maruftamimauthor
Member
আচ্ছা কখনও কী বেঞ্চের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়েছেন? আর সেটি যদি হয় আপনার স্কুল অথবা কলেজ কীংবা ভার্সিটিতে।
অন্যদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে কী না জানা নেই তবে আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং একবার নয় দুইবার।
প্রথমবার হয়েছিল যখন আমি নার্সারিতে পড়ি এবং দ্বিতীয়বার হয়েছিল যখন ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
ত প্রথম ঘটনা থেকেই শুরু করা যাক।
আমি বরারবর একটু ঘুম কাতুরে মানুষ এত সকালে আমার ঘুম ভাঙে না সহজে তাই স্কুলে যাওয়া নিয়েও আমার একধরনের এলার্জি ছিল এবং অনেক কাহিনী করে তারপর স্কুলে যেতে হত আমাকে নিয়ে। সে সব না হয় অন্য কোনোদিন বলব।
আমি যখন খুলনা প্রি-ক্যাডেট স্কুলে নার্সারিতে ভর্তি হই তখন আমাকে ক্লাস করতে যেতে হত সেই সকাল ৭টায় যা আমার জন্য খুবই কষ্টকর ছিল তারপরও যেতে হত অনেক রকম নাটক করার পর।
যাই হোক তারপরও ক্লাস করতে যেতাম এবং এভাবে একদিন আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হল।
পরীক্ষার সময় ছিল ২ঘন্টা করে এবং আমার মনে আছে ঐদিন আমাদের ইংরেজী পরীক্ষা ছিল।
আমি পরীক্ষা দিতে যাই আম্মু আমাকে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দিয়ে বাইরে চলে যান। এরপর মিস এসে খাতা দেন আমরা পরীক্ষা শুরু করি।
আর বলতে গেলে ইংরেজী আমার সব সময় এর জন্য পছন্দের এবং সহজ একটি বিষয় লাগে তাই আমার পরীক্ষাটিও খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আমি খাতা জমা দিয়ে দেই কিন্তু আমাকে হল থেকে বের হতে দেওয়া হয় না কারণ পরীক্ষা শেষ হতে আরও অনেকটা সময় বাকী ছিল তাছাড়া আমি ছোট মানুষ যদি এখন ছেড়ে দেয় কোথায় না কোথায় চলে যাই ওর থেকে পরীক্ষা সবার শেষ হলে এক সাথে লাইন করে বের করে নিয়ে যায় বাইরে এই ছিল উনাদের নিয়ম।
এখন আমি খাতা জমা দিয়ে দিয়েছি আমার হাতে আর কিছু করার নাই চুপ করে বসে থাকা ছাড়া তখন মিস এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন "বাবু তুমি বেঞ্চের উপরে মাথা রেখে চুপ শুয়ে থাকো পরীক্ষা শেষ হলে তোমার আম্মু নিয়ে যাবেন এসে।"
মিস এর কথা মত আমিও চুপ করে বেঞ্চে মাথা রেখে শুয়ে পড়ি। এবং কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর টের পাই আমার আম্মু এসে আমাকে ডাকতেছেন আমি উঠে দেখি যে আশেপাশে কেউ নাই ক্লাসের ভিতরে আমার সামনে শুধু মিস বসে বসে খাতা গুছিয়ে রাখছেন।
আম্মু আমাকে বলতেছেন "কী ব্যপার তুমি এভাবে ঘুমায় গেছিলে কেন? পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে কখন সবাই বের হয়ে গেছে তুমি বের হও না পরে আমি আসছি তোমাকে দেখার জন্য আর এসে দেখি তুমি ঘুমায়ে আছো।"
তখন বুঝতে পারলাম বেঞ্চে মাথা রেখে ঘুমায় গেছিলাম।
আর সেই কাহিনী এখনও আম্মু আমাকে মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেন।
এবার দ্বিতীয় ঘটনার কথা কেউ জানে না বিশেষ করে আমার বাসা এবং বন্ধু মহলেরও অনেকে জানে না।
তখন আমি খুলনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
তবে একটি কথা বলে রাখা ভালো আমি যখন ৬ষ্ট শ্রেনীতে পড়ি তখন থেকেই রাত জাগতে শুরু করি অর্থাৎ রাত্রে জেগে থাকতাম আর দিনে ঘুমাতাম।
তখন আমার স্কুলে ক্লাস থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কিন্তু মাঝে মাঝে স্কুলে যেতাম আবার মাঝে মাঝে যেতাম না। না যাওয়ার সংখ্যাটাই বেশি ছিল।
ঠিক এমনই একদিন স্কুলে যাই সারারাত জেগে থাকার পর সকালে উঠে স্কুলে যাই চোখে কিছুটা ক্লান্তি বা ঘুমের আভাস রয়েছে। যাই হোক এই অবস্থাতেই স্কুলে যাই।
যথারিতী আমাদের ক্লাস শুরু হয় বলে রাখা ভালো আমাদের প্রতিটি ক্লাস এর সময় ছিল ৪০মিনিট করে।
প্রথম চারটি ক্লাস হওয়ার পর টিফিন দেয় এরপর আরও তিনটি ক্লাস করিয়ে তারপর ছুটি দেয়।
যাই হোক প্রথম দুইটি ক্লাস খুব ভালোভাবেই করলাম কিন্তু তৃতীয় ক্লাস থেকেই কাহিনী শুরু।
আমাদের স্কুলে একজন স্যার ছিলেন নাম নিব না কারণ নাম বললে চাকরি থাকবে না। উনি আমাদের বাংলা ১ম পত্র এবং ইসলাম শিক্ষা ক্লাস নিতেন।
উনাকে আমরা সবাই চুপচাপ স্যার বলতাম এর একটি কারণ রয়েছে যা আমি আস্তে আস্তে বলব।
তৃতীয় পিরিয়ডে উনার ক্লাস শুরু হয় এবং উনি ক্লাসে আসার পর আমরা সবাই চুপ হয়ে যাই এর কারণ হল উনি আমাদের ক্লাসে এসে বলতেন" তোরা সবাই চুপ করে থাকবি একটারও যেন দাত বের হতে না দেখি। আমি পড়ব তোরা শুনবি চুপ করে যদি কেউ কথা বলিস তাহলে আগের দিনের পড়া ধরব তখন না পারলে খবর আছে।"
এবার উনার বিষয়ে একটু বলি কেন উনাকে আমরা চুপচাপ স্যার বলতাম। উনার পড়ানোর ধরণ ছিল ক্লাসে আসতেন সবাইকে চুপ করে বসে থাকতে বলতেন এবং উনি নিজে নিজে একটি গল্প পড়তেন আর আমরা শুনতাম এরপর ক্লাস শেষে তিনি ঐ অধ্যায়ের প্রশ্ন এবং টিকচিহ্ন পড়ে আসতে বলতেন বাসা থেকে। যা আমরা যারা বেকবেঞ্চার ছিলাম তারা কখনওই পড়তাম না।
উনার ক্লাসের প্লাস পয়েন্ট ছিল যদি কেউ চুপ করে বসে থাকে তাহলে তার থেকে আর পড়া নেন না যার কারণে আমরা পড়া করতাম না চুপচাপ বসেই উনার বক বক শুনতাম।
এবার গল্পে ফিরে আসা যাক -
প্রথম দুই পিরিয়ড পর তিন নাম্বার পিরিয়ড শুরু হয় এবং আমাদের চুপচাপ স্যার তার জোড়া বেত হাতে নিয়ে হেলেদুলে ক্লাসে প্রবেশ করেন। ক্লাসে প্রবেশ করেই উনার সেই মহামূল্যবান সংলাপ আমাদের উপর নিক্ষেপ করেন যা হল "এই তোরা সব চুপ করে বসে থাক দাত যেন না দেখা যায় তাহলে কিন্তু পড়া ধরব আর না পারলে বেঞ্চের নিচে মাথা রেখে পাছা লাল করে দিব।"
উনার কথা মত আমরা সব চুপচাপ আর আমিও বেঞ্চে মাথা রেখে চুপ করে থাকি উনি পড়তে শুরু করেন। এভাবে আস্তে আস্তে আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায় অর্থাৎ আমি ঘুমের দেশে হারিয়ে যাই।
আমার পাশে বসে থাকা একজনের ডাকে আমার ঘুম ভাঙে উঠে দেখি সবাই চলে যাচ্ছে এক এক করে তখন আমার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বিকাল ৪টা বেজে গিয়েছে।
ঘড়ির সময় দেখে আমি অবাক তারমানে আমি এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম। কীভাবে সম্ভব। সামনে আমার বেঞ্চে তাকিয়ে দেখি স্কুল থেকে যে টিফিন দেওয়া হয়েছে সেটাও রয়েছে একপাশে।
তাহলে সেই সকাল ১১টা ২০ থেকে শুরু করে আমি বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঘুমায়ে ছিলাম। এর মাঝে ২টা ক্লাস হয়েছে তারপর টিফিন এর সময় চলে গিয়েছে তারপর আবার ৩টা ক্লাস হয়ে গেছে। কিন্তু এত সময় ধরে ঘুমিয়ে ছিলাম কেউ ডাকেও নাই।
আমি তখন আমার পাশের ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করলাম "তুই আমাকে ডাকিস নাই কেন এতক্ষণ ঘুমায়ে ছিলাম আর স্যার ম্যাডামরা দেখে নাই কেউ?"
তখন সে বলল " আমাদের মত বেক বেঞ্চারদের দিকে কী আর কারও নজর যায় তুই ঐ কোণায় ঘুমায়ে ছিলি কেউ দেখেও নাই আর আমরাও ডাকি নাই ঘুমায়ে থাক তোর টিফিন দিলে আমি পাশে রেখে দিছি। কিন্তু ভাই তুই এত ঘুমাইতে পারিস আগে জানা ছিল না।"
এই ঘটনা এখনও মনে পড়লে হাসি আসে এবং এরপর থেকে আর কখনও বেঞ্চে মাথা দেই নাই কারণ আমি জানি যেকোনো ভাবে আমার ঘুম চলে আসবে।
আর আমার অভ্যাস আছে যেকোনো পরিবেশে ঘুমিয়ে যাওয়ার যার কারণে আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে ঘুম কুমার বলে এমনকি ওরা বলে আমি নাকি চিকন দড়ির উপর ঝুলে থেকেও ঘুমিয়ে যেতে পারব হা হা হা।
জীবন বড়ই অদ্ভুত কত রকমের ঘটনা ঘটে যায় যা তখন মনে হয় না কিন্তু পরে গিয়ে মনে পড়লে অজান্তেই অন্য রকম অনুভুতি চলে আসে।
অন্যদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে কী না জানা নেই তবে আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং একবার নয় দুইবার।
প্রথমবার হয়েছিল যখন আমি নার্সারিতে পড়ি এবং দ্বিতীয়বার হয়েছিল যখন ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
ত প্রথম ঘটনা থেকেই শুরু করা যাক।
আমি বরারবর একটু ঘুম কাতুরে মানুষ এত সকালে আমার ঘুম ভাঙে না সহজে তাই স্কুলে যাওয়া নিয়েও আমার একধরনের এলার্জি ছিল এবং অনেক কাহিনী করে তারপর স্কুলে যেতে হত আমাকে নিয়ে। সে সব না হয় অন্য কোনোদিন বলব।
আমি যখন খুলনা প্রি-ক্যাডেট স্কুলে নার্সারিতে ভর্তি হই তখন আমাকে ক্লাস করতে যেতে হত সেই সকাল ৭টায় যা আমার জন্য খুবই কষ্টকর ছিল তারপরও যেতে হত অনেক রকম নাটক করার পর।
যাই হোক তারপরও ক্লাস করতে যেতাম এবং এভাবে একদিন আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হল।
পরীক্ষার সময় ছিল ২ঘন্টা করে এবং আমার মনে আছে ঐদিন আমাদের ইংরেজী পরীক্ষা ছিল।
আমি পরীক্ষা দিতে যাই আম্মু আমাকে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দিয়ে বাইরে চলে যান। এরপর মিস এসে খাতা দেন আমরা পরীক্ষা শুরু করি।
আর বলতে গেলে ইংরেজী আমার সব সময় এর জন্য পছন্দের এবং সহজ একটি বিষয় লাগে তাই আমার পরীক্ষাটিও খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আমি খাতা জমা দিয়ে দেই কিন্তু আমাকে হল থেকে বের হতে দেওয়া হয় না কারণ পরীক্ষা শেষ হতে আরও অনেকটা সময় বাকী ছিল তাছাড়া আমি ছোট মানুষ যদি এখন ছেড়ে দেয় কোথায় না কোথায় চলে যাই ওর থেকে পরীক্ষা সবার শেষ হলে এক সাথে লাইন করে বের করে নিয়ে যায় বাইরে এই ছিল উনাদের নিয়ম।
এখন আমি খাতা জমা দিয়ে দিয়েছি আমার হাতে আর কিছু করার নাই চুপ করে বসে থাকা ছাড়া তখন মিস এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন "বাবু তুমি বেঞ্চের উপরে মাথা রেখে চুপ শুয়ে থাকো পরীক্ষা শেষ হলে তোমার আম্মু নিয়ে যাবেন এসে।"
মিস এর কথা মত আমিও চুপ করে বেঞ্চে মাথা রেখে শুয়ে পড়ি। এবং কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর টের পাই আমার আম্মু এসে আমাকে ডাকতেছেন আমি উঠে দেখি যে আশেপাশে কেউ নাই ক্লাসের ভিতরে আমার সামনে শুধু মিস বসে বসে খাতা গুছিয়ে রাখছেন।
আম্মু আমাকে বলতেছেন "কী ব্যপার তুমি এভাবে ঘুমায় গেছিলে কেন? পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে কখন সবাই বের হয়ে গেছে তুমি বের হও না পরে আমি আসছি তোমাকে দেখার জন্য আর এসে দেখি তুমি ঘুমায়ে আছো।"
তখন বুঝতে পারলাম বেঞ্চে মাথা রেখে ঘুমায় গেছিলাম।
আর সেই কাহিনী এখনও আম্মু আমাকে মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেন।
এবার দ্বিতীয় ঘটনার কথা কেউ জানে না বিশেষ করে আমার বাসা এবং বন্ধু মহলেরও অনেকে জানে না।
তখন আমি খুলনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
তবে একটি কথা বলে রাখা ভালো আমি যখন ৬ষ্ট শ্রেনীতে পড়ি তখন থেকেই রাত জাগতে শুরু করি অর্থাৎ রাত্রে জেগে থাকতাম আর দিনে ঘুমাতাম।
তখন আমার স্কুলে ক্লাস থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কিন্তু মাঝে মাঝে স্কুলে যেতাম আবার মাঝে মাঝে যেতাম না। না যাওয়ার সংখ্যাটাই বেশি ছিল।
ঠিক এমনই একদিন স্কুলে যাই সারারাত জেগে থাকার পর সকালে উঠে স্কুলে যাই চোখে কিছুটা ক্লান্তি বা ঘুমের আভাস রয়েছে। যাই হোক এই অবস্থাতেই স্কুলে যাই।
যথারিতী আমাদের ক্লাস শুরু হয় বলে রাখা ভালো আমাদের প্রতিটি ক্লাস এর সময় ছিল ৪০মিনিট করে।
প্রথম চারটি ক্লাস হওয়ার পর টিফিন দেয় এরপর আরও তিনটি ক্লাস করিয়ে তারপর ছুটি দেয়।
যাই হোক প্রথম দুইটি ক্লাস খুব ভালোভাবেই করলাম কিন্তু তৃতীয় ক্লাস থেকেই কাহিনী শুরু।
আমাদের স্কুলে একজন স্যার ছিলেন নাম নিব না কারণ নাম বললে চাকরি থাকবে না। উনি আমাদের বাংলা ১ম পত্র এবং ইসলাম শিক্ষা ক্লাস নিতেন।
উনাকে আমরা সবাই চুপচাপ স্যার বলতাম এর একটি কারণ রয়েছে যা আমি আস্তে আস্তে বলব।
তৃতীয় পিরিয়ডে উনার ক্লাস শুরু হয় এবং উনি ক্লাসে আসার পর আমরা সবাই চুপ হয়ে যাই এর কারণ হল উনি আমাদের ক্লাসে এসে বলতেন" তোরা সবাই চুপ করে থাকবি একটারও যেন দাত বের হতে না দেখি। আমি পড়ব তোরা শুনবি চুপ করে যদি কেউ কথা বলিস তাহলে আগের দিনের পড়া ধরব তখন না পারলে খবর আছে।"
এবার উনার বিষয়ে একটু বলি কেন উনাকে আমরা চুপচাপ স্যার বলতাম। উনার পড়ানোর ধরণ ছিল ক্লাসে আসতেন সবাইকে চুপ করে বসে থাকতে বলতেন এবং উনি নিজে নিজে একটি গল্প পড়তেন আর আমরা শুনতাম এরপর ক্লাস শেষে তিনি ঐ অধ্যায়ের প্রশ্ন এবং টিকচিহ্ন পড়ে আসতে বলতেন বাসা থেকে। যা আমরা যারা বেকবেঞ্চার ছিলাম তারা কখনওই পড়তাম না।
উনার ক্লাসের প্লাস পয়েন্ট ছিল যদি কেউ চুপ করে বসে থাকে তাহলে তার থেকে আর পড়া নেন না যার কারণে আমরা পড়া করতাম না চুপচাপ বসেই উনার বক বক শুনতাম।
এবার গল্পে ফিরে আসা যাক -
প্রথম দুই পিরিয়ড পর তিন নাম্বার পিরিয়ড শুরু হয় এবং আমাদের চুপচাপ স্যার তার জোড়া বেত হাতে নিয়ে হেলেদুলে ক্লাসে প্রবেশ করেন। ক্লাসে প্রবেশ করেই উনার সেই মহামূল্যবান সংলাপ আমাদের উপর নিক্ষেপ করেন যা হল "এই তোরা সব চুপ করে বসে থাক দাত যেন না দেখা যায় তাহলে কিন্তু পড়া ধরব আর না পারলে বেঞ্চের নিচে মাথা রেখে পাছা লাল করে দিব।"
উনার কথা মত আমরা সব চুপচাপ আর আমিও বেঞ্চে মাথা রেখে চুপ করে থাকি উনি পড়তে শুরু করেন। এভাবে আস্তে আস্তে আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায় অর্থাৎ আমি ঘুমের দেশে হারিয়ে যাই।
আমার পাশে বসে থাকা একজনের ডাকে আমার ঘুম ভাঙে উঠে দেখি সবাই চলে যাচ্ছে এক এক করে তখন আমার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বিকাল ৪টা বেজে গিয়েছে।
ঘড়ির সময় দেখে আমি অবাক তারমানে আমি এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম। কীভাবে সম্ভব। সামনে আমার বেঞ্চে তাকিয়ে দেখি স্কুল থেকে যে টিফিন দেওয়া হয়েছে সেটাও রয়েছে একপাশে।
তাহলে সেই সকাল ১১টা ২০ থেকে শুরু করে আমি বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঘুমায়ে ছিলাম। এর মাঝে ২টা ক্লাস হয়েছে তারপর টিফিন এর সময় চলে গিয়েছে তারপর আবার ৩টা ক্লাস হয়ে গেছে। কিন্তু এত সময় ধরে ঘুমিয়ে ছিলাম কেউ ডাকেও নাই।
আমি তখন আমার পাশের ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করলাম "তুই আমাকে ডাকিস নাই কেন এতক্ষণ ঘুমায়ে ছিলাম আর স্যার ম্যাডামরা দেখে নাই কেউ?"
তখন সে বলল " আমাদের মত বেক বেঞ্চারদের দিকে কী আর কারও নজর যায় তুই ঐ কোণায় ঘুমায়ে ছিলি কেউ দেখেও নাই আর আমরাও ডাকি নাই ঘুমায়ে থাক তোর টিফিন দিলে আমি পাশে রেখে দিছি। কিন্তু ভাই তুই এত ঘুমাইতে পারিস আগে জানা ছিল না।"
এই ঘটনা এখনও মনে পড়লে হাসি আসে এবং এরপর থেকে আর কখনও বেঞ্চে মাথা দেই নাই কারণ আমি জানি যেকোনো ভাবে আমার ঘুম চলে আসবে।
আর আমার অভ্যাস আছে যেকোনো পরিবেশে ঘুমিয়ে যাওয়ার যার কারণে আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে ঘুম কুমার বলে এমনকি ওরা বলে আমি নাকি চিকন দড়ির উপর ঝুলে থেকেও ঘুমিয়ে যেতে পারব হা হা হা।
জীবন বড়ই অদ্ভুত কত রকমের ঘটনা ঘটে যায় যা তখন মনে হয় না কিন্তু পরে গিয়ে মনে পড়লে অজান্তেই অন্য রকম অনুভুতি চলে আসে।