চুলের রং বদলাতে চান? তার আগে নিচের প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
চলতি ধারার যে রংটি নিতে চাচ্ছেন, আপনার চুলের প্রাকৃতিক রঙের ওপর সেটি ঠিকঠাক ফুটে ওঠবে তো?
আপনার ত্বকের রঙের সঙ্গে এই রং মানানসই হবে তো?
আপনার চুলের কাটের সঙ্গে পছন্দের রংটি যাবে তো?
এই তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রং বাছাই করুন।
চুলের রং বদলানোর আগে পরামর্শ নিন বিশেষজ্ঞদের
রূপবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলবে এমন রংই বেছে নিন। টেকসই এবং যে রং করার পর খুব বেশি বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয় না, তেমন রং নেওয়াই ভালো। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে প্রায়ই সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ না-ও থাকতে পারে। আবার কর্মক্ষেত্রে অর্থাৎ আপনার পেশার সঙ্গে আপনার পছন্দের রংটি মানায় কি না, সেটাও বিবেচ্য।
রঙের যেমন ধারা
চলতি বছর চুলের কোন রঙগুলো জনপ্রিয় থাকতে পারে, তার একটা ধারণা দিলেন সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান। এই তালিকায় অবার্ন বা রিচ চকোলেট রং যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বাটারি প্লাটিনাম, ব্রন্ড এবং আইস কিউব ব্লন্ড। জেনিফার লোপেজের চুলে ব্রন্ড দেখা গিয়েছে আরও আগেই, এ বছরেও থাকছে এই ধারা।
অবার্ন রংটি এ বছরে চুলের রং হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পাবে
হিম হিম আবহাওয়ায় শীতল রং দিয়ে করা আইস কিউব ব্লন্ড দারুণ মানানসই। কিন্তু এই রঙে চুল রাঙানোর পর যে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে, সে কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। প্লাটিনাম কিংবা ব্রন্ড বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয়তা পেলেও বাঙালি নারীর কালো চুলে এমন রং করতে হলে একটু বেশিই হ্যাপা পোহাতে হবে। চুলের প্রাকৃতিক কালো রং পুরোপুরি তুলে ফেলতে হলে রাসায়নিকের সাহায্য নিতে হবে। তাই বাসায় নিজেরা এমন রং করা যাবে না। এর বাইরেও চুলে সোনালি রঙের শেড দিয়ে টোনিং করতে সূক্ষ্ম যে হাইলাইট করা হয় (অর্থাৎ বেবিলাইট), সেটির রং আরও উজ্জ্বল হচ্ছে এ বছর।
কার জন্য কোন রং মানানসই
নানা ধরনের শেড ও ব্লন্ড এখন চলছে। তবে খুব ফর্সা ত্বকের জন্য বার্গেন্ডি বা অন্য কোনো গাঢ় রং মানানসই নয়, বদলে ধূসর ব্লন্ড বা কপার ব্লন্ডের মতো হালকা ব্লন্ড বেছে নেওয়া যায়। বার্গেন্ডি বা মেহগনি রং তাঁদেরকেই মানায়, যাঁদের ত্বকের রং একটু চাপা। এমনটাই বলছিলেন মিউনিস ব্রাইডালের রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিন। চুলে কোনো স্তরভিত্তিক কাট (লেয়ারজাতীয় কাট) না থাকলে বেস কালার মানায় বেশ। আরও জানালেন, হাইলাইট এবং স্ট্রিক হাইলাইটের প্রচলন রয়েছে এখন। খুব রঙিন কোনো একটা রঙে পুরো চুল রাঙিয়ে নেওয়ার যে প্রবণতা তরুণদের মধ্যে একসময় বেশ দেখা যেত, তেমনটা এখন কম।
চকলেট রঙে রাঙানো কেশ। মডেল: রাবু
চুল রাঙানোর আগে-পরে
রং করানোর আগে তিন মাসের মধ্যে মেহেদি দেওয়া যাবে না। দিয়ে থাকলে রং অন্য রকম দেখাতে পারে।
চুলে অন্য কোনো রাসায়নিকের ব্যবহার হয়ে থাকলে (যেমন রিবন্ডিং) তিন মাসের মধ্যে চুল রং না করানোই ভালো। তবে একই সঙ্গে রং আর রিবন্ডিং করালে ক্ষতি নেই।
যাঁরা বাড়িতে চুল রং (ডাই) করেন, তাঁরা অবশ্যই ভালো মানের রং বেছে নিন এবং নিয়মমাফিক করুন। তবে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক রং করাতে চাইলে এর আগে অন্তত তিন মাস বাড়িতে কোনো রং ব্যবহার করবেন না।
চুলে ব্রাইট বেবিলাইটস ধারায় হাইলাইট করা, মডেল: হৃদি
হাইলাইট করানো চুলে মেহেদি প্যাক ব্যবহার করা যাবে না।
রং করা চুলের জন্য নির্ধারিত শ্যাম্পু-কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু করার অন্তত ১০ মিনিট আগে তেল মালিশ করা প্রয়োজন। চুলকে আর্দ্র রাখুন, পরিষ্কার রাখুন। রং করার পর চুল ভালো রাখতে মাসে দুবার (না পারলে অন্তত একবার) প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবা নিন। তা ছাড়া রং করানোর সময়ও সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রে চুলের কিছু যত্ন নেওয়া যায়, যাতে রং করালেও চুলের ক্ষতি হয় কম।
যেমন ধারাতেই চুল রাঙানো হোক না কেন, চুলের নতুন রং মানিয়ে যেতে একটু সময় দিন। অন্তত দু-চারটে দিন গেলে এরপর প্রয়োজনে রং বদলানোর কথা ভাববেন, তবে ঘন ঘন রং পরিবর্তন করতে গিয়ে চুলের ক্ষতি করে ফেলবেন না। রোদ আর মেঘলা দিনে আলোর পরিবর্তনে একই রংকে ভিন্ন দেখায়।
[FA]pen[/FA] লেখক: রাফিয়া আলম