দুই ম্যাচের টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষ হয়েছে। বাকি আছে কেবল টি-টোয়েন্টি সিরিজ। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সফরকারী বাংলাদেশের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায়। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পাক স্টেডিয়ামে। তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগারদের নেতৃত্ব দেবেন অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হয়েছিল টাইগারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে লজ্জাজনকভাবে হোয়াইটওয়াশ হয় সাকিব বাহিনী। এরপর শুরু হয় ক্রিকেটে টাইগারদের সবচেয়ে পছন্দের সংস্করণ ওয়ানডে সিরিজ। ওয়ানডেতে টাইগারদের নেতৃত্ব দিতে দলের সঙ্গে যোগ দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর যেন রাতারাতি বদলে যায় বাংলাদেশ দল। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে মাশরাফিবাহিনী। প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ২১৯ রানের লজ্জাজনক হারে শুরু হয় টাইগারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। সাকিব, তামিম, মুশফিকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পরের টেস্টেও। ওই টেস্ট ম্যাচটিতেও ১৬৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। পুরো টেস্ট সিরিজেই দাপুটে পারফরমেন্স দেখিয়ে টাইগারদের হোয়াইটওয়াশ করেছে জেসন হোল্ডারের দল। তবে ওয়ানডেতে এসে বদলে যায় দৃশ্যপট। প্রথম ওয়ানডেটি টাইগাররা জিতে নেয় ৪৮ রানে। এরপর তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় নিশ্চিত জিততে যাওয়া ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩ রানে হেরে যায় মাশরাফিবাহিনী। কিন্তু সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটিতে স্বাগতিকদের ১৮ রানে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ দল। তাই টেস্টে লজ্জাজনকভাবে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শুরু করা টাইগাররা ওয়ানডে সিরিজ জিতে ফিরে পেয়েছে তাদের হারানো আত্মবিশ্বাস। সে আত্মবিশ্বাস নিয়েই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে খেলতে নামবে সাকিবের দল। তবে তিন ম্যাচের এ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের সমর্থকদের চিন্তার কারণ ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ও জনপ্রিয় এই সংস্করণে টাইগারদের পারফরমেন্সটা বরাবরই হতাশাজনক। এ ছাড়া গত বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেয়া মাশরাফিকেও পাওয়া যাবে না এ সিরিজে। তা ছাড়া গত জুনে আফগানিস্তানের মতো দলের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরেছে টাইগাররা। তবে টি-টোয়েন্টিতে এত হতাশাজনক পারফরমেন্সের মধ্যেও টাইগার সমর্থকদের স্বস্তির কারণ তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা বর্তমানে বেশ ছন্দে রয়েছেন। এ ছাড়া এ সিরিজে দলে রয়েছে টি-টোয়েন্টি স্প্যাশালিস্ট হিসেবে বিশেষভাবে স্বীকৃত টাইগার পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ইনজুরির কারণে গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেননি তিনি। নিজের সেরা ফর্মে না থাকলেও এখন বেশ ছন্দে রয়েছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। এ ছাড়া টাইগার পেসার রুবেল হোসেনও রয়েছেন দারুণ ছন্দে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজে সেরা উইকেট শিকারীদের তালিকায় মাশরাফির পরেই আছেন রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান। টেস্ট ও ওয়ানডেতে না থাকলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ফিরেছেন মারকুটে টাইগার ওপেনার সৌম্য সরকার। অন্যদিকে এখনো পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেনি স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ক্রিস গেইল, ব্রেথওয়েট, পাওয়েল, বিশু ও পোলার্ডের মতো সময়ের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারদের দলে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন পর্যন্ত মোট ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩টি জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ২টি। এ ছাড়া কোনো ফলাফল হয়নি একটি ম্যাচে। এবার দুদলের সামনেই রয়েছে অতীত রেকর্ডটাকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ। সে সুযোগ কারা কাজে লাগাতে পারে সেটিই এখন দেখার বিষয়।