বাড়িতে প্রাকৃতিক উপায়েই আম পাকাতে পারেবন। প্রয়োজন একটু ধৈর্য্য।
আম মানেই তার মিষ্টি ঘ্রাণ বা রসাল স্বাদ। এই সময়ে অন্যতম আকর্ষণ হলো এ ফল। কাঁচা হোক বা পাকা, সব ধরনের আমের কদরই সমান। কোনো ধরনের রাসায়নিক ছাড়া পাকা আমের স্বাদ মিষ্টি ও গন্ধ কড়া হয়। তবে একটু কাঁচা ও একটু পাকা আমের স্বাদ আবার আলাদা। পাকা আমের স্বাদ নিতে চাইলে তা প্রাকৃতিকভাবে পাকানোর সঠিক উপায় জানা দরকার।
আমের কয়েকটি চিহ্ন ও ধরন দেখেই বোঝা যায় আম পরিপূর্ণভাবে পেকে গেছে কি না। অনেকেই আমের ওপরের কালো দাগ থাকলে তা না কিনে বরং পরিষ্কার আম কেনেন। কিন্তু দাগ থাকা মানেই আমটি পরিপূর্ণভাবে পাকা, বললেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া। এ ছাড়া পাকা আম চেনার আরেকটি উপায় হলো আমের কড়া ঘ্রাণ।
গরম স্থানে আম পাকানো
তুলনামূলক কিছুটা গরম স্থানে আম পাকানো যায় দ্রুত। এর জন্য যথাযথ জায়গা হলো রান্নাঘর। যেহেতু রান্নাঘরে দিনের লম্বা একটা সময় চুলা জ্বালানো হয়, তাই এ ঘরের তাপমাত্রা অন্য ঘরের থেকে বেশি। তাই কাঁচা–পাকা আম একটি ব্যাগে রান্নাঘরের একটি স্থানে রেখে দিলে ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই তা পুরোপুরি পেকে যাবে। আপনি চাইলে স্টোর রুম বা ভাড়ার ঘরেও আমের ব্যাগ রাখতে পারেন। তাপ বেশি পেলে আমের মধ্যকার রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্রুত ঘটবে।
চালের মধ্যে রাখা
আম পাকানোর আরেকটি পরিচিত উপায় হলো চালের মধ্যে আম রেখে দেওয়া। এমনকি পপকর্নের মধ্যে রাখলেও একই ফল পাওয়া যাবে। এ পদ্ধতিতে মাত্র এক রাতের মধ্যেই আম পাকা শুরু করে। ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর একবার অবশ্যই আমের অবস্থা দেখতে হবে। এই পদ্ধতিতে আম পাকার কারণ হলো, আমের মধ্যে থাকা ইথিলিন গ্যাস। চালের মধ্যে থাকা অবস্থায় এই গ্যাস বের হতে থাকায় আম দ্রুত পাকে।
কাগজে মুড়িয়ে রাখা
আম পত্রিকা কাগজ বা অন্য কোনো কাগজে মুড়িয়ে রাখলে আম পাকতে শুরু করে। আমের ঘ্রাণ বাড়তে শুরু করলে বুঝতে হবে, এই পদ্ধতি সঠিকভাবে কাজ করছে। আপনি যেহেতু কৃত্রিমভাবে ইথিলিন প্রয়োগ করছেন না, তাই ফলে থাকা প্রাকৃতিক ইথিলিন ধরে রাখতে হবে।
কলা বা আপেল রাখা
আমের সঙ্গে একটি কাগজের ব্যাগে কলা, আপেল বা টমেটো রেখে দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আম পেকে যায়। এর কারণ, ব্যাগের মধ্যে ইথিলিন গ্যাস বেড়ে যাওয়া। আমের পাশাপাশি কলা, আপেল বা টমেটো থেকেও প্রচুর পরিমাণ ইথিলিন গ্যাস বের হয়, যা আম পাকাতে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেন ব্যাগ থেকে কোনোভাবে গ্যাস বের হয়ে না যেতে পারে।
আরও কিছু পরামর্শ
যে পদ্ধতিতেই আম পাকাতে চান না কেন, প্রথমে আম ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
আম যদি কোনো পদ্ধতি ব্যবহার না করেও পাকাতে চান, তবে ৭ থেকে ১০ দিন স্বাভাবিকভাবে রেখে দিন। এমনিতেই পেকে যাবে।
রাসায়নিক ছাড়া আম পাকাতে চাইলে অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে।