এটি সংগৃহীত চটি উপন্যাস। লেখকের নাম জানা নেই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আমার নাম শিলা চৌধুরী। আমার বয়স এখন ২৬ আমার স্বামী, জয় চৌধুরী মার্চেন্ট নেভিতে কাজ করেন। তাই বেশিরভাগ সময়ই বাইরে বিদেশের সমুদ্রেই তার চাকুরী জীবন কাটে। শুধু বছরে তিন মাস কি দু মাসের জন্যেই সে বাড়ি আসে|
আর্থিক ভাবে আমরা যথেষ্ট সামর্থ্য তাই শহরের একটা নামীদামী জায়গায় একটা ৩ BHK ফ্ল্যাট কিনে ভেবেছিলাম আমি আর আমার স্বামী সংসার করব। কিন্তু স্বামী তার মার্চেন্ট নেভির চাকুরী ছাড়তে চায়ে নি আর শ্বশুর বাড়িতে দেবর আর তার বৌয়ের জ্বালায় টেকা দায় হয়ে গিয়েছিল তাই বিয়ের দুই বছর হতে না হতেই আমাদের বাড়ির থেকে আলাদা থাকতে হতে আরম্ভ করতে হল। আজ আট মাস হয়ে গেছে আমরা আলাদা থাকছি কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত আমার শ্বশুর শাশুড়ির আমাদের সংসারে হস্তক্ষেপ বিরত হয়ে নি।
তাই এইবার যখন জয় বাড়িতে এসেছিল আমি ওকে বলেছিলাম যেহেতু আমি গ্রাজুয়েট মেয়ে… কিছু না হোক শহরে যে বড়- বড় কোম্পানির BPO আর কল সেন্টার গুলি খুলেছে, আমি তার মধ্যে একটা চাকরি নিশ্চই পেয়ে যেতে পারি| যাতে আমার সময়টাও ভালো করে কেটে যাবে, আমদানিও হবে সব থেকে বড় কথা- একা একা লাগবে না; তখন জয় কিন্তু রাজি হল না এর কারণটা ছিল আমার শ্বশুর শাশুড়ির হস্তক্ষেপ। এই নিয়ে আমাদের মধ্যে যথেষ্ট ঝগড়া অশান্তিও হয়েছিল|
প্রায় তিন সপ্তাহ হয়ে গেছে যে জয় আবার সমুদ্র ফিরে গেছে। আমি কিন্তু মনে মনে স্থির করে ফেলেছিলাম যে কিছু না হোক এবারে আমি একটা চাকরি করবোই করবো।পরে যা হবে তা দেখা যাবে আশা করি আমি জয় কে মানিয়ে নিতে পারব, তাই ইতিমধ্যে আমি দুটো ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছি কিন্তু তার পরে ইন্টারভিউ এর ফলাফলের আর কোন খবর পাইনি।
সেই দিন গভীর রাত থেকেই প্রচণ্ড ঝড় আর বৃষ্টি হচ্ছিল মনে হচ্ছিল যেন আবহাওয়াটা আমার মনের মতই অশান্ত। সেদিন অনেক ভোরেই আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। বাড়িতে বসে বসে আমি যেন বিরক্ত বোধ করছিলাম তাই যেই বৃষ্টি একটু থামল; আমি একটা ছাতা নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। মর্নিং ওয়াক করব বলে। তখন বাজে প্রায় সকাল পৌনে ছ’টা|
দিদা বলতেন মেয়েদের আঁধারে আলোয়ে এলো চুলে বেরুতে নেই, তাই একটা খোঁপা বেঁধে নিলাম। রাতে পরা নাইটিটা ছেড়ে একটা নীল রঙের কুর্তি আর কালো রঙের লেগিংস পরে বেরিয়ে পড়লাম মর্নিংওয়াকে।
আমি বেশ কিছুক্ষণ দিশাহীন ভাবে বাড়ির আসে পাশেই হাঁটলাম। মনে হচ্ছিল যে সবাই যেন সকালে উঠে কোনও না কোন কাজে ব্যস্ত… এক আমারই জীবন একবারে খালি।.. দিশাহীন ভাবে হাঁটলাম তারপর হঠাৎ যেন আমার পায়ে কিছু একটা জিনিসের ঠোক্কর লাগলো। আমি থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম… দেখি একটা গার্ডার দিয়ে ভালো করে বাঁধা মোটা একটা ব্রাউন রঙের প্যাকেট!
কৌতূহল বসত প্যাকেটটা তুলে খুলে দেখলাম, আর আমার চোখ যেন চড়ক গাছ। দেখি যে পুরো পাঁচশ আর দুই হাজার টাকার নোটের মিলিয়ে মিশিয়ে একটা বান্ডিল। কম করে ধরলেও ওই বান্ডিলটাতে এক লক্ষ টাকা তো হবেই… আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, জানি না এই টাকাটা কার? কেন এই ভাবে রাস্তায় পড়ে আছে… আমি এক্ষণ কি করি? হটাৎ পিছন থেকে গাড়ির হর্ন শুনতে পেলাম… দুটি অল্প বয়েসি ছেলে একটা বড় গাড়ীতে ছিল, তারা কি যেন একটা বলতে বলতে আমাকে পাস কাটিয়ে বেরিয়ে চলে গেল। তবে আমি জানি যে ওরা আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু অশ্রাব্য কথাই বলেছে।
যাই হোক, আমি টাকার বান্ডিলটা কুর্তির পকেটে লুকিয়ে নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেলাম। বাইরে বেশ ঠাণ্ডা- ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে এমন কি ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে যখন গরম পড়বে- পড়বে হচ্ছে, তখন এমনিতেই কিছুক্ষণ আগে আমি গা শির- শির করছিল… কিন্তু এখন কেমন যেন গরম লাগতে… এমন কি ঘরে ঢুকে আয়নায় দেখলাম যে আমার কপালে দেখা দিয়েছে ঘামের অজস্র বিন্দু|
দরজা বন্ধ করে টাকার বান্ডিলটা বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমি সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে, সোজা বাথরুমে ঢুকে শাওয়ারের তলায় চোখ বুঝে দাঁড়িয়ে পড়লাম, বিল্ডিঙের ট্যাংকের ঠাণ্ডা জলও যেন আমার শরীরে এক অশান্ত উষ্ণাকে শান্ত কোরতে ব্যর্থ হচ্ছিল।
টিং টং… কলিং বেলের শব্দ। পেপার ওয়ালা কাগজ দিয়ে গেছে… আমি বোধ হয় অনেকক্ষণ শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, যাই হোক একটা বাথ রোব জড়িয়ে চুল মুছতে মুছতে, সব থেকে আগে আমি টাকার বান্ডিলটা বালিশের তলায় লুকিয়ে ফেললাম তারপরে আমি দরজা খুলে পেপারটা নিতে গিয়ে দেখি গোপা মাসী সিঁড়ি দিয়ে উঠছে। গোপা মাসী আমাদের বাড়ি কাজ করে। ভালো হয়েছে আমি টাকার বান্ডিলটা লুকিয়ে ফেলেছি, নয়তো ওটা দেখলেই সে হাজারটা প্রশ্ন করত, ‘এটা কিসের বান্ডিল এতে কি আছে আদি- ইত্যাদি।..’
“কি গা বৌদি, সারারাত ঘুমাওনি মনে হচ্ছে…” গোপা মাসি আমার মুখ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করল|
“না মাসী… ঘুম আর আসেনি…” আমি সত্যি কথাটাই বললাম|
ঘরে ঢুকে গোপা মাসী বলল, “কাজ নেহাত পরে হবে, এস তোমার চুল বেঁধে দি…”
গোপা মাসী আমার চুল মুছে, আসতে আসতে আঁচড়াতে লাগল, “বলি কি দাদা আবার কবে আসবে?”
“সেই আবার পরের বছর, মার্চেন্ট নেভির কাজ… দুই তিন মাসের জন্য বাড়ি আসতে পারবে আর বাকি সারা বছর সমুদ্রে… দেশ বিদেশের বন্দরে”
“হুম … তাহলে তো তোমার নিশ্চয়ই খুব একা একা মনে হয়, তাই না?… একটা বাচ্চা কাচ্চা থাকলে তোমার এত একলা মনে হত না…”
শুনেই আমার মাথাটা গরম হয়ে গেল, গোপা মাসিও আবার সেই আমার শ্বশুর-শাশুড়ির ভাষা বলছে।
কিন্তু প্রকাশ্যে আমি বললাম “হ্যাঁ, মাসী…”,আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম বাচ্চা কাচ্চা? এদানিং আমাদের সম্পর্কটা একদম ভাল যাচ্ছিল না। আমি চাইতাম যে আমার স্বামী মার্চেন্ট নেভির কাজ ছেড়ে আমার সাথেই থাকুক কারণ আমার সন্দেহ হত যে ও দেশ বিদেশ ঘুরতে ঘুরতে হয়ত বিদেশি মেয়েদের দেহের স্বাদও পেয়েছে।
‘রেডিও গোপ মাসী’ থামে না, “তোমরা শহরের মেয়েরা জানি না কি ভাব… দাদা তো এবার অনেক দিন বাড়িতে থেকে গেলেন, তা ছাড়া তোমার বয়েসও ত প্রায়ে আঠআশের কাছা কাছি… এই বার তো একটা পেট কর…”
“আমার বয়েস এখন ২৬… আর বাচ্চা? সেই কথা আমিও ভেবেছিলাম.. কিন্তু তোমার দাদা এখনো বাচ্চা চায়না…”
“দূর মেয়ে, এই সব ব্যাপারে স্বামীদের কথা ছাড়… ঐ সব ঔষধ না খেয়ে… স্বামীর সাথে সহবাস কর, তোমার মত একটা ফুটফুটে মেয়ের একবারেই পেট হয়ে যাবে।”
আসলে স্বামীর নেভিতে ফিরে যাওয়ার এত দিন আমার জীবন শুষ্কই কেটেছে। আমার দেওয়া দুটো ইন্টারভিউ’এর ফলাফলেরও কোন খবর নেই… কি আর করি, আমি মৃদু হাসলাম।এইবারে থাকা কালীন আমর আর আমার স্বামীর মধ্যে ছোট ছোট ব্যাপার নিয়ে ঝামেলা হত… এমন কি আমি যদি একটু বেশী কেনা কাটি করে ফেলতাম তা হলেও আমাকে কইফেয়ত দিতে হত কারণ এইখানে আমাদের একটাই জয়েন্ট আকাউন্ট ছিল। সত্যি বলতে গেলে, আমার স্বামী তিন মাস বাড়ি ছিলেন ঠিকই কিন্তু আমারা হাতে গুনে পাঁচ অথবা ছয় বারই বোধহয় সংযুক্ত হয়েছি।
গোপা মাসী আমার চুলে বিনুনি করার জন্য আমার চুল জড় করছিল, জানিনা কেন সেই দিন আমার আর কোন বন্ধন আর ভালো লাগছিলো না, তাই আমি বাধা দিলাম, “মাসী, চুলের বিনুনি করতে হবে না… শুধু ক্লিপ করে দাও…”
মাসী তাই করল, তারপরে সে ঘর ঝাঁট দিতে আরম্ভ করল। আমি বিছানায় পড়ে থাকা নোটের বান্ডিলটা একবার দেখলাম আর তারপর পেপার খুলে একটা বিশেষ বিজ্ঞাপন খুঁজতে লাগলাম, এই বিজ্ঞাপনটা আমি কয়েক দিন আগেই দেখেছিলাম।
এই তো সেই বিজ্ঞাপন- ব্লু মুন ক্লাবের স্পা!
এইখানে সব রকমের পরিসেবা পাওয়া যায়… তা ছাড়া ফুল বডি ম্যাসেজ আর ১০০% তৃপ্তি…
ভাবলাম কি আর করি, বডি ম্যাসাজ করালে নাকি শরীর ও মন দুটোই বেশ ঝড় ঝড়ে হয়ে যায়… নিজেকে একটু তাজা মনে হয়ে; যখন আকস্মিক ভাবে এত গুলি টাকা আমার পায়ে এসে পড়েছে তখন কয়েক হাজার টাকা ম্যাসাজের জন্য আর কাউকে কইফেয়ত দিতে হবে না।
গোপা মাসী যতক্ষণ কাজ করছিল আমি টিভি দেখছিলাম… খবরে কি আর আছে? রাজনীতি, মারধোর আর ধর্ষণ… এর বউ ওর বাড়িতে… তার মেয়ে ওর বিছানায়… এখানে বিক্ষোভ ওখানে অবরোধ…
গোপা মাসী কাজ শেষ হয়ে গেল, সে যাবার সময় বলল, “বৌদি, আমার কাজ শেষ… বলি কি আর কত ক্ষণ ঐ বিদঘুটে তোয়ালে জামাটা পরে থাকবে…?”
“এই ত মাসী, আমি একটু পরে বেরুব। আমার এক বান্ধবীর বাচ্চা হয়েছে তাই দেখেতে যাব। তুমি কাল সকালেই এস…”, আমি মিথ্যে কথা বললাম।
“আচ্ছা।”
মাসীকে বিদায় দিয়ে আমি ব্লু মুন স্পা’ এ ফোন করলাম, “হ্যালো? ব্লু মুন স্পা?”
“হ্যাঁ মিস, বলুন…” এক প্রৌঢ় নারীর কণ্ঠ শ্বর শুনতে পেলাম।
“আপনাদের পেপারে বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম, তাই একটু কথা বলার ছিল…”
“হ্যাঁ মিস, আমারা ফুল সার্ভিস দি, সম্পূর্ণ বডি ম্যাসেজ ৫,০০০ টাকা ১ ঘণ্টার জন্য আর ফুল প্যাকেজ ১৮,০০০ টাকা…এতে আপনি তিন ঘণ্টা সময় পাচ্ছেন”
“ফুল প্যাকেজ বলতে?”
“ফুল প্যাকেজে আপনি,বডি ম্যাসেজ, হেয়ার স্পা, বডি স্পা… আর সব কিছু…” এইটুকু বলে সেই ভদ্রমহিলা থেমে গেলেন।
“সব কিছু মানে?” কৌতূহলবশত আমি জানতে চাইলাম|
এইবার ফোনে মহিলাটা যেন একটু বিরক্ত হয়ে উঠলো- মনে হয় আমার মত মেয়েদের কাছ থেকে ও অনেক এইরকম ফোন পেয়েছে, “আপনি ফুল প্যাকেজে ফিজিক্যাল রিলেশনশিপ (শারীরিক সম্পর্ক) ও পাচ্ছেন…”
আমার বুকটা একটু ধক্ ধক্ করে উঠল।
Last edited: