উদ্ভাবকেরা নিজেদের উদ্ভাবনের জন্যই বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তবে সেসব উদ্ভাবনের মধ্যে কিছু কিছু সত্যিই বেশ অদ্ভুত থাকে। সাময়িকভাবে আলোচিত হলেও দেখা যায়, একসময় ওই উদ্ভাবনগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। এমন কিছু উদ্ভাবন ও তাঁর উদ্ভাবকদের কথাই রইল এই আয়োজনে।
রাইট ভাইদের বাইসাইকেল
উড়োজাহাজের উদ্ভাবক হিসেবে রাইট ভ্রাতৃদ্বয় বিখ্যাত। উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট বিশ্বের প্রথম কার্যকর উড়োজাহাজ তৈরি করেছিলেন। তবে শুধু উড়োজাহাজ নয়, রাইট ভাইয়েরা নিজস্ব নকশার বাইসাইকেলও তৈরি করতেন। তাঁদের দুজনের তৈরি বিশেষ নকশার দুটি বাইসাইকেলের নাম ছিল ‘সেইন্ট ক্লেয়ার’ ও ‘ভ্যান ক্লিভ’। বিশ শতকের শুরুর দিকে এই বাইসাইকেলের সঙ্গে পাখার মতো বস্তু যোগ করেছিলেন রাইট ভাইয়েরা। এ কাজের মূল উদ্দেশ্য ছিল উড়োজাহাজ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে সাইকেলের ব্যবসাতেও লাভের মুখ দেখেছিলেন রাইট ভাইয়েরা।
টেসলার হেলিকপ্টার প্লেন
উদ্ভাবক হিসেবে নিকোলা টেসলা ছিলেন সফল ও রহস্যময়। প্রথম এসি মোটর উদ্ভাবন করেছিলেন টেসলা। তাঁর উদ্ভাবনের তালিকায় ছিল আরও অনেক কিছু। এমনই একটি হলো ‘হেলিকপ্টার প্লেন’। এর নকশা করে ফেলেছিলেন তিনি, পেটেন্টও নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের মতো ঘূর্ণমান ব্লেড দিয়েই এই বিমান আকাশে উড্ডয়ন করবে বলে ভেবেছিলেন টেসলা। তবে নকশা অনুযায়ী সাধারণ উড়োজাহাজের মতো এই বিশেষ বিমানটির ডানাও ছিল।
অবশ্য টেসলার বেশির ভাগ উদ্ভাবনই অর্থনৈতিকভাবে সফল হতে পারেনি। হেলিকপ্টার-প্লেনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। তবে এর উপযোগিতা কেউ বাতিল করতে পারেনি। এখনো নিকোলা টেসলার উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা হয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
বেলের মেটাল ডিটেক্টর
টেলিফোন উদ্ভাবনের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। মজার ব্যাপার হলো, স্কটিশ এই বিজ্ঞানী একধরনের মেটাল ডিটেক্টরও আবিষ্কার করেছিলেন। ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব চিহ্নিত করতে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয়। ১৮৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ডকে আততায়ীরা গুলি করলে তাঁর দেহ থেকে বুলেটটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন বেল একধরনের মেটাল ডিটেক্টর তৈরি করেন। যদিও বেলের উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে বুলেটের অবস্থান তখন চিহ্নিত করা যায়নি। গারফিল্ডের মৃত্যুও হয়। তবে অন্যান্য পরীক্ষায় ওই মেটাল ডিটেক্টর কাজ করেছিল বলেই জানা যায়।
ফোর্ডের সয়াবিন গাড়ি
ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ফোর্ড। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শিল্প উদ্যোক্তা তিনি। ১৯৪০-এর দশকের শুরুর দিকে ফোর্ড গাড়ি বানানোর ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের নানাবিধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। এসব পরীক্ষার ফলাফল হলো, সয়াবিন থেকে তৈরি প্লাস্টিকের গাড়ি। যদিও এই গাড়ি সেভাবে বাজারে কখনো আসেনি, তবে ফোর্ডের উদ্ভাবনের অন্যতম উদাহরণ ছিল এটি। সয়াবিন গাড়ি তৈরিতে বেশ কয়েকজনের সাহায্য নিয়েছিলেন হেনরি ফোর্ড, তবে মূল ভাবনা তাঁরই ছিল। বলা হয়ে থাকে, সয়াবিন ও অন্যান্য শস্যের কাঁচামাল দিয়ে এক রাসায়নিক ফর্মুলায় বানানো প্লাস্টিক এই গাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে এই ফর্মুলার বিস্তারিত বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানা যায় না।
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বাদ্যযন্ত্র
মার্কিন বহুবিদ্যাজ্ঞ বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন উদ্ভাবকও ছিলেন। নিত্যদিনের নানা সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু উদ্ভাবন করেছিলেন ফ্রাঙ্কলিন। ১৭৬১ সালে তিনি যে যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, তার নাম ছিল ‘আরমোনিকা’। কাচের তৈরি ৩৭টি বাটি দিয়ে এক নতুন ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছিল সেটি। প্যাডেল চেপে এটি বাজাতে হতো। শুরুতেই ‘আরমোনিকা’ জনসাধারণের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে তা উবে যেতেও বেশি সময় লাগেনি। জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ওই সময় অনেকে বলেছিল যে আরমোনিকা শিল্পীদের মাথাব্যথা ও হিস্টেরিয়ায় আক্রান্ত করার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। ১৮২০ সালের দিকে এই বাদ্যযন্ত্রের নামই নাকি প্রায় সবাই ভুলে গিয়েছিল!
সূত্র: মেন্টাল ফ্লস, হিস্ট্রি ডটকম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব আমেরিকান হিস্ট্রি
রাইট ভাইদের বাইসাইকেল
উড়োজাহাজের উদ্ভাবক হিসেবে রাইট ভ্রাতৃদ্বয় বিখ্যাত। উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট বিশ্বের প্রথম কার্যকর উড়োজাহাজ তৈরি করেছিলেন। তবে শুধু উড়োজাহাজ নয়, রাইট ভাইয়েরা নিজস্ব নকশার বাইসাইকেলও তৈরি করতেন। তাঁদের দুজনের তৈরি বিশেষ নকশার দুটি বাইসাইকেলের নাম ছিল ‘সেইন্ট ক্লেয়ার’ ও ‘ভ্যান ক্লিভ’। বিশ শতকের শুরুর দিকে এই বাইসাইকেলের সঙ্গে পাখার মতো বস্তু যোগ করেছিলেন রাইট ভাইয়েরা। এ কাজের মূল উদ্দেশ্য ছিল উড়োজাহাজ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে সাইকেলের ব্যবসাতেও লাভের মুখ দেখেছিলেন রাইট ভাইয়েরা।
টেসলার হেলিকপ্টার প্লেন
উদ্ভাবক হিসেবে নিকোলা টেসলা ছিলেন সফল ও রহস্যময়। প্রথম এসি মোটর উদ্ভাবন করেছিলেন টেসলা। তাঁর উদ্ভাবনের তালিকায় ছিল আরও অনেক কিছু। এমনই একটি হলো ‘হেলিকপ্টার প্লেন’। এর নকশা করে ফেলেছিলেন তিনি, পেটেন্টও নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের মতো ঘূর্ণমান ব্লেড দিয়েই এই বিমান আকাশে উড্ডয়ন করবে বলে ভেবেছিলেন টেসলা। তবে নকশা অনুযায়ী সাধারণ উড়োজাহাজের মতো এই বিশেষ বিমানটির ডানাও ছিল।
অবশ্য টেসলার বেশির ভাগ উদ্ভাবনই অর্থনৈতিকভাবে সফল হতে পারেনি। হেলিকপ্টার-প্লেনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। তবে এর উপযোগিতা কেউ বাতিল করতে পারেনি। এখনো নিকোলা টেসলার উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা হয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
বেলের মেটাল ডিটেক্টর
টেলিফোন উদ্ভাবনের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। মজার ব্যাপার হলো, স্কটিশ এই বিজ্ঞানী একধরনের মেটাল ডিটেক্টরও আবিষ্কার করেছিলেন। ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব চিহ্নিত করতে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয়। ১৮৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ডকে আততায়ীরা গুলি করলে তাঁর দেহ থেকে বুলেটটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন বেল একধরনের মেটাল ডিটেক্টর তৈরি করেন। যদিও বেলের উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে বুলেটের অবস্থান তখন চিহ্নিত করা যায়নি। গারফিল্ডের মৃত্যুও হয়। তবে অন্যান্য পরীক্ষায় ওই মেটাল ডিটেক্টর কাজ করেছিল বলেই জানা যায়।
ফোর্ডের সয়াবিন গাড়ি
ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ফোর্ড। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শিল্প উদ্যোক্তা তিনি। ১৯৪০-এর দশকের শুরুর দিকে ফোর্ড গাড়ি বানানোর ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের নানাবিধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। এসব পরীক্ষার ফলাফল হলো, সয়াবিন থেকে তৈরি প্লাস্টিকের গাড়ি। যদিও এই গাড়ি সেভাবে বাজারে কখনো আসেনি, তবে ফোর্ডের উদ্ভাবনের অন্যতম উদাহরণ ছিল এটি। সয়াবিন গাড়ি তৈরিতে বেশ কয়েকজনের সাহায্য নিয়েছিলেন হেনরি ফোর্ড, তবে মূল ভাবনা তাঁরই ছিল। বলা হয়ে থাকে, সয়াবিন ও অন্যান্য শস্যের কাঁচামাল দিয়ে এক রাসায়নিক ফর্মুলায় বানানো প্লাস্টিক এই গাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে এই ফর্মুলার বিস্তারিত বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানা যায় না।
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বাদ্যযন্ত্র
মার্কিন বহুবিদ্যাজ্ঞ বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন উদ্ভাবকও ছিলেন। নিত্যদিনের নানা সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু উদ্ভাবন করেছিলেন ফ্রাঙ্কলিন। ১৭৬১ সালে তিনি যে যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, তার নাম ছিল ‘আরমোনিকা’। কাচের তৈরি ৩৭টি বাটি দিয়ে এক নতুন ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছিল সেটি। প্যাডেল চেপে এটি বাজাতে হতো। শুরুতেই ‘আরমোনিকা’ জনসাধারণের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে তা উবে যেতেও বেশি সময় লাগেনি। জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ওই সময় অনেকে বলেছিল যে আরমোনিকা শিল্পীদের মাথাব্যথা ও হিস্টেরিয়ায় আক্রান্ত করার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। ১৮২০ সালের দিকে এই বাদ্যযন্ত্রের নামই নাকি প্রায় সবাই ভুলে গিয়েছিল!
সূত্র: মেন্টাল ফ্লস, হিস্ট্রি ডটকম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব আমেরিকান হিস্ট্রি