What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অতিথি by nextpage (1 Viewer)

Ochena_Manush

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Aug 12, 2022
Threads
257
Messages
17,616
Credits
362,761
LittleRed Car
Automobile
Strawberry
Audio speakers
ভোরের আলো এখনো সেই মত ফুটে ওঠেনি তবে সূর্য উঠার আগের পুবের আকাশ জুড়ে যেই রক্তিম আভা টুকু ছড়িয়ে পড়ে সেটার আলোয় হালকা রঙিন হয়ে উঠেছে চারদিক। দক্ষিণের পথ ধরে এক ঝাঁক নিশাচর পাখি দল বেঁধে ঘরে ফিরছে আর নিঃসঙ্গ ধ্রুবতারা টা এখনো জ্বল জ্বল করছে ঐ আকাশের বুকে। ভোরের এই সময়টা বড্ড শান্ত হয়ে থাকে চারপাশ অদ্ভুত এক শীতলতায় ঢেকে আছে সবকিছু কোন শোরগোল নেই নেই কোন যান্ত্রিক কোলাহল। তবে এমন ভূতুড়ে নীরবতা ভেঙে মাঝে মাঝে আশেপাশে গাছ গুলো থেকে পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে। ঝিরিঝিরি বয়ে যাওয়া বাতাস টা গায়ে লাগলে শরীর জাড়িয়ে উঠে মনে প্রশান্তি ঢেউ বইতে থাকে জীবনে সঞ্চার হয় নতুন প্রাণশক্তির।


পাড়ার মধ্যিখানে রাধা বিনোদ মন্দিরের বড় ঘন্টা টা কয়েকবার বেজে উঠলো সেই সাথে শঙ্খ ধ্বনিতে জগতের ঘুম ভাঙার আহ্বান জানিয়ে দেয়া হলো। মন্দিরের পুরোহিত মঙ্গল আরতির প্রস্তুতি নিচ্ছে ততক্ষণে। অন্য আরেক সেবক বিগ্রহের শৃঙ্গার নিয়ে ব্যস্ত, বিগ্রহ অভিষেকের পর পুরাতন বস্ত্র অলঙ্কার মুকুট সাজসজ্জা সব খুলে নিয়ে নতুন করে অপরূপা শোভিত সাজে রাধা বিনোদ সহ বাকি বিগ্রহ গুলোর একে একে শৃঙ্গার করা হচ্ছে। গর্ভগৃহের পাশেই কয়েকজন ভক্ত বিগ্রহের জন্য বাহারি ফুলের রঙিন মালা গেঁথে চলেছে আবার কেউ হয়তো চন্দন পিসে নিচ্ছে তিলক গুলে নিয়ে আহ্নিক চিহ্ন অংকন করছে। অন্য দিন গুলোতে ভোরের আরতির সময় মন্দির প্রাঙ্গণে পুরোহিত সেবক আর হাতেগোনা কয়েকজন ভক্তের উপস্থিতি ছাড়া তেমন একটা মানুষের আনাগোনা থাকে না তবে আজ মন্দিরের মাঠ জুড়ে অনেকেই বসে আছে কেউ কেউ গাড়িটা ধুয়ে পরিষ্কার করে সাজানোর কাছে হাত লাগাচ্ছে৷ পাড়ার বেশির ভাগ মানুষকে আজ মন্দিরের মাঠেই পাওয়া যাবে শুধু ছোট্ট বাচ্চা গুলো আর তাদের মায়েরা বাড়িতে রয়ে গেছে কিছুক্ষণের মাঝেই হয়তো ওরা এসে যাবে। কাল সন্ধ্যা থেকে উধাও হয়ে যাওয়া মোড়ের চা দোকানি বশির চাচা খাচি ভর্তি ফুল নিয়ে এসে গাড়িটার পাশে রেখেছে, অনির্বাণ তো খাচি থেকে ফুল গুলো ঢালতে গিয়ে অবাক

বশির চাচা এ কি করেছো তুমি এই এতো ফুল কোথা থেকে পেলে। এতো জাতের ফুল সব তো এই পাড়াতে পাওয়াই যায় না। কোথা থেকে জোগাড় করলে? (অনির্বাণের চোখ জোড়া ছলছলিয়ে উঠে)

ধুরু মিয়া তুমি আবার ওমন করে বলতাছো কে! ও আমার কি ছিল হেইডা তো ভালা করেই জানো তোমরা। ওর পছন্দের জিনিস গুলা আমি যেমন করেই হোক ঠিকি জোগাড় করতাম। এইডা ওর পছন্দ বলে কথা। আমি চাই ওর পছন্দের সব ফুল দিয়েই এই গাড়িটা সাজানো হোক, এইডা আমার অনেক দিনের ইচ্ছা।

শুধু তোমার কাছে কেন ও আমাদের সবার কাছেই কি ছিল সেটা আমরা সবাই জানি। আসো সবাই হাত লাগাই নাহলে গাড়িটা সাজাতে দেরি হয়ে যাবে। কইরে নগেন এদিকে আয়।

সত্যিই তো ও যে এই পাড়ার মধ্যমনি ছিল সেটা একবাক্যে সবার স্বীকার করতেই হবে। শেষ কবে পাড়ার কোন কাজে সবাইকে একসাথে পাওয়া গেছে সেটা বলা দুষ্কর৷ কোন কাজেই তো সবাই কখনোই একমতে পৌঁছাতে পারে নি। তবে ও ঠিকি যেকোন কাজে সবাইকে কোন জাদুমন্ত্রে কেমন করে জানি ম্যানেজ করে নিত আর সবাইকেই একসাথে নিয়েই সেই কাজ টা করে নিতো আজও এই বিদায়ের দিনে কোন মতবিরোধ ছাড়াই সবাইকে একসাথে একই সময়ে এই মাঠে পাওয়া গেছে৷ সবাই কোন না কোন কাজে নিজেকে যুক্ত করে নিয়েছে কাউকে কিছু বলে দিতে হয় নি আজ। নানা রঙের ফুলের তোড়ায় গাড়িটা সাজিয়ে তোলা হচ্ছে, গাদা ফুলের মালাতে গাড়িটার চারপাশের বর্ডার লাইনে গাড়িটাকে স্বর্গীয় রথের মত মনে হচ্ছে।

শঙ্খধ্বনি দিয়ে মন্দিরে পুরোহিত মঙ্গল আরতি শুরু করেছে ঘন্টার আওয়াজে একে একে মঙ্গল প্রদীপ, ময়ূরপুচ্ছ, অগুরো চন্দন কর্পূর, গঙ্গাজল, ধুপের ধোঁয়াতে বিগ্রহের আরতি করে চলেছে। মন্দিরের ভেতর থেকে ভেসে আসা অগুরো কর্পূর চন্দন শোভিত ঘ্রানে পুরো মন্দির চত্ত্বর ম-ম করছে অন্যদিনে ঘন্টা ধ্বনিতে যে প্রাণ থাকে সেটা আজ কেমন জানি ক্ষীয়মান লাগছে সেও বোধ হয় পাড়ার প্রিয়জনের বিদায়ে একটু হলেও ব্যথিত হয়ে আছে। আরতি দিতে দিতে পুরোহিত মশাই বারবার পেছন ফেরে কাউকে একটা খুঁজে চলেছে, অন্য অনেকদিনই মন্দিরের উত্তর কোনে একাকী সে বসে থাকতো আর অদ্ভুত সব প্রশ্ন করতো। তখন তার প্রশ্নের ধরণ আর যুক্তি গুলির কারণে কেন জানি তাকে নাস্তিক মনে হলেও আজ অনেক গুলো দিনের বোঝাপড়া আর প্রশ্ন গুলোর উত্তর খোঁজা শেষে সেই মানুষটাকেই সবচেয়ে বড় আস্তিক মনে হচ্ছে। কি অদ্ভুত এই জীব বৈচিত্র্য আর আজব ধাঁধার মানুষের মন। একে একে বাড়ি ফিরে যাওয়া নিষ্প্রাণ মুখ গুলো আবার মাঠের দিকে ঢুলুঢুলু হয়ে হাটতে হাটতে আসছে ছোট্ট বাচ্চা গুলোর চোখে মুখে ঘুমটা এখনো বেশ লেগে আছে কেউ কেউ দু হাতে চোখ গুলো কচলে নিচ্ছে বারবার।

কিগো বশির তোমাদের কতদূর? বেলা উঠে গেছে কিন্তু।
(জুব্বা পড়োয়া সাদা লম্বা দাড়িতে ঢেকে থাকা মুখ আর হাতে তসবি নিয়ে কেউ একজন এদিকেই এগিয়ে আসছে)

সালাম ইমাম সাব, আপনি কহন আইলেন? এইতো আমাগো কাজ শেষ বলতে গেলে। সবাই কি এসে গেছে নাকি?

কি হেমেন্দ্র দা কেউ বাকি আছে নাকি? দেরি করা ঠিক হবে নাকি।

নারে মনে হয় সবাই এসেছে, এবার বিদায়ের আয়োজন করতে বলি তাহলে।

মন্দিরের পুরো মাঠ জুড়েই পাড়ার সবাই বসে আসে, অনির্বান হাটতে হাটতে মাধুরীদের বাড়ির দিকে যেতে লাগলো। মাধুরীদের বাড়ি মন্দির থেকে মিনিট দুইয়ের পথ, এ পাড়ায় হাতে গোনা যে কটা পাকা দোতলা বাড়ি আছে তাদের মধ্যে ওদের বাড়ি একটা। অনেকটা ডুপ্লেক্স বাড়ির নকশায় করা বাড়িটার বাইরের উজ্জ্বল রংটা যে কারও চোখে পড়ে যায় সহজেই। বাকিদের মতে সবাই মাঠে গাড়ির কাছে এসে গেলেও সত্যিই কি সবাই এসেছে....
দূরে ঐ নতুন রং করা বাড়িটার একটা রুমে অচেতন অবস্থায় আধো আধো শ্বাস নেয়া একটা দেহ পড়ে আছে।
Hidden content
You need to reply to this thread or react to this post in order to see this content.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top