What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সৌরভ by cuck son (1 Viewer)

Ochena_Manush

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Aug 12, 2022
Threads
257
Messages
17,616
Credits
362,761
LittleRed Car
Automobile
Strawberry
Audio speakers
বাঁ হাতের কাঁপন টা আজকাল বেশ ঘন ঘন হচ্ছে, এই যেমন এখন হচ্ছে , আর এ জন্যই সকাল সকাল ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। দ্রুত ডাক্তার দেখানো দরকার কিন্তু ডাক্তার দেখাতে ইচ্ছে হয় না। কারন ডাক্তার এর কাছে গেলেই মন খারাপ হয়ে যায় , এবং সেই মন খারাপ অনেকদিন স্থায়ী হয় । এমনিতে বেশ আছি , খাচ্ছি দাচ্ছি, ঘুরছি ফিরছি , ঐ বিশ্রী রোগটার কথা খুব একটা মনে পরে না । কিন্তু ডাক্তার এর কাছে গেলেই ডাক্তার পই পই করে সব মনে করিয়ে দেয় । জেনো আমাকে কে মনে করিয়ে দিয়ে বেশ মজা পায় ডাক্তার বাবু । তাই ঠিক করেছি কিছুতেই আর ঐ ডাক্তার এর কাছে যাবো না । মাঝে মাঝে অবশ্য মনে হয় একটা মেয়ে ডাক্তার হলে ভালো হতো , মেয়ে ডাক্তারদের নিশ্চয়ই মনে মায়া দয়া বেশি থাকবে । খারাপ রোগের কথা বলার সময় ও মমতা মিশিয়ে বলবে ।


মশারির নিচে শুয়ে শুয়েই এসব ভাবছিলাম , কিন্তু আর বেশিক্ষণ শুয়ে থাকতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না , কারন কলিং বেল বাজছে, একাধারে বেজেই চলছে । এরকম নাছোড় বান্দা একজন ই আসে আমার এর কাছে , সেটা হচ্ছে মতিন । আমার ছোট বেলার বন্ধু । ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিলো , ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর কি হলো , বাড়ির পাশের বস্তির এক মেয়ে কে বিয়ে করে ফেলল । সেই থেকে বাড়ি ছাড়া , ওর বাবা ওকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলো । আমি নিজেও ব্যাপারটা জানতাম না , মতিন এর ক্লাসে আসা বন্ধ দেখে মনে করেছিলাম হয়ত কোথাও ঘুরতে গেছে । কিন্তু একদিন হঠাত সন্ধার সময় মতিন বাড়ি এসে হাজির । তখন আমি একাই থাকি , বাবা মারা জাওয়র পর ছোট বোন সুমি কে ওর বড় খালা নিয়ে গিয়েছিলো , বিয়ের চেষ্টা করা হচ্ছিলো ওর ।

" দোস্ত একটা উপকার করতে হবে , যদি করিস সারাজিবন তোর কেনা গোলাম হয়ে থাকবো" প্রায় ঘণ্টা খানেক অন্য কথা বলার পর বলেছিলো মতিন । আমি তেমন অবাক হইনি , কারন এই ধরনের কথা প্রায় বলত মতিন । " কি উপকার? টাকা নাই , টাকা দিতে পারবো না" নির্লিপ্ত ভাবে বলেছিলাম আমি ।

" না দোস্ত টাকা না , আশ্রয় দিতে হবে" আকুল হয়ে বলেছিলো মতিন ।

" ক্যান তোর বাড়িতে কি হয়েছে?"

" বের করে দিসে"

" কেনো?"

" সেটা একটু পরে বলছি , আগে বল আশ্রয় দিবি"

" আরে এমন করে বলছিস কেনো থাক না যতদিন ইচ্ছা" বেশ অবাক হয়েছিলাম ওর আচরনে ।

আমার অনুমতি পেয়েই ঘর থেকে দৌরে বেড়িয়ে গিয়েছিলো মতিন । ফিরে এসেছিলো মিনিট পনেরো পর , সাথে ১৪-১৫ এর একটা মেয়ে , গায়ে সস্তা চকমকে রঙ এর একটা সারি । মাথায় বড় করে ঘোমটা দেয়া । ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, যদিও বাড়িতে আমি একাই থাকি , অভিবাবক কেউ নেই যে কৈফিয়ত দিতে হবে , কিন্তু তখনো আমি এই স্বাধীন জীবনে সম্পূর্ণ অভ্যস্ত হয়ে উথিনি
" তোর ভাবি হয়" হাঁসি মুখে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো মতিন । রাজ্যের প্রস্ন ঘুরপাক খেলেও মুখে কিছুই বলতে পারিনি ।
" খুব ভালো চা করতে পারে তোর ভাবি" বউ কে দার করিয়ে রেখেই বিছানায় হেলান দিয়ে বসে বলেছিলো মতিন। তারপর বৌয়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিলো "যাও চট করে চা করে নিয়ে আসো , চা খাইয়ে দেবর এর মন জয় করে নাও… হা হা হা"


ক্রিইইইন ক্রিইইইইন , হ্যা মতিন ছাড়া আর কেউ না , । তাই ডান হাত দিয়ে মশারি আলগা করে , অনেকটা হেঁচোর পেচর করে বিছানা থেকে উঠে পরি । মতিন এর বউ আর এখন নেই । ঐ মেয়ে ওকে ফেলে চলে গেছে। ঠিক মতো ভাত কাপড় দেয়ার মুরদ যে মতিন এর নেই সেটা ওইটুকু মেয়ে বুঝে গিয়েছিলো । মেয়েটার নাম যে কি ছিলো মনে করার চেষ্টা করলাম কিন্তু মনে আসছে না । মন্ডা , বা মন্ডি এই টাইপ কিছু ছিলো । মাস খানেক এ বাড়িতে থাকার পর , মেয়েটি আমার সাথে অনেক ফ্রি হয়ে গিয়েছিলো । এটা সত্যি ছিলো যে মেয়েটি দারুন চা বানাতে পারত , জিজ্ঞাস করলে বলত " চা ওলার মাইয়া চা বানাইতে পারুম না তো কি পারুম? নাইস দিতে?" আর খিল খিক করে হাসত । মেয়েটা নাচ কে নাইস বলত , আমি অবাক হয়ে দেখতাম মেয়েটিকে । যেমন দেখতে সুন্দর ছিলো তেমন সুন্দর হাঁসি ছিলো । টাকা ওয়ালা বাবার ঘরে জম্ন হলে মেয়েটির ভাগ্য হয়ত অন্নরকম হতো ।

মেয়েটি আমাকে প্রায় বলত , " আপনারে আমার আপন ভাইয়ের মতন মনে হয় । আপ্নের উপর বইয়া বইয়া খাইতাসি , এইটা আমার ভালা লাগে না"

আমি বলতাম " ভাই বলছো আবার বলছ আমার উপর বসে বসে খাচ্ছো এমন বলছো কেনো"

" আমি নাইলে আপ্নের বইন , কিন্তু ঐ মতিন্নারে আপ্নে খাওয়াইবেন ক্যান" রেগে গিয়ে বলত মেয়েটি

" কি করবো ?"

" ঘাড় ধইরা বাইর কইরা দেন" নির্লিপ্ত ভাবে বলত মেয়েটি , আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করতাম

"তোমার কি হবে?"

" আমাগো আবার কি হইবো , আমারা হাত চালাইয়া খাইতে জানি , আপনের বন্ধুর মতন নিষ্কর্মা না , খাওন পিদ্দন এর অভাব হইবো না"

তবে মতিন কে আমার ঘাড় ধরে বের করতে হয়নি , একদিন সকালে উঠে দেখি মেয়েটি নেই , সাথে আমার ছোট বোন এর কিছু জামা কাপড় আর কিছু জিনিস পত্র ও গায়েব। অবাক হয়েছিলাম খুব , তবে তারচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলো মতিন এর আচরন দেখে , কিছুই হয়নি এমন ভাব করে ছিলো মতিন । এর পর প্রায় এক সপ্তার মতো মতিন আমার বাড়িতে ছিলো দিনের বেলা স্বাভাবিক থাকতো আর রাতে বালিসে মুখ গুজে কাঁদত ।


" কিরে সালা দরজা খুলতে এত সময় লাগে?"

যা ভেবে ছিলাম তাই , মতিন এসেছে , ওকে দেখলে আমার নিজেকে খুব বয়স্ক মনে হয় । মাথায় চুল নেই , মুখের চামড়া কুচকে গেছে কয়েক যায়গায়, দেখে মনেই হয় না ওর বয়স মাত্র ৩২ । পরনে একটা পুরাতন সাফারি কোট , এই কোট এর আবার বিশাল ইতিহাস , ওর কোন এক স্যার নাকি খুব সখ করে এটা নিজের জন্য বানিয়েছিলো , বউ এর পছন্দ হয়নি শুনে রাগে দুক্ষে মতিন কে দিয়ে দিয়েছিলো ।


" এত সকালে কি মনে করে এলি" আমি উল্টো প্রশ্ন করাল্ম , বা হাত টা এখন আর টের পাচ্ছি না , মনে হচ্ছে আমার হাত নেই ।

" আছে বন্ধু , আছে , আগে চা খাওয়াও তারপর বলছি" খুব রহস্য করে বলল মতিন , আমার কাছে অবশ্য এটা কোন রহস্য না , আমি জানি হয়ত নতুন কোন স্কিম এর সন্ধান পেয়েছে । আমার কাছে টাকা চাইতে এসেছে । এক বছরে টাকা পাচ গুন হবে , আর সেই লাভের টাকা অর্ধেক ওর অর্ধেক আমার । মতিন কে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারি না যে আমার কাছে টাকা নেই।

" টাকা নেই" আমি সোজা বলে দিলাম । এক হাত নেই এমন অনুভূতিটা আমাকে বেশ তাড়িত করে রেখছে । মতিন এর মুখ দেখে মনে হলো খুব আহত হয়েছে , কিন্তু নিমেষেই সেই ভাব দূর করে ফেলল।

" স্কিম টা খুব ভালো , আর এর জন্য তোকে বাড়িটা বিক্রিও করতে হবে না , ওরা তোর যায়গায় এই পুরনো বিল্ডিং ভেঙ্গে নতুন হাইরাইজ বিল্ডিং করে দেবে , অর্ধেক ফ্লাট তোর অর্ধেক ওদের , আমি সুধু দালালি পাবো আর একটা ফ্লাট"

হ্যা ইদানিং এই জিনিসটা খুব শুরু হয়েছে । তবে ফ্রড আছে প্রচুর এই লাইনে , এসব নিয়ে নাটক সিনেমা ও হচ্ছে ।

" আমি একা মানুষ এত ফ্লাট দিয়ে কি করবো " আমি বললাম

" একা থাকবি ক্যান , বিয়ে থা করবি , আমার এক চাচা আছে গ্রামে , ওনার মেয়ে , নাম নিলুফার , যেমন সুন্দরী , তেমন গুনবতি" মতিন দিগুন উৎসাহ নিয়ে বলল ।
" তুই জানিস আমার অবস্থা" আমি কাতর গলায় বললাম , কেউ যখন আমার অবস্থা জেনেও আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখায় তাহলে আমার খুব কষ্ট হয় ।

" ধুর , বা হাত কাঁপে তো কি হয়েছে , নিলুফার এর মতো মেয়ে পেলে সব ঠিক হয়ে যাবে" মতিন আমার কথা কানেই দিলো না।

" চাচার গ্রামে বিশাল সম্পদ , বাড়িতে পুকুর , বিশাল গেরস্থি , তোকে একদিন নিয়ে যাবো" এসব আরও নানা ধরনের বকর বকর করা শেষে , আগামি সপ্তায় বাড়ির দলিল ঠিক রাখতে বলে বিদায় নিলো মতিন ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top