গত ৭ মাসে করোনা ভাইরাস তান্ডবে নাজেহাল পুরো পৃথিবী। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮ লাখ ১০ হাজার ৪৯২ জন। কিন্তু আশার কথা হলো অনেক দেশই করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বাদে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমতির দিকে।
ধীরে ধীরে সব কিছু ফিরে যাচ্ছে স্বাভাবিক নিয়মে। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত দেশ চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালিও স্বাভাবিক জীবনের পথে অনেক দূর এগিয়েছে। বেশির ভাগ দেশই বিদেশী নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। চীন সরকারও অবস্থা বুঝে অনেক দেশের নাগরিকদের চীনে ফেরার অনুমতি দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এমন কোন সিদ্ধান্ত বেইজিং এখনো গ্রহণ করে নি।
এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা তাদের চীনে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের কাছে আবেদন জানিয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষে বেইজিং জিয়াওটং ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইনজামামুল হক লিপন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন-
“চীনা সরকার কর্তৃক চীনে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথ অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে। কিছু দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীন সরকার/পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পুনরায় তাদের শিক্ষার্থীদের চীনে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে।
চীনের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু করছে। আমরা ইতিমধ্যে ৮ মাস কাটিয়ে দিয়েছি। পড়ালেখায় অনেক পিছিয়ে পড়েছি। এমতাবস্থায় যদি এই সেমিস্টারেও চীনে যেতে না পারি, আমাদের পড়াশোনা এবং ক্যারিয়ার হুমকির মধ্যে পড়বে। এই বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবার সংকটে পড়বে। তাদের মধ্যে বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে গবেষণা ও মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ইন্টার্ণশিপে রয়েছেন যাদের হসপিটাল যথারীতি চলছে। এভাবে আমাদের গবেষণার কাজ ও ইন্টার্ণশীপ সঠিক ভাবে সম্পাদনের কাজ মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যা কি না আমাদের ডিগ্রি অর্জন এবং অনুশীলন সময়ে প্রতিকূলতা তৈরি করবে।
সেই লক্ষ্যে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে তাদেরকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করি। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।”
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি এখনো তাদের আবেদনটি হাতে না পেলেও এই ব্যাপারে তিনি অবগত আছেন। শিক্ষার্থীদের আবেদনের আগেই বেইজিং এ অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাস এ ব্যাপারে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।