আপনি কিছু করেন, নাকি শুধুই গৃহিনী!
লেখকের নাম অজানা
এক ভদ্রলোক মানুষিক ডাক্তারের কাছে গেলেন তার কিছু সমস্যার জন্য। ডাক্তারকে তার সমস্যার কথা জানাতেই ডাক্তার তার কাছে প্রশ্ন করা শুরু করলেন-
ডাক্তার : পেশা কী আপনার?
ভদ্রলোক: আমি একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
ডাক্তার : আপনার স্ত্রী কী করেন?
ভদ্রলোক: সে কিছু করে না, গৃহিণী।
ডাক্তার : সকালের নাশতা কে বানায়?
ভদ্রলোক: আমার স্ত্রী, কারণ সে কিছু করে না।
ডাক্তার : সকাল কয়টায় ওঠেন আপনার স্ত্রী?
ভদ্রলোক: ভোর পাঁচটার দিকেই উঠে যায় সে, ঘরদোর ঝাড়ু দিয়ে তারপর নাশতা বানাতে হয়। এ কিছু না, কারণ সে কোনো কাজ করে না।
ডাক্তার : বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আসতে হয় না?
ভদ্রলোক: হয়। আমার স্ত্রী নিয়ে যায়, নিয়ে আসেও সে-ই। কারণ, সে কিছু করে না।
ডাক্তার : বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আপনার স্ত্রী ওখানেই বসে থাকেন?
ভদ্রলোক: না না। ওখানে বসে থাকলে বাজার করবে কে? বাজার শেষ করে বাড়ি যায় সে, ওগুলো রাঁধে, জামাকাপড় ধোয়। আপনাকে তো বললামই, সে কিছু করে না।
ডাক্তার : সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরে, কী করেন আপনি?
ভদ্রলোক: বিশ্রাম নিই। কারণ, সারাদিনের কাজের ধকলে শরীর আর কুলিয়ে ওঠে না।
ডাক্তার : আপনার স্ত্রী কী করেন তখন?
ভদ্রলোক: নাশতা তৈরি করে, বাচ্চাদের খাওয়ায়, আমাকে খাওয়ায়, বাচ্চাদের পড়তে বসায়, তারপর রাতের খাবার রাঁধে। রাতের খাওয়া শেষে থালাবাটি ধুয়ে, তারপর বাচ্চাদের ঘুম পাড়াতে নিয়ে যায়। এসব করতে তার সমস্যা হয় না, কারণ সে কোনো কাজ করে না।
ডাক্তার : এবার আপনার সমস্যাটি আবার বলুন আমাকে। আমি কী করতে পারি দেখি।
ভদ্রলোক: কাজ শেষে ঘরে ফিরে স্ত্রীর বেকার জীবনের সুখ দেখে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি জনাব। এ কি স্বাভাবিক ঈর্ষাকাতরতা? নাকি কোনো রোগ?
ডাক্তার : এ অসুস্থতা। এর নিরাময় খুবই সহজ, যদি আমার প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করেন। আগামী দু'সপ্তাহ্ আপনি কাজ থেকে একটু আগে বেরুবেন, তারপর আমার দেওয়া এই তালিকার মানুষগুলোর সবাইকে, দৈনিক একজন করে খুঁজে বের করে, তাঁদের কাজ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করবেন। সবার কাজ দেখা শেষ হলে, আমার কাছে আসবেন আপনি আবার, যদি আসার প্রয়োজন আছে মনে করেন, তো। এই নিন তালিকাটি:
১ম দিন- ক্লিনিকের নার্স
২য় দিন- রেস্তোরাঁর রাঁধুনি
৩য় দিন- কাজের আয়া
৪র্থ দিন- অফিসের পিয়ন
৫ম দিন- স্কুলের শিক্ষক
৬ষ্ঠ দিন- হোটেলের ওয়েটার
৭ম দিন- পাড়ার ধোপা
৮ম দিন- শিশুদের ন্যানি
৯ম দিন- স্কুলবাসের ড্রাইভার
১০ম দিন- বাড়ির দারোয়ান
১১ম দিন- ওল্ডহোমের কাউন্সেলর
১২ম দিন- হাসপাতালের চিকিৎসক
১৩ম দিন- বাজার করা
কাজের লোক
১৪ম দিন- আশ্রয়দাত্রী মা
দু'সপ্তাহ্ পরে ভদ্রলোক আর আসেননি ডাক্তারের চেম্বারে, কারণ তিনি আর আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।
যে-কাজে অসুস্থতার ছুটি নেই, যে-কাজে সাপ্তাহিক বন্ধ নেই, যে-কাজে দৈনিক ৮ ঘণ্টার নিয়ম নেই, যে-কাজে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা অন-কল হাজিরা দিতেই হয়, সেই সনদ-বিহীন কাজটির সাহায্য পেয়েই আমরা প্রত্যেকটি মানুষ আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি জীবনে।
"আপনি কোনো কাজ করেন, নাকি স্রেফ হাউজওয়াইফ?"- ন্যূনতম শিক্ষা থাকলে, এই প্রশ্নটি করবেন না আজকের পর থেকে।
লেখকের নাম অজানা
এক ভদ্রলোক মানুষিক ডাক্তারের কাছে গেলেন তার কিছু সমস্যার জন্য। ডাক্তারকে তার সমস্যার কথা জানাতেই ডাক্তার তার কাছে প্রশ্ন করা শুরু করলেন-
ডাক্তার : পেশা কী আপনার?
ভদ্রলোক: আমি একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
ডাক্তার : আপনার স্ত্রী কী করেন?
ভদ্রলোক: সে কিছু করে না, গৃহিণী।
ডাক্তার : সকালের নাশতা কে বানায়?
ভদ্রলোক: আমার স্ত্রী, কারণ সে কিছু করে না।
ডাক্তার : সকাল কয়টায় ওঠেন আপনার স্ত্রী?
ভদ্রলোক: ভোর পাঁচটার দিকেই উঠে যায় সে, ঘরদোর ঝাড়ু দিয়ে তারপর নাশতা বানাতে হয়। এ কিছু না, কারণ সে কোনো কাজ করে না।
ডাক্তার : বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আসতে হয় না?
ভদ্রলোক: হয়। আমার স্ত্রী নিয়ে যায়, নিয়ে আসেও সে-ই। কারণ, সে কিছু করে না।
ডাক্তার : বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আপনার স্ত্রী ওখানেই বসে থাকেন?
ভদ্রলোক: না না। ওখানে বসে থাকলে বাজার করবে কে? বাজার শেষ করে বাড়ি যায় সে, ওগুলো রাঁধে, জামাকাপড় ধোয়। আপনাকে তো বললামই, সে কিছু করে না।
ডাক্তার : সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরে, কী করেন আপনি?
ভদ্রলোক: বিশ্রাম নিই। কারণ, সারাদিনের কাজের ধকলে শরীর আর কুলিয়ে ওঠে না।
ডাক্তার : আপনার স্ত্রী কী করেন তখন?
ভদ্রলোক: নাশতা তৈরি করে, বাচ্চাদের খাওয়ায়, আমাকে খাওয়ায়, বাচ্চাদের পড়তে বসায়, তারপর রাতের খাবার রাঁধে। রাতের খাওয়া শেষে থালাবাটি ধুয়ে, তারপর বাচ্চাদের ঘুম পাড়াতে নিয়ে যায়। এসব করতে তার সমস্যা হয় না, কারণ সে কোনো কাজ করে না।
ডাক্তার : এবার আপনার সমস্যাটি আবার বলুন আমাকে। আমি কী করতে পারি দেখি।
ভদ্রলোক: কাজ শেষে ঘরে ফিরে স্ত্রীর বেকার জীবনের সুখ দেখে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি জনাব। এ কি স্বাভাবিক ঈর্ষাকাতরতা? নাকি কোনো রোগ?
ডাক্তার : এ অসুস্থতা। এর নিরাময় খুবই সহজ, যদি আমার প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করেন। আগামী দু'সপ্তাহ্ আপনি কাজ থেকে একটু আগে বেরুবেন, তারপর আমার দেওয়া এই তালিকার মানুষগুলোর সবাইকে, দৈনিক একজন করে খুঁজে বের করে, তাঁদের কাজ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করবেন। সবার কাজ দেখা শেষ হলে, আমার কাছে আসবেন আপনি আবার, যদি আসার প্রয়োজন আছে মনে করেন, তো। এই নিন তালিকাটি:
১ম দিন- ক্লিনিকের নার্স
২য় দিন- রেস্তোরাঁর রাঁধুনি
৩য় দিন- কাজের আয়া
৪র্থ দিন- অফিসের পিয়ন
৫ম দিন- স্কুলের শিক্ষক
৬ষ্ঠ দিন- হোটেলের ওয়েটার
৭ম দিন- পাড়ার ধোপা
৮ম দিন- শিশুদের ন্যানি
৯ম দিন- স্কুলবাসের ড্রাইভার
১০ম দিন- বাড়ির দারোয়ান
১১ম দিন- ওল্ডহোমের কাউন্সেলর
১২ম দিন- হাসপাতালের চিকিৎসক
১৩ম দিন- বাজার করা
কাজের লোক
১৪ম দিন- আশ্রয়দাত্রী মা
দু'সপ্তাহ্ পরে ভদ্রলোক আর আসেননি ডাক্তারের চেম্বারে, কারণ তিনি আর আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।
যে-কাজে অসুস্থতার ছুটি নেই, যে-কাজে সাপ্তাহিক বন্ধ নেই, যে-কাজে দৈনিক ৮ ঘণ্টার নিয়ম নেই, যে-কাজে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা অন-কল হাজিরা দিতেই হয়, সেই সনদ-বিহীন কাজটির সাহায্য পেয়েই আমরা প্রত্যেকটি মানুষ আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি জীবনে।
"আপনি কোনো কাজ করেন, নাকি স্রেফ হাউজওয়াইফ?"- ন্যূনতম শিক্ষা থাকলে, এই প্রশ্নটি করবেন না আজকের পর থেকে।