সদ্য বিবাহিতা মেয়েগুলা প্রথম কয়েকমাস ভয়ংকর রকম টেনশানে থাকে এক্স বয়ফ্রেন্ডদের ভেবে। কোনটা কখন হুট করে বরের বাসায় হানা দেয়। কিংবা নতুন নাম্বার যোগাড় করে কল দিয়ে বলে বসে " একটা কিস দাও, তোমার কিসমিস করছি"।
টুকটুকি অনবরত ঘামছে। সম্ভবত স্বপ্নেও ভাবেনি এমন কোন দূর্ঘটনা তার লাইফে ঘটবে৷ সে আমার দিকে তাকিয়ে বারবার চেনার চেষ্টা করছে। কোয়েল পাখির ডিমের মতন চোখ দুইটাকে কোণাকুণি ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম টুকটুকি নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাঁটছে। নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে স্বপ্ন নাকি বাস্তব। ওর বরটা এক কোণে দাঁড়িয়ে খরগোসের মতন আমাকে আগা গোড়া দেখছে। সে এখন তার ব্রেইনকে খুব চাপ দিচ্ছে। বারবার এটা মনে করতে চাচ্ছে আমাকে কোথাও একটা দেখেছে কিনা। মানুষের অবচেতন মন নতুন কোন মানুষ দেখলেই মনে করে " একে আগে কোথাও দেখেছি"। বেটার দুই হাতে হাজার হাজার চুল। এমনকি নাকের ডগায় ও এক দেড়শ চুল আছে । অথচ মাথায় একটা চুল ও নেই। যেখানে যা থাকার কথা সেখানে না থেকে অন্য জায়গায় থাকাটা বড়ই বিচ্ছিরি৷ ভাবলাম বেটাকে একটু চমকে দিই। মুখে এক ঝলক হাসি হাসি ভাব নিয়ে এলাম৷ মাথা বডি দুইটাই স্ট্রেট টুকটুকির দিকে তাক করে মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব করে বললাম- " জান , তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে আছ কেন? যাও না আমার জন্যে চা নাস্তা করে নিয়ে আস না, কত্তদিন তোমার হাতে বানানো চা খাই না। আগে তো কত্তকিছু খাওয়াতে তুমি!"
টোটকা কাজে দিয়েছে। বেটার চোখেমুখে অস্থিরতা ফুটে উঠেছে মুহূর্তেই। এতক্ষণে পেটের নাড়ি-ভুড়ি মোচড় দেয়া শুরু করেছে হয়ত। চোখ দুইটা কে ফায়ারপ্লেসের কয়লার মতন করে একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে, আরেকবার টুকটুকির দিকে তাকাচ্ছে। কিছু বলবে বলবে টাইমে আমি আবার গালে লজ্জা আনার ভংগি করে টুকটুকির দিকে তাকিয়ে বললাম- " এই যাওনা, দাঁড়িয়ে আছ কেন জান? আমার ভীষণ ক্ষিদা পেয়েছে"। তুমি এক লাফে চা নাস্তা করে নিয়ে আস৷ আমি ততক্ষণে তোমার বরটার সাথে একটু গল্প করে নিই।"
টুকটুকি কান্না করে দিচ্ছে প্রায়। মুখ ফুটে কিছু বলতে চাইছে তার বরকে। হয়ত গলা উঁচু করে বলবে " এই বজ্জাতটাকে আমি চিনিনা, প্লিজ তুমি ওকে বেধরক পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দাও"। কিছু বলার আগেই ওর টাকু বরটা চোখের ইশারায় টুকটুকিকে ভেতরে চলে যেতে বলল। টুকটুকি কান্না জড়ানো গলায় বলল- " প্লিজ, একটাবার শোন আমার কথা।" বেটা শুনল না। ধমকের সুরে বলল- " তোমাকে ভেতরে যেতে বলেছিনা আমি"? অমনি টুকটুকি বাংলা সিনেমার নায়িকাগুলার মতন জামার ওড়নার আচল চোখের কাছে নিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে দৌড়ে ভেতরে চলে গেল। হয়ত এখন বিছানায় গড়িয়ে গড়িয়ে কাঁদছে।
টুকটুকির বর আমার সামনের সোফায় মুখোমুখি বসল। বেটা খুব শান্ত থাকার ভান করছে। আমাকে বুঝাতে চাইছে তার সদ্য বিয়ে করা বউ কে আরেকজন "জান" ডাকাতে সে একটুও বিচলিত না। অথচ বেচারার জীবন এখন পরম অসহায় পজিসনে দাঁড়িয়ে আছে। সারাজীবন পড়ালেখা করে চুল টুল হারিয়ে একটা ভাল চাকরীর বদৌলতে এত সুন্দর একটা বউ এর এমন নির্মম অতীতের সামনে দাঁড়িয়ে কোন বেটা ভাল থাকতে পারে? কোন শালা স্থির থাকতে পারে?
বেটার লাল বর্তার মতন চেহারাটা কাল মেঘের মতন ফ্যাকাসে হয়ে আছে। তবু স্থির থাকার অভিনয় করছে। গলাটাকে ভারী করে এই প্রথম আমার দিকে তাকিয়ে মুখ খুলল।
বললো - " কি চাই আপনার?"
আমি কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম- " টুকটুকি কে ফেরত চাই"।
বেটা আরো বিস্মিত হয়ে বলল- " ওর নাম তো টুকটুকি না, ওর নাম তো কেয়া"।
আমি গাল দুইটা ব্লাশ করে বললাম- " বুঝেন না ভাই? আদর করে নাম দিয়েছি আরকি"।
টাকু বেটার এইবার একদম চোখে পানি চলে এসেছে। অসহায় হয়ে গেছে দৃষ্টি।
আমি আবার বললাম- " ভাই অনেক ভাল মুহূর্ত আছে আমাদের৷ ইনিফ্যাক্ট ভিডিও আছে। মাঝে মাঝে খুব মাথা গরম হয়ে যায়। আমি না পেলে কাউকেই পেতে দিব না ওকে। ভাবি ভিডিওটা নেটে ছেড়ে দিই।"
গরম টোটকা। টাকু ব্যাটা এবার নড়ে চড়ে বসেছে। কি যেন ভাবছে। এখন বেচারার সম্মান নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে। ঘরের বউ এর আগের খারাপ কীর্তি যদি ফাঁস হয়ে যায়। মুখ দেখাতে পারবে না।
আমার দিকে তাকিয়ে গলা নিচু করে বলল- " ৫০,০০০ টাকা দিচ্ছি। আপনি ভিডিওটা কেটে দিন। আর কেয়াকে ভুলে যান৷
আমি গরম হয়ে গেলাম। উত্তেজিত হয়ে বললাম- " কি বলতে চাইছেন কি? টাকা দিয়ে আপনি আমার প্রেম কিনে নিতে চান? শুনেন ভাই আমি গরীব হতে পারি কিন্তু...
- "এক লক্ষ টাকা দিচ্ছি ৷ আর কথা বাড়াবেন না। ভিডিওটা কেটে দিয়ে বিদেয় হন।"
নগদ এক লক্ষ টাকা নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছি। টুকটুকির বরের সামনেই ফোন থেকে ভিডিওটা কেটে দিয়েছি।
যাওয়ার সময় ভাবলাম বেটাকে আরেকটু রাগিয়ে দিয়ে যাই। দরজার কাছে টুকটুকির বর কে ডেকে ফিসফিস করে বললাম- " জানেন ওর পঞ্চম আর ষষ্ঠ আঙুলের মাঝখানে খুব সুন্দর একটা তীল আছে।"
বেটা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল - " প্লিজ ভাই আপনি এবার আসুন তো"।
আমি এক লক্ষ টাকা নিয়ে হাটছি হাসপাতালের দিকে।
ততক্ষণে হয়ত কেয়ার বর কেয়াকে অনেক গালিগালাজ করছে। হয়ত বলছে " আমি আজই তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছি"। ঝগড়া চরমে পৌছে গিয়েছে। কেয়া বারবার নিজেকে ডিফন্ড করতে চাইছে। সে জোর গলায় বলছে আমি চিনিনা ঐ লোকটাকে,তুমি বিশ্বাস কর। কেয়ার বর রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলছে " যদি নাই চেন তাহলে আমাকে দিয়ে যাওয়া তোমাদের দুজনের রামলীলার ভিডিওটা কি মিথ্যা?" কেয়া অবাক হয়ে বলছে " কিসের ভিডিও? কই দেখিতো?
আমার ফোন থেকে শেয়ারইটে দেয়া সেই ভিডিওটা এই প্রথম অন করেছে কেয়ার বর । ভিডিওটা চলতে আরম্ভ করল। ভিডিওটা চলতেই ওরা দেখতে পেল ভিডিওতে আমি কথা বলছি-
"ভাই থামেন এটা কোন খারাপ ভিডিও না। আমি আপনার বউকে আমার ইহজিন্দেগীতে কক্ষনো দেখিনায় রে। ও আমার প্রেমিকা টেমিকা কিচ্ছু ছিল না। টাকার দরকার ছিল এক লক্ষের মতন। চাইলে দিতেন না। তাই দূর্বল পয়েন্টে আঘাত করেছি আপনার। আমার বউটার অসুখ। খুব অসুখ। ডাক্তার বলেছে বাঁচবে না। কিন্তু আমার মন বলছে আমার বউটা বাঁচবে। তাই বাঁচানোর চেষ্টা। জানেনই তো " Everything is fair in love"। আপনার বউ এর কথাগুলো শুরু থেকেই আপনার শোনা উচিত ছিল ভাই। ভুল করেছেন আপনি সেখানেই। সবসময় বউ এর কথা শুনবেন। আপনার বউটা অনেক সুন্দরী এবং ভাল। ওকে অনেক ভালবাসবেন। আর হ্যা যদি সম্ভব হয় তাহলে হাত থেকে কিছু চুল নিয়ে মাথায় লাগানোর চেষ্টা করেন। তাহলে আপনাকে আরো হ্যান্ডসাম লাগবে। আরেকটা কথা - " আচ্ছা ভাই আসলেই একবার খুজে দেইখেন তো আপনার বউ এর পায়ের পঞ্চম আঙুল আর ষষ্ঠ আঙুলের মধ্যেখানে তীল আছে কিনা? আমার বউ এর আছে তো। তাই মনে হল। মাফ করবেন। টাকাগুলা কখনোই আর ফেরত দেয়া হবে না। আপনারা খুব সুখী হোন। আমিন।"
ভিডিওটা দেখে খুব অবাক হবে দুজন। হয়ত এক দুই মিনিট হা করে তাকিয়ে থাকবে একে অন্যের দিকে। নিজের ভুল বুঝবে কেয়ার বর। কেয়াকে স্যরি বলবে। কেয়ার অভিমান হবে। কেয়া রাগ করবে , কেয়ার বর রাগ ভাঙাবে। কান ধরে উঠবস করবে। অনেকবার স্যরি বলবে। নানারকম আদিখ্যেতা করবে। একসময় কেয়ার রাগ পড়ে যাবে। জড়িয়ে ধরবে দুজন দুজনকে। কেয়া চুপি চুপি তার বরকে বললে " আমার কোন পায়েই ছয়টা আঙুল নেই, আর তোমাকে চুল ছাড়া মাথায় যথেষ্ট ই হ্যান্ডসাম লাগে।"
আমি এক লক্ষ টাকা নিয়ে হাসপাতালের দিকে হাটছি। আরেকটু পরই আমার বউটার কাছে পৌছে যাব। ওর ডায়ালাইসিস হবে। ও আবার হাসবে। আবার আমাকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকবে। আমার গালগুলো ছুয়ে দিবে। আমি ওর হাতে চুমু খাব। কপালে চুমু খাব। চুলগুলো বুলিয়ে দেব। চুল বুলাতে বুলাতে একসময় ওর বুকে ঘুমিয়ে পড়ব।
টুকটুকি অনবরত ঘামছে। সম্ভবত স্বপ্নেও ভাবেনি এমন কোন দূর্ঘটনা তার লাইফে ঘটবে৷ সে আমার দিকে তাকিয়ে বারবার চেনার চেষ্টা করছে। কোয়েল পাখির ডিমের মতন চোখ দুইটাকে কোণাকুণি ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম টুকটুকি নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাঁটছে। নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে স্বপ্ন নাকি বাস্তব। ওর বরটা এক কোণে দাঁড়িয়ে খরগোসের মতন আমাকে আগা গোড়া দেখছে। সে এখন তার ব্রেইনকে খুব চাপ দিচ্ছে। বারবার এটা মনে করতে চাচ্ছে আমাকে কোথাও একটা দেখেছে কিনা। মানুষের অবচেতন মন নতুন কোন মানুষ দেখলেই মনে করে " একে আগে কোথাও দেখেছি"। বেটার দুই হাতে হাজার হাজার চুল। এমনকি নাকের ডগায় ও এক দেড়শ চুল আছে । অথচ মাথায় একটা চুল ও নেই। যেখানে যা থাকার কথা সেখানে না থেকে অন্য জায়গায় থাকাটা বড়ই বিচ্ছিরি৷ ভাবলাম বেটাকে একটু চমকে দিই। মুখে এক ঝলক হাসি হাসি ভাব নিয়ে এলাম৷ মাথা বডি দুইটাই স্ট্রেট টুকটুকির দিকে তাক করে মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব করে বললাম- " জান , তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে আছ কেন? যাও না আমার জন্যে চা নাস্তা করে নিয়ে আস না, কত্তদিন তোমার হাতে বানানো চা খাই না। আগে তো কত্তকিছু খাওয়াতে তুমি!"
টোটকা কাজে দিয়েছে। বেটার চোখেমুখে অস্থিরতা ফুটে উঠেছে মুহূর্তেই। এতক্ষণে পেটের নাড়ি-ভুড়ি মোচড় দেয়া শুরু করেছে হয়ত। চোখ দুইটা কে ফায়ারপ্লেসের কয়লার মতন করে একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে, আরেকবার টুকটুকির দিকে তাকাচ্ছে। কিছু বলবে বলবে টাইমে আমি আবার গালে লজ্জা আনার ভংগি করে টুকটুকির দিকে তাকিয়ে বললাম- " এই যাওনা, দাঁড়িয়ে আছ কেন জান? আমার ভীষণ ক্ষিদা পেয়েছে"। তুমি এক লাফে চা নাস্তা করে নিয়ে আস৷ আমি ততক্ষণে তোমার বরটার সাথে একটু গল্প করে নিই।"
টুকটুকি কান্না করে দিচ্ছে প্রায়। মুখ ফুটে কিছু বলতে চাইছে তার বরকে। হয়ত গলা উঁচু করে বলবে " এই বজ্জাতটাকে আমি চিনিনা, প্লিজ তুমি ওকে বেধরক পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দাও"। কিছু বলার আগেই ওর টাকু বরটা চোখের ইশারায় টুকটুকিকে ভেতরে চলে যেতে বলল। টুকটুকি কান্না জড়ানো গলায় বলল- " প্লিজ, একটাবার শোন আমার কথা।" বেটা শুনল না। ধমকের সুরে বলল- " তোমাকে ভেতরে যেতে বলেছিনা আমি"? অমনি টুকটুকি বাংলা সিনেমার নায়িকাগুলার মতন জামার ওড়নার আচল চোখের কাছে নিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে দৌড়ে ভেতরে চলে গেল। হয়ত এখন বিছানায় গড়িয়ে গড়িয়ে কাঁদছে।
টুকটুকির বর আমার সামনের সোফায় মুখোমুখি বসল। বেটা খুব শান্ত থাকার ভান করছে। আমাকে বুঝাতে চাইছে তার সদ্য বিয়ে করা বউ কে আরেকজন "জান" ডাকাতে সে একটুও বিচলিত না। অথচ বেচারার জীবন এখন পরম অসহায় পজিসনে দাঁড়িয়ে আছে। সারাজীবন পড়ালেখা করে চুল টুল হারিয়ে একটা ভাল চাকরীর বদৌলতে এত সুন্দর একটা বউ এর এমন নির্মম অতীতের সামনে দাঁড়িয়ে কোন বেটা ভাল থাকতে পারে? কোন শালা স্থির থাকতে পারে?
বেটার লাল বর্তার মতন চেহারাটা কাল মেঘের মতন ফ্যাকাসে হয়ে আছে। তবু স্থির থাকার অভিনয় করছে। গলাটাকে ভারী করে এই প্রথম আমার দিকে তাকিয়ে মুখ খুলল।
বললো - " কি চাই আপনার?"
আমি কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম- " টুকটুকি কে ফেরত চাই"।
বেটা আরো বিস্মিত হয়ে বলল- " ওর নাম তো টুকটুকি না, ওর নাম তো কেয়া"।
আমি গাল দুইটা ব্লাশ করে বললাম- " বুঝেন না ভাই? আদর করে নাম দিয়েছি আরকি"।
টাকু বেটার এইবার একদম চোখে পানি চলে এসেছে। অসহায় হয়ে গেছে দৃষ্টি।
আমি আবার বললাম- " ভাই অনেক ভাল মুহূর্ত আছে আমাদের৷ ইনিফ্যাক্ট ভিডিও আছে। মাঝে মাঝে খুব মাথা গরম হয়ে যায়। আমি না পেলে কাউকেই পেতে দিব না ওকে। ভাবি ভিডিওটা নেটে ছেড়ে দিই।"
গরম টোটকা। টাকু ব্যাটা এবার নড়ে চড়ে বসেছে। কি যেন ভাবছে। এখন বেচারার সম্মান নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে। ঘরের বউ এর আগের খারাপ কীর্তি যদি ফাঁস হয়ে যায়। মুখ দেখাতে পারবে না।
আমার দিকে তাকিয়ে গলা নিচু করে বলল- " ৫০,০০০ টাকা দিচ্ছি। আপনি ভিডিওটা কেটে দিন। আর কেয়াকে ভুলে যান৷
আমি গরম হয়ে গেলাম। উত্তেজিত হয়ে বললাম- " কি বলতে চাইছেন কি? টাকা দিয়ে আপনি আমার প্রেম কিনে নিতে চান? শুনেন ভাই আমি গরীব হতে পারি কিন্তু...
- "এক লক্ষ টাকা দিচ্ছি ৷ আর কথা বাড়াবেন না। ভিডিওটা কেটে দিয়ে বিদেয় হন।"
নগদ এক লক্ষ টাকা নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছি। টুকটুকির বরের সামনেই ফোন থেকে ভিডিওটা কেটে দিয়েছি।
যাওয়ার সময় ভাবলাম বেটাকে আরেকটু রাগিয়ে দিয়ে যাই। দরজার কাছে টুকটুকির বর কে ডেকে ফিসফিস করে বললাম- " জানেন ওর পঞ্চম আর ষষ্ঠ আঙুলের মাঝখানে খুব সুন্দর একটা তীল আছে।"
বেটা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল - " প্লিজ ভাই আপনি এবার আসুন তো"।
আমি এক লক্ষ টাকা নিয়ে হাটছি হাসপাতালের দিকে।
ততক্ষণে হয়ত কেয়ার বর কেয়াকে অনেক গালিগালাজ করছে। হয়ত বলছে " আমি আজই তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছি"। ঝগড়া চরমে পৌছে গিয়েছে। কেয়া বারবার নিজেকে ডিফন্ড করতে চাইছে। সে জোর গলায় বলছে আমি চিনিনা ঐ লোকটাকে,তুমি বিশ্বাস কর। কেয়ার বর রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলছে " যদি নাই চেন তাহলে আমাকে দিয়ে যাওয়া তোমাদের দুজনের রামলীলার ভিডিওটা কি মিথ্যা?" কেয়া অবাক হয়ে বলছে " কিসের ভিডিও? কই দেখিতো?
আমার ফোন থেকে শেয়ারইটে দেয়া সেই ভিডিওটা এই প্রথম অন করেছে কেয়ার বর । ভিডিওটা চলতে আরম্ভ করল। ভিডিওটা চলতেই ওরা দেখতে পেল ভিডিওতে আমি কথা বলছি-
"ভাই থামেন এটা কোন খারাপ ভিডিও না। আমি আপনার বউকে আমার ইহজিন্দেগীতে কক্ষনো দেখিনায় রে। ও আমার প্রেমিকা টেমিকা কিচ্ছু ছিল না। টাকার দরকার ছিল এক লক্ষের মতন। চাইলে দিতেন না। তাই দূর্বল পয়েন্টে আঘাত করেছি আপনার। আমার বউটার অসুখ। খুব অসুখ। ডাক্তার বলেছে বাঁচবে না। কিন্তু আমার মন বলছে আমার বউটা বাঁচবে। তাই বাঁচানোর চেষ্টা। জানেনই তো " Everything is fair in love"। আপনার বউ এর কথাগুলো শুরু থেকেই আপনার শোনা উচিত ছিল ভাই। ভুল করেছেন আপনি সেখানেই। সবসময় বউ এর কথা শুনবেন। আপনার বউটা অনেক সুন্দরী এবং ভাল। ওকে অনেক ভালবাসবেন। আর হ্যা যদি সম্ভব হয় তাহলে হাত থেকে কিছু চুল নিয়ে মাথায় লাগানোর চেষ্টা করেন। তাহলে আপনাকে আরো হ্যান্ডসাম লাগবে। আরেকটা কথা - " আচ্ছা ভাই আসলেই একবার খুজে দেইখেন তো আপনার বউ এর পায়ের পঞ্চম আঙুল আর ষষ্ঠ আঙুলের মধ্যেখানে তীল আছে কিনা? আমার বউ এর আছে তো। তাই মনে হল। মাফ করবেন। টাকাগুলা কখনোই আর ফেরত দেয়া হবে না। আপনারা খুব সুখী হোন। আমিন।"
ভিডিওটা দেখে খুব অবাক হবে দুজন। হয়ত এক দুই মিনিট হা করে তাকিয়ে থাকবে একে অন্যের দিকে। নিজের ভুল বুঝবে কেয়ার বর। কেয়াকে স্যরি বলবে। কেয়ার অভিমান হবে। কেয়া রাগ করবে , কেয়ার বর রাগ ভাঙাবে। কান ধরে উঠবস করবে। অনেকবার স্যরি বলবে। নানারকম আদিখ্যেতা করবে। একসময় কেয়ার রাগ পড়ে যাবে। জড়িয়ে ধরবে দুজন দুজনকে। কেয়া চুপি চুপি তার বরকে বললে " আমার কোন পায়েই ছয়টা আঙুল নেই, আর তোমাকে চুল ছাড়া মাথায় যথেষ্ট ই হ্যান্ডসাম লাগে।"
আমি এক লক্ষ টাকা নিয়ে হাসপাতালের দিকে হাটছি। আরেকটু পরই আমার বউটার কাছে পৌছে যাব। ওর ডায়ালাইসিস হবে। ও আবার হাসবে। আবার আমাকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকবে। আমার গালগুলো ছুয়ে দিবে। আমি ওর হাতে চুমু খাব। কপালে চুমু খাব। চুলগুলো বুলিয়ে দেব। চুল বুলাতে বুলাতে একসময় ওর বুকে ঘুমিয়ে পড়ব।
(সংগৃহীত)