What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অবিশ্বাস্য প্রাণীজগৎঃ হ্যামারহেড ওয়ার্ম (1 Viewer)

WhisperBD

Experienced Member
Joined
Jul 24, 2024
Threads
59
Messages
1,367
Credits
12,284
GwkoJOR.jpeg


পুরো বিশ্বে বিভিন্ন বিচিত্র ধরনের প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে আমরা কয়েকটি প্রাণীকে চিনলেও, এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যা আমরা কখনও দেখিনি এবং এদের সম্পর্কে কিছুই জানি না। সেই সকল বিভিন্ন ধরনের প্রাণী সম্পর্কে কিছু না জানার ফলে আমরা তাদের থেকে হতে পারা বিপদ সম্পর্কেও কিছুই জানতে পারি না। কয়েকটি কীট-পতঙ্গ পরিবেশের জন্য উপকারী হলেও, এমন অনেক ধরনের কীট-পতঙ্গ রয়েছে যারা খুবই বিষাক্ত ধরনের হয়।

এমনই এক ধরনের বিষাক্ত একটি কীট হল উপরের ছবিতে দেখানো হ্যামারহেড ওয়ার্ম (Hammerhead Worm) বা হাতুড়ি মাথার কীট। এই বিষাক্ত কীটের নাম থেকেই পরিষ্কার যে, এই কীটের মাথার আকৃতি হাতুড়ির মতো হয়। দেখতে অনেকটা লম্বাটে জোঁকের মতো, মাথার দিকটা পাশাপাশি প্রশস্ত হওয়ায় হাতুড়ির মতো দেখতে লাগে। এই বিষাক্ত ধরনের কীট দেখতে বড় না হলেও, এটি খুবই মারাত্মক শ্রেণীর একটি প্রাণী।
 
Q2EZyxR.jpeg


বিষাক্ত কীট হ্যামারহেড ওয়ার্মের শিকার করার পদ্ধতি বেশ আজব ধরনের। এটি দেখতে অনেকটা স্লাইমের মতো হলেও, আদতে খুবই ভয়ানক ধরনের একটি প্রাণী। সাধারণত এই ধরনের বিষাক্ত কীট তার শিকার দেখেই তার চারপাশে এক ধরনের তরল পদার্থ ফেলতে থাকে। এটি এক ধরনের চটচটে তরল পদার্থ। এই ধরনের তরল পদার্থে শিকার আটকে যায় এবং হ্যামারহেড ওয়ার্ম তাকে নিজের খাবার বানায়। হ্যামারহেড ওয়ার্ম টেট্রোডোটক্সিন (Tetrodotoxin) নামের একটি কেমিক্যাল বের করে নিজের শরীর থেকে, যা তার শিকারের দেহকে তরলে পরিণত করে দেয়। শিকারের দেহ তরলে পরিণত হওয়ার পর হ্যামারহেড ওয়ার্ম ধীরে ধীরে সেটি পান করে ফেলে।

আমরা জানি যে আর্থওয়ার্ম অর্থাৎ কেঁচোকে পরিবেশের জন্য বিশেষ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এহেন উপকারী কেঁচোর জন্য ভয়ংকর দু:সংবাদ হয়ে এসেছে এই Hammerhead Worm, যাদের প্রধান খাদ্যই হলো এই কেঁচো। এই কীটগুলো যখন কেঁচোর খোঁজ পায়, তার পিছু ধাওয়া করে। নাগালে এলেই এই উদ্ভট কীটের মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে চোয়াল সমেত দাঁত, কেঁচোটিকে কয়েকটা টুকরা করে ফেলে তার চারদিকে মিউকাসের আবরন তৈরি করে একটি বিশেষ এনজাইম বা পাচক রস প্রবেশ করিয়ে দেয়। কেঁচোর টুকরাগুলো স্যুপে পরিণত হলে ঝটপট খেয়ে নেয়।
 
IhpImtX.jpeg


হ্যামারহেড ওয়ার্ম সাধারণত দেখা যায় ইউরোপ ও আমেরিকায়। এদের পছন্দের জায়গা হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন শীতল স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা। অতিরিক্ত শুস্ক বা ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না।

মজার বিষয় হচ্ছে এই প্রাণিকে মারতে চাইলে আপনাকে বিরাট দুর্ভোগ পোহাতে হবে। আপনি হয়তো আপনার বাগানে হ্যামারহেড ওয়ার্ম দেখে খুব রাগ চেপে গেলো। নিড়ানি দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেললেন, ভাবলেন অনেকগুলো কেঁচোর জীবন বাঁচালেন। না আপনার ভাবনা সত্যি হবে না। কেননা একে মেরে রক্তাক্ত, ছিন্নভিন্ন, থ্যাতলা করলেও এ মরবে না। একে যদি কেটে দুই টুকরোও করে ফেলেন, তাও এ মরবে না। প্রত্যেক টুকরো থেকে আলাদা আলাদা প্রাণি সৃষ্টি হবে। এরা প্রধানত যৌণমিলনের পরে ডিমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। এছাড়াও ফ্রাগমেন্টশন বা শারীরিক বিচ্ছিন্নতার মাধ্যমেও এরা বংশবৃদ্ধি করে থাকে। লেজটাকে আটকে দিয়ে শরীরের নিচের দিকটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সে বিচ্ছিন্ন অংশটা কয়েক দিনের মাঝে নতুন কীট হয়ে ওঠে। আপনি হ্যামারহেড ওয়ার্মকে যতগুলো টুকরা করেছেন, দুয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই টুকরাগুলো একেকটা পূর্ণাঙ্গ হ্যামারহেড ওয়ার্মে রূপান্তরিত হয়ে যাবে।
 
HsO3idF.jpeg


হ্যামারহেড ওয়ার্ম মানুষ বা অন্যান্য জীবের সরাসরি কোন ক্ষতির কারণ হয় না। তবে প্রাকৃতিক লাঙ্গল কেঁচোর বিনাশ সাধন করে পরোক্ষভাবে বেশ হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ গাছপালা এবং ফসলের বৃদ্ধির সহায়ক কেঁচোকে এরা খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। ফলে কেঁচোকে হত্যা করে ফেললে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এবং যার প্রভাব পড়তে পারে প্রকৃতির ওপরে। এর ফলে কেঁচোর শত্রু হ্যামারহেড ওয়ার্ম এমনিতেই প্রকৃতির শত্রু হিসাবে পরিচিত। এই কারনেই বিজ্ঞানীরা আবেদন করেছেন যে হ্যামারহেড ওয়ার্ম দেখতে পেলেই তাকে মেরে ফেলা দরকার।

(তথ্যসূত্র: বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহিত, সংকলিত ও পরিমার্জিত)

আপনার মূল্যবান সময়ের জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি ফোরামের সাথে থাকবেন এবং একে অন্যকে উৎসাহ যোগাবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top