What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অস্ত্র হিসেবে বিলাই–চিমটিও ব্যবহার করেছিল ব্রিটিশরা (1 Viewer)

AAckOg1.jpg


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কে কাকে কীভাবে পরাস্ত করবে, এ চিন্তায় নীতিনির্ধারকদের চোখে ঘুম ছিল না। প্রতিনিয়ত চলছিল পরীক্ষা–নিরীক্ষা। নানা অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল। সরাসরি গুলি ও বোমা হামলা চালানো ছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে আজব আজব সব অস্ত্র। তখনকার কিছু অস্ত্রের কথা অনেকের কাছে আজগুবিও মনে হতে পারে। বিড়ালবোমা, ইঁদুরবোমা ও বাদুড়বোমার কথা অনেকেই জানি। বোমা হিসেবে আরও ব্যবহৃত হয়েছে সাবান, জুতা, বোতল, সাইকেল পাম্প, স্যুটকেস ইত্যাদি। আর এগুলোর বেশির ভাগ তৈরি করেছে চার্চিল প্রশাসন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে, আর ১৯৪২ সালের মধ্যে ব্রিটেন এমন ১৫০টি ‘আজব’ অস্ত্র তৈরি করে ফেলে।

Fj9W7Q6.jpg


‘মিউকুনা প্রুরিয়েন্স’ বা বিলাই–চিমটি ফলের লোমগুলোই ভয়ংকর

এগুলো সবই মারণাস্ত্র। কিন্তু এমন অস্ত্রও ছিল, যা শত্রুদের মরণযন্ত্রণা দেবে, কিন্তু মারবে না। তেমনি একটি অস্ত্র চুলকানি পাউডার। বরাবরের মতো এ অভূতপূর্ব অস্ত্রের উদ্ভাবক ছিল ব্রিটেনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধবিষয়ক গোপন সংস্থা সিক্রেট অপারেশনস এক্সিকিউটিভ (এসওই)।

নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ব্রিটেনের পাবলিক রেকর্ডস অফিস প্রকাশিত নথি থেকে জানা যায়, এসওই একটি বিশেষ উদ্ভিদের ফলের লোম থেকে চুলকানি পাউডার তৈরি করেছিল। এ পাউডার শরীরে ভীষণ রকমের চুলকানির উদ্রেক করে। নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চরম প্রভাবশালী জিনিস তৈরি করা হয়েছে, যা শত্রুর কাপড়ের নিচে যেতে পারলেই হলো। তবে পাউডারের বিরূপ প্রভাব বিষয়ে কোনো প্রমাণ সরকারি নথিতে তুলে ধরা হয়নি।

‘মিউকুনা প্রুরিয়েন্স’ নামের ঔষধি উদ্ভিদ থেকে এ পাউডার তৈরি করা হতো। ইংরেজিতে এ গাছের অন্য নাম ‘মাংকি ট্যামারিন্ড’, ‘ভেলভেট বিন’, ‘বেঙ্গল ভেলভেট বিন’, ‘ফ্লোরিডা ভেলভেট বিন’, ‘মরিশাস ভেলভেট বিন’, ‘ইয়োকোহামা ভেলভেট বিন’ ইত্যাদি। গাছটির আদি নিবাস আফ্রিকা হলেও এশিয়ায়ও প্রচুর মেলে। তবে এর বাংলা নাম জানলে বিস্তারিত আর কিছু না বললেও হবে আশা করি। কী সেই নাম? আলকুশি। তবে এটি ‘ভদ্র নাম’! এর ডাকনামটাই সবার পরিচিত—বিলাই–চিমটি। বুঝতেই পারছেন কী ভয়ানক অস্ত্র এ ঔষধি উদ্ভিদের ফলগুলো!

JdUoPsM.jpg


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনাদের পোশাক, উইকিপিডিয়া

ভয়ানক এ চুলকানির পাউডার পাচার করা হতো সাধারণ পাউডারের কৌটায় ভরে। জার্মানিতে যাওয়ার আগে পাউডার যেত সুইজারল্যান্ডে। সেখানে জার্মান সৈনিকদের উর্দিতে পাউডার ছড়িয়ে দেওয়া হতো ধোলাই ও ইস্তিরি করার সময়। সুইজারল্যান্ড থেকে আবার পাউডারমাখা উর্দি যেত জার্মানিতে।

বিলাই–চিমটির পাউডার দিয়ে সবচেয়ে বড় আক্রমণটা করা হয় ১৯৪৩ সালের অক্টোবরে। সে সময়ের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, জার্মান নৌবাহিনীর প্রায় ২৫ হাজার নাবিকের উর্দিতে এ পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নাৎসি শিবিরে মহামারির মতো অবস্থা দেখা দেয়। চুলকাতে চুলকাতে সেনাদের পাগল হওয়ার দশা! যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে হাসপাতালে পড়ে থাকতে হয় অসংখ্য সেনাকে। ভুক্তভোগীকে অন্ধ করে দেওয়ার মতো ক্ষমতাও ছিল এ পাউডারের, যা পরবর্তী সময়ে জার্মানদের বিছানা, অন্তর্বাস ও টয়লেট পেপারেও ব্যবহার করা হয়েছিল।

১৯৪৪ সালের একটি নথি থেকে জানা যায়, জন্মনিয়ন্ত্রণকারী উপাদানেও যন্ত্রণাদায়ক বিলাই–চিমটির পাউডার ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ, এর ফলে জার্মান সেনারা যেন মনে করে যত্রতত্র যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কারণেই চুলকানির রোগ হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণকারী উপাদানের মাধ্যমে চুলকানি হওয়ায় অনেকে এ বিষয়ে মুখও খুলত না।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও দ্য বেস্ট হিস্ট্রি এনসাইক্লোপিডিয়া
 
অদ্ভুত অস্ত্র যুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে
 

Users who are viewing this thread

Back
Top