What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ছাত্রদের ওপর মোবাইল ফোনের কুপ্রভাব (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,613
Messages
121,793
Credits
341,079
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
Compass
ছাত্রদের ওপর মোবাইল ফোনের কুপ্রভাব


আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নব নব আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষ সভ্যতার চরম উৎকর্ষ সাধন করেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ও বিকাশ ঘটিয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। বিজ্ঞান মানব জীবন থেকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ভোগান্তি দূর করে জীবনকে করেছে সহজ-সাবলীল ও সুন্দর। নতুন ও সম্ভাবনাময়ী আবিষ্কারের কল্যাণমুখী প্রয়োগে আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান যোগ করেছে এক নব দিগন্ত। দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা বিজ্ঞান নতুন নতুন বিস্ময় উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানবজাতীকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে চলেছে। পৃথিবীকে মানুষের জন্য পরিণত করেছে বিশ্বগ্রামে (Global village)। জীবনকে করে তুলেছে গতিময় ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়নের পাশাপাশি যোগাযোগের সহজতম মাধ্যম হিসাবে বিজ্ঞান যুগে যুগে আবিষ্কার করেছে অসংখ্য বিকল্প। ডাক যোগাযোগের সহজতর বিকল্প হিসাবে আবিষ্কার করেছে ফ্যাক্স, টেলিফোনের সহজতর বিকল্প হিসাবে ওয়্যারলেস প্রভৃতি। আবিষ্কারের এই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞানের যে আবিষ্কারটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়, সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, তা হ'ল মোবাইল ফোন। এর অপর নাম মুঠোফোন। বিজ্ঞানের এই অনুপম সৃষ্টি মোবাইল ফোন বর্তমান টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় নবদিগন্তের সূচনা করেছে। গোটা বিশ্বকে এক নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করে মানুষের প্রয়োজন পূরণ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। এর সাহায্যে পৃথিবীর এক প্রান্ত হ'তে অপর প্রান্তে অত্যন্ত স্বল্প সময়ে সংবাদ আদান-প্রদান, যোগাযোগ স্থাপন, ভাবের বিনিময় সম্ভব হয়ে উঠেছে।
শুধু কি তাই? বিজ্ঞানের উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে মোবাইল ফোনের আকার-আকৃতি ও ব্যবহারে এসেছে বৈচিত্র্য ও অভাবনীয় পরিবর্তন। আবেগ-অনুভূতি বিনিময়ের দ্রুততম মাধ্যম হওয়া ছাড়াও মোবাইল ফোন আজকাল মানুষের অন্যতম বিনোদন সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। অবসাদ দূর ও অবসরকে আনন্দময় করে তুলতে এতে সংযোজিত হয়েছে অডিও, ক্যামেরা, ভিডিও প্রভৃতি প্রযুক্তি। কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা অনুষ্ঠানকে জীবন্ত ও স্মরণীয় করে রাখার জন্য বর্তমানে ভিডিও ক্যামেরার প্রয়োজন আর তেমন অনুভূত হয় না। একটি উন্নতমানের মোবাইল ফোন থাকলেই যথেষ্ট। বর্তমানে কম্পিউটারের এক-তৃতীয়াংশ কাজ মোবাইলেই করা সম্ভব হচ্ছে। যদ্দরুন মানুষের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি যেন পকেট কম্পিউটারে পরিণত হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এর দ্বারা হয়তো কল্পনাতীত কিছু করা সম্ভব হবে।
 
যোগাযোগ ব্যবস্থায় নবদিগন্তের দ্বারোন্মোচক ও অপার সম্ভাবনার আধার হওয়া সত্ত্বেও কোথায় যেন একটি প্রশ্ন থেকে যায়- মোবাইল ফোন ছাত্রদের কি দিয়েছে?
বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। 'বিজ্ঞানের যুগ' বলে কথিত এই আধুনিক কালে মোবাইল ফোনে উচ্চ প্রযুক্তির পরশ থাকায় এর প্রতি মানুষের আকর্ষণ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিদেশী মোবাইল ফোন প্রস্ত্ততকারক কোম্পানী জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে বাজারে ছাড়ছে বাহারী ডিজাইন ও বিচিত্র ফাংশনের হাযারো মোবাইল ফোন। বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের নিমিত্তে কোম্পানীগুলো কে কত কম মূল্যে জনগণের হাতে মোবাইল তুলে দিতে পারে সে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। বিদেশী এসব কোম্পানী তাদের এই অফারের মাধ্যমে আমাদের দেশের বাজারে যেভাবে জেঁকে বসেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। এসব মোবাইল সেট বেশ সস্তা হওয়ায় জনসাধারণ মোবাইলের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে ছাত্র।

এমনিতেই মোবাইল ফোনের প্রতি ছাত্রদের রয়েছে অদম্য আকর্ষণ। তারপরও অনেক সহজলভ্য হওয়ায় অধিকাংশ ছাত্রই তা পাওয়ার উপায় খোঁজায় ব্যস্ত। লেখাপড়ার মূল্যবান সময় নষ্ট করে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজেদের পসন্দের মোবাইল ক্রয় করার জন্য। বাড়ির বাইরে থেকে (যেমন ছাত্রাবাস, স্কুল/মাদরাসা, হোস্টেল ইত্যাদি) অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীরা হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে এমনকি একাধিক প্রাইভেটের নাম করে মিথ্যা বলে পিতার নিকট হ'তে বেশী বেশী টাকা নিয়ে অথবা দূরে অবস্থান করার অজুহাত দেখিয়ে পিতা-মাতাকে সম্মত করে এবং নিজ বাড়ীতে অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীরা পিতা-মাতার সাথে জেদ করে তাদেরকে মোবাইল কিনে দিতে বাধ্য করছে। এই প্রবণতা খুব বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে। তবে একথাও ঠিক যে, অনেক পিতা-মাতা সখ করে তাদের সন্তানদেরকে মোবাইল কিনে দিচ্ছেন।
 
ছাত্রজীবন অনাগত ভবিষ্যতে সাফল্যের বীজ বপনকাল, জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য নাগরিক রূপে গড়ে তোলার সময়, শরীর চর্চার মাধ্যমে নিজের মন ও শরীরকে বিকশিত করার সময়, সে মহামূল্যবান রত্মকে তারা হেলায় নষ্ট করছে। একটু অবসর পেলেই, এমনকি পড়ার টেবিলে বসে চুপিসারে মোবাইলে গেমস খেলায় মেতে উঠছে।
শুধু কি গেমস (?)। বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা গান-বাজনা যেমন হালাল করে নিয়েছি (নাঊযুবিল্লাহ), তেমনি গান-বাজনা শোনার সরঞ্জামের তেমন প্রয়োজনও হয় না। ঘটা করে রেডিও-ক্যাসেটের সামনে বসে সময় নষ্ট করার দরকার আজকের দিনে আর নেই। একটি সাদামাটা মোবাইল ফোন সাথে থাকলেই যথেষ্ট, পথ চলতে চলতেই গান শোনা যাবে। তবে এক্ষেত্রে মেমোরি কার্ড (Memory Card) নামের একটি বস্ত্ত হ'লে আরো সুবিধা হয়। মাত্র ১৬৫ বর্গ মিলিমিটার আয়তনের (সীমকার্ডের চেয়েও ছোট) অতিক্ষুদ্র এ বস্ত্তটির তথ্য ধারণ ক্ষমতা এত বেশী যে, তা ভিসিডি ডিস্ককেও হার মানায়। এতে শত শত অডিও গান সংরক্ষণ করা যায়। এমনকি এটি একটানা চার ঘণ্টা শব্দসহ ভিডিও চিত্র ধারণ করতে পারে। আর এই শক্তিশালী ক্ষুদ্র বস্ত্তটি বর্তমানে অধিকাংশ মোবাইলে যুক্ত করার সুবিধা থাকায় মোবাইল আজ বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে। হাট-বাজারে, পথে-ঘাটে বের হ'লেই মোবাইল ফোন থেকে গান-বাজনার অশালীন সুর ভেসে আসে। যারা এভাবে রাস্তা-ঘাটে মোবাইলে গানবাজায়, তাদের অধিকাংশই তরুণ ছাত্র। গৃহ-পরিবেশেও গান শোনা বন্ধ নেই। পিতা-মাতার আগোচরে কানে এয়ারফোন ঢুকিয়ে একাকী ঘরে পড়ার টেবিলে গুণ গুণ শব্দ তুলে গান শুনছে অথচ পিতা-মাতা কক্ষের বাইরে থেকে মনে করছেন তার আদরের সন্তান হয়তো অধ্যয়নে নিমগ্ন। কিন্তু তাদের সন্তান যে গান-বাজনার মধ্যে ডুবে আছে তা তারা বুঝতেই পারছেন না।

এর সাথে আবার রয়েছে FM Radio। প্রতিটি মোবাইল ফোনে মেমোরি কার্ড সংযুক্ত করার সুযোগ না থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৯০%-এর বেশী মোবাইল ফোনে রয়েছে রেডিওর প্রচার তরঙ্গে প্রচারিত অনুষ্ঠান শোনার সুবিধা। ফলে মোবাইল নামের এ যন্ত্রটি অনেকটা রেডিওর বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারী বেতার কেন্দ্রগুলো ছাড়াও অসংখ্য বেসরকারী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা FM প্রচার তরঙ্গে অনুষ্ঠান প্রচার করে। এদের দৈনিক কার্যক্রমের তিন-চতুর্থাংশ সময় জুড়ে থাকে বাংলা, হিন্দী, ইংরেজী গান। অনুরোধের মাধ্যমে এদের কাছ থেকে পসন্দের গান শোনা যায় বলে বর্তমানে এসব FM বেতারকেন্দ্র বেশ জনপ্রিয়। বিশেষতঃ যুব ও ছাত্র সমাজে এদের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশী।
 
ছাত্রজীবন অনাগত ভবিষ্যতে সাফল্যের বীজ বপনকাল, জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য নাগরিক রূপে গড়ে তোলার সময়, শরীর চর্চার মাধ্যমে নিজের মন ও শরীরকে বিকশিত করার সময়, সে মহামূল্যবান রত্মকে তারা হেলায় নষ্ট করছে। একটু অবসর পেলেই, এমনকি পড়ার টেবিলে বসে চুপিসারে মোবাইলে গেমস খেলায় মেতে উঠছে।
শুধু কি গেমস (?)। বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা গান-বাজনা যেমন হালাল করে নিয়েছি (নাঊযুবিল্লাহ), তেমনি গান-বাজনা শোনার সরঞ্জামের তেমন প্রয়োজনও হয় না। ঘটা করে রেডিও-ক্যাসেটের সামনে বসে সময় নষ্ট করার দরকার আজকের দিনে আর নেই। একটি সাদামাটা মোবাইল ফোন সাথে থাকলেই যথেষ্ট, পথ চলতে চলতেই গান শোনা যাবে। তবে এক্ষেত্রে মেমোরি কার্ড (Memory Card) নামের একটি বস্ত্ত হ'লে আরো সুবিধা হয়। মাত্র ১৬৫ বর্গ মিলিমিটার আয়তনের (সীমকার্ডের চেয়েও ছোট) অতিক্ষুদ্র এ বস্ত্তটির তথ্য ধারণ ক্ষমতা এত বেশী যে, তা ভিসিডি ডিস্ককেও হার মানায়। এতে শত শত অডিও গান সংরক্ষণ করা যায়। এমনকি এটি একটানা চার ঘণ্টা শব্দসহ ভিডিও চিত্র ধারণ করতে পারে। আর এই শক্তিশালী ক্ষুদ্র বস্ত্তটি বর্তমানে অধিকাংশ মোবাইলে যুক্ত করার সুবিধা থাকায় মোবাইল আজ বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে। হাট-বাজারে, পথে-ঘাটে বের হ'লেই মোবাইল ফোন থেকে গান-বাজনার অশালীন সুর ভেসে আসে। যারা এভাবে রাস্তা-ঘাটে মোবাইলে গানবাজায়, তাদের অধিকাংশই তরুণ ছাত্র। গৃহ-পরিবেশেও গান শোনা বন্ধ নেই। পিতা-মাতার আগোচরে কানে এয়ারফোন ঢুকিয়ে একাকী ঘরে পড়ার টেবিলে গুণ গুণ শব্দ তুলে গান শুনছে অথচ পিতা-মাতা কক্ষের বাইরে থেকে মনে করছেন তার আদরের সন্তান হয়তো অধ্যয়নে নিমগ্ন। কিন্তু তাদের সন্তান যে গান-বাজনার মধ্যে ডুবে আছে তা তারা বুঝতেই পারছেন না।

এর সাথে আবার রয়েছে FM Radio। প্রতিটি মোবাইল ফোনে মেমোরি কার্ড সংযুক্ত করার সুযোগ না থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৯০%-এর বেশী মোবাইল ফোনে রয়েছে রেডিওর প্রচার তরঙ্গে প্রচারিত অনুষ্ঠান শোনার সুবিধা। ফলে মোবাইল নামের এ যন্ত্রটি অনেকটা রেডিওর বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারী বেতার কেন্দ্রগুলো ছাড়াও অসংখ্য বেসরকারী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা FM প্রচার তরঙ্গে অনুষ্ঠান প্রচার করে। এদের দৈনিক কার্যক্রমের তিন-চতুর্থাংশ সময় জুড়ে থাকে বাংলা, হিন্দী, ইংরেজী গান। অনুরোধের মাধ্যমে এদের কাছ থেকে পসন্দের গান শোনা যায় বলে বর্তমানে এসব FM বেতারকেন্দ্র বেশ জনপ্রিয়। বিশেষতঃ যুব ও ছাত্র সমাজে এদের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশী।
Good luck for your writing
 
এখন যা আছে ভবিষ্যতে এর অবস্থা আরো শোচনীয় হবে।
 
মোবাইল নতুন একটা জেনারেশন বানাচ্ছে যেটা ভাল কি মন্দ পরে বুঝা যাবে।
 
Good luck for your writing

এখন যা আছে ভবিষ্যতে এর অবস্থা আরো শোচনীয় হবে।

মোবাইল নতুন একটা জেনারেশন বানাচ্ছে যেটা ভাল কি মন্দ পরে বুঝা যাবে।

চমৎকার মন্তব্যের জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ !
 
এসব বেতার কেন্দ্র ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার সময় অনুরোধের ও পসন্দের গান প্রচার করে থাকে। গানের সাথে আবার রয়েছে কোকিল কণ্ঠী এক জোড়া যুবক-যুবতীর মনকাড়া উপস্থাপনা। ফলে ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়ার মূল্যবান সময়কে জলাঞ্জলি দিয়ে সেসব সংগীতানুষ্ঠান শোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
মোবাইলের কর্মকান্ড শুধু গান-বাজনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হয়তো এতটা শঙ্কিত হ'তে হ'ত না। কিন্তু এর মরণছোবল যে আজ মানুষের চরিত্রে অব্যাহত দংশন করে চলেছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দরুন মোবাইল ফোনে ভিডিও সুবিধা যুক্ত হওয়ায় এ যন্ত্রটি অনেকটা পকেট টেলিভিশনে রূপ নিয়েছে। এতে করে মোবাইল সৎকাজে যতটা না ব্যবহৃত হচ্ছে, তার চেয়ে বহুগুণে ব্যবহৃত হচ্ছে চরিত্র বিধ্বংসী কাজে। বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও গান এমনকি টিভিতে প্রচার অযোগ্য সিনেমা মোবাইলে দেখা যাচ্ছে। মেমোরি কার্ডে ডাউনলোড করে মোবাইলের সাহায্যে অহরহ নীলছবি (Blue film) দেখা হচ্ছে? (নাঊযুবিল্লাহি)। এতে চরিত্র ধ্বংস হচ্ছে, ঘটছে শারীরিক অবক্ষয় আর গুণাহ হচ্ছে অপরিমেয়।
যে চরিত্র মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ, যে সম্পদ একবার হারিয়ে গেলে কোন দিনই ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়, সে অমূল্য সম্পদ যে এই যন্ত্রের দ্বারা নিমেষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে তা কি কেউ কখনো খেয়াল করেছে? এর কারণে কিশোর ও যুবসমাজ আজ চরম হুমকির মুখে। সচেতন বিবেক নিশ্চয়ই জানে যে, কিশোরকালই (১২-১৬ বছর) চরিত্র গঠনের সময়। এ সময়ের সদ্ব্যবহার যেমন ভবিষ্যৎ সাফল্যের দ্বার উন্মোচন করতে পারে, তেমনি এ সময়ের অপব্যবহারের দরুন ভবিষ্যতে সীমাহীন দুর্ভোগেরও সম্মুখীন হ'তে হয়।

এখানেই শেষ নয়, এই যন্ত্রটি আজ প্রণয় যোগাযোগেরও দ্রুততম মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে এককভাবে শুধু মোবাইল নয়, দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কগুলোও দায়ী। তাদের বিভিন্ন অফার যেমন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রিচার্জে এত শতাংশ বোনাস বা ফ্রি মিনিট, দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে হ্রাসকৃত কলরেট, রাতের জন্য বিশেষ ছাড়, বিশেষ কয়েকটি নাম্বারে সার্বক্ষণিক কথা বলার জন্য সর্বনিম্ন কলরেট ইত্যাদি। আবার কোম্পানীর প্রচার ও প্রসারের জন্য কমমূল্যে বিভিন্ন সুবিধা সম্বলিত সীমকার্ড তো রয়েছেই। এমনিতে আমাদের দেশে সহশিক্ষা ব্যবস্থার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ অবারিত, তারপরও মোবাইলে এতসব সুবিধা; সব মিলিয়ে মোবাইল ফোন যেন প্রণয়ালাপের অদ্বিতীয় মাধ্যম।
 
মোবাইলের মাধ্যমে না দেখেই শুধু কথা বলে অনেকের সাথে গড়ে উঠছে প্রেমের সম্পর্ক। এমনকি এভাবে একে অপরের সাথে 'মোবাইল প্রেম' করে ঘরও বাঁধছে। পরিণামে যা হবার তাই হচ্ছে। ঘর ভাঙছেও দ্রুত।
গৃহে পিতা-মাতার চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে লেখাপড়া বাদ দিয়ে সন্তর্পণে গভীর রাত পর্যন্ত কথা বলা, প্রত্যাশিত কোন কলের জন্য মোবাইল নীরব (Silent) রেখে অপেক্ষা করা যাতে কেউ টের না পায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হোস্টেলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসকের ভয়ে টয়লেট-বাথরূমে ঢুকে কথা বলা ইত্যাদি ছাত্র-ছাত্রীদের পেশায় পরিণত হয়েছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে- সব ছাত্র-ছাত্রী কি একাজে লিপ্ত? না, মোবাইল ব্যবহারকারী অপরিণামদর্শী কতিপয় ছাত্র-ছাত্রী একাজে লিপ্ত। তবে একথা জোর দিয়ে বলা যেতে পারে যে, মোবাইল ব্যবহার করে অথচ একাজে সম্পৃক্ত নয় এমন ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যায় অনেক কম। একাজে একদিকে যেমন সময় ও অর্থ অপচয় হয়, তেমনি অপরদিকে বিভিন্ন সামাজিক বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। আর চারিত্রিক অবক্ষয় যে ঘটছে তা তো বলাই বাহুল্য।
এতে সামাজিক বা আর্থিক কোন ক্ষতি না হ'লেও একাজ শরী'আত সমর্থিত নয়। ইসলাম মাহরাম ও স্বামী-স্ত্রী ব্যতীত পর নারী-পুরুষের সাথে দেখা করা নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি ফিতনার আশঙ্কা থাকলে পর নারী-পুরুষে কথা বলা পর্যন্ত সমর্থন করেনি। তাহ'লে কিভাবে বেগানা নারী-পুরুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইলে কথা-বার্তা, প্রেমালাপ চালাতে পারে?
ইতিমধ্যেই দেশের অনেক আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অভিভাবকগণ আপন আপন সন্তানের ওপর এ বিষয়ে সচেতন দৃষ্টি রাখলে তারা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবে। তবে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকদের চেষ্টা যথেষ্ট হবে না, এক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানীগুলোর উপর কঠোর আইন জারী করতে হবে যাতে তারা ১৮ বছরের কম বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট সীমকার্ড বিক্রি করতে না পারে। তবে শুধু আইন করে কোন কাজ হবে না। এসব অপকর্ম থেকে বেঁচে থাকার অপরিহার্য পূর্বশর্ত হ'ল তাক্বওয়া তথা আল্লাহভীতি। কারণ তাক্বওয়া ছাড়া কোন কাজে সাফল্য অর্জন সহজ নয়। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তাক্বওয়া সহকারে কার্যকরী পদক্ষেপ অবলম্বনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের এই বিভীষিকা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top