What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অসুস্থ, অক্ষম ও মুসাফিরের রোজার বিধান (1 Viewer)

3lbRyOC.jpg


বিভিন্ন কারণে মানুষ এমন অসুস্থ হতে পারে, যাতে তার পক্ষে রোজা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার কেউ সফরে বা ভ্রমণরত থাকতে পারে। কেউ আছে যে রোজা পালনে সক্ষমই নয়। এসব ব্যক্তির জন্য ইসলামি শরিয়তে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। মাজুর বা অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সিয়াম বা রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিন (রমজান মাস মাত্র)। তবে তোমাদের যারা পীড়িত থাকবে বা ভ্রমণে থাকবে, তারা অন্য সময়ে এর সমপরিমাণ সংখ্যায় পূর্ণ করবে। আর যাদের রোজা পালনের সক্ষমতা নেই, তারা এর পরিবর্তে ফিদিয়া দেবে (প্রতি রোজার জন্য) একজন মিসকিনকে (এক দিনের নিজের) খাবার দেবে। তবে যে ব্যক্তি অধিক দান করবে, তবে তা তার জন্য অতি উত্তম। আর যদি তোমরা পুনরায় রোজা পালন করো, তবে তা তোমাদের জন্য অধিক উত্তম।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৪)।

যদি কোনো ব্যক্তি সফরে বা ভ্রমণে থাকা অবস্থায়ও রোজা পালন করে, তবে সেটা উত্তম। তবে বেশি কষ্ট হলে বা ইচ্ছা করলে তিনি রোজা ছাড়তে পারবেন; এই রোজা পরে সুবিধামতো নিকটতম সময়ে কাজা আদায় করে নিতে হবে। প্রিয় রাসুল (সা.) কোনো এক রমজানে রোজা অবস্থায় মক্কা শরিফের পথে যাত্রা করলেন। কাদিদ নামক স্থানে পৌঁছার পর তিনি রোজা ছেড়ে দিলে লোকেরা সবাই রোজা ছেড়ে দিলেন। (বুখারি, হাদিস: ১৮২০)।

ফিদিয়া হলো রোজা পালনে অক্ষম ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে যে দান করেন তা। ফিদিয়া শব্দের অর্থ বিনিময়, মূল্য, পণ বা মুক্তিপণ; বিকল্প বা স্থলাভিষিক্ত; সম্মানজনক প্রতিদান ইত্যাদি। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমান বার্ধক্যের কারণে বা অসুস্থতা অথবা অন্য যেকোনো কারণে রোজা পালনে অক্ষম বা অসমর্থ হলে এবং আবার সুস্থ হয়ে বা সক্ষমতা ফিরে পেয়ে রোজার কাজা আদায় করার মতো সম্ভাবনা বিদ্যমান না থাকলে, তার প্রতিটি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ ফিদিয়া প্রদান করবেন। ফিদিয়া প্রদানে অসামর্থ্য ব্যক্তির জন্য তা জরুরি নয়। ফিদিয়া প্রদান করার পর (এবং যিনি রোজা রাখায় অক্ষম ও ফিদিয়া প্রদানেও অসমর্থ ছিলেন) যদি পরবর্তী রমজানের পূর্বে ওই ব্যক্তি রোজা পালনে সক্ষমতা লাভ করেন, তবে ওই রোজাগুলো কাজা আদায় করতে হবে। যদি সক্ষমতার দিনগুলো রমজান মাস অপেক্ষা কমও হয়, তবে শুধু সেই দিনগুলো রোজা আদায় করবেন। ফিদিয়া দেওয়া রোজার কাজা কোনোভাবেই পরের রমজান বা তার পরবর্তী সময়ের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

জাকাত ও সদকার হকদারদের ফিদিয়া প্রদান করা যায়। এক দিনের ফিদিয়া একাধিক ব্যক্তির মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া যাবে, আবার একাধিক দিনের ফিদিয়া এক ব্যক্তিকে দেওয়া যাবে। একাধিক দিনের রোজার ফিদিয়া একত্রেও আদায় করা যায় এবং অগ্রিমও প্রদান করা যায়। এক ব্যক্তির ফিদিয়া একাধিক ব্যক্তিকে এবং একাধিক ব্যক্তির ফিদিয়া এক ব্যক্তিকে প্রদান করা যাবে।

একজনের রোজা আরেকজন রাখতে পারে না, তাই ফিদিয়া রোজার পরিবর্তে রোজা নয়; ফিদিয়া হলো রোজার পরিবর্তে খাদ্য বা উহার মূল্য প্রদান করা। ফিদিয়া হলো রোজার অক্ষমতায় তার পরিবর্তে আর্থিক দান বা সদকা। তাই যাকে ফিদিয়া দেওয়া হলো তার রোজাদার হওয়া জরুরি নয়, যেমন: নাবালেগ মিসকিন শিশু বা অতি বৃদ্ধ দুর্বল অক্ষম অসুস্থ অসহায় গরিব ব্যক্তি, যিনি নিজেও রোজা পালনে অক্ষম।

ফিদিয়ার পরিমাণ হলো একেকটি রোজার জন্য এক ফিতরা পরিমাণ। ফিতরার পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘সদকাতুল ফিতর হলো এক “সা” (তিন কেজি তিন শ গ্রাম) খাদ্য বা খাবার।’ হজরত আবুসায়িদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমাদের খাদ্য-খাবার ছিল খেজুর, কিশমিশ, পনির, যব।’ (বুখারি, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২০৪-২০৫)।

সদকা, ফিতরা ও ফিদিয়া পণ্যদ্রব্য দিয়েও আদায় করা যায় এবং মূল্য দ্বারাও আদায় করা যায়। তবে গ্রহীতার জন্য যেটা বেশি উপকারী, তা দিয়ে আদায় করা শ্রেয়। রোজা পালনে সক্ষম ব্যক্তি ফিদিয়া দিয়ে রোজার দায়মুক্ত হতে পারবেন না। ফিদিয়া শুধু যথাযথ ওজরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, স্বাভাবিক অবস্থায় নয়।

● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
 

Users who are viewing this thread

Back
Top