What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
cQaKOsJ.jpg


সীমান্ত নিয়ে চীনের সাথে ভারতের বিরোধ বহু পুরনো। এই দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৪৮৮ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই সীমারেখায় কিছু অমীমাংসিত অঞ্চল নিয়েই এই বিরোধ। অমীমাংসিত অঞ্চলগুলো হলো আকসাই চীন (ভারতীয় অংশে লাদাখ) এবং অরুণাচল প্রদেশ।

১৮৫৬ সালে প্রস্তাবিত জনসন লাইন অনুসারে আকসাই চীন ভারতের অন্তর্গত লাদাখের একটি অংশ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু চীন জনসন লাইন সম্পূর্ণরূপে অমান্য করে আকসাই চীনকে নিজেদের এলাকা বলে ঘোষণা করে। ১৯৬২ সালে আকসাই চীন এবং অরুণাচলের একাংশ দখল করে নেয় চীন। সংঘাতের সূত্রপাত মূলত এখান থেকেই। এছাড়াও চীনের সাথে ভারতের সম্পর্কের অবনতির অন্য একটা মুখ্য কারণ হলো, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত তিব্বতের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা দালাই লামাকে ১৯৫৯ সালে ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান। অনেকেই মনে করেন, দালাই লামাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার কারণেই ভারতের উপর চীন এমন প্রতিশোধমূলক আচরণ করেছিলো। এসব কারণে যে সীমান্ত সমস্যার শুরু হয় তা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের সূচনা করে। ১৯৬২ সালে সংঘটিত সেই চীন-ভারত যুদ্ধে ভারত পরাজিত হয়। এদিকে যুদ্ধজয়ী চীন একতরফা ভাবেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে এবং আকসাই চীনকে নিজেদের দখলে রেখে অরুণাচল অংশকে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেয়।

যুদ্ধ শেষে উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং সীমান্তে সহিংসতা বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। কিন্তু তারপরেও সীমান্তে দুই দেশের বিরোধ নিষ্পত্তি কখনোই সম্ভব হয় নি। দুই দেশই এরপর বেশ কয়েকবার সীমান্ত নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধের শুরুটা করেছিল চীন। ৫ মে ভারতীয় সেনারা লাদাখের এলএসির গালওয়ানে রাস্তা তৈরি করার প্রস্তুতি নিলে চীন বাধা দেয়। ঐদিনই আবার চীন-ভারত সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল প্যাংগং হ্রদে ভারতীয় টহল দলকে টহল দিতে বাধা দেয় চীনারা। এই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ফলশ্রুতিতে চার দিন পর সিকিম-তিব্বত সীমান্তের নাকুলা এলাকায় দুই দেশের সৈন্যরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি এবং ঢিল ছোড়াছুড়ির মতো ঘটনাও ঘটে।

ভারতের দাবী, চীনা সেনারা ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিলো। অন্যদিকে চীন বলছে, ভারতীয় সেনাদের আচরণ ছিলো উস্কানিমূলক। এই ঘটনার পর এলএসির উভয় পাশে চীন ৮০-১০০ টি তাঁবু স্থাপন করে এবং ভারতও প্রায় ৬০ টি তাঁবু স্থাপন করে। সীমান্তে উভয় দেশই নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চীনা প্রেসিডেন্টের সেনাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানোর পর থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে থাকে।

তবে ঘটনার শুরু থেকেই ভারতীয় সরকার সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করছে। উল্লেখযোগ্য কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি তারা। বরং ভারত চীনকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য জোর তাগিদ দিচ্ছিল। চীন ভারতের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কয়েক দফায় কূটনীতিক এবং সামরিক বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে চীন এবং ভারত উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পৃথক বিবৃতিতে জানায় যে, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও ভারসাম্যের সম্পর্ক রক্ষায় যথেষ্ট ইতিবাচক। আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধনই শান্তিপূর্ণভাবে সম্ভব।

এদিকে ভারতের বুদ্ধিজীবী মহলের এক অংশের দাবী, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় ব্যর্থতাসহ অতীতের আরও অনেক ব্যর্থতা ঢাকতে মোদি সরকারের জন্য এই সীমান্ত উত্তেজনা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। চীনের উদ্দেশ্যও এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে হংকং নিরাপত্তা আইন পাশ করিয়ে নেওয়া। বেইজিং শেষ পর্যন্ত হংকং নিরাপত্তা আইন করিয়ে নিয়েছে। সুতরাং চিন্তা করার কিছুই নেই। সীমান্তে এই উত্তেজনা বিবাদে জড়াবে না। বরং শীঘ্রই সমাধানে পৌঁছাবে দুই দেশ।
 
মোদির ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে ভারতকে
ভিম বুরতেল

২০ জুন ২০২০, ১২:১০

‘যারা ইতিহাস মনে রাখে না, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির দায় তাদেরই’—স্প্যানিশ দার্শনিক হোর্হে সান্তাইয়ানার এই বাণী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চীন নীতির ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের সময় তাঁর দেশ যে ভুল করেছিল, তা মনে রাখার বিষয়ে তিনি উদাসীন।



তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু যেভাবে চীন ইস্যুতে তাঁর রাশিয়াপন্থী উপদেষ্টা ভি কে কৃষ্ণ মেননের ওপর অতি নির্ভরশীল হয়ে ভুল করেছিলেন, মোদিও সেই একই ভুল করছেন। মোদি তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকরের পরামর্শ শুনে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন এবং আগামাথা না ভেবেই ধরে নিয়েছেন ভারতের কৌশলগত স্বার্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বড় বান্ধব তার আর হবে না। কিন্তু ১৯৬২ সালে ভারত যেভাবে রাশিয়াকে পাশে পায়নি, এখন একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রকেও পাচ্ছে না।



মোদি ২০১৯ সালের নির্বাচনে পুনরায় জেতার জন্য ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বহু ঐতিহ্য ও রেওয়াজ বিসর্জন দিয়েছেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জিনিসপত্রের দাম সহনীয় রাখাসহ নাগরিকের জীবনযাপনসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি ভোটার টানতে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে খেলেছেন। সাধারণ ভারতীয়দের ভূখণ্ডগত চেতনাকে ব্যবহার করে তিনি পুলওয়ামার সন্ত্রাসী হামলাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। এটি করতে গিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছেন এবং ভোটারদের মন পেতে বলেছেন পাকিস্তানের অধীনে থাকা কাশ্মীরকে তাঁর সরকার ছিনিয়ে আনবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিভিন্ন পরাশক্তির নেতাদের সঙ্গে কোলাকুলি ও হাত মিলিয়ে নিজের জনগণের কাছে জনপ্রিয় হতে চেয়েছেন। বড় বড় দেশের নেতাদের সঙ্গে কোলাকুলি ও হাত মেলাতে গেলে মাশুলটাও বড় দিতে হয়। পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়ে মোদিকে এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনা বাবদ ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে হাত মেলানো দাম বাবদ রাফায়েল চুক্তি করতে হয়েছে, যার খরচ ৩ হাজার কোটি ডলার। পুতিন আর মাখোঁর সঙ্গে হাত মেলাতে না হয় অর্থ গেছে। কিন্তু সি চিন পিং আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বুক মেলাতে গিয়ে দাম দিতে হয়েছে আরও বেশি। সেখানে কৌশলগত ব্যয় হয়েছে অনেক।



২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের হিউস্টনে ‘হাউডি মোদি’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৫০ হাজার লোকের মধ্যে মোদি সেখানে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তারপর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গুজরাটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোয়া লাখ মানুষের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন মোদি। ট্রাম্প সেখানে মোদিকে জড়িয়ে ধরে ‘সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। মোদি ও তাঁর মন্ত্রীরা ভেবেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে, তা থেকে ভারত ফায়দা তুলতে পারে। মোদি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করবে। এবং তা লগ্নি করা হবে ভারতে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে যতখানি শক্তি নিয়ে নেমেছে বলে মোদি মনে করেছেন, আসলে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না।



সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় নিরাপত্তা নীতি ঘোষণা করেছে। নীতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘এক চীন নীতি’র বিরোধিতা করছে না এবং চীনের সরকার বদলানোর কোনো ইচ্ছাও যুক্তরাষ্ট্রের নেই। কিন্তু মোদি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের ভার্চ্যুয়াল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দুজন পার্লামেন্ট সদস্যকে পাঠিয়ে দিলেন। এতে চীনের চটে যাওয়ারই কথা। যে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর মোদির এত নির্ভরতা, সেই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ভারতের বন্ধুপ্রতিম একটি দেশও এখন পর্যন্ত চীনের এই হামলায় ভারতের পক্ষ নিয়ে একটি কথাও বলেনি।



৪ জুন মোদি সামরিক কৌশল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে যে ভার্চু্যয়াল বৈঠক করেছেন এবং বিবৃতি প্রকাশ করেছেন, তার কোথাও লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে একটি কথাও ছিল না। চীনের সঙ্গে যখন পুরোদস্তুর লড়াই লেগে গেছে, তখন ভারতকে সমর্থন করার মতো একটি দেশও নেই। বিশিষ্ট এশিয়া বিশেষজ্ঞ স্টিফেন রোস সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অচিরেই বড় আকারের বাজেট ঘাটতি দেখা দেবে এবং তার ফলে ডলারের মূল্যপতন শুরু হয়ে যাবে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতায় যেতে চাইছে। আগামী নভেম্বরে নির্বাচনের পরই সে ধরনের চুক্তি হতে পারে।



মোদি আশা করেছিলেন, করোনা–পরবর্তী আমলে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন বদলে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ তখন চীন থেকে মুখ ঘুরিয়ে ভারতকে সরবরাহকারী অংশীদার হিসেবে চাইবে। এসব দেশ তাদের কারখানা চীন থেকে সরিয়ে ভারতে নিয়ে আসবে। কিন্তু এসব আর সম্ভব হবে না। চীন এখন ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টায় আছে। ভারতের সঙ্গে চীনের ৩ হাজার ৪০০ কিলোমিটারের সীমান্ত থাকায় চীন মনে করে, এই অঞ্চলে ভারতের সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি তাকে হিমালয় ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সমস্যায় ফেলবে।



সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদির যে বৈঠক হয়েছিল, তাতে একটি সমঝোতা হয়। সেখানে উভয় দেশ উভয়ের স্পর্শকাতর বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বলে বলা হয়েছে। চীন মনে করছে, মোদি সরকার সি চি পিংকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে পশ্চিমাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছে। সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, আকসাই চীনকে আবার চীনের কাছ থেকে ফিরিয়ে আনা হবে। এতে তাদের সেই ধারণা আরও পোক্ত হয়। চীন এখন ভারতকে এই বার্তা দিতে চায়, যদি পশ্চিমাদের সঙ্গ ছেড়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে দিল্লি থাকে তো ভালো, না থাকলে ১৯৬২ সালের চেয়ে করুণ পরিণতি ভারতকে ভোগ করতে হবে। এই সংকট যদি মোদি আলোচনা দিয়ে কাটিয়ে উঠতে না পারেন, তাহলে সত্যিই ভারতকে শক্ত সাজা দেবে চীন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top