বাসমতী
perigal
১
বারাসাতের সোমেন মন্ডলের সাথে গড়িয়াহাটের তনিমা দাশগুপ্তের আলাপ হলো ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্টারনেটে লিটোরোটিকা চ্যাট সাইটের লবিতে। সোমেন তখন থাকে পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরে আর তনিমা দিল্লীর মালভীয় নগরে। লিটোরোটিকা চ্যাটে যারা যেতেন বা এখনো যান তারা জানবেন, যে এই চ্যাট সাইটে লগ ইন করলে আপনি প্রথমে পৌঁছে যাবেন লবিতে যেখানে আপনার মতই আরো অনেক চ্যাটার আছে, নিজেদের মধ্যে গল্প গুজব করছে, হাই হ্যালো হচ্ছে। এছাড়া আরো অনেক রুম আছে, যেমন বিডিএসএম রুম, সবমিসিভ রুম, ফ্যামিলি রুম বা নটী ওয়াইভস রুম; চ্যাটাররা নিজের পছন্দ মতন রুমে চ্যাট করে, কেউ কেউ লবিতেই বসে থাকে, অনেকে আবার প্রাইভেট রুম বানিয়ে নেয়। মুলতঃ একটা সেক্স চ্যাট সাইট, বেশীর ভাগ চ্যাটার সাইবার সেক্স বা রোল প্লের জন্য পার্টনার খোঁজে, অনেকের স্টেডি পার্টনার আছে, আবার কিছু চ্যাটার আসে অনলাইন বন্ধুদের সাথে গল্প করতে, অথবা নিছক আড্ডা মারতে। প্রত্যেকেরই একটা আই ডি থাকে, একটা নাম, যেটা আদপেই আসল নাম না, যাকে চ্যাটের ভাষায় বলে নিক বা নিকনেম। কারো নিক থেকে আপনি বুঝতে পারবেন উনি কোথাকার মানুষ (গ্যারী হিক্স এলো এ), কারো নিক থেকে ওর শরীর সম্বন্ধে জানতে পারবেন (লিন্ডা ৩৬ ডিডি), আবার কারো নাম বলে দেবে উনি কি খুঁজছেন (পেরি ফর থ্রি সাম)। নানান দেশের মানুষ, চ্যাট হয় সাধারনত ইংরেজি ভাষায়, দুজন একই ভাষার মানুষ হলে তারা নিজেদের ভাষায় চ্যাট করে, রোমান হরফে টাইপ করে।
৪৫ বছরের অকৃতদার সোমেন একজন দড় মানুষ, অনেক ঘাটের জল খেয়েছে, এই সাইটে আনাগোনা করছে বছর দেড়েক যাবত। ওর আই ডি, ‘স্লিউথ’ বা গোয়েন্দা, এই নামেই সাইটের পুরনো চ্যাটাররা ওকে চেনে। ৩৩ বছরের ডিভোর্সি তনিমা এই সাইটে আসছে মাস খানেক। সাইটটার কথা ও শুনেছিল কলেজের বন্ধু প্রীতির কাছে। তনিমার নিকটা একটু সাদামাটা, ‘তানিয়া’। গত এক মাসে ওর সাথে অনেকেরই হাই হ্যালো হয়েছে, মহিলা দেখলেই চ্যাটাররা মেসেজ পাঠাতে শুরু করে, এখন পর্যন্ত সেক্স চ্যাট করেছে শুধু দুজনের সাথে, একজন আমেরিকান, আর একজন ইংলিশম্যান। তানিয়া আর স্লিউথের মধ্যে প্রথম কথোপকথন হলো অনেকটা এই রকম....
স্লিউথ - হাই।
তানিয়া – হাই।
স্লিউথ - এ এস এলো? (এজ, সেক্স, লোকেশন)
তানিয়া – ৩৩, ফিমেল, ইন্ডিয়া।
স্লিউথ – ওয়াও, ইন্ডিয়ান? হোয়ার ইন ইন্ডিয়া?
(একটু ভাবলো তনিমা, এত বড় দিল্লী শহর, কি করে জানবে ও কোথায় থাকে?)
তানিয়া – দিল্লী।
স্লিউথ –দিল্লী! ওয়াও! আই অ্যাম ইন্ডিয়ান টু, ফ্রম অমৃতসর।
(অমৃতসর! পাঞ্জাবী হবে নির্ঘাত। একটু ভাবলো তনিমা, ওদিক থেকে স্লিউথের মেসেজ এলো)
স্লিউথ – ইয়ু স্টিল দেয়ার?
তানিয়া – ইয়েস।
স্লিউথ – হোয়াই আর ইয়ু হিয়ার তানিয়া?
(এ আবার কি বিদঘুটে প্রশ্ন, চ্যাটরুমে লোকেরা কি করতে আসে?)
তানিয়া – আই লাইক টু চ্যাট।
স্লিউথ –হোয়াট ডু ইয়ু লাইক টু চ্যাট অ্যাবাউট, তানিয়া?
তানিয়া – এনিথিং।
স্লিউথ – গুড। টেল মি অ্যাবাউট ইয়োরসেলফ।
(প্রীতির সাবধানবাণী মনে পড়লো। হুড় হুড় করে নিজের সম্বন্ধে সব কিছু বলবি না)
তানিয়া – হোয়াট ডু ইয়ু ওয়ান্ট টু নো?
স্লিউথ –আর ইয়ু পাঞ্জাবী, তানিয়া?
তানিয়া – নো।
স্লিউথ – সাউথ ইন্ডিয়ান?
তানিয়া – নো।
স্লিউথ – দেন?
তানিয়া – বেঙ্গলী।
স্লিউথ – বেঙ্গলী! ও মাই গড!
(তনিমা অবাক হলো, এতে ও মাই গডের কি হলো? ওদিক থেকে স্লিউথ লিখলো)
স্লিউথ – আপনি বাঙালী? আই অ্যাম বেঙ্গলী টু। সোমেন মন্ডল।
(এবার তনিমা সত্যি চমকে উঠলো। এখানে যে আর একজন বাঙালীর সাথে দেখা হবে, এটা ও স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। স্লিউথের মেসেজ এলো পর পর)
স্লিউথ – হ্যালো তানিয়া?
স্লিউথ – হ্যালো তানিয়া?আর ইয়ু দেয়ার?
তানিয়া – ইয়েস আই অ্যাম হিয়ার।
স্লিউথ – ক্যান উই চ্যাট ইন বেঙ্গলী?
তানিয়া – হ্যাঁ। (রোমানে অক্ষরে লিখলো, ওদিক থেকে স্লিউথও রোমানে টাইপ করলো)
স্লিউথ – উফফ! লিটোরোটিকা চ্যাটে কোনো বাঙালী মহিলার সাথে আলাপ হবে ভাবতেও পারিনি।
তানিয়া – (এবারে একটু সাবধানী) আপনি অমৃতসরে থাকেন?
স্লিউথ – হ্যাঁ।
তানিয়া – ওখানে কি করেন?
স্লিউথ – চালের কারবারী।
তানিয়া – চালের কারবারী? অমৃতসরে চাল হয় নাকি?
স্লিউথ –শহরে হয় না, কিন্তু অমৃতসর, জলন্ধর আর আশেপাশে বাসমতী চালের চাষ হয়, যার অনেকটাই এক্সপোর্ট হয়, আমি একটা রাইস এক্সপোর্ট কোম্পানিতে কাজ করি।
তানিয়া – ওহ। (তনিমা নিজের অজ্ঞানতায় একটু লজ্জা পেল।)
স্লিউথ –আপনি কি করেন তানিয়া?
তানিয়া – আমি পড়াই।
স্লিউথ – কোথায় পড়ান? স্কুলে?
তানিয়া – না, কলেজে পড়াই।
স্লিউথ – ওরে বাবা, অধ্যাপিকা! কি পড়ান?
তানিয়া – ইতিহাস।
স্লিউথ - ওরে বাবা, ইতিহাস! তা এখানে ইতিহাস নিয়ে তো চ্যাট হয় না। এখানে যা কিছু হয় ভূগোল নিয়ে, শরীরের ভূগোল।
তানিয়া – জানি। (তনিমা মনে মনে হেসে ফেললো)।
স্লিউথ – জানেন? তাহলে আপনার ভূগোলটা একটু বলুন না।
তানিয়া – সব কিছু এক দিনেই জেনে ফেলবেন? তা হলে পরে কি করবেন?
স্লিউথ – পরে গোল দেব। (লোকটা বেশ মজার কথা বলে তো।)
তানিয়া – অত ব্যস্ত হওয়ার কি আছে? সবুরে মেওয়া ফলে। আজ আমার কাজ আছে, উঠতে হবে।
স্লিউথ – আরে দাঁড়ান, দাঁড়ান, এই তো আলাপ হলো, আর এখুনি চললেন?
তানিয়া – বললাম তো আমার কাজ আছে, আর একদিন কথা হবে।
perigal
১
বারাসাতের সোমেন মন্ডলের সাথে গড়িয়াহাটের তনিমা দাশগুপ্তের আলাপ হলো ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্টারনেটে লিটোরোটিকা চ্যাট সাইটের লবিতে। সোমেন তখন থাকে পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরে আর তনিমা দিল্লীর মালভীয় নগরে। লিটোরোটিকা চ্যাটে যারা যেতেন বা এখনো যান তারা জানবেন, যে এই চ্যাট সাইটে লগ ইন করলে আপনি প্রথমে পৌঁছে যাবেন লবিতে যেখানে আপনার মতই আরো অনেক চ্যাটার আছে, নিজেদের মধ্যে গল্প গুজব করছে, হাই হ্যালো হচ্ছে। এছাড়া আরো অনেক রুম আছে, যেমন বিডিএসএম রুম, সবমিসিভ রুম, ফ্যামিলি রুম বা নটী ওয়াইভস রুম; চ্যাটাররা নিজের পছন্দ মতন রুমে চ্যাট করে, কেউ কেউ লবিতেই বসে থাকে, অনেকে আবার প্রাইভেট রুম বানিয়ে নেয়। মুলতঃ একটা সেক্স চ্যাট সাইট, বেশীর ভাগ চ্যাটার সাইবার সেক্স বা রোল প্লের জন্য পার্টনার খোঁজে, অনেকের স্টেডি পার্টনার আছে, আবার কিছু চ্যাটার আসে অনলাইন বন্ধুদের সাথে গল্প করতে, অথবা নিছক আড্ডা মারতে। প্রত্যেকেরই একটা আই ডি থাকে, একটা নাম, যেটা আদপেই আসল নাম না, যাকে চ্যাটের ভাষায় বলে নিক বা নিকনেম। কারো নিক থেকে আপনি বুঝতে পারবেন উনি কোথাকার মানুষ (গ্যারী হিক্স এলো এ), কারো নিক থেকে ওর শরীর সম্বন্ধে জানতে পারবেন (লিন্ডা ৩৬ ডিডি), আবার কারো নাম বলে দেবে উনি কি খুঁজছেন (পেরি ফর থ্রি সাম)। নানান দেশের মানুষ, চ্যাট হয় সাধারনত ইংরেজি ভাষায়, দুজন একই ভাষার মানুষ হলে তারা নিজেদের ভাষায় চ্যাট করে, রোমান হরফে টাইপ করে।
৪৫ বছরের অকৃতদার সোমেন একজন দড় মানুষ, অনেক ঘাটের জল খেয়েছে, এই সাইটে আনাগোনা করছে বছর দেড়েক যাবত। ওর আই ডি, ‘স্লিউথ’ বা গোয়েন্দা, এই নামেই সাইটের পুরনো চ্যাটাররা ওকে চেনে। ৩৩ বছরের ডিভোর্সি তনিমা এই সাইটে আসছে মাস খানেক। সাইটটার কথা ও শুনেছিল কলেজের বন্ধু প্রীতির কাছে। তনিমার নিকটা একটু সাদামাটা, ‘তানিয়া’। গত এক মাসে ওর সাথে অনেকেরই হাই হ্যালো হয়েছে, মহিলা দেখলেই চ্যাটাররা মেসেজ পাঠাতে শুরু করে, এখন পর্যন্ত সেক্স চ্যাট করেছে শুধু দুজনের সাথে, একজন আমেরিকান, আর একজন ইংলিশম্যান। তানিয়া আর স্লিউথের মধ্যে প্রথম কথোপকথন হলো অনেকটা এই রকম....
স্লিউথ - হাই।
তানিয়া – হাই।
স্লিউথ - এ এস এলো? (এজ, সেক্স, লোকেশন)
তানিয়া – ৩৩, ফিমেল, ইন্ডিয়া।
স্লিউথ – ওয়াও, ইন্ডিয়ান? হোয়ার ইন ইন্ডিয়া?
(একটু ভাবলো তনিমা, এত বড় দিল্লী শহর, কি করে জানবে ও কোথায় থাকে?)
তানিয়া – দিল্লী।
স্লিউথ –দিল্লী! ওয়াও! আই অ্যাম ইন্ডিয়ান টু, ফ্রম অমৃতসর।
(অমৃতসর! পাঞ্জাবী হবে নির্ঘাত। একটু ভাবলো তনিমা, ওদিক থেকে স্লিউথের মেসেজ এলো)
স্লিউথ – ইয়ু স্টিল দেয়ার?
তানিয়া – ইয়েস।
স্লিউথ – হোয়াই আর ইয়ু হিয়ার তানিয়া?
(এ আবার কি বিদঘুটে প্রশ্ন, চ্যাটরুমে লোকেরা কি করতে আসে?)
তানিয়া – আই লাইক টু চ্যাট।
স্লিউথ –হোয়াট ডু ইয়ু লাইক টু চ্যাট অ্যাবাউট, তানিয়া?
তানিয়া – এনিথিং।
স্লিউথ – গুড। টেল মি অ্যাবাউট ইয়োরসেলফ।
(প্রীতির সাবধানবাণী মনে পড়লো। হুড় হুড় করে নিজের সম্বন্ধে সব কিছু বলবি না)
তানিয়া – হোয়াট ডু ইয়ু ওয়ান্ট টু নো?
স্লিউথ –আর ইয়ু পাঞ্জাবী, তানিয়া?
তানিয়া – নো।
স্লিউথ – সাউথ ইন্ডিয়ান?
তানিয়া – নো।
স্লিউথ – দেন?
তানিয়া – বেঙ্গলী।
স্লিউথ – বেঙ্গলী! ও মাই গড!
(তনিমা অবাক হলো, এতে ও মাই গডের কি হলো? ওদিক থেকে স্লিউথ লিখলো)
স্লিউথ – আপনি বাঙালী? আই অ্যাম বেঙ্গলী টু। সোমেন মন্ডল।
(এবার তনিমা সত্যি চমকে উঠলো। এখানে যে আর একজন বাঙালীর সাথে দেখা হবে, এটা ও স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। স্লিউথের মেসেজ এলো পর পর)
স্লিউথ – হ্যালো তানিয়া?
স্লিউথ – হ্যালো তানিয়া?আর ইয়ু দেয়ার?
তানিয়া – ইয়েস আই অ্যাম হিয়ার।
স্লিউথ – ক্যান উই চ্যাট ইন বেঙ্গলী?
তানিয়া – হ্যাঁ। (রোমানে অক্ষরে লিখলো, ওদিক থেকে স্লিউথও রোমানে টাইপ করলো)
স্লিউথ – উফফ! লিটোরোটিকা চ্যাটে কোনো বাঙালী মহিলার সাথে আলাপ হবে ভাবতেও পারিনি।
তানিয়া – (এবারে একটু সাবধানী) আপনি অমৃতসরে থাকেন?
স্লিউথ – হ্যাঁ।
তানিয়া – ওখানে কি করেন?
স্লিউথ – চালের কারবারী।
তানিয়া – চালের কারবারী? অমৃতসরে চাল হয় নাকি?
স্লিউথ –শহরে হয় না, কিন্তু অমৃতসর, জলন্ধর আর আশেপাশে বাসমতী চালের চাষ হয়, যার অনেকটাই এক্সপোর্ট হয়, আমি একটা রাইস এক্সপোর্ট কোম্পানিতে কাজ করি।
তানিয়া – ওহ। (তনিমা নিজের অজ্ঞানতায় একটু লজ্জা পেল।)
স্লিউথ –আপনি কি করেন তানিয়া?
তানিয়া – আমি পড়াই।
স্লিউথ – কোথায় পড়ান? স্কুলে?
তানিয়া – না, কলেজে পড়াই।
স্লিউথ – ওরে বাবা, অধ্যাপিকা! কি পড়ান?
তানিয়া – ইতিহাস।
স্লিউথ - ওরে বাবা, ইতিহাস! তা এখানে ইতিহাস নিয়ে তো চ্যাট হয় না। এখানে যা কিছু হয় ভূগোল নিয়ে, শরীরের ভূগোল।
তানিয়া – জানি। (তনিমা মনে মনে হেসে ফেললো)।
স্লিউথ – জানেন? তাহলে আপনার ভূগোলটা একটু বলুন না।
তানিয়া – সব কিছু এক দিনেই জেনে ফেলবেন? তা হলে পরে কি করবেন?
স্লিউথ – পরে গোল দেব। (লোকটা বেশ মজার কথা বলে তো।)
তানিয়া – অত ব্যস্ত হওয়ার কি আছে? সবুরে মেওয়া ফলে। আজ আমার কাজ আছে, উঠতে হবে।
স্লিউথ – আরে দাঁড়ান, দাঁড়ান, এই তো আলাপ হলো, আর এখুনি চললেন?
তানিয়া – বললাম তো আমার কাজ আছে, আর একদিন কথা হবে।