‘বাটার’-এর বদৌলতে বিটিএসের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। এই এক গান দিয়েই বিশ্বসংগীতের অনেকগুলো রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে দক্ষিণ কোরীয় এই কে-পপ ব্যান্ড। সামনে আরও কী কী রেকর্ড করবে, কে জানে। তার আগে আসুন, হয়ে যাওয়া রেকর্ডগুলোর ফিরিস্তি নেওয়া যাক।
বিলবোর্ডের হট হানড্রেড তালিকায় শীর্ষে উঠে বসেছে ‘বাটার’। শুনে হয়তো বলবেন, এ আর নতুন কী! আগেও তো তিনবার এই তালিকার ১ নম্বরে ছিল তাদের গান। আছে, নতুন আছে। শুধু নাম্বার ওয়ানই নয়, এই জায়গায় তারা আছে টানা পাঁচ সপ্তাহ, এখন অবধি। টানা পাঁচ সপ্তাহ ব্যান্ডের কোনো গান শীর্ষে—বিলবোর্ডের ইতিহাসে এই ঘটনা এই প্রথম। আগের রেকর্ডটির মালিক ছিল অ্যারোস্মিথ। তাদের গাওয়া আরমাগেডন ছবির ‘আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু মিস আ থিং’ বিলবোর্ডের শীর্ষে ছিল টানা ৪ সপ্তাহ। ২৩ বছরের সেই রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছে বিটিএস।
কে–পপে এখন সেরা বিটিএস, টুইটার
এখানেই শেষ নয়। ইংলিশ গায়ক এড শিরানের রেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছে এই গান। তাঁর ২০১৭ সালের হিট গান ‘শেপ অব ইউ’ সপ্তাহে এক লাখ কপির বেশি করে বিক্রি হয়েছে পাঁচ সপ্তাহ। ‘বাটার’ও তা–ই করেছে এবার।
আরও আছে। ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত এই গানের মিউজিক ভিডিও ৪০ কোটির বেশিবার দেখা হয়েছে। ইউটিউবে গানের ভিডিও প্রকাশের ৪ দিনের মাথায় ২০ কোটিবার দেখা হয়েছে। তাদের আরেক গান ‘ডায়নামাইট’-এর এই সংখ্যা ছুঁতে প্রায় পাঁচ দিন লেগেছিল। গানটি ছাড়ার সময়ও রেকর্ড করে। এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষের দেখা ইউটিউব প্রিমিয়ার। ‘বাটার’ প্রকাশের সময় প্রায় ৪০ লাখ দর্শক দেখেছেন। ১৩ মিনিটে ১ কোটি ‘ভিউ’ হয়ে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে বেশিবার দেখার রেকর্ডও গড়ে এটি।
শিগগিরই সিডি আকারে আসছে ‘বাটার’। তারই কনসেপ্ট ফটোশুটে বিটিএস সদস্যরা, টুইটার
সবচেয়ে দ্রুত ২ কোটিবার দেখার রেকর্ডও ‘বাটার’-এরই দখলে। এই রেকর্ড করতে লেগেছে ৫৪ মিনিট। ‘ডায়নামাইট’-এর এই মাইলফলক স্পর্শ করতে সময় লেগেছিল ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশিবার দেখা হয়েছে এই গান। ১১ কোটি ৩০ লাখবার দেখা হয়েছে ১ দিনে।
চলতি বছরের ২১ মে প্রকাশিত এই গানের নাম ‘বাটার’? ভ্যারাইটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যান্ডের সদ্যস জিমিন বলেন, ‘“বাটার” নামটা শুনলেই মনে হবে, আমরা এমন গান বানানোর চেষ্টা করেছি, যা খুব সহজেই শোনা যাবে। সেখানে ভারী কোনো বার্তা থাকবে না। ভাবতে কেমন লাগলেও গানটা কিন্তু মাখনের মতোই নরম। গলে গলে পড়বে আর আপনাকে জড়িয়ে নেবে। মিষ্টি একটা গান। একপ্রকারের স্বীকারোক্তিও বলতে পারেন।’
যাদের গান নিয়ে এত এত রেকর্ড, সেই বিটিএস আসলে কারা? কোরীয় পপ গানের খোঁজখবর রাখেন না, এমন কেউ হয়তো প্রশ্ন করে বসতে পারেন। তাঁদের জ্ঞাতার্থে বলি, তারুণ্যে ভরপুর দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পপ ব্যান্ড বিটিএস বা বিয়ন্ড দ্য সিন। ভি, জাংকুক, জিমিন, সাগা, জিন, জে-হোপ ও আরএম—এই সাত তরুণের দল বিটিএস। ২০১৩ সালের জুনে পপ দুনিয়ায় তাদের আগমন। অল্প সময়েই ভক্তদের হৃদয় জয় করে নেয় দলটি, হয়ে ওঠে একুশ শতকের পপ আইকন। ২০২০ সালে দলটিকে ‘এন্টারটেইনার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে টাইম সাময়িকী। ৬৩তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে বেস্ট পপ ডুয়ো বা গ্রুপ পারফরম্যান্স বিভাগে মনোনীত হয়েছিল বিটিএস। ওই আসরে তারা পারফর্মও করে।
বিটিএস ব্যান্ডের সদস্যরা, টুইটার
এই মুহূর্তে পপসংগীতে বিটিএসেরই জোয়ার চলছে। সারা দুনিয়ার বিটিএস-ভক্তরা নিজেদের বলেন বিটিএস আর্মি। আপনিও ভিড়ে যেতে পারেন এই দলে। ‘বাটার’ দিয়েই শুরু করতে পারেন। চেখে দেখতে পারেন, মাখনের আসলেই কত স্বাদ!
* সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফোর্বস, বিগহিট মিউজিক