What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected অন্তরালে (2 Viewers)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
"মোনা বললাম তো আমি এসব কাজ আর করব না।" এ কথা বলে অসহায় এর মতো করে মোনার দিকে তাকালাম। মোনা আমার কথার কোনো পাত্তা না দিয়ে চলে যেতে লাগলো। আমি মোনার পিছন পিছন গেলাম। মোনা বিরক্তিভাব নিয়ে আমার দিকে তাকাল। আমি মাথা নিচু করে ফেললাম। ৫ সেকেন্ড এর মতো মাথা নিচু রাখলাম। আমি মাথা তুলে দেখি মোনা হাঁটতে শুরু করেছে। আমি মোনা কে দেখতে লাগলাম। মোনা আর আগের মতো নেই। মোনা আমাকে আগের মতো করে আর সময় দেয় না। আমাকে এড়িয়ে চলে। এসব ভাবতে ভাবতে চোখের কোণে পানি এসে জমা হলো। আমি ক্রিকেট ব্যাট টা হাতে নিয়ে মাঠে চলে যেতে লাগলাম।
.
আপনারা ভাবছেন মোনা কে?
তাইতো। আসলে মোনা হলো আমার ভালবাসা। আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা। আমার পথ চলার সাথী। এক ছাদে বসে চাঁদ দেখার অনুপ্রেরণা। মোনা লেখাপড়ার পাশাপাশি একটা স্কুলে শিক্ষাদান করে। মোনা আমাদের বাসার পিছনের বাসা তে থাকে। খুব ভালো একটা মেয়ে। সব সময় নিরব থাকে। কাউকে এতো সহজে আপন করে নেয় না। আমি প্রতিদিন মোনা কে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম। মোনা একদিন আমাকে দেখে ফেলে। আমি ভয় পেয়ে সব কিছু বলে দেই। মোনা দুই দিন পর আমার কথা মতো রাজি হয়ে যায়। এর পর থেকে আমাদের ভালবাসা শুরু হয়। আজ তার ৪ বছর পূর্ণ হলো।
মোনা আমার উপর অনেক অভিমান করেছে। সব দোষ আমার। আমি সারাদিন মাঠে পড়ে থাকি ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে। কি করব বলেন?
ক্রিকেট খেলতে অনেক ভালবাসি। ক্রিকেট অনেক ভালো খেলি। তাই সবাই আমাকে নিয়ে গর্ব করে।
বাসায় আসলাম। বাসায় এসে ছাদে গেলাম। ছাদে গিয়ে দেখি মোনা ছাদে দাঁড়িয়ে দূর আকাশ টা দেখছে। মনে হচ্ছে গভীর ভাবনার মধ্যে আছে। এখন যদি কেউ পিছনের দিকে গিয়ে ভয় দেখায় তাইলে মোনা অজ্ঞান হয়ে যাবে। হিহিহি।
আমি মোনা বলে একটা ডাক দিলাম।
মোনা মাথায় কাপড় দিয়ে চলে যেতে লাগলো। আমি খুবই অবাক হলাম। আচ্ছা আমি কি অপরিচিত লোক?
নিজে কে প্রশ্ন করলাম।
নিজের কাছে খুবই খারাপ লাগতে শুরু করল। কেন মোনা আমাকে এড়িয়ে চলছে। কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। অবশ্য মোনা একবার আমাকে বলেছিল যেন আমি আর ক্রিকেট না খেলি।
বললেই কি ছাড়া যায়। ছাদ থেকে নেমে মোনাদের বাসায় গেলাম। মোনার মা আমাকে খুব স্নেহ করেন। অনেক দিন আমাকে দিয়ে মোবাইলের ফ্লেক্সিলোড করিয়েছেন। এই আমার একটা গুণ আছে উনার কাছে। বাসায় ভিতর গিয়ে কলিংবেল বাজাতেই দেখি একটু পর দরজা টা খুলে গেল। মোনা দরজা খুলেছে। মোনা রাগি মুখ নিয়ে আমার দিকে থাকিয়ে থাকল। আমি এক পলকে মোনা কে দেখছি। এই কয়েক দিন মোনা কে অনেক চিন্তিত লাগছে।
>> তোমার কি কিছু হয়েছে?
>> আমার কি হতে যাবে ভাই?
>> আমি ভাই?
>> হ্যাঁ।
.
আমার মাথা ঠিক নাই খুব রাগ হলো মোনার প্রতি। ভাই বলার কারণ টা বুঝলাম না। তাই মোনার উপর রাগ দেখিয়ে চলে আসতে লাগলাম। এখানে দাঁড়িয়ে থেকে অপমান হওয়ার কোনো মানে হয় না। কিছু জায়গা হাঁটার পর একটা নির্জনজায়গায় বসলাম। জায়গা টার মধ্যে অনেক বাতাস বয়ে যাচ্ছে। খুব ভালো লাগছে শরীর টা কাঁপছে। তবে বাতাসে নয়। রাগে। আমি উঠে দাঁড়ালাম।
দেখি মোবাইলে একটা ফোন আসলো। তাকাতে দেখি মোনা।
এই কয়েকদিনে মোনা আমাকে এই প্রথম ফোন করল। আমি ধরলাম।
>> সারাদিন তো একটা ব্যাট হাতে নিয়ে মাঠে গরু রাখালের মতো করে পড়ে থাকো। ফাইনাল পরীক্ষা যে চলে আসছে সে দিকে কি খিয়াল আছে।
>> তা থাকবে কেন?
শুধু তো তোমরা ওই পরীক্ষা দেও। আর আমরা পরীক্ষার হলে বসে বসে কলম কামড়া তে থাকি।
>> যত্তসব। তোমাকে ফোন করা টাই আমার ভুল হয়েছে।
>> ও। ফোন দিলে কেন?
আমি কি তোমাকে ফোন দিয়েছি।
>> চুর একটা। পিছন পিছন ফলো কর কেন? দেখতে পাচ্ছ কথা বলছি না। তারপরও ফলো করো। একদম বলে দিচ্ছি ফলো করবে না।
>> আমি মোনাকে ফলো করি। তোমাকে ফলো করি না।
>> হিহিহি।
বান্দর কোথাকার। মোনা টা কে শুনি? মোনা তো আমি নিজে।
>> যখন বুঝতে পারছ। তাইলে বলো কেন?
>> কাল কে কি আমার?
তোমার কি মনে আছে।
>> তোমার আবার কি?
>> ও ভুলে গেলে ঠিক আছে।
ফোন কেঁটে দিলাম।
.
এই বলে মোনা ফোন টা কেঁটে দিল। আমার অনেক খারাপ লাগে। যখন মোনা রাগ করে ফোন কেঁটে দেয়। আচ্ছা যদি রাগ করে। সে রাগ টা ভাঙানোর দায়িত্ব তো আমার। সে সুযোগ টা আমাকে দিবে তো। সুযোগ দিবে তো দূরের কথা । কথা বলতে ওই দিবে না।
আমি একটা গাছ তলায় বসলাম। সেখানে বসে মোবাইলে একটা গান দেখতে লাগলাম। খুব ভালো লাগছে গানটা। গানের মধ্যে আমি দেখতে পেলাম। জন্মদিন নিয়ে কি যেন কিছু জিনিষ কিনছে একটা ছেলে। আমার মনে পড়ে গেল মোনার জন্মদিনের কথা। আমি নিজে কে দোষতে লাগলাম। তারপর আমিও দোকান থেকে নূপুর কিনলাম। নূপুর কিনে মোনা কে ফোন দিলাম। সাথে সাথে মোনা ফোনটা ধরল।
>> মোনা।
>> কি?
>> শুভ জন্মদিন।
>> তোমার মনে আছে আমার জন্মদিনের কথা। সত্যি।
>> সত্যি মনে আছে। তোমার জন্য একটা জিনিষ কিনলাম।
>> কি কিনলে?
>> সেটা পরে বলবো। তুমি একবার বিকাল বেলা আসতে পারবে।
>> কোথায় আসবো?
>> সিডনি তে।
>> ঠিক আছে আমি আসবো।
>> আচ্ছা এখন আমি ফোন রাখি।
.
মোনা আসতে অনেক দেরী হলো। আমি এক দৃষ্টিতে নদীর পানির দিকে চেয়ে থাকলাম। কিছু সময় পর মোনা আসলো।
>> সরি সরি অনেক দেরী হয়ে গেল?
>> নতুন কি। তুমি তো প্রায়ই অনেক দেরী করে আসো।
>> কি আমি দেরী করে আসি?
তুমি এই কথা বলতে পারলে।
>> যা সত্য তাই বললাম।
তুমি তো জানো। আমি সব সময় সত্য কথা বলি।
>> হ্যাঁ। সত্যবাদী। তুমি যখন দেরী করে আসো। তখন আমি কিছু বলি?
>> না। তুমি আমাকে খুব মায়া করো।
আমাকে তো তুমি অনেক দিন কানে ধরিয়ে দাঁড়িয়ে রেখেছ।
>> কানে দাঁড়িয়ে রাখার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
>> ধ্যাত। শুধু ঝগড়া করো । আমার ঝগড়া করতে ভালো লাগছে না।
>> ঠিক আছে। আমার গিপ্ট কি?
>> গিপ্ট। আগে পা টা দেও।
.
পায়ে পড়িয়ে দিলাম। খুব সুন্দর লাগছে।
>> নূপুর টা খুব ভালো লাগছে।
>> সত্যি। তোমার পছন্দ হয়েছে?
>> সত্যি আমার পছন্দ হয়েছে।
>> তাইলে আমার উপহার কি?
>> তোমার উপহার?
তাইতো।
>> হ্যাঁ।
>> এক কাজ করো। চলো নৌকার মধ্যে উঠি।
>> নৌকায় উঠে কি হবে?
>> সেটা তুমি বুঝবে না। আচ্ছা তুমি এতো বোকা কেন?
>> এই একদম বলে দিচ্ছি। আমাকে বোকা বলবে না। কথায় কথায় শুধু আমাকে বোকা বলো।
>> তাইলে নৌকায় উঠে মানুষ কি করবে সেটা বলো কেন?
>> ঠিক হইতো। নৌকায় মানুষ কি করে। একদম নিরব হয়ে বসে থাকে।
>> ইশ! কি মজা। পানিতে আমি হাত দিব। তারপর তোমার উপর পানি দিব।
>> আমি কি হাত পা বন্ধ করে বসে থাকব। তোমাকে আমি পানির মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব।
>> কি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবে। দাঁড়াও। তোমাকে আমি নৌকার মধ্যে কি করি। পরে বুঝাবো । এখন চলো নৌকায় উঠি।
.
আমি আর মোনা নৌকায় উঠলাম। খুব ভালো লাগছে। যেন এক অজানা পথে পাড়ি দিচ্ছি দু'জন। "আমাকে ওই শাপলা ফুল টা এনে দিবে।" এ কথা বলে মোনা আমার দিকে তাকিয়ে থাকল।
আমি মোনার কথা মতো শাপলা ফুল টা আনলাম। তারপর মোনা কোনো কিছু বলার আগেই আমি মোনার মাথায় পড়িয়ে দিলাম। মোনা কে একবার মন ভরে দেখলাম। তারপর মুচকি হাসি দিয়ে অন্য দিকে চেয়ে রইলাম।
" আমার খুব ভয় করছে।" মোনা এ কথা বলে ভ্যাএএ করে কেঁদে দিল।
" কেন ভয় করছে?" এ কথা বলে আমি মোনার কাছে আসলাম।
>> আমি সাঁতার জানি না।
>> তুমি তো কিছুই করতে পার না। শুধু বসে বসে আজাইরা কথা বলতে পারো।
>> আমি বসে বসে আজাইরা কথা বলি?
তাইলে আমার সাথে কথা বল কেন?
>> আমি কথা বলি। হিহিহি।
>> এই একদম বলে দিচ্ছি দাঁত বের করে হাসি দিবে না।
>> আমার হাসি আসে তে আমি কি করব। আমার কিছু করার নাই। তুমি চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পার।
>> এই মামা নৌকা টা পাড়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। আমি নামবো।
.
মামা নৌকা টা পাড়ের ধারে নিতেই মোনা নেমে হনহন করে চলে যেতে লাগলো। আমি শুধু তার পিছনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। এই মেয়ে এতো রাগ নিয়ে থাকে কিভাবে?
এসব ভাবতে লাগলাম। না কিছু একটা করতে হবে। তাই আমিও নৌকা থেকে নেমে চলে যেতে লাগলাম।
.
একটা আইসক্রিম কিনলাম। কিনে খেতে লাগলাম। হঠাৎ দেখি মোনা এসে আমাকে বলে-
>> আমি নৌকা থেকে যখন নেমে গেলাম তুমি আমাকে আটকালে না কেন?
>> তোমার ইচ্ছা হয়েছে। তুমি চলে গেছ। এতে আটকানোর কি আছে?
>> ওই কান ছিঁড়ে ফেলবো। আরেকবার যদি এই কথা বলো।
>> আইসক্রিম খাবে।
>> না। তোমাকে আস্তা খেতে মন চাচ্ছে।
বন মানুষ কোথাকার।
>> এই বন মানুষ বলবে না।
>> তাইলে কি বলবো? বন মানুষ বললেও আমার দুঃখ যাবে না।
>> আমার কিন্তু ভালো লাগছে না। আমি চলে যাব। তুমি যা তা আমাকে বলছ কেন?
>> ইশ! আমার ভালো লাগছে না।
আর যখন তুমি আমাকে যা তা বলো আমি তোমাকে কিছু বলি।
আমি মুখ বন্ধ করে বসে থাকি।
>> মুখ বন্ধ করে বসে থাকো। তখন তো গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসো।
.
ধ্যাত ভালো লাগছে না। তাই চলে আসতে লাগলাম। এখানে তাকলেই ঝগড়া করতে হবে। মোনা কে এখন আমার দেখলেই রাগ উঠে যায়। রাতে একটা টিউশনি আছে। তাই বাসায় চলে আসলাম । এসে একটা ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে টিউশনি পড়াতে গেলাম।
"স্যার আপনার গফ এর সাথে কি ঝগড়া হয়েছে।" ছাত্রী টা এ কথা বলে খাতার দিকে চেয়ে রইল।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। ছাত্রী বলে কি? মনে মনে ভাবতে লাগলাম। আসলে ওই তো সে ঠিক কথা বলেছে। কিন্তু তাকে সত্য কথা কিছুতেই বলা যাবে না।
" দিন দিন খুব পাকনী হচ্ছ। মন দিয়ে পড়া মুখস্থ করো। আমি পড়া দিচ্ছি।"
" স্যার আমার একটা বন্ধু আছে সে সব সময় আমার সাথে ঝগড়া করে। মন খারাপ করে বসে থাকে।" ছাত্রী এই কথা টা বলেই হিহিহি করে হেসে দিল।
না আমার ইজ্জত থাকবে না এই মেয়ের কাছে। তাই ইজ্জত বাঁচাতে ধমক দিলাম।
ছাত্রী পরে আর কিছু বলল না। একদম নিরব হয়ে গেল। আমি টিউশনি পড়িয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওয়ানা হলাম।
.
রাতে শুয়ে আছি। মোনা ফোন করল। ফোন করে বিজলা পার্কে আসতে বলল। অনেক সময় ধরে বসে আছি। কিছু ভালো লাগছে না। মাথার মধ্যে অজানা একটা চিন্তা ঢুকে গেল। এখানে লম্বা একটা চেয়ার ছিল। সেখানে ঘুমাতে যাব ঠিক তখনই মোনা আসলো। মোনা এসে চেয়ারে বসলো। চেয়ারে বসে ব্যাগ থেকে মোবাইল টা বের করে টিপতে লাগলো। আমার সাথে কোনো কথা বলছে না। মনে হচ্ছে অজানা কেউ আমি। আমিও চুপ হয়ে বসে থাকলাম। কি করব?
কেউ আমার সাথে কথা না বললে। আমি তার সাথে কেন কথা বলতে যাব। তাই চুপ হয়ে বসে থাকলাম।
" কিছু বলছ না যে।" এ কথা বলে মোনা ফোন টা ব্যাগের মধ্যে রেখে দিল।
>> কি বলবো?
তুমি তো মোবাইলের সাথে প্রেম করছ। আমরা যে ধারে বসে আছি সেদিকে তোমার কি খিয়াল আছে।
>> ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলো কেন? এর জন্য ওই আমার রাগ উঠে যায়।
>> আমি ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলি না। তুমি কি একবার আমাকে জিজ্ঞাস করছ কখন আসলাম?
>> তা করতে যাব কেন? কোন দুঃখে করতে যাব। তুমি যেমন আমিও এ রকম হবো এখন থেকে।
>> আমি কি করলাম?
>> তুমি কি কর নাই। সব কিছু তো তুমি ওই শুরু করো। এখন বলছ আমি কি করলাম।
>> শুনো।
>> কি?
>> আগের মতো কি হওয়া যায় না?
>> কি আগের মতো?
>> দুজনের সম্পর্ক টা?
>> সত্যি বলছ।
>> হ্যাঁ।

>> ঠিক আছে আজ থেকে কোনো ঝগড়া হবে না। যদি ঝগড়া শুরু করো তাইলে বুঝবে আমি কি জিনিস।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top