What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other ব্যাচেলর ও অপি করিম (1 Viewer)

7XU4pPj.jpg


– এই কী করো?
– তোমার সাথে কথা বলি
– আমার আর ভালো লাগে না। চলো বিয়ে করে ফেলি।
– ওরে আমার কচি কচি বাবুটা

….

– এই চলো না দুজনে লিটনের ফ্ল্যাটে যাই
– গিয়ে
– খুব মজা হবে। অনেক বড় ফ্ল্যাট। শুধু তুমি আর আমি।

প্রথমটা ফোনে ফিসফিস করে কথা বলা দুই প্রান্তের দুটি ছেলেমেয়ে অপি করিম ও ফেরদৌস।
পরেরটা দুজনের দেখা হবার পর যখন সম্পর্ক দানা বাঁধছিল।

‘লিটনের ফ্ল্যাট’ কথাটা এ ছবির মাধ্যমেই জনপ্রিয় হয়। আধুনিক নাগরিক সমাজে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফোন যখন চলে এসেছে, চিঠির সময় শেষ হয়ে এসেছে তখনকার পরিবর্তিত কালচারে এ ছবি নির্মিত হয়েছিল। প্রজন্মের গল্পটা প্রযুক্তিনির্ভর হতে শুরু করেছিল। সে প্রজন্মের একজন ছিল অপি করিম।

qVOrRl0.jpg


মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী ‘ব্যাচেলর‘ ছবিতে অপি-কেই ফোকাস করেছেন আরো অভিনেত্রীর ভিড়ে। স্পেশালি শাবনূর, জয়া আহসান, সুমাইয়া শিমু-র মতো অভিনেত্রীদের মধ্য থেকে অপি হয়ে ওঠে গল্পের শুরু। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পরের বছর ২০০৪-এ অপি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল।

ফিস ফিস করে কথা বলার ভঙ্গিতে অপি-ফেরদৌস রোমান্টিক কথোপকথনের সূচনা হয় ছবিতে। একজন আরেকজনকে পছন্দ করলেও অপি-র আইডিওলজি ছিল বন্ধু্ত্ব পর্যন্ত সম্পর্ক থাকবে। বন্ধুত্বের ভেতর ফেরদৌস সন্তুষ্ট ছিল না সে প্রেমের প্রতি দুর্বল ছিল। তখনই অপি তার আরেকটা সম্পর্কের কথা বলে। আরেকটা ছেলেও এভাবে বন্ধুত্বের পরে তাকে অন্যভাবে ভাবতে শুনু করেছিল তখন অপি নিজেই সম্পর্কটা শেষ করে। ফেরদৌস যে একদম বোঝেনি তা নয়। জি-মেইলে কথা বলার সময় অপি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। ফেরদৌস ফোন করলে কাঁদে। অপির মধ্যে কমপ্লেক্সিটি ছিল রিলেশনশিপ নিয়ে, ভয়ও ছিল। রিলেশনশিপ মেইনটেইন করাটা তার কাছে কঠিন লাগত। ফেরদৌস বিয়ের কথা বললে অপি জানায়-‘একটা মানুষের সাথে একটানা ৩০ দিন? ইম্পসিবল।’ এরকম আইডিওলজি যখন ফেরদৌসের সাথে খাপ খায়নি তখনই ব্রেকআপ করে ফেলে অপি নিজেই। ‘ব্রেকআপ’ কথাটার আগমন এভাবেই ঘটে। হ্যাঁ, আগেও হত প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদ কিন্তু ‘ব্রেকআপ কালচার’ নতুন করে একটা ট্রেন্ড দাঁড় করায় যার চর্চা চলে নাগরিক শহুরে সমাজের প্রজন্মের মধ্যে যারা প্রযুক্তির ভেতর ঢুকে পড়েছিল। রিলেশনশিপ তাদের কাছে সহজ একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা কাঁদত নিজে নিজে ঠিকই কিন্তু রিলেশনশিপ শেষ করার পর।

SdX63J3.jpg


অপি-র সাইলেন্ট অ্যাকটিং-এর সাথে ফেরদৌসেরও যোগ হয়। দুজন শুধু কাঁদে শেষবার কথা বলার সময়। অপি কিছুক্ষণ পরে বলে-‘ঠিক আছে রাখি।’ এরপর অনেকদিন পরে শাবনূরের সাথে ফেরদৌসের বিয়ের কথা চললে তাকে ফোন দেয়ার বদলে অপি-কে ফোন দেয় ভুল করে। অপি তখন রেগে বলে-‘কাকে ফোন করো মাথা ঠিক থাকে না?’ অপি হয়ে ওঠে ফেরদৌসের মেন্টাল ফ্রিকশনের অংশ।

অপি-র সাথে সম্পর্ক ছিল আহমেদ রুবেল-এর। সেটা ফেরদৌসের সাথে পরিচিত হবার আগেই। ব্যাচেলর ফ্ল্যাটে অপি ফোন করেছিল তার পরিচিতদের সাথে কথা বলতে। না পেয়ে ফেরদৌসের সাথে একদিন দুইদিন এভাবে অনেকদিন কথা হবার পর রিলেশনশিপে জড়ায়। রুবেল সন্দেহ করে অপিকে। সন্দেহের প্রভাব এই প্রজন্মের ভেতর যে তীব্র সেটা দেখানো হয়। ‘কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে’ টুটুলের গানটিতে রুবেলকে দেখা যায় অপি-কে ফলো করতে।

Ktu97Rn.jpg


অপি-র চরিত্রটিতে বহুগামী সম্পর্কের দিকটা দেখানো হয়েছে। তার রুবেলের আগের একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক, রুবেল এবং ফেরদৌস এ তিনজনের সাথে যে গল্পগুলো তুলে ধরা হয়েছে এটাই ছিল বহুগামিতা। এগুলোর সাইড অ্যাফেক্টে অপি একসময় নিঃসঙ্গ হয়ে যায় এবং কর্মজীবনে ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে। তার গন্তব্য শেষ পর্যন্ত হয়নি। রুবেলই হতে পারত গন্তব্য কিন্তু আল্টিমেটলি হয়নি।

ছবিতে পান্থ কানাই-র ‘গোল্লায় নিয়ে যাচ্ছে আমায় হাওয়াই জলের গাড়ি’ গানটি অন্যসব চরিত্রের সাথে অপি-কে প্রেজেন্ট করে। অপি তার ভূমিকায় অসাধারণ ন্যাচারাল অভিনয় করেছে।

অপি করিম চলচ্চিত্র সেভাবে করেনি। তার ক্যারিয়ারে ‘ব্যাচেলর’ অবশ্যই বিশেষ কিছু হয়ে থাকবে স্পেশালি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য। তার চরিত্রটি ছবিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শিক্ষণীয় তো অবশ্যই কারণ যে কালচারে সেই প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে ছবিটিতে অপি অভিনয় করেছে এখন সেসব চলছে বহাল তবিয়তে। প্রজন্মের সেই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে, সিরিয়াস হতে হবে রিলেশনশিপ নিয়ে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top