হঠাৎ করেই আবার কথা হচ্ছে সাবিলা নূরকে নিয়ে। দীর্ঘ সাত বছরের অভিনয়জীবনে সাবিলাকে নতুন করে সামনে এনেছেন দর্শকেরাই। ঈদুল ফিতরে সাবিলা অভিনীত সাতটি নাটক ও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রচারিত হয়েছে। তারপর তাঁকে ঘিরে চলছে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। টেলিভিশনে প্রচারের পর নাটকগুলো বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। স্বল্প সময়েই সেসব নাটক দেখে ফেলেছেন বহু দর্শক।
আনন্দিত সাবিলা জানান, এবারের ঈদের নাটকগুলো ও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রচারিত হওয়ার পর এত এত প্রশংসা পাচ্ছেন, এমনটি তিনি আশা করেননি। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘পরিচালক, সহশিল্পী থেকে শুরু করে ভক্তরা যেভাবে আমার কাজের প্রশংসা করছেন, সত্যিই আপ্লুত আমি। এই ঈদে আমার কাজ কম, তারপরও এত সাড়া পাব, আগে ভাবিনি। এসব নাটকে ভিন্ন ভিন্ন গল্প, ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র এগিয়ে দিয়েছে আমাকে।’
২০১৪ সালে অভিনয়ে অভিষেক হয় সাবিলার। অভিনয় করে গেলেও এই দীর্ঘ সময়ে অভিনয়ে আলোচনার শীর্ষ উঠতে পারেননি তিনি। স্বীকার করে সাবিলা জানালেন, ‘একই রকমের কাজ হাতে বেশি এসেছিল। “করা”র জন্যই কাজগুলো করেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে করার মতো চরিত্রে সুযোগ আসেনি আগে। এবার সেই সুযোগ হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘এবার নির্মাতারা আমাকে ভিন্ন ভিন্ন গল্পে, ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে কাজের সুযোগ দিয়েছেন। শতভাগ চেষ্টা দিয়ে সেসব করে গেছি। আমার চেষ্টার মূল্য দিয়েছেন দর্শকেরা।’
দুই–এক বছর আগেও সাবিলার কোনো কোনো সহকর্মী যখন অভিনয়ের কারণে আলোচিত, তখন নিজের অভিনয় নিয়ে সাবিলার মুখেই হতাশার কথা শোনা গিয়েছিল। এ ব্যাপারে সাবিলা বলেন, ‘বিষয়টি এমন না। আমি ভালো কাজ করতে পারিনি বলেই আমাকে নিয়ে সেভাবে দর্শকেরা আলোচনা করেননি। এটি হয়তো আমারই দোষ। তবে এটাও ঠিক, ভালো গল্প ও ভালো চরিত্রের চিত্রনাট্যও পাইনি তখন। যেটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ছিল। আর সহকর্মীরা ভালো কাজ করেছেন বলেই আলোচিত হয়েছেন।’
ঈদুল ফিতরে প্রচারিত ‘এমন যদি হতো’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও ‘রক্ত’, ‘পাশের বাড়ির ছেলেটা’, ‘ফিজিক্স কেমিস্ট্রি ম্যাথ’, ‘ব্রেকিং নিউজ’, ‘তেজপাতা’, ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’, মোবাইল সোয়াপ’ নামে সাতটি নাটকে অভিনয় করেছেন সাবিলা। তিনি জানালেন, প্রতিটি কাজ থেকেই সাড়া পেয়েছেন। তবে ‘পাশের বাড়ির ছেলেটা’, ‘এমন যদি হতো’, ‘ব্রেকিং নিউজ’, ‘রক্ত’—এ কাজগুলো দর্শক বেশি এগিয়ে দিয়েছেন। সাবিলা বলেন, ‘কাজগুলোর একটা আলাদা ব্যাপার ছিল। প্রতিটির গল্প দুর্দান্ত। চরিত্রগুলোও আমার জন্য নতুন ছিল। যেমন “রক্ত” ও “ব্রেকিং নিউজ” নাটক দুটির কথা যদি বলি, এখানে গ্রামীণ পটভূমিতে আমার চরিত্র। চরিত্র দুটির জন্য আমাকে ভাষার অনুশীলন করতে হয়েছে। চেষ্টা ছিল চরিত্রের সঙ্গে শতভাগ মিশে যেতে। প্রচারের পর দর্শকের কাছ থেকে সেই রকম ফিডব্যাক পেয়েছি আমি। আবার “এমন যদি হতো” চলচ্চিত্রটিতে পুরো গল্পে মেয়েটিকে দেখা যাবে। দর্শককে বসিয়ে রাখার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কাজটিতে। আমার চেষ্টার মূল্য দিয়েছেন দর্শক।’
ঈদের সাতটি নাটকের মধ্যে ছয়টিতেই আপনার বিপরীতে অপূর্বকে দেখা গেছে। আলোচনায় আসার অন্যতম কারণ কী সেটা হতে পারে? এ প্রশ্নে সাবিলা বলেন, ‘তা তো অবশ্যই। অপূর্ব দীর্ঘদিনের অভিনেতা। অভিনয়ে প্রচুর অভিজ্ঞতা তাঁর। জনপ্রিয়ও তিন। তাঁর একটি বিরাট ভক্তবাহিনী আছে। আমি যে আলোচনায়, এতে তাঁরও অবদান আছে।’
শোনা যাচ্ছে, আগামী দিনেও অনেক নাটকে অপূর্ব ও সাবিলা জুটি বাঁধতে যাচ্ছেন। ঈদের নাটক আলোচিত হওয়ার পর নাটকে নতুন জুটি হিসেবে সম্ভাবনা দেখছেন পরিচালকেরা। জুটির বিষয়ে সাবিলা বলেন, ‘জুটি হিসেবে কাজ হলে তো খুবই ভালো। তবে দর্শকেরও পছন্দের ব্যাপার আছে। গত বছরের শেষের দিকে “এক্সচেঞ্জ” নামে একটি নাটকে আমরা দুজন কাজ করেছিলাম। দর্শক দারুণ পছন্দ করেছিলেন। এরপরই গত ঈদে একসঙ্গে এতগুলো কাজ হলো। অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে কাজ হলে অনেক কিছু শিখতে পারি।’
২৮ মে থেকে এই জুটির নতুন নাটকের কাজ শুরু হবে। সাবিলা বলেন, ‘অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে কাজের জন্য অনেকগুলো চিত্রনাট্য হাতে এসেছে। আমরা বাছাই করছি। গেল ঈদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। ২৮ মে দুজনের একটি কাজ করার ব্যাপারে চূড়ান্ত।’