রেডি করে দে। আমি অফিসের গাড়ি জীবনে খুব কম ব্যবহার করেছি। সেদিনও বাসে করে চলে গেলাম, সারাদিন পার্কে বাচ্চাদের সঙ্গে থাকলাম, শেষ হলো প্রায় রাত আটটা। দাদাকে ফোন করে বললাম, লেখাটা কি আজকেই লাগবে, দাদা বললো কেনো, আমি বললাম, প্রোগ্রাম এই শেষ হলো বেরোচ্ছি, তাহলে এক কাজ কর কাল সকালে দে, সানডে চিলড্রেন্স পেজে দিয়ে দেবো।
আর বাসে উঠতে ইচ্ছে করলো না, ওখান থেকে হাঁটতে আরম্ভ করলাম, চিংড়িহাটার মুখে যখন এসে পরেছি, দেখি একটা পাগলি তাড়াতাড়ি করে রাস্তা পার হচ্ছে, চোখ মুখটা কেমন ভয় ভয়। আমি থমকে দাঁড়ালাম, ওমা দেখি, ওর পেছন পেছন একটা পাগল, হাসতে হাসতে আসছে, বেশ ধীর পায়ে রাস্তা পার হলো, আমার খুব উতসুক হলো, আমি ওদের পেছন পেছন গেলাম, রাস্তা পার হয়ে একটা কালভার্ট পরে, পাগলিটা দেখি ওই কালভার্টের পাশে এসে শুয়ে পরলো, একটু অন্ধকার অন্ধকার, রাস্তার আলোয় যতটা আলো আসছে। ঠিক ততটা আলো চারদিকে ছড়িয়ে পরেছে। আমি একটু দূরত্বে দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছি। পাগলটা পাগলির পাশে এসে বসলো, এ ওর মুখ দেখে, ও এর মুখ দেখে, বেশ কিছুক্ষণ পর পাগলিটা উঠে দাঁড়ালো, ছুটে পালাতে চাইলো, পাগলটা ওকে ধরে ফেলে আবার পাশে বসালো, গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো, বিশ্বাস করবে না, আমি প্রায় একঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ওরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হলো। বাসে আস্তে আস্তে অনেক ভাবলাম, গনিকাপল্লীতে ঢুকে সঙ্গম দেখলাম।
বিশ্বাস করবে না ছোটমা দুটোই সঙ্গম, একটার মধ্যে প্রাণ খুঁজে পেলাম, একটার মধ্যে পেলাম না। সেদিন সারারাত ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেটে গেছিলো। ভোররাতে কি খেয়াল হলো কার্নিভালের লেখাটা লিখে ফেললাম। লেখাটা বেরোবার পর দাদা আমাকে ডেকে একটা ফাউন্টেন পেন দিয়েছিলো। আমি পেনটাতে এখনো লিখি নি রেখে দিয়েছি।
ওরা সবাই আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
ছোটমার গালদুটো ফোলা।
ভাতটা গিলে ফেলো। বিষম লেগে যেতে পারে।
মিত্রা হেসে ফেললো, ছোটমা গোঁত করে ভাতটা গিলে ফেললো।
দ্বিতীয়টা শুনবে।
বল। বড়মা বললো।
শেয়লদা ক্যাফের অপরজিটে।
মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো, ছোটমা হাসলো, মিত্রার দিকে তাকাবার পর, যখন মিত্রা ইশারায় কালকের কথাটা স্মরণ করিয়ে দিলো।
তোরা হাসছিস কেনো।
কালকে, মোগলাই পরটা।
বড়মা বললেন ও হরি।
আচ্ছা তোর মাথায় কি কুবুদ্ধি ছাড়া কিছু নেই।
শুনলেই না ওমনি বলেদিলে কুবুদ্ধি। দাও শেষ চিংড়িটা।
না একেবারে দেবে না, বড়মা ওটা তুমি খাবে।
খাক না ওরকম করিস কেনো।
সব সময় তুমি…….।
ঠিক আছে মল্লিককে বলবো কালকে বেশি করে আনতে। বল তোর গল্পটা।
সেদিন শ্যামবাজার হয়ে অফিসে আসছি। শেয়লাদার জ্যামে বাসটা দাঁড়িয়ে, এখনো বুঝলে বড়মা আমার একটা বদ অভ্যাস আছে, আমি জানলার ধার ছাড়া বাসে বসি না, তার থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাবো সে ভালো।
এটা ভালো অভ্যেস বেশ রাস্তা দেখতে দেখতে যাওয়া যায় না, তাই বল।
ওপাশে তাকিয়ে বলো।
মিথ্যুক তুই কোনোদিন আমাকে জানলার ধারে বসতে দিস নি। কতো বোঁটকা গন্ধ ওয়ালা লোক পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, কি বলেছে জানো, তুই তো সেন্ট মেখেছিস লোকটা একটু শুঁকুক না, তাহলে তোর সেন্টেরও মহিমা ছড়িয়ে পরবে।
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
বাসটা থামতেই, মুখটা বার করে দেখলাম, জ্যাম কতটা, দেখলাম পুলের ওপর পযর্ন্ত, তারপরি রাস্তায় চোখ চলে গেলো। দেখি একটা পাগল বসে আছে।
আবার পাগল।
ভেটকি কোথাকার, আগে শোন, তোরতো ঘটে বুদ্ধি নেই, কি বলছি তার উত্তর দেওয়ার, অন্তঃত চুপ করে শোন।
তা বলে তুই ভেটকি বলবি। ছোটমা বললো।
কেনো চুমা দেবো।
সবাই হেসে উঠলো, বড়মা আমার কানটা ধরে নেড়ে দিলেন।
তুমি ওকে মারতে পারো না, খালি হাত বোলাও।
বড়মা পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, কত অভিজ্ঞতা বলতো, এই টুকু বয়সে।
হুঁ।
রাস্তায় অনেকে সিগারেট খেতে খেতে যাচ্ছে, বাস এসে গেছে, সিগারেটটা ফেলে দিয়ে ছুটে বাসে উঠে পরেনা।
হ্যাঁ।
সেরকম একটা সিগারেট টানছিলো পাগলটা। ফুটপাথের ধাপিতে একটা ল্যাম্পপোস্টে হেলান দিয়ে। তুমি যদি তার সিগারেট খাওয়াটা দেখতে তাহলে বুঝতে যেন কোন রাজবাড়ির ছোটবাবু। ঠেংয়ের ওপর ঠেং তুলে, যেন সেটা সিগারেট নয় পাইপ, আমি তাকিয়ে আছি। হঠাত দেখি কোথা থেকে একটা পাগলি এসে হাজির, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো, তারপর পাগলটার কাঁধে একটা টোকা দিয়ে সিগারেটটা চাইলো, পাগলটা একবার পাগলিটার দিকে তাকালো, পাগলিটার চাইবার চাহুনি, আর পাগলটার চাহুনি তুমি যদি দেখতে, আমি ঠিক তোমায় ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না, টোটাল ব্যাপারটা অনুভূতি সাপেক্ষ, তারপর পাগলটা আস্তে আস্তে উঠে চলে গেলো, পাগলিটা ওর পেছন পেছন হাঁটলো। বাসটা ছেড়ে দিলো। বাকিটা দেখতে পেলাম না।
ছোটমা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
দুটো খন্ড চিত্র। কিন্তু একটু ভেবে দেখো, তোমাদের জীবন দর্শনের সঙ্গে অনেক কিছুর মিল খুঁজে পাবে।
বড়মা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন।
কি দেখছো।
তোকে।
আমি কি সুন্দরী মেয়ে।
না। পুরুষ। তোর চোখ দিয়ে সেই পাগল পাগলীকে দেখছি।
সিনেমা শেষ। ঘড়ির দিকে একবার তাকাও। এরপর আর বলতে পারবে না। অনি তুই এখানে আসা ভুলে গেছিস।
আর একটু বোস না।
কেনো।
তুই যে বললি আর একটা বলবি।
সব একদিনে বললে হজম করতে পারবে না।
বড়মা আমার কানটা ধরলেন।
আমি উ করে উঠলাম।
আমার কথা আমাকে ঘুরিয়ে বলা।
আঃ কি আনন্দ, এবার জম্পেশ দিয়েছো বড়মা।
বড়মা কান ছাড়লেন।
শোন শেষ গল্পটা বলছি।
বল।
দুরাত ঘুমোই নি, আজ তুমি ছোটো আর মিত্রা এক ঘরে, মল্লিকদা দাদা এক ঘরে, আর আমি একা দরজা লাগিয়ে রসুন তেল নাকে দিয়ে ভস ভস। ডোন্ট ডিস্টার্ব।
শয়তান। মিত্রা চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো।
বড়মা।
মিত্রা এখন বেশ ভালো, আমি রেগুলার কিছুক্ষণের জন্য অফিসে যাই, ডাক্তারবাবু, সাতদিন সাতদিন করে প্রায় একমাস কাটিয়ে দিয়েছেন, মিত্রা বেশির ভাগ সময়টা এ বাড়িতেই আছে, মাঝে মাঝে বড়মা ছোটমাকে নিয়ে নিজের বাড়িতে কাটিয়ে আসছে, ওদের অবর্তমানে আমি দাদা মল্লিকদা রান্না করে খাচ্ছি। রান্না আমিই করেছি। দামিনী মাসীর ছেলে ভজুকে নিয়ে এসেছি এবাড়িতে কাজের জন্য। বড়মা ছোটমার অনেক কাজ ভজু করে দেয়, তবে ভজুর একটা বায়না, সে বাইরে শোবে না, তাই তাকে ওপরের বারান্দায় আমার ঘরের সামনে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মিত্রা অফিসের কাজ এখন বুঝে ওঠার চেষ্টা করছে, আমার কাছে মাঝে মাঝে ক্লাস করছে। অনাদি চিকনার ব্যাপারে ফোন করেছিল, চিকনা মহাখুশী, সে কাজ শুরু করেদিয়েছে, বাড়িতে বাথরুম বানানো হয়েছে।
অফিসের অবস্থা এখন স্থিতিশীল, আমি সবসময় সবাইকে একটা চাপের মধ্যে রেখেছি। সবার সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রাখার দরকার তা রেখেছি। এই একমাসে অফিসের আয় কিছুটা হলেও আমি বাড়িয়ে দিয়েছি। আপাতত অনি নামক বস্তুকে সবাই সমীহ কিংবা ভয় করতে শুরু করেছে।
আমার দেশের বাড়িতে যাওয়ার ডেট ফিক্সড হয়েছে, আগামীকাল, মিত্রা ছোটমা বড়মা বেশ কয়েকদিন হল নিজের বাড়িতে গেছে, গুছিয়ে গাছিয়ে আজ রাতে ফিরবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমি ভজুকে সঙ্গে নিয়ে রান্নার কাজ শেষ করে ফেললাম, তারপর নিজেরা খেয়ে নিলাম বড়মা তিনবার ফোন করে ফেলেছে, কিরে কতদূর, তুইতো সবেতেই এক্সপার্ট।
আমি বড়মাকে বললাম, কেউ যখন ছিলনা তখন সব নিজে হাতে করতাম, বছর খানেক হলো সব ভুলে গেছিলাম, তোমাদের আর্শীবাদে আবার রপ্ত হলাম।
মিত্রার গলা পেলাম, বড়মা বলনা, শয়তান একা একা বেশ ভালো মন্দ খাচ্ছে, আমাদের জন্য রাতে যেনো থাকে।
বড়মা আমাকে বললো, শুনতে পাচ্ছিস।
আমি বললাম এখন ছাড়, ভাতের হাঁড়ি উল্টেছি, কথা বলতে গেলে হাত পোরাবো।
বড়মা বললো, ঠিক আছে ঠিক আছে রাখছি।
দাদা মল্লিকদা আগে আগে বেরিয়ে গেলো, আমি স্নান সেরে ভজুকে নিয়ে খেতে বসলাম, ভজুকে বললাম, দুপুরে খিদে পেলে, ফ্রিজ থেকে বার করে গরম করে নিয়ে খাবি।
ভজু এই কদিনে তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাটা নিজের মনে নিজে থাকে, ওর কথাও ঠিক পরিষ্কার নয়। হাঁটা চলায় একটা এ্যাবনর্মালিটি আছে।
কিরে ভজু আমরা না থাকলে দাদাদের চা তৈরি করে দিতে পারবি তো।
আমি সব পারবো অনিদা, তুমি কিচ্ছু চিন্তা করো না।
আমি হাসলাম, ভজুও হাসলো।
এখন বাড়ির দায়িত্ব গেটে ছগনলাল, আর ভজু। তবে দুজনেই খুব সজাগ। মাছি গলতে পারে না।
আমি ওপরে এসে জামাকাপর পরলাম। রেডি হয়ে বেরোতে যাব, ফোনটা বেজে উঠলো। দেখলাম অদিতির নামটা ভেসে উঠেছে।
হ্যালো।
বলো অদিতি।
কেমন আছ।
ভালো।
মিত্রাদি।
ভালো আছে, তবে এখানে নেই।
কোথায়।
নিজের বাড়িতে।
তাই। বড়মা ছোটমা।
সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছি।
তাহলে খাওয়া দাওয়া।
রান্না করছি।
তুমি।
হ্যাঁ।
তোমার এই গুনটাও আছে।
ছিলো, মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিলো, এখন আবার একটু ঝালিয়ে নিচ্ছি।
সত্যি অনিদা তুমি পারও বটে।
তারপর তোমাদের খবর কি।
ভালো। আজ তোমার প্রোগ্রাম কি।
সেই ভাবে কিছু নেই। একবার অফিসে যাবো। তারপর এদিক ওদিক।
দুপুরে একটু সময় দিতে পারবে।
কখন বলো।
আমি তোমায় তুলে নেবো।
কোথায় দাঁড়াতে হবে।
পার্ক স্ট্রীট।
ঠিক আছে।
আমি এ্যাসিয়াটিক সোসাইটির তলায় থাকবো। কটায় বলো।
২ টো।
আচ্ছা।
আমি অফিসে এলাম, নিউজরুমে ঢুকতেই, মল্লিকদা ডাকলেন।
গিয়ে চেয়ারে বসলাম।
ছোটো ফোন করেছিলো।
কেনো।
তোকে একবার ফোন করতে বলেছে।
কেনো।
কি করে জানবো।

 

Users who are viewing this thread

Back
Top