What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভূমধ্যসাগর : স্বর্গে যাবার অবৈধ রাস্তা! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,653
Messages
117,045
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
uFyOTqm.jpg


চারদিকে ভূমি দ্বারা আবদ্ধ বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সামুদ্রিক অঞ্চল ‘ভূমধ্যসাগর’। বিশ্ব বাণিজ্য, রাজনীতি ও সংস্কৃতির প্রসারে এই সাগরের অবদান অনেক।

বহু প্রাচীন সভ্যতার আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত ভূমধ্যসাগর সম্পর্কে জানাবো আমাদের আজকের প্রতিবেদনে।

ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যবর্তী সাগরটি ভূমধ্যসাগর হিসেবে পরিচিত। সাগরটির উত্তর দিকে রয়েছে ইউরোপ মহাদেশ ও দক্ষিণ দিকে আফ্রিকা মহাদেশ ;এবং ভূমধ্যসাগরের পূর্ব দিকে এশিয়া মহাদেশের অবস্থান। চারদিকে ভূমি দ্বারা বেষ্টিত এই সাগরটির আয়তন প্রায় ২৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। ভূমধ্যসাগরের গড় গভীরতা ৪৯০০ ফুট, এবং এই সাগরের সবচেয়ে গভীরতম স্থানের গভীরতা ১৭ হাজার ২৮০ ফুট।

দু’টি সাগর অথবা দু’টি বিশাল জলরাশিকে সংযুক্তকারী সরু জলপথকে প্রণালী বলা হয়। ভূমধ্যসাগর একাধিক প্রণালী ও জলপথের সাহায্যে অন্যান্য বিভিন্ন সাগর ও মহাসাগরের সাথে যুক্ত রয়েছে। ভূমধ্যসাগরের মধ্যে রয়েছে মর্মর সাগর ও এজিয়ান সাগর। তুরস্কের অন্তর্ভুক্ত মর্মর সাগরে থাকা বসফরাস প্রণালীর সাহায্যে ভূমধ্যসাগর কৃষ্ণ সাগরের সাথে মিলিত হয়েছে। অন্যদিকে স্পেন ও মরক্কোর মধ্যবর্তী জিব্রাল্টার প্রণালী ভূমধ্যসাগরকে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এছাড়া ইউরোপ ও এশিয়ার মাঝে সমুদ্র পথের দূরত্ব কমাতে সুয়েজ খাল খননের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।

M46kJDg.jpg


ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, তুরস্ক, মিশর, লিবিয়া, ইসরাইল, সিরিয়া, লেবানন সহ একুশটি দেশ ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। প্রাচীন সভ্যতার শিল্প ও বাণিজ্যের এক আঁতুরঘর হিসেবে ভূমধ্যসাগর বিখ্যাত। অতীতের বহু প্রভাবশালী সভ্যতা ও সাম্রাজ্য ভূমধ্যসাগরের তীরে গড়ে উঠেছিল। ভূমধ্যসাগরীয় অববাহিকায় বহু সভ্যতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মেসোপটেমিয় সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা, গ্রীক সভ্যতা ও রোমান সভ্যতা। এছাড়া এই সাগরের পাড়েই পারস্য সাম্রাজ্য, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ও অটোমান সাম্রাজ্যের মত প্রতাপশালী সাম্রাজ্য ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। রোমান সামরিক নেতা ‘অগাস্টাস’ রোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর থেকে, ভূমধ্যসাগর কেন্দ্রিক বাণিজ্য ও সামরিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক প্রসার লাভ করে। একপর্যায়ে রোমানরা ভূমধ্যসাগরের চারদিকের অঞ্চল দখল করে নিলে, এই সাগরের নাম রাখা হয় ‘মারে নস্ট্রাম’। ল্যাটিন ভাষায় যার অর্থ আমাদের সমুদ্র। অতীতে এই সাগর কে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ব্যাপক প্রসার লাভ করেছিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসন চেষ্টার কারণে ভূমধ্যসাগর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে। যুদ্ধ, সহিংসতা, খরা ও দারিদ্রতার কারণে আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার উদ্বাস্তু জনগণ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে। এধরনের উদ্বাস্তু জনগণের কাছে ইউরোপ যেন এক স্বর্গের নাম। আর ভূমধ্যসাগর তাদের কাছে স্বর্গে যাবার অবৈধ রাস্তা। আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলো ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বহু অভিবাসন প্রত্যাশীরা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যেতে চায়। আফ্রিকা ভূখণ্ড থেকে ইউরোপের দেশ ইতালি তুলনামূলক নিকটবর্তী হওয়ায় সবচেয়ে বেশি অবৈধ অভিবাসী ধরা পড়ে ইতালির সিসিলি উপকূলে। বৈধ পথে ইউরোপ পাড়ি জমানোর প্রক্রিয়া দিন দিন বেশ কঠিন হওয়ায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধ উপায়ে ইউরোপে প্রবেশের ঝোঁক বেড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই পথে অভিবাসন গ্রহণ করতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরেছে বহু লোক। যারাও বা জীবিত ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে, তাদের অনেককেই কারাবরণ সহ ভোগ করতে হয়েছে নানা ধরনের শাস্তি।

বিশ্ব বাণিজ্য ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভূমধ্যসাগরের ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এই সাগর ব্যবহার করে ইউরোপ ও আফ্রিকার অনেক দেশ আটলান্টিক মহাসাগরের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে। চারটি মহাদেশ জুড়ে বিস্তৃত আটলান্টিক মহাসাগর বিশ্ববাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর আটলান্টিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো আমাদের পরবর্তী প্রতিবেদনে।
 
সুচিন্তিত গোছানো পোস্ট। লেখককে ধন্যবাদ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top