এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে নানান সমস্যায় জর্জরিত সমাজ আর বিশ্ব। এমন সময়ে সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে বড় করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবকেরা সন্তানকে এমন সব স্কিল শেখাচ্ছেন, যা বড় হয়ে তার কাজে লাগবে। সেই সঙ্গে পরিবেশসচেতন করে তোলাও অত্যন্ত জরুরি। মোবাইলে আসক্তি কমিয়ে আপনার সন্তানকে পরিবেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করিয়ে দিন।
নেপালি টাইমস আর ইকোওয়াচের পরিবেশ দিবসের বিশেষ ফিচার অবলম্বনে লেখা হলো সেই সম্পর্কে।
* আপনার সন্তানকে নিয়ে গাছ লাগান। বাগান করুন। লকডাউনের ঘরবন্দী সময়ে সন্তানকে নিয়ে বারান্দার এককোণে বানিয়ে ফেলুন এক টুকরো সবুজ। সন্তানের জন্মদিনে উপহার দিন গাছ। জন্মদিনে গাছ লাগাতে পারেন। সেই গাছ বয়সের সাক্ষী হয়ে বেড়ে উঠবে। অনেক স্মৃতি নিয়ে মেলবে ডালপালা।
* যেদিন আবহাওয়া ভালো থাকে, সেদিন আপনার সন্তানকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে বের হতে পারেন। সন্তানকে নিয়ে মাছ ধরতে পারেন। বাসায় রাখতে পারেন অ্যাকুরিয়াম। ছুটির দিনে চলে যেতে পারেন ক্যাম্পিংয়ে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে পারেন।
* কাছে কোথাও যাওয়ার জন্য গাড়িতে না উঠে হাঁটুন। আরকেটু দূরে হলে সাইকেলে যান। আপনার সন্তানের হাতেও তুলে দিন সাইকেল।
* বাড়িতে রিসাইক্লিংয়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। ফেলে দেওয়া শাকসবজি বা ফলের খোসা দিয়ে বাগানের গাছের জন্য সার বানান। যেসব বর্জ পচনশীল নয়, তার পরিমাণ কমাতে হবে। যতটা সম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। খাবার সংরক্ষণ ও নষ্ট না করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পানির অপচয় রোধ করতে হবে। ব্রাশ করার সময়, থালাবাটি মাজার সময় বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার সময় অযথা পানির কল যাতে খোলা না থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
* কেমিক্যালের বদলে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পণ্য ব্যবহার করুন। বাচ্চাদের সামনে ভিনিগার আর সোডা দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করুন। আবার চুলে নারকেলের তেল বা জলপাই তেলের মধ্যে টি–ট্রি তেল মিশিয়ে লাগান। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যে প্রকৃতিরই দান, আপনার সন্তানকে সেটি বোঝান।
* পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার করুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন।
* জীবজন্তুকে ভালোবাসুন। বাড়িতে বিড়াল, কুকুর পুষতে পারেন। তাদেরকেও মানুষের মতোই প্রকৃতি আর সমাজের অংশ হিসেবে গ্রহণ করুন।
জীবজন্তুকে ভালোবাসুন
* পরিবেশ রক্ষা নিয়ে সিনেমা বা কার্টুন দেখান। বই পড়েও শেখানো যেতে পারে পরিবেশের গুরুত্ব।
একুশ শতকের এই যুগে বাচ্চারা খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ছে মুঠোফোনে। ফলে তৈরি হচ্ছে নানান ঝুঁকি আর জটিলতা। তাই মুঠোফোন পাশে রেখে বন্ধুত্ব হোক গাছ আর প্রাণীদের সঙ্গে। প্রকৃতি হোক প্রাণের সঙ্গী।