১ম পর্ব
অনুষ্ঠান এসে বোর ই হচ্ছিল অয়নিকা (18), যদিও ওর খুব একটা আসার ইচ্ছে ছিলো না, একরকম জোর করেই ওকে আসতে হয়েছে। অয়নিকা মুখার্জী, কলেজে 1st year, শারীরিক গঠন (32-26-32), দেখতে সুশ্রী, হাইট (৫'৩), হাইটটাও শরীরের গঠনের সাথে মানানসই। অয়নিকা এসছে ওর বাবার অফিসের একটা অনুষ্ঠানে। অয়নিকার বাবা অতুল মুখার্জী (47) আর মা মালবিকা (40)। অতুল প্রায় 22 বছর হলো একটি বেসরকারি আইটি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত। ওর অফিসেরই অনুষ্ঠান। ওদের কোম্পানির বস দেবেশ বারবার ওকে আসতে বলেছে ফ্যামিলি নিয়ে। অফিসের প্রায় সব কর্মচারীরাই এসছে। অয়নিকা ওর বাবা মার থেকে একটু দুরে দাড়িয়ে ছিলো, বেশি লোকজন ওর কখনোই পছন্দ না। চারপাশে কয়েকজন চেনাজানা মুখের দেখা পেল, সবাই ওর বাবার কলিগ, সেই সূত্রেই চেনাজানা। হঠাৎ শুনতে পেলো 'কিরে অয়নিকা কেমন আছিস?'। প্রশ্নকর্তাকে চিনতে পারলো, নন্দিতা আন্টি অর্থাৎ নন্দিতা সেনগুপ্ত, বয়স ওর মায়ের মত, হয়তো মালবিকার চেয়ে এক দুবছরের বড়। নন্দিতার বর তাপস আংকেলও অনেকদিন ধরে কোম্পানিতে কর্মরত, ওদের বাড়িতেও গেছে ও। 'ভালো আছি, তোমরা কেমন আছো?'- অয়নিকা বলে ওঠে। 'চলে যাচ্ছে, তোর মায়ের সাথে কথা হলো'- নন্দিতা উত্তর দেয়। অয়নিকা জানে নন্দিতা আন্টি এই 41-42 বছর বয়সেও যথেষ্ট ফ্যাশন কনসিয়াস। ওর মা অবশ্য এসব এ তেমন সড়গড় না। নন্দিতা মালবিকাকে মাঝে মধ্যে পার্লারে যাবার কথা বলে, মালবিকা তেমন একটা গা করে না। অয়নিকা জিজ্ঞেস করে 'তুমি আর আংকেল ই এসছো?'। 'হ্যাঁ রে, তমালকে কত করে বললাম আসতে, কিন্তু এলো না'- নন্দিতা বলে ওঠে। তমাল হল নন্দিতার ছেলে, অয়নিকার চেয়ে বছরখানেকের বড়। অয়নিকা তমালকে ভালো ভাবেই চেনে, ওর এক বান্ধবীর সাথে কিছুদিন রিলেশনে ছিলো, ছেলেটা একটু ফ্লার্টবাজ টাইপের , তবে অয়নিকা খুব একটা পাত্তা দেয়না। নন্দিতা চলে যেতেই ও দেখলো ওর বাবা ওকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। অতুলদের সামনে যেতেই অয়নিকা একজন অপরিচিত যুবককে দেখতে পেল, আগে তাকে দেখেনি, হাইট প্রায় ছয় ফুটের কাছাকাছি, হ্যান্ডসাম চেহারা, হলুদ রঙের ব্লেজারটা ভালোই মানিয়েছে। অতুল বলে উঠলো 'এই হলো আমার মেয়ে অয়নিকা, কলেজে পড়ে ফার্স্ট ইয়ার'। অয়নিকা ছেলেটার দিকে তাকাতেই এবার অতুল ছেলেটার পরিচয় দিলো 'এ হলো অনুপ, অনুপ শর্মা, আগে আমাদের মুম্বই ব্রাঞ্চে ছিলো, মাস ছয়েক হলো আমাদের এখানে এসছে'। 'সত্যিই এতদিন এসছি, আজ আপনাদের সাথে দেখা হলো, খুব ভালো লাগছে অতুলদা'- অনুপ বললো। 'একদিন এসো আমাদের বাড়ি আরও ভালো লাগে'- অতুল হেসে উত্তর দিলো। অনুপ- 'যাবো নিশ্চই যাবো'। এরপর আর বিশেষ কথা হয় না। অয়নিকারা ডিনার সেরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গাড়িতে আসতে আসতে মালবিকা বলে 'অনুপের কথা তো আগে বলোনি, ছেলেটা বেশ মজার'। অতুল বলে ওঠে 'হ্যাঁ কয়েকমাস হল এখানে এসছে, আগে আমাদের মুম্বই ব্রাঞ্চে ছিলো, ছেলেটা চটপটে আর যথেষ্ট স্মার্ট, বছর দুয়েক আগে যখন মুম্বইতে গিয়েছিলাম তখন ওখানে ওর বেশ প্রশংসা শুনেছিলাম, এখানেও যথেষ্ট দক্ষতার সাথেই কাজ করছে'। অয়নিকা অবশ্য এসব কথার মাঝে কোনো কথা বলে না। চুপচাপ শুনে শুধু মনে মনে বলে 'ইন্টারেস্টিং'।
২য় পর্ব :
'শেষ ক্লাস টা বাদ দিই চল'- বলে ওঠে অয়নিকা। সেকেন্ড ক্লাসটা মিনিট তিন-চার হলো শেষ হয়েছে, এখন বাজে একটা, পরের ক্লাস সেই ৩টের সময়। 'আমিও তাই ভাবছি'- বলে ওঠে ইন্দ্রানী। ইন্দ্রানী আর রিয়া এই দুজন হলো অয়নিকার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড। আড্ডা দেওয়া থেকে ক্লাস বাঙ্ক সব কিছুই ওরা একসাথে করে। ইন্দ্রানী আর অয়নিকা সেম হাইট, রিয়া ওদের চেয়ে সামান্য লম্বা। অয়নিকা আর ইন্দ্রানী এখনো সিঙ্গেল , রিয়ার অবশ্য বয়ফ্রেন্ড ছিলো, কিছুদিন আগে ব্রেকআপ হয়েছে। তিনজনই তিনজনের সাথে সব কিছু শেয়ার করে।
'ঠিক আছে চলো, কিন্তু কোথায় যাবি?'- রিয়া জিজ্ঞেস করে ওঠে। 'চল বিগবাজারে আড্ডা দিয়ে বাড়ি যাই'- ইন্দ্রানী বলে ওঠে। ওদের কলেজ থেকে কিছুটা দুরেই বিগবাজার, এর আগেও দুবার কলেজ ছুটির পর এখানে এসছে ওরা, তবে আজ ক্লাস বাঙ্ক করে। 'ঠিক আছে তাহলে তাই চল'- অয়নিকা সম্মতি জানায়। বিগবাজারে এসে একটু ঘোরাঘুরি করে ওরা একটা কফিশপে বসে। তিনজনের জন্য কফি অর্ডার করে, ঠিক এমন সময় একটু দুরের একটা টেবিলে অনুপকে দেখতে পায় অয়নিকা। অনুপ ওকে দেখে হাত দেখায়, অয়নিকা ইন্দ্রানী দের 'আমি একটু আসছি' বলে অনুপের টেবিলের দিকে এগিয়ে যায়। অয়নিকা সামনে আসতেই অনুপ চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে 'কি ব্যাপার এখানে?'। 'হ্যাঁ এই বন্ধুদের সাথে এসছি, আপনি!?'- অয়নিকা উত্তর দেয়। অনুপ বলে 'এই একটু দরকারে আরকি'। অনুপ সেদিন ব্লেজার পড়ায় অয়নিকা ভালো ভাবে বুঝতে পারে নি, আজ টি শার্ট পড়ে থাকায় ওর বাইসেপটা ফুটে উঠেছে। জিম করা চেহারা, গায়ের রঙ একটু শ্যামলা হলেও হাইট ৬ ফুটের কাছাকাছি হওয়ায় মডেল বলেও মনে হতে পারে। এমন একজনের সাথে ওকে কথা বলতে দেখলে ইন্দ্রানীরা যে কি ভাববে কে জানে। অয়নিকা বলে ওঠে 'সেদিন বাবা আপনার কাজের খুব প্রশংসা করছিলো।' একটু হেসে অনুপ বলে 'আরে না না তেমন কিছু না, বাই দ্য ওয়ে আমি তোমাকে তুমি ই বলছি'।
অয়নিকা- হ্যাঁ বলুন না, আমি তো ছোটো আপনার চেয়ে
অনুপ- আমারো ভালো লাগবে যদি তুমিও আমাকে তুমি করে বলো, আপনিটা শুনলে নিজের ২৭ বয়সটা ৩৭ মনে হয়।
অয়নিকা- আচ্ছা, তবে আমার তো তোমাকে কাকু বলে ডাকা উচিৎ, কারন তুমি তো আমার বাবাকে দাদা বলে ডাকো।
অয়নিকার কথা শুনে ওরা দুজনেই হেসে ওঠে। 'তুমি তো বয়সটা ৩৭ থেকে ৪৭ করে দিলে'-অনুপ বলে 'আরে ওটা ডাকি অফিস সিনিয়র হিসেবে'। অয়নিকা- 'আরে এটা মজা করে বললাম; আজ আসছি তাহলে'। অনুপ -'ভালো লাগলো তোমার সাথে কথা বলে'।
অনুপের থেকে বিদায় নিয়ে ওদের টেবিলে ফিরে আসে অয়নিকা। অয়নিকা আসতেই রিয়া বলে ওঠে 'কি ব্যাপার রে, বয়ফ্রেন্ড জোগাড় করলি নাকি?'। ইন্দ্রানীও সাথ দেয় 'সত্যিই কি হ্যান্ডসাম দেখতে'। অয়নিকা বলে ওঠে 'আরে দুর কি যে বলিস, আমার বাবার অফিস কলিগ, সেদিন একটা অনুষ্ঠানে আলাপ হলো'। তাও ইন্দ্রানী বলে ওঠে 'তাতে কি, যথেষ্ট ইয়ং, আর তুই যদি লাইনে না থাকিস, তাহলে আমার জন্য সেটিং করে দে'। অয়নিকা বুঝতে পারলো ওরা সহজে থামবে না। ও আর কথা না বলে কফিতে মন দিলো। বাড়ি ফেরার সময়ও ওরা দুজন লেগপুলিং করে যাচ্ছিলো। অয়নিকা হাসি ছাড়া আর কোনো কথা বলেনি। বাড়ি ফিরে অয়নিকা দেখে নন্দিতা আন্টি এসছে, ওর মায়ের সাথে গল্প করছে। উনি মাঝে মধ্যেই ওদের বাড়ি আসেন, ওকে দেখেই নন্দিতা বলে ওঠে 'কিরে কলেজ থেকে এলি?'। 'হ্যাঁ, তুমি কতক্ষন?' নন্দিতা- "এই তো ঘন্টাখানেক হলো"। মালবিকা বলে ওঠে 'তুই হাত মুখ ধুয়ে নে, আমি খেতে দিচ্ছি'। অয়নিকা ওর রুমে চলে আসে, কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার আওয়াজ শুনে বোঝে নন্দিতা আন্টি চলে গেল। রাতে শোবার সময় অবশ্য অয়নিকার রিয়া দের করা লেগপুলিং গুলো মনে পড়ে হাসি পেয়ে যায়। তবে অনুপ ছেলেটা সত্যিই হ্যান্ডসাম, এরকম একজন বয়ফ্রেন্ড হলে মন্দ হয় না। ছেলেটা হয়তো ওর বাবার কলিগ, তবে ওর চেয়ে ন বছরের বড়ো। তবে অনুপের গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা সেটা আগে জানা দরকার। মোবাইল টা হাতে তুলে নেয়। অনুপের নাম সার্চ করে ফেসবুকে খুজে পেতে অসুবিধে হয় না। প্রোফাইলে গিয়ে দেখে কোনো কিছুই পাবলিক করা নেই। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট সেন্ড করে নেট অফ করে দেয়। যা হবে ধীরে ধীরে...
অনুষ্ঠান এসে বোর ই হচ্ছিল অয়নিকা (18), যদিও ওর খুব একটা আসার ইচ্ছে ছিলো না, একরকম জোর করেই ওকে আসতে হয়েছে। অয়নিকা মুখার্জী, কলেজে 1st year, শারীরিক গঠন (32-26-32), দেখতে সুশ্রী, হাইট (৫'৩), হাইটটাও শরীরের গঠনের সাথে মানানসই। অয়নিকা এসছে ওর বাবার অফিসের একটা অনুষ্ঠানে। অয়নিকার বাবা অতুল মুখার্জী (47) আর মা মালবিকা (40)। অতুল প্রায় 22 বছর হলো একটি বেসরকারি আইটি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত। ওর অফিসেরই অনুষ্ঠান। ওদের কোম্পানির বস দেবেশ বারবার ওকে আসতে বলেছে ফ্যামিলি নিয়ে। অফিসের প্রায় সব কর্মচারীরাই এসছে। অয়নিকা ওর বাবা মার থেকে একটু দুরে দাড়িয়ে ছিলো, বেশি লোকজন ওর কখনোই পছন্দ না। চারপাশে কয়েকজন চেনাজানা মুখের দেখা পেল, সবাই ওর বাবার কলিগ, সেই সূত্রেই চেনাজানা। হঠাৎ শুনতে পেলো 'কিরে অয়নিকা কেমন আছিস?'। প্রশ্নকর্তাকে চিনতে পারলো, নন্দিতা আন্টি অর্থাৎ নন্দিতা সেনগুপ্ত, বয়স ওর মায়ের মত, হয়তো মালবিকার চেয়ে এক দুবছরের বড়। নন্দিতার বর তাপস আংকেলও অনেকদিন ধরে কোম্পানিতে কর্মরত, ওদের বাড়িতেও গেছে ও। 'ভালো আছি, তোমরা কেমন আছো?'- অয়নিকা বলে ওঠে। 'চলে যাচ্ছে, তোর মায়ের সাথে কথা হলো'- নন্দিতা উত্তর দেয়। অয়নিকা জানে নন্দিতা আন্টি এই 41-42 বছর বয়সেও যথেষ্ট ফ্যাশন কনসিয়াস। ওর মা অবশ্য এসব এ তেমন সড়গড় না। নন্দিতা মালবিকাকে মাঝে মধ্যে পার্লারে যাবার কথা বলে, মালবিকা তেমন একটা গা করে না। অয়নিকা জিজ্ঞেস করে 'তুমি আর আংকেল ই এসছো?'। 'হ্যাঁ রে, তমালকে কত করে বললাম আসতে, কিন্তু এলো না'- নন্দিতা বলে ওঠে। তমাল হল নন্দিতার ছেলে, অয়নিকার চেয়ে বছরখানেকের বড়। অয়নিকা তমালকে ভালো ভাবেই চেনে, ওর এক বান্ধবীর সাথে কিছুদিন রিলেশনে ছিলো, ছেলেটা একটু ফ্লার্টবাজ টাইপের , তবে অয়নিকা খুব একটা পাত্তা দেয়না। নন্দিতা চলে যেতেই ও দেখলো ওর বাবা ওকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। অতুলদের সামনে যেতেই অয়নিকা একজন অপরিচিত যুবককে দেখতে পেল, আগে তাকে দেখেনি, হাইট প্রায় ছয় ফুটের কাছাকাছি, হ্যান্ডসাম চেহারা, হলুদ রঙের ব্লেজারটা ভালোই মানিয়েছে। অতুল বলে উঠলো 'এই হলো আমার মেয়ে অয়নিকা, কলেজে পড়ে ফার্স্ট ইয়ার'। অয়নিকা ছেলেটার দিকে তাকাতেই এবার অতুল ছেলেটার পরিচয় দিলো 'এ হলো অনুপ, অনুপ শর্মা, আগে আমাদের মুম্বই ব্রাঞ্চে ছিলো, মাস ছয়েক হলো আমাদের এখানে এসছে'। 'সত্যিই এতদিন এসছি, আজ আপনাদের সাথে দেখা হলো, খুব ভালো লাগছে অতুলদা'- অনুপ বললো। 'একদিন এসো আমাদের বাড়ি আরও ভালো লাগে'- অতুল হেসে উত্তর দিলো। অনুপ- 'যাবো নিশ্চই যাবো'। এরপর আর বিশেষ কথা হয় না। অয়নিকারা ডিনার সেরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গাড়িতে আসতে আসতে মালবিকা বলে 'অনুপের কথা তো আগে বলোনি, ছেলেটা বেশ মজার'। অতুল বলে ওঠে 'হ্যাঁ কয়েকমাস হল এখানে এসছে, আগে আমাদের মুম্বই ব্রাঞ্চে ছিলো, ছেলেটা চটপটে আর যথেষ্ট স্মার্ট, বছর দুয়েক আগে যখন মুম্বইতে গিয়েছিলাম তখন ওখানে ওর বেশ প্রশংসা শুনেছিলাম, এখানেও যথেষ্ট দক্ষতার সাথেই কাজ করছে'। অয়নিকা অবশ্য এসব কথার মাঝে কোনো কথা বলে না। চুপচাপ শুনে শুধু মনে মনে বলে 'ইন্টারেস্টিং'।
২য় পর্ব :
'শেষ ক্লাস টা বাদ দিই চল'- বলে ওঠে অয়নিকা। সেকেন্ড ক্লাসটা মিনিট তিন-চার হলো শেষ হয়েছে, এখন বাজে একটা, পরের ক্লাস সেই ৩টের সময়। 'আমিও তাই ভাবছি'- বলে ওঠে ইন্দ্রানী। ইন্দ্রানী আর রিয়া এই দুজন হলো অয়নিকার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড। আড্ডা দেওয়া থেকে ক্লাস বাঙ্ক সব কিছুই ওরা একসাথে করে। ইন্দ্রানী আর অয়নিকা সেম হাইট, রিয়া ওদের চেয়ে সামান্য লম্বা। অয়নিকা আর ইন্দ্রানী এখনো সিঙ্গেল , রিয়ার অবশ্য বয়ফ্রেন্ড ছিলো, কিছুদিন আগে ব্রেকআপ হয়েছে। তিনজনই তিনজনের সাথে সব কিছু শেয়ার করে।
'ঠিক আছে চলো, কিন্তু কোথায় যাবি?'- রিয়া জিজ্ঞেস করে ওঠে। 'চল বিগবাজারে আড্ডা দিয়ে বাড়ি যাই'- ইন্দ্রানী বলে ওঠে। ওদের কলেজ থেকে কিছুটা দুরেই বিগবাজার, এর আগেও দুবার কলেজ ছুটির পর এখানে এসছে ওরা, তবে আজ ক্লাস বাঙ্ক করে। 'ঠিক আছে তাহলে তাই চল'- অয়নিকা সম্মতি জানায়। বিগবাজারে এসে একটু ঘোরাঘুরি করে ওরা একটা কফিশপে বসে। তিনজনের জন্য কফি অর্ডার করে, ঠিক এমন সময় একটু দুরের একটা টেবিলে অনুপকে দেখতে পায় অয়নিকা। অনুপ ওকে দেখে হাত দেখায়, অয়নিকা ইন্দ্রানী দের 'আমি একটু আসছি' বলে অনুপের টেবিলের দিকে এগিয়ে যায়। অয়নিকা সামনে আসতেই অনুপ চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে 'কি ব্যাপার এখানে?'। 'হ্যাঁ এই বন্ধুদের সাথে এসছি, আপনি!?'- অয়নিকা উত্তর দেয়। অনুপ বলে 'এই একটু দরকারে আরকি'। অনুপ সেদিন ব্লেজার পড়ায় অয়নিকা ভালো ভাবে বুঝতে পারে নি, আজ টি শার্ট পড়ে থাকায় ওর বাইসেপটা ফুটে উঠেছে। জিম করা চেহারা, গায়ের রঙ একটু শ্যামলা হলেও হাইট ৬ ফুটের কাছাকাছি হওয়ায় মডেল বলেও মনে হতে পারে। এমন একজনের সাথে ওকে কথা বলতে দেখলে ইন্দ্রানীরা যে কি ভাববে কে জানে। অয়নিকা বলে ওঠে 'সেদিন বাবা আপনার কাজের খুব প্রশংসা করছিলো।' একটু হেসে অনুপ বলে 'আরে না না তেমন কিছু না, বাই দ্য ওয়ে আমি তোমাকে তুমি ই বলছি'।
অয়নিকা- হ্যাঁ বলুন না, আমি তো ছোটো আপনার চেয়ে
অনুপ- আমারো ভালো লাগবে যদি তুমিও আমাকে তুমি করে বলো, আপনিটা শুনলে নিজের ২৭ বয়সটা ৩৭ মনে হয়।
অয়নিকা- আচ্ছা, তবে আমার তো তোমাকে কাকু বলে ডাকা উচিৎ, কারন তুমি তো আমার বাবাকে দাদা বলে ডাকো।
অয়নিকার কথা শুনে ওরা দুজনেই হেসে ওঠে। 'তুমি তো বয়সটা ৩৭ থেকে ৪৭ করে দিলে'-অনুপ বলে 'আরে ওটা ডাকি অফিস সিনিয়র হিসেবে'। অয়নিকা- 'আরে এটা মজা করে বললাম; আজ আসছি তাহলে'। অনুপ -'ভালো লাগলো তোমার সাথে কথা বলে'।
অনুপের থেকে বিদায় নিয়ে ওদের টেবিলে ফিরে আসে অয়নিকা। অয়নিকা আসতেই রিয়া বলে ওঠে 'কি ব্যাপার রে, বয়ফ্রেন্ড জোগাড় করলি নাকি?'। ইন্দ্রানীও সাথ দেয় 'সত্যিই কি হ্যান্ডসাম দেখতে'। অয়নিকা বলে ওঠে 'আরে দুর কি যে বলিস, আমার বাবার অফিস কলিগ, সেদিন একটা অনুষ্ঠানে আলাপ হলো'। তাও ইন্দ্রানী বলে ওঠে 'তাতে কি, যথেষ্ট ইয়ং, আর তুই যদি লাইনে না থাকিস, তাহলে আমার জন্য সেটিং করে দে'। অয়নিকা বুঝতে পারলো ওরা সহজে থামবে না। ও আর কথা না বলে কফিতে মন দিলো। বাড়ি ফেরার সময়ও ওরা দুজন লেগপুলিং করে যাচ্ছিলো। অয়নিকা হাসি ছাড়া আর কোনো কথা বলেনি। বাড়ি ফিরে অয়নিকা দেখে নন্দিতা আন্টি এসছে, ওর মায়ের সাথে গল্প করছে। উনি মাঝে মধ্যেই ওদের বাড়ি আসেন, ওকে দেখেই নন্দিতা বলে ওঠে 'কিরে কলেজ থেকে এলি?'। 'হ্যাঁ, তুমি কতক্ষন?' নন্দিতা- "এই তো ঘন্টাখানেক হলো"। মালবিকা বলে ওঠে 'তুই হাত মুখ ধুয়ে নে, আমি খেতে দিচ্ছি'। অয়নিকা ওর রুমে চলে আসে, কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার আওয়াজ শুনে বোঝে নন্দিতা আন্টি চলে গেল। রাতে শোবার সময় অবশ্য অয়নিকার রিয়া দের করা লেগপুলিং গুলো মনে পড়ে হাসি পেয়ে যায়। তবে অনুপ ছেলেটা সত্যিই হ্যান্ডসাম, এরকম একজন বয়ফ্রেন্ড হলে মন্দ হয় না। ছেলেটা হয়তো ওর বাবার কলিগ, তবে ওর চেয়ে ন বছরের বড়ো। তবে অনুপের গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা সেটা আগে জানা দরকার। মোবাইল টা হাতে তুলে নেয়। অনুপের নাম সার্চ করে ফেসবুকে খুজে পেতে অসুবিধে হয় না। প্রোফাইলে গিয়ে দেখে কোনো কিছুই পাবলিক করা নেই। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট সেন্ড করে নেট অফ করে দেয়। যা হবে ধীরে ধীরে...