ধরুন আপনি রান্না ঘরে কাজ করছেন। হঠাৎ পানির তৃষ্ণা পাওয়ায় রান্না ফেলে ফ্রিজের দিকে এগোনো শুরু করলেন। কিন্তু এমন সময় শুনতে পেলেন আপনার বাচ্চার গগনবিদারী আর্তনাদ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলেন এক জাদুকরী ডাইনি আপনার বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে একটি গোলক সদৃশ খাঁচার দিকে। এক মুহুর্ত কাল বিলম্ব না করে আপনিও ছোটা শুরু করলেন সেই খাঁচার দিকে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবিষ্কার করলেন আপনি আটকা পরে গেছেন অপরিচিত এক ভৌতিক বাড়ির মাঝে। এখন কি হবে আপনার প্রাণের চেয়ে প্রিয় সন্তানের? তাকে খুঁজে বের করে উদ্ধারই বা করবেন কীভাবে?
আন্তর্জাতিক গেমিং বাজারে নিজেদের শক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা শুরু করছে GAMES4LIFE
বাস্তবে এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে না হলেও আন্তর্জাতিক গেমিং কোম্পানি GAMES4LIFE আপনাকে নিয়ে যাবে এমনই এক পরাবাস্তব জগতে। যেখানে আপনাকে নানা বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে মগজ খাটিয়ে উদ্ধার করতে হবে আপনার সন্তানকে।
এক ঝাঁক মেধাবী তরুণদের নিয়ে গড়া GAMES4LIFE যেন “গ্লোবাল ভিলেজ” থিওরির এক জ্বলন্ত উদাহরণ। পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক এই গেমিং কোম্পানিতে বাংলাদেশ, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মিশর, ভারত, ইতালি, কোস্টা রিকা সহ কমপক্ষে ৭টি দেশের তরুণেরা নতুন কিছু করার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। উল্লেখ করার মতো বিষয় হল, সম্ভাবনাময় এই দলের নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোগতা রেদোয়ান আহমেদ।
এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় সিংহুয়া থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে সিনিয়র বিজনেস ডেভেলপার হিসেবে প্রায় দুই বছর রেদোয়ান কাজ করেছেন বেইজিং ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানের গেমিং কোম্পানি YODO1-এ। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করা এই তরুণের স্বপ্ন এখন বাংলাদেশের মাটিতে একটি আন্তর্জাতিক মানের গেমিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা।
রেদোয়ান আহমেদ
প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে গত দুই দশকে পুরো পৃথিবী ব্যাপী গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন এসেছে খুবই দ্রুততার সাথে। ডেস্কটপের পাশাপাশি স্মার্ট ফোনে গেম খেলার সুযোগ তৈরি হওয়ায় বর্তমানে এই ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য প্রায় ১৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এক ২০১৮ সালেই গেমিং ইন্ডাস্ট্রি প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবসা করেছে। এর সাথে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন ২০২১ সালে ব্যবসার পরিধি ১৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এই যখন পরিস্থিতি তখন বাংলাদেশ কোন অবস্থানে দাঁড়িয়ে?
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন এই দুইয়ের ব্যবহারই বেড়েছে ব্যাপক হারে। সেই সাথে বেড়েছে গেমারদের সংখ্যাও। এমনকি বেশ ঘটা করেই বাংলাদেশে এখন নিয়মিত বিভিন্ন গেমিং ফেস্ট আয়োজন করা হয়ে থাকে। এআইইউবি (AIUB) সাইবার গেমিং ফেস্ট, এএমডি (AMD) গেমারস ফেস্ট ঢাকা, এক্সিয়াটা গেম হিরো প্রভৃতি ফেস্টে বিপুল সংখ্যক গেমারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, এই বিশাল গেমের বাজার ধরার মতো যোগ্য ও নিবেদিত গেমিং কোম্পানি বাংলাদেশে তেমন নেই।
পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের ভিডিও গেম মার্কেটের আকার কেবল মাত্র ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা কিনা গ্লোবাল মার্কেটের ০.০৫ ভাগেরও কম। আমাদের পাশের দেশ ভারতের উদ্যোগতারা মার্কেটের অবস্থা বুঝতে পেরে নেমে পরেছে সম্মুখ যুদ্ধে। ভারতের ভিডিও গেমিং মার্কেটের আকার এখন প্রায় ৮৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার শতকরা ৭১ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে মোবাইল গেমিং।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও গেমিং জগতে এগিয়ে যাবে, হাজার হাজার মেধাবী তরুণ যুক্ত হবে এই শিল্পের সাথে এটিই এখন সময়ের দাবি।