ভারতীয় চলচ্চিত্রের তিন বড় কেন্দ্র বলিউড, কলিউড ও টালিউড। এখন তিন জায়গাতেই কাজ করছেন বাংলাদেশের তারকারা। তালিকায় আছেন ফেরদৌস আহমেদ, শাকিব খান, জয়া আহসান, মোশাররফ করিম, ইয়াসমিন তারিন জাহান, নুসরাত ফারিয়া, জাহারা মিতু, মেঘলা মুক্তা প্রমুখ। মহামারি শুরুর আগে ভারতের এই তিন অঙ্গনেই ঢাকার তারকাদের কাজ ক্রমেই বাড়ছিল। বেশ কিছু কাজের চুক্তিও হয়ে গিয়েছিল। মহামারির কারণে তাঁদের অনেকেরই কাজ আটকে গেছে। চুক্তি হওয়া নতুন কাজগুলোও শুরু করতে পারছেন না তাঁরা।
জয়া আহসান, ছবি: সংগৃহীত
করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর মাঝে সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছিল। তখন অনেকেরই কাজে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎই দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বহুগুণ বেড়ে যায়। লকডাউন ঘোষণা করে ভারত সরকার। বাতিল হয়ে যায় সব শিডিউল। পশ্চিমবঙ্গে মুক্তির অপেক্ষায় আছে জয়া আহসান অভিনীত অনেকগুলো ছবি।
একাধিক নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আছেন। লকডাউনের কারণে সেগুলোর শুটিং হচ্ছে না। কবে শুরু হবে, তা–ও অনিশ্চিত। তবে শুটিং–পূর্ববর্তী কাজগুলো এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। জয়া বলেন, ‘আপাতত চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রিপ্রোডাকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটা অনেকটা দালানের ভিতের মতো। চিত্রনাট্য পড়া, ভিডিও কলে মিটিং করতে হচ্ছে।’
অভিনেত্রী তারিন জাহান, ছবি:সংগৃহীত
আরেক শিল্পী নুসরাত ফারিয়া কাজ করছিলেন রাজা চন্দ পরিচালিত ভয় ছবিতে। আর সাত দিন কাজ করলেই শেষ হয়ে যেত শুটিং। বিরসা দাশগুপ্তের বিবাহ অভিযান টু ছবির কাজ শুরু করার কথা ছিল। কয়েকবার শিডিউল দিয়েও করোনার কারণে শুটিং করতে পারেননি। নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘জুনের প্রথম সপ্তাহে শিডিউল করা ছিল। কিন্তু ভারতে করোনার অবস্থা খারাপ হওয়ায় আবারও শিডিউল বাতিল হয়েছে। এ পরিস্থিতি না হলে এত দিনে আরও অনেকগুলো কাজে যুক্ত হতে পারতাম। জানি না আর কত দিন এ পরিস্থিতি থাকবে। কবে কাজ শুরু করতে পারব।’
নুসরাত ফারিয়া
গত বছরের মার্চে ব্রাত্য বসুর ডিকশনারির শুটিং চলাকালে পরিচালকের নতুন আরেকটি ছবিতে মোশাররফ করিম কাজ করবেন, এমনটাই ঠিক হয়েছিল।
মোশাররফ করিম, সংগৃহীত
মোশাররফ বলেন, ‘হুগলির গ্যাংস্টার হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে ছবির গল্প। ডিকশনারি ছবিটি করার পরপরই নতুন ছবিটি শুরুর করার কথা ছিল। কিন্তু মহামারির কারণে সেটি আর এগোয়নি। করোনা পরিস্থিতি ভালো না হলে অগ্রগতির কথা বলা যাচ্ছে না।’
তেলেগু ছবি সাকালাকালা ভাল্লাবুড়ুতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের মেঘলা মুক্তা। গত বছরের শেষে ইয়েরা চেরা নামে দ্বিতীয় ছবির শুটিং শুরু করেন। তার আগেই নতুন আরেকটি ছবির প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ইয়েরা চেরার কাজ শেষ করে গত বছরের মার্চের প্রথম দিকে ১৫ দিনের জন্য দেশে আসেন। আর ফেরা হয়নি। তৃতীয় তামিল ছবির কাজেও আর যোগ দেওয়া হয়নি।
মেঘলা মুক্তা, ইনস্টাগ্রাম
মুক্তা বলেন, ‘খুব অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ১৫ দিনের জন্য দেশে এসেছিলাম, দেড় বছর গড়িয়ে গেল। অথচ করোনার আগে সাউথ ইন্ডিয়ায় ভালোভাবে কাজ করছিলাম।’ চলতি মাসে ভারতে যাওয়ার কথা আছে। নির্ভর করছে ভারতের করোনা পরিস্থিতির ওপর।
জাহারা মিতু, ছবি : সংগৃহীত
গত বছরের মার্চের প্রথম দিকে কলকাতায় শুরু হয় দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার ছবি কমান্ডো। টানা শুটিং করে এপ্রিলেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। হঠাৎই করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কাজ শেষ না করেই গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে ফেরেন ছবির নায়িকা জাহারা মিতু। মাঝে ভিসা জটিলতা ও করোনার কারণে আর কলকাতায় ফিরতে পারেননি। ২৫ জুন ছবিটির শুটিংয়ের নতুন শিডিউল নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু ভারতে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে নতুন শিডিউলে কাজ অনেকটাই অনিশ্চিত। এ ছাড়া মডেল তানজিয়া জামান মিথিলারও বলিউডে কাজের কথা জানা গিয়েছিল। করোনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।