What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Videos আলাউদ্দিন আলীর অমর কিছু গান তৈরির ইতিহাস (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
eQ9CfpK.jpg


প্রয়াত আলাউদ্দিন আলী একজন সংগীত পরিচালক নন, একাধারে তিনি সুরকার, নামকরা বেহালাবাঁদক এমনকি গান লিখে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকারও। লোকজ ও ধ্রুপদী গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা তাঁর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে বিগত প্রায় চার দশক ধরেই। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান করে নিজেদের করেছেন সমৃদ্ধ। এই জীবন্ত কিংবদন্তির শত সহস্র গানের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক শ্রোতাপ্রিয় গানের জন্মকথা তুলে ধরা হলো।

এই প্রতিবেদনটি এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত ‘আমার মতো ভাগ্যবান সুরকার কম : আলাউদ্দিন আলী’ শিরোনামের সাক্ষাৎকার থেকে সংগৃহীত।

এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই

আমি তো আর গীতিকার না, গানও লেখি না। ৮১/৮২ সাল হবে। তখন মিতালী মুখার্জি ঢাকায় আসেন। তাঁকে নিয়ে বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠান করার জন্য মুসা আহম্মেদ নামের এক প্রযোজক আমাকে দায়িত্ব দেন। তখন মিতালী মুখার্জি আমাকে খুব অনুরোধ করেন যে, “আলী ভাই, আপনার সুর করা ‘কেউ কোনোদিন আমারে তো কথা দিল না’ গানটির মতো সুন্দর একটি মেলোডিয়াস গান করে দেন।” তো সেই রাতেই রেকর্ডিং শেষে বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে আনুমানিক দেড়টায় হারমোনিয়াম নিয়ে বসি। তখন হঠাৎ করেই এ রকম একটা থিম মাথায় আসে। আর সঙ্গে সঙ্গেই সুরটাও হয়ে যায়। পরের দিন রেকর্ডিং। আসলে যখন যেটা আসে সেটা হুট করেই আসে। আবার অনেক দিন চিন্তা করলেও আসে না। তো এভাবেই আমার এই গান লেখা। অনেকদিন অনেক গীতিকারের সঙ্গে কাজ করেছি। কে কী ধরনের শব্দ ব্যবহার করে, কী ধরনের থিম আনে সেগুলো খেয়াল করতাম। আসলে এই গানটা আমার অভিজ্ঞতারই ফল। এই গান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারের পর জনপ্রিয় হয়। পরিচালক আমজাদ হোসেন একদিন আমাকে বললেন, তাঁর ‘দুই পয়সার আলতা’ সিনেমায় একটা দৃশ্যের সাথে এই গানটি মিলে যায়, তাই তিনি এটা ব্যবহার করতে চান। আমিও সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
ও আমার বাংলা মা তোর

এটা আমার খুব প্রিয় ও প্রাণের গান। কারণ এটা আমার জীবনের প্রথম সুর করা গান। গানটি গেয়েছে সাবিনা ইয়াসমিন। স্বাধীনতার ঠিক পরপর ১৯৭২ সালের কথা। আবুল উমরা মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন নামের আমার এক বন্ধু ছিল। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসের ভেতর এক লাইন, দুই লাইন করে এই গান লেখা হয়। গানটি কিন্তু অনেক কঠিন। ছয়টা ঋতুকে একবারে গানের কথায় এনে গানটি শেষ করা, আবার প্রিয় মাকেও উজ্জ্বল করে দেওয়া এক দারুণ ব্যাপার। আমি জানি না, সুরটা হয়তো খারাপ হতে পারে কিন্তু বাণীর দিক থেকে আমার কাছে আমাদের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্যে পুষ্পেভরা’ গানের পর ওই মাপের একটি সমৃদ্ধ গান মনে হয়েছে।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
সুখে থাকো, ও আমার নন্দিনী হয়ে কারো ঘরনি

এই গানটি গেয়েছিলেন চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল। ও সিনেমায় নামার আগে মূলত একজন গিটারবাদক ছিল। আমাদের সাথে গিটার বাজাত। তাদের একটা ব্যান্ড ছিল। ওরা প্রতি শনি ও রোববার শেরাটন হোটেলে বাজাত। তারপর আমাদের ইন্দিরা রোডের স্টুডিওতে একদিন রবিন ঘোষের সুরে ‘পিচঢালা এই পথটাকে ভালোবেসেছি’ গানটিতে গিটার বাজাতে আসে। ওই বিখ্যাত গানের গিটারের পিসটা কিন্তু নায়ক জাফর ইকবালের বাজানো। তখন পরিচালক এহতেশাম ইকবালকে দেখে বলেন, ‘তোকে আমি ছবিতে নায়ক হিসেবে নেব।’ পরে উনি নায়িকা শাবানার সঙ্গে একটি ছবিতে ইকবালকে সত্যি সত্যি নেন। ওর বড় ভাই সংগীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজের সাথে যেহেতু আমি কাজ করতাম, সেই সূত্রে আমাকে খুব মানত সে। তো আমি একদিন তাকে বললাম, ‘চলো তোমার জন্য টেলিভিশনে একটা গান করি।’ কিন্তু ও খুব ভয়ে ভয়ে ছিল। তাকে দিয়ে প্রথম গান করি, ‘শেষ করো না, শুরুতেই খেলা, না ভেঙ না …।’ এরপর করলাম ‘সুখে থাক, ও আমার নন্দিনী হয়ে কারো ঘরনি’ এই গান। তারপর ‘যেভাবেই আছি, বেঁচে তো আছি, জীবন আর মরণের কাছাকাছি’সহ ওকে দিয়ে আরো পাঁচ-ছয়টা গান করি। পরে নায়ক রাজ্জাক ভাইয়ের পরিচালনায় ‘বদনাম’ ছবিতে আমারই লেখা আমারই সুরে ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো, আমি তো এখন আর নই কারো/ অন্ধগলির এই যে আঁধার, বন্ধু হলো আজ আমার’ গানটি গায় ইকবাল। মূলত এই সিনেমার সংগীত পরিচালক ছিলেন আনোয়ার পারভেজ। কিন্তু সেদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন না। তাই আমিই সেদিন এই স্মরণীয় কাজটি করি।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ

আসলে হাদী ভাই আমার সুর করা চলচ্চিত্রে গান করার আগে বিটিভিতে নওয়াজীশ আলী খানের প্রযোজনায় সম্ভবত ‘বর্ণালী’ নামের একটি অনুষ্ঠানে প্রথম গান করেন। এই অনুষ্ঠানে হাদী ভাইয়ের জন্য পাঁচটা গান করার পর শেষ গান হিসেবে এই গানটা করি। গানটির গীতিকার ছিল মনিরুজ্জামান মনির। তারপর গানটি সবার খুবই ভালো লাগে। আসলে আমার বহু ভালো গানের গায়ক হলেন হাদী ভাই। হাদী ভাইয়ের গলাটা দরাজ একটা গলা। উনি উচ্চশিক্ষিত মানুষ এবং ওনার বাংলা উচ্চারণ খুবই নিখুঁত। আর উনি একটা গানের জন্য যথেষ্ট সময়ও দিতেন। উনি গান রেকর্ডিংয়ের জন্য তিন-চারদিন রিহার্সেল করতেন। তারপর গান রেকর্ডিংয়ে সময় দিতেন। তাই হাদী ভাই আমার প্রথম পছন্দ, সব সময়।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না

মজার একটি বিষয় হলো, এই গান কিন্তু প্রথমে সাবিনা ইয়াসমিন গেয়েছিলেন, তারপর রুনা লায়লা। প্রথমে ‘কসাই’ ছবির জন্য সাবিনা ইয়াসমিনকে দিয়ে আমি এই হালকা মেজাজের গানটি রেকর্ড করি। সিনেমা রিলিজ হওয়ার পর খুবই জনপ্রিয় হয়ে যায়। পরে আবার কলকাতার এইচএমভিতে গিয়ে মনে হলো এই গানটি ওখান থেকে রিলিজ হলে ভালো হয়। পরে রুনা লায়লাকে দিয়ে এই গান আবারও রেকর্ড করালাম। বাংলাদেশে সিনেমায় সাবিনা, কলকাতায় অডিওতে রুনা। এই সেই গান যেটা দুই বাংলা পুরোপুরি মাত করে ফেলে।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, মনে হয় এ দেহে প্রাণ আছে

আমি আসলে দারাশিকো সাহেবের ‘সর্পরাণী’ নামের একটি সিনেমার কাজ করতে গিয়ে এই সুরটা করি। তখন এর কথা অন্যরকম ছিল। পরে ‘৮৪- ‘৮৫ সালে ঢাকায় প্রদীপ গোস্বামী নামের এক গীতিকারকে দিয়ে এই ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’ গানটি লেখানো হয়। পরে এই কথা দিয়ে মিতালী মুখার্জি ও তাঁর স্বামী ভূপিন্দর সিংকে দিয়ে কলকাতায় এইচএমভির জন্য এই গানটি রেকর্ড করি। আমি এইচএমভিতে ১৯৮৬ সাল থেকে প্রায় ১০-১২ বছর নিয়মিত কাজ করেছি। প্রায় বছর দশেক সেখানে আমার গানের সর্বোচ্চ বিক্রি ছিল।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ

গানটি মূলত টেলিভিশনের জন্য করা ছিল। সম্ভবত ‘৭৭/৭৮ সাল হবে। গানটি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খুব পছন্দের ছিল। উনি ওনার পছন্দের কারণে এই গানটি ব্যবহার করেছেন। আমি জানিও না। এ ব্যাপারে আমি কোনো কথাও বলিনি। এই ধরনের আরো গান আছে। ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি লিখেছেন গাজী মাজহারুল ভাই। উনি বিএনপি করেন। আবার ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি এখন আওয়ামী লীগ সব জায়গায় তাদের মূল গান হিসেবেই বাজায়। যাই হোক এটা কোন ব্যাপার না। কে কী রকমভাবে, দলীয় দৃষ্টিতে গানকে দেখল, সেটা আমার কাছে মুখ্য নয়। আমার কাছে গান গানই। গান সবর্জনীন। গানের কোনো দেশ, গোত্র নেই। গানটির গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির। ও আমারই সৃষ্টি। তাকে আমি প্রথম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়ে আসি। মনিরুজ্জামানকে আমার ভাতিজা সুরকার আবু তাহের আমার কাছে নিয়ে আসে। আমাদের তখন ‘ঢাকা রেকর্ড কোম্পানি’ নামে ইন্দিরা রোডে একটা স্টুডিও ছিল। সেখান থেকে আমি ওকে পিক করি। তারপর ওর পড়ালেখা, থাকা খাওয়ার দায়িত্ব আমি নিয়ে নেই। তারপর তেজগাঁও কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রি পাস করল, পরবর্তীকালে ‘প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটি লেখার সুবাদেই তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে সুবিধা পেয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে একটা ভালো পোস্টে চাকরি পেয়ে যায় সে। সেখান থেকে মনিরুজ্জামান মনিরকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়

‘দুই পয়সার আলতা’ সিনেমায় আব্দুল হাদী ভাইয়ের গাওয়া গান এটি। সুর আমার। রাজ্জাক ভাইয়ের লিপে ছিল গানটি। আমজাদ ভাই সব সময়ই একটি গল্প মাথায় রেখে প্রথমে একটা গান রেকর্ড করে নেন। তারপর ওই গানটা সারাক্ষণ ওনার কানের কাছে বাজতে থাকে। আর পুরো সিনেমার গল্পটা আস্তে আস্তে করে তিনি লিখতে থাকেন। এটা ওনার আজীবনের অভ্যাস। এভাবেই আমি ওনার সঙ্গে এত বছর ধরে কাজ করে আসছি। ওনার সঙ্গে আমার বহু মাইলফলক কাজ আছে। যেমন ভাত দে, জন্ম থেকে জ্বলছি, গোলাপী এখন ট্রেনে, কসাই, ফকির মজনু শাহ্, সুন্দরী ইত্যাদি ছবিতে কাজ করেছি।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে রে

রথীন্দ্রনাথ রায় এই গানটি করে। ও আমার অনেক ভালো বন্ধু। দারাশিকো সাহেবের পরিচালনায় ‘ফকির মজনু শাহ’ সিনেমায় ‘সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে রে’ গানটিও রথি করে। গানটি লিখেছিল গাজী মাজহারুল আনোয়ার। এই সিনেমার গল্পটি মূলত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় ফকির মজনু শাহর ওপর তৈরি করা। তো সিনেমায় যখন একটা লাশ কাঁধে তুলে নেওয়া হয় তখন এই গান বাজে। আমি এই ছবিটি সিনেমা হলে গিয়ে দেখি- এই গান যখন হয় তখন দর্শক খুবই ইমোশনাল হয়ে যায়। রথি আমার আরো অনেক গানে প্লে-ব্যাক করেছিল। ও আমার যতটা ছবিতে গান গেয়েছে প্রতিটাই জনপ্রিয় হয়েছে। আমার সুরে তার গাওয়া ‘খোদার ঘরে নালিশ করতে দিল না আমারে’ গানটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
আমায় গেঁথে দাওনা মাগো, একটা পলাশ ফুলের মালা

রেডিওতে ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস বলে একটা সার্ভিস আছে। যারা বিশেষ করে কিছু গান রেকর্ড করে। সেখান থেকে ৮৪-৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাকে একটা গান করে দিতে বলা হলো। কিন্তু আমার গান তৈরি ছিল না। তো একদিন গীতিকার মরহুম নজরুল ইসলাম বাবুকে আমি ক্যান্টিনে পেয়ে যাই। সে তখন চা খাচ্ছিল। আমি তখন তাকে বললাম, রুনা লায়লা আসবে ১২টার দিকে। এখনো তো কোনো গান রেডি হয়নি। তো চলুন এই ফাঁকে গান করে ফেলি। সাড়ে ১০টা বাজে তখন। আমরা কথা ও সুর করতে শাহবাগ রেডিও স্টেশনের ৬ নম্বর স্টুডিওতে হারমোনিয়াম নিয়ে বসলাম। তারপর এই গান এক বসাতেই রচনা ও সুর করে ফেলি। পরে ওই দিনই দুপুর ১২টায় রেকর্ডিংয়ে ঢুকে রুনা লায়লা চমৎকারভাবে গেয়ে দেন। ওই দিনই গানটি প্রচার করা হয়। এই গানগুলো যখন মানুষ বিভিন্ন দিবস এলে বাজায় আমার শুনতে ভালোই লাগে। ভালো লাগারই কথা।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top