আজকে আমরা এমন এক দম্পতির কথা বলব যারা ইতিমধ্যে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় অলুক্ষনে দম্পতি হিসেবে খ্যাত হয়েছেন। কারণ তারা সাম্প্রতিক সময়ের ভয়ংকর ৩টি ঘটনা ঘটার সময় কাছেই ছিলেন। এ এক অবিশ্বাস্য, অভুতপূর্ব ঘটনা। চলুন জেনে নেই তাদের সম্পর্কে…
কারা সেই অলুক্ষনে দম্পতি?
বলছিলাম ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে বসবাসকারী জেসন ও জেনি কেয়ার্ন লরেন্স দম্পতির কথা। তারা যেখানেই বেড়াতে যান না কেন, বিপদ তাদের পিছু পিছু সেখানে পৌঁছে যায়! ইতিহাসের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তিন তিনটি সহিংস ঘটনার সাক্ষী তারা। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের মুম্বাই এর তাজমহল হোটেলের সন্ত্রাসী হামলা, নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনা এবং লন্ডনের সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা।
নাইন ইলেভেনে অলুক্ষনে দম্পতি
প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখে। ইতিহাসে যা নাইন ইলেভেন নামে পরিচিত। ঐ দিন জেসন ও জেনি নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ারের সামনেই ছিল। তাদের চোখের সামনেই পর পর দুটি সন্ত্রাসী প্লেন এসে টুইন টাওয়ারে আঘাত করে। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ভবন দুটি। মিশে যায় মাটির সাথে। আর এই পুরো ঘটনাটাই চাক্ষুস করেন সেখানে বেড়াতে আসা দম্পতি জেসন ও জেনি। টুইন টাওয়ারে ঐ সহিংস হামলার ঘটনায় মারা যান প্রায় ৪ হাজার মানুষ।
চাঞ্চল্যকর সিরিজ বোমা হামলার সময়
এর পরের ঘটনাটি ঘটে লন্ডনে। ২০০৫-এর জুলাইতে লন্ডনে গিয়েছিলেন জেসন ও জেনি একটা বিশেষ কাজে। তারা যেখানে ছিলেন সেখানেই ঘটে চাঞ্চল্যকর সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা। তিনটি টিউব ট্রেন ও একটি বাসে আত্মঘাতী সেই বোমা হামলাগুলো করা হয়। তাতে ৫২ জনের মৃত্যু হয়। এই ভয়ংকর ঘটনার জীবন্ত সাক্ষী হয়ে আছে জেসন ও জেনি।
হোটেল তাজ মহল প্যালেসে হামলার সময়
এরপরের ঘটনাটি ঘটে ২০০৮সালের নভেম্বরে, ভারতের মুম্বাইতে। টুরিস্ট হিসেবে ভারতে বেড়াতে আসেন জেসন ও জেনি। ঘটনার দিন তারা হোটেল তাজে অবস্থান করছিলেন। তারা সেখানে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হন। প্রত্যক্ষ করেন তাজ হোটেলে সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার ঘটনা। সেদিন ঐ সন্ত্রাসী হামলায় মারা যান ১৬৪ জন, আহত হন প্রায় তিন শতাধিক।
এভাবে একটি নয়, দুটি নয়, ইতিহাসের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তিন তিনটি সহিংস ঘটনার সাক্ষী ওরা। সহিংস ঘটনা যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের। পর পর তিনটি এত বড় সহিংস ঘটনা চোখের সামনে ঘটে যাওয়ার পর ঐ দম্পতি নিজেদের অলক্ষুণে বলে ভাবতে শুরু করেছেন। যদিও জেসন এবং জেনি নিজেদের অলুক্ষনে বলতে রাজি নয়। তারা মনে করে ভাগ্য বা নিয়তি তাদেরকে এসব যায়গায় নিয়ে যায়। এটা তারা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে বলে মনে করে। সৃষ্টি কর্তা চায় এই দম্পতি মানব সমাজের ভয়ংকর ঘটনাগুলোর সাক্ষী হয়ে থাকুক!
সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছেয় এমনটা হয় কি না আমাদের তা জানা নেই। তবে এমন ভয়ংকর সব ঘটনা চোখের সামনে দেখাটা যে খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা নয়, তা বলাই যায়। আমরা কামনা করবো যেন এমন ঘটনার মুখে তাদেরকে আর পড়তে না হয়!