রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে সাজানো–গোছানো টেবিলের মাধ্যমে।
ঈদ মানেই আনন্দ। আর বাঙালির ঈদ মানেই অতিথি আপ্যায়ন। সারা দিন বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গে অতিথির সমাগম চলতেই থাকে। যেহেতু ঈদের মূল আকর্ষণ থাকে বাহারি রকমের খাবার, তাই খাবার টেবিলটাতেও তো নতুনত্ব আনা চাই। খাবার টেবিলের সাজ খাবার পরিবেশনের সঙ্গে যেমন সম্পর্কিত, তেমনি আপনার রুচিরও বহিঃপ্রকাশ ঘটে সাজানো–গোছানো টেবিলের মাধ্যমে।
ঈদের সকাল
স্থপতি লতিফা সুলতানা ঈদের সকালে অন্দরসাজের সবকিছুতে রাখেন স্নিগ্ধতার ছোঁয়া। খাবার টেবিলও এর ব্যতিক্রম নয়। খাবার টেবিলের ম্যাট-রানারে ব্যবহার করেন হালকা রং। কাপড় বা পাটের তৈরি টেবিলম্যাটের পরিবর্তে কুরুশের বা লেসের ম্যাটের ব্যবহার সৌন্দর্যে ভিন্নমাত্রা যোগ করে। সঙ্গে টেবিলে রাখেন ছোট একটি ফুলদানিতে কিছু ফুল। তবে খাবার টেবিলে সুগন্ধি ফুল না রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ঈদের দিন যেহেতু হরেক রকম খাবারের আয়োজন থাকে, তাই ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশনের পাত্র রাখা উচিত বলে মনে করেন তিনি। সেই সঙ্গে খাবার শেষ করার পর চামচ রাখার আলাদা একটি পাত্র রাখা যেতে পারে। একটু নতুনত্ব আনতে তা বাঁশের বা কাঠের কোনো পাত্র হতে পারে।
সকালের খাবার টেবিল
দুপুরবেলা
ঈদের দুপুরে ভারী খাবার খাওয়া হয়। অতিথির সমাগম থাকে বেশ। উত্তরার অধিবাসী নৃত্য প্রশিক্ষক সাবিহা মাহবুব প্রাসকোভিয়া জমকালোভাবে ঈদের দুপুরে টেবিল সাজান। গাঢ় রঙের রানার ও টেবিলম্যাট ব্যবহার করেন তিনি। বড় প্লেট, হাফপ্লেটের সঙ্গে সঙ্গে শেষ পাতে মিষ্টি খাওয়ার ছোট বাটিও সামনেই রাখেন তিনি। টেবিল–ন্যাপকিনগুলো সুন্দরভাবে ভাঁজ করে প্লেটের পাশে রাখা যায়, যাতে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারেন অতিথিরা। দুপুরবেলা সিরামিক বা পাইরেক্সের ডিশে খাবার পরিবেশন করেন। তবে কাচ বা সিরামিক, যা–ই ব্যবহার করা হক না কেন, যেকোনো এক ধরনের ডিশ ব্যবহার করলে ভালো দেখাবে।
রাতের বেলা
ঈদের রাতের বেলা খাবার টেবিল জমকালোভাবে সাজানো চাই। রাতের বেলা লাইটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান লতিফা সুলতানা। খাবার ঘরে হলদে বাতি থাকে অথবা ডিফিউস লাইট থাকে, তবে রাতের বেলা সেগুলো জ্বালিয়ে অন্য রকম আবহ তৈরি করা যায়।
প্রাসকোভিয়া ঈদের রাতে টেবিল সাজান সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। সার্ভিং ডিশ হিসেবে পিতলের বাসন ব্যবহার করেন। গ্লাস ও চামচও সোনালি রং ব্যবহার করেন। ঈদের জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে টেবিলরানার ও ম্যাটের ক্ষেত্রে সোনালি, রুপালি অথবা কপার রংগুলো ব্যবহার করেন।
খাবার পরিবেশনের পাত্রেও থাকতে পারে ভিন্নতা
খাবার টেবিলে নান্দনিকতার ছোঁয়া আনতে আরও যা করতে পারেন—
* টেবিলটি পরিষ্কার রাখুন। হাতের কাছেই টিস্যু বা ন্যাপকিন রাখতে হবে;
* খাবার অনুযায়ী লবণ, সস, গোলমরিচগুঁড়া সামনে রাখতে হবে। খাবারের ধরন অনুযায়ী বাটি বা পিরিচের ব্যবস্থা করা উচিত।
* মূল আকর্ষণ হিসেবে ফুলদানিতে কৃত্রিম লেটুস বা ধনেপাতাজাতীয় গাছ রাখা যেতে পারে।
* যেহেতু উৎসব আয়োজনে অনেক রান্না হয়, ভাজাপোড়া গন্ধ যেন খাবার ঘরে না থাকে, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। ঈদের দিনে কিছুটা বিশ্রাম পেতে খাবারের কিছু পদ আগের রাতেই রেঁধে রাখা যেতে পারে।
রাতের জন্য ব্যবহার করতে পারেন কালো রঙের টেবিল ম্যাট