What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বাদুড়েই কেন এত সব ভাইরাসের বাস? (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
wMtRTWQ.jpg


করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য উৎস হিসেবে আপাতত চীনের বন্য প্রাণীর বাজারের দিকেই আঙুল তুলছে গোটা বিশ্ব। অনেকেই উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের ধারক হিসেবে বাদুড়কে দোষী সাব্যস্ত করছেন।

ইকোহেলথ এলিয়েন্সের সভাপতি ড. পিটার ডাজাক ১৫ বছর যাবত চীনে প্রাণী থেকে মানব শরীরে রোগ ছড়ানো নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলছেন, জেনেটিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় যে সাত প্রজাতির করোনাভাইরাসের কথা এখন পর্যন্ত জানা গেছে তার প্রত্যেকটির সাথে এর মিল রয়েছে। আর এই ভাইরাসের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ভাইরাস বাদুড় থেকেই যে ছড়িয়েছে সে ব্যাপারে মোটামুটি নিঃসন্দেহ বিজ্ঞানীরা।

সার্স , মার্স আর ইবোলার মত মহামারিগুলো যে বাদুড়ের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। একই কাতারে শূকরকেও রাখা হয়েছে। বলে রাখা ভাল, সার্স আর মার্স ভাইরাস বর্তমান মহামারী করোনাভাইরাসেরই জ্ঞাতি ভাই।

প্রাকৃতিকভাবেই রোগ জীবাণুর ভাণ্ডার বাদুড়ে আছে মারবার্গ, নিপাহ, হেন্ড্রা ভাইরাসেরও জীবাণু। যার কারণে আফ্রিকা, মালয়েশিয়া,বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়েছে রোগগুলো।

nYVF8cW.jpg


বাদুড় থেকে অসংখ্য ভাইরাস মানবদেশে আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে; Photo: BONNIE JO MOUNT THE WASHINGTON POST/ VIA GETTY IMAGES

২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল তখন বিড়াল সদৃশ গন্ধগোকুলকেই এর জন্য দায়ী করা হয়েছিল। আর প্রাণীটির শরীরে বাদুড়ের মাধ্যমেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। গন্ধগোকুলের মাংস খায় এশিয়ার কিছু অঞ্চলের মানুষ। ফলে তাদের মধ্যেও ভাইরাসটি ছড়িয়ে যায়। এমনকি বাদুড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্কও ছড়াতে পারে। তবে সেটা কেবল আক্রান্ত বাদুড়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

বাদুড়ে একাধিক ভাইরাসের বসবাস বেশ মামুলি ব্যাপার। ভাইরাসের প্রকোপ সহ্য ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে স্তন্যপায়ীরা কতগুলা বৈশিষ্টের ভিত্তিতেই কেবল ছড়াতে পারে প্রাণঘাতি ভাইরাস। কলা, এভোক্যাডো আর আমের মতো ফল গাছের পোকামাকড় খেতে গিয়ে পরাগায়ন ঘটায় বাদুড়। আর এভাবেই এসব ফলে তারা প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে মারাত্মক সব ভাইরাস। বাদুড়ের ভাইরাস বহনের সক্ষমতা আর সেগুলো প্রাণিতে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রাকৃতিকভাবে অর্জিত বৈশিষ্ট্য এবং সেই সাথে কতিপয় মানুষের বাদুড় খাওয়ার অভ্যাস থাকায় আজ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার পথ সুগম হয়েছে।

লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের ভাইরাস বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্ট্যাথিস জিওটিস বলেন, “নতুন ভাইরাসের সংক্রমণে বাদুড়কে দায়ী করায় মোটেও অবাক লাগেনি। যেসব ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় সেসবের পোষক হিসেবে বাদুড়ই সবচেয়ে উপযুক্ত ও বহুল পরিচিত।” বিজ্ঞানী জিওটিস বলেন, চীনের বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের মধ্যে হর্স সো প্রজাতির বাদুড়ের দ্বারাই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভাইরাসের ছড়ানোর ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে বাদুড়কেই কেন দোষী করা হচ্ছে?

গোটা পৃথিবীতে অন্তত ১ হাজার ৩০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে। কেবল বরফ আচ্ছাদিত এন্টার্টিকা মহাদেশ ছাড়া সব মহাদেশেই বাদুড়ের বিচরণ দেখা গেছে। আর অন্যসব প্রাণির সাথে তুলনা করলে দেখা যায় বাদুড় দীর্ঘায়ু প্রাণী। এই উড়তে জানা স্তন্যপায়ীটি রোগাক্রান্ত না হয়েই একাধিক ভাইরাস বহনে সক্ষম। সচরাচর গুহার ভেতরেই একসঙ্গে লাখখানেক বাদুড় একত্রে বসবাস করতে পারে। বহন করা ভাইরাস তাই অন্যদের মাঝে সঞ্চারণের সহজ পথ তৈরি হয়।

বাদুড়ের দেহ থেকে মানুষ ও স্তন্যপায়ী জীবের শরীরে সংক্রমিত হয় এমন প্রায় ৬০টি জটিল রোগের জীবাণুর খোজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জিওটিস জানান, বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মনে করেন , অত্যাধিক উড়ার ফলে বাদুড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বদলে গেছে । এর কারণ খুজতে গিয়ে তারা বাদুড়ের বেশ কিছু জিনগত পরিবর্তন লক্ষ করেছেন।

উহানের এই ভাইরাস যে বাদুড় থেকেই ছড়িয়েছে তার শক্ত প্রমাণ এখনো পর্যন্ত খোজার চেষ্টায় আছেন বিজ্ঞানীরা। চীনের বিজ্ঞানীরা বাদুড়বাহিত ভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন যাবত। তার মনে করেন ভবিষ্যতে চীনে বাদুড়বাহিত করোনা ভাইরাসগুলো পরবর্তীতে প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে আবির্ভূত হবে।

লন্ডনভিত্তিক পরিবেশ বিষয়ক স্বাস্থ্যখাতের প্রতিষ্ঠান ইকোহেলথ এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ডাঃ পিটার ড্যাজাক বলেন, চীনে বিজ্ঞানীরা সার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ৫০টি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি দেশটির বিভিন্ন বাদুড়ের মধ্যে পেয়েছেন ।

এছাড়া ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় চীনা রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অধ্যাপক গুইঝেন উ বলেছেন প্রাথমিক সকল নমুনায় ভাইরাসটির সাথে বাদুড়ের শরীরে পাওয়া ভাইরাসের মিল খুজে পাওয়া গেছে।

এছারা ২০০৩ সালে চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ইউনান প্রদেশে প্রথম যখন সার্সের প্রাদুর্ভাব চলছিল তখন এই ভাইরাসে আক্রান্তদের পর্যালোচনায় দেখা যায় তারা অধিকাংশই গুহার পার্শ্ববর্তী স্থানে বসবাস করত। পরে বিজ্ঞানীরা গুহায় পরীক্ষা চালিয়ে গুহার বাদুড়ে সার্স করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব খুজে পান।

CNTzxeu.jpg


Photo Credit: Pexels

কিভাবে গাদাগাদা ভাইরাস বহন করে বাদুড় টিকে থাকে তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক বিরাট প্রশ্ন।

২০০৫ সালে আমেরিকার ইউএসজিএস ফোর্ট কলিন্স সায়েন্স সেন্টারের এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা খুজে পেয়েছেন কিছু চমকপ্রদ তথ্য। তাদের সেসব পর্যালোচনা রিপোর্ট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। রিপোর্টে বলা হয় বাদুড় অন্যান্য পাখির তুলনায় বেশিই ওড়ে ফলে এর শরীরে তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বিপাক ক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়। উল্লেখ্য, অন্যান্য পাখির তুলনায় বাদুড় অনেক বেশি ওড়ে বিধায় বাদুড়ের শরীরের তাপমাত্রা প্রায় দ্বিগুণ। আর তাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাক ক্রিয়া বেশ দ্রুত হয়। এ কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বাদুড়ের এই উচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ব্যাপারটি ইঁদুর বা মানুষের মত স্তন্যপায়ীদের না থাকায় অপেক্ষাকৃত দ্রুত সংক্রমণ ঘটে। আর বাদুড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উচ্চ হওয়ার ফলে জীবাণুরা নিজেদের অন্য পোষক দেহের জন্য শক্তিশালী হিসেবে নিজেদের তৈরি করে।

২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ান কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক এন্ড রিসার্চ অর্গানাইজেশন বাদুড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে বিজ্ঞানী মিশেল বেকারের এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছে মানুষের মতো জটিল ও কঠিন রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাদুড়ের না থাকলেও বাদুড়ের শারিরীক প্রতিরোধ ক্ষমতা সবসময় সচল। মানুষের ক্ষেত্রে কেবল ক্ষতিকর অণুজীব প্রবেশ করলেই রোগ জীবাণু প্রতিরোধকারী ইমিউন সিস্টেম সচল হয়।

মানুষের জন্য প্রাণঘাতি ভাইরাসের ক্ষেত্রে বাদুড়কেই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আসামী হিসেবে সাব্যস্ত করছেন বিজ্ঞানীরা। এমতাবস্থায় এই বন্যপ্রাণীর আওতাভুক্ত মানুষ ও সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা আমাদের ভবিষ্যৎ মহামারীর আশঙ্কা থেকে অনেকখানি রেহাই দিবে।
 
Very informative. If you know of the links between viral infection from bats to man through eating habits please share it here.
 
তথ্যবহুল একটি পোস্ট অনেক কিছু জানতে পারলাম
 

Users who are viewing this thread

Back
Top