What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অবৈধ (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,428
Messages
16,363
Credits
1,541,694
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
অবৈধ - by Max87

lrIhFsl.jpg


আপডেট ১:

মুখ্য চরিত্র : নাগেশ্বর রায়চৌধুরী - ৪৮ বছর, উচ্চতা - ৬' ৪", ছাতি - ৫৪", শক্তিশালী দৈহিক গঠন
অনুপমা সেন : ২১ বছর, উচ্চতা - ৫'4", গঠন - ৩৪/৩০/৩৬, অসাধারণ কামুক গঠন

নাগেশ্বর সচরাচর অনুষ্ঠান বাড়ি এড়িয়েই চলেন। খুব পরিচিত না হলে যোগ দেননা। আজকের বিয়ে বাড়িতে আসার কারণ বাল্যবন্ধু পরিমলের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে। বহুদিনের পুরানো বন্ধুর আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারেননি। সাধারণত তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও উপহার দিয়ে বিদায় নেন। ভীড় তেমন পছন্দ নয় নাগেশ্বরের। নিজেকে বরাবর আর পাঁচজনের থেকে আলাদা রাখতেই বেশি ভালোবাসেন। তাই তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও, হয় একটু তাড়াতাড়ি আসেন নাহলে একটু রাত করে। একনিষ্ঠ নিয়মানুবর্তীতা রক্ষার জন্য বিয়ে বাড়ির খাবারও তিনি বিশেষ গ্রহণ করেন না। কিন্তু আজকের দিনটা ব্যতিক্রম। তাড়াতাড়ি আসলেও শুধু উপহার দিয়ে বিদায় নিতে পারেননি, বন্ধুর পীড়াপীড়িতে। পরিমল কথা আদায় করে নিয়েছে, কন্যাদানের পরে পরিমলের সাথে খেয়ে তবে তিনি বাড়ি যেতে পারবেন। কথা দিলে তিনি কথার খেলাপ করেন না। তাই বিয়ে বাড়ির এককোনে নিজের মনে বসে বিয়ে বাড়ির লোকজনের ওপর নজর রাখছিলেন।

নিজেকে একপাশে রাখলেও বিয়ে বাড়ির সবাই ওনাকে বেশ সমীহের চোখেই দেখছিলো। বিশেষ করে ওনার ঐ ব্যাক্তিত্বময় পৌরষত্বের দিকে অল্পবয়সী থেকে মাঝবয়সী সমস্ত মেয়েদেরই নজর চলে যাচ্ছিলো। নাগেশ্বরের এসব গা সওয়া হয়ে গেছে। দু - একজন আলাপ জমাতে এলেও উনি অল্প কথায় পাশ কাটিয়েছেন। ওনার গাম্ভীর্য্যের জন্য বাকি মেয়ে বউরা আর বেশি এগোয় নি। কিন্তু নজরও সরায়নি।

অবশ্য তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এই বয়সেও দীর্ঘ ঋজু দেহ। সাথে ব্যায়ামের জন্য বেশ শক্তিশালী। সাফারী পরে থাকলেও তার চালচলন বা বসার ভঙ্গিমায় একটা কর্তৃত্ত ভাব আছে। যেটা তাকে মানায়ও।

নাগেশ্বর নিজের মনে নিজের ব্যবসার কথা চিন্তা করতে করতেই হালকা নজর সবার ওপর বোলাচ্ছিলেন। চোখ আটকালো আন্দাজ বছর ২০-২২ এর মেয়ের ওপর। মেয়েটাকে বেশ চোখে ধরলো নাগেশ্বরের। বেশ ভালো করে মেয়েটার ওপর পর্যবেক্ষণ করলেন। দেবুর জন্য বেশ মানাবে মেয়েটাকে। বেশ চটপটে কিন্তু দৃঢ়তা আছে মেয়েটার। এই বয়সী মেয়েদের মধ্যে যেটা দুর্লভ, তার ওপর এমন আগুন রূপ। সচরাচর দেখা যায় না। বেশ আঁটোসাঁটো ময়ূরকন্ঠী নীল রঙের ব্লাউসের ওপর দিয়ে তার দুই উঁচু টলমলে যৌবন, যেকোন পুরুষের মনে নেশা ধরাবে। সাদা ওড়না বাঁ কাঁধে। সাদা লেহেঙ্গা আর ব্লাউসের মাঝে মসৃন পেট উন্মুক্ত। সাথে গভীর নাভীটাও। মনে মনে মেয়েটার ব্যাপারে পরিমলের কাছে খোঁজখবর করবেন ঠিক করে নিলেন।

সন্ধ্যা রাতেই বিয়ের লগ্ন ছিল। তাই বিয়ের ঝামেলা মিটতে মিটতে সোয়া এগারোটা হয়ে গেলো। বিয়ে মিটতেই পরিমল নাগেশ্বরকে খাবারের জন্য আহ্বান করলো। পরিমল নিজের ভারাক্রান্ত মনকে অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য নাগেশ্বরের সাথেই এক টেবিলে খেতে বসলো। কথায় কথায় নাগেশ্বর সন্ধ্যেবেলায় দেখা মেয়েটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো।

- আজ সন্ধ্যায় নীল ব্লাউস আর সাদা ঘাগড়ায় একটা মেয়ে কে লক্ষ্য করলাম। মেয়েটা কে জানিস?
- কে? ও বুঝেছি, তুই অনুপমার কথা বলছিস। ও আমার মেয়ের বন্ধু। কেন বলতো ?
- কেন আবার, বুঝতেই পারছিস, বয়স হচ্ছে, ছেলেটার একটা হিল্লে করতে চাই, তাই। মেয়েটার বাবা কি করে? মেয়েটা কেমন কিছু জানিস?
- কি এমন বুড়ো হয়েছিস। বুড়ো তো আমি হয়েছি, তোকে এখনো পুরো জোয়ান লাগে। স্বাস্থ্য সত্যি তুই মেইনটেইন করেছিস বটে। তবে, তোর পছন্দের তারিফ করতে হয়। ভালো মেয়ে, তবে একটু একরোখা কিন্তু। আর ওর বাবা ব্যাংকে কাজ করে।
- তোর আপত্তি না থাকলে, ওর বাবার সাথে কথা বলাতে পারবি?
- কেন পারবো না। তবে একটু সময় দে। এদিকটা একটু সামলে নিতে দে। তোর বাড়িতে মেয়েটা বৌ হিসাবে গেলে আমারও ভালো লাগবে। বড় বাড়ির বৌ হবার যোগ্য মেয়ে।
- এরকম ভাবিস না। তোর মেয়েও খুব ভালো, আর তোর জামাই খুব ভালো। শুধু টাকাতে কি মানুষ সুখী হয়। তাহলে তো আমি সুখী হতাম।
- জানি, সরি, আমি ওভাবে বলতে চাইনি।
- আমি কিছু মনে করিনি। তুই একটু সামলে নিয়ে আমার ব্যাপারটা দেখ। সেটাই আমিও চায়।

সেদিন কথাবার্তা ওই পর্যন্তই করে রাখলো নাগেশ্বর।
 
আপডেট ২:

আগের পার্টে পাঠক আর পাঠিকারা এটুকু বুঝেছেন, নাগেশ্বর তার ছেলের জন্য পুত্রবধূ খুঁজছে। কিন্তু সেই ঘটনায় যাবার আগে, নাগেশ্বরের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানায়। নাগেশ্বরের পূর্বপুরুষ দেশ স্বাধীন হবার আগে বড় জমিদার ছিলেন। ইংরেজ আমলে রায়চৌধুরী খেতাবও পেয়েছিল। জমিদারী কোথায় ছিল, সেটা এখন আর কোনো মানে রাখে না। জমিদারী চলে যাবার পরে, নাগেশ্বরের দাদু, ব্যবসা শুরু করেন। জুটমিলের ব্যবসা থেকে হাতেখড়ি করেন। পরে নাগেশ্বরের বাবা সেই জুটমিলের ব্যবসায় আরো বাড়ায়। একটা কারখানা থেকে ৮ খানা কারখানায় নিয়ে যান। তবে নাগেশ্বর অন্য্ ধাতের। তিনি শুধু জুটের ব্যবসায় বাঁধা থাকতে চাননি। নিজের দমে আরো চার-পাঁচ রকমের ব্যবসা শুরু করেন। এককথায় বলা যায়, ছোটোখাটো বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠেন।
জমিদারী চলে যাবার পরে নাগেশ্বরের দাদু জমিদারীর বেশির ভাগ জমি বিক্রী করে ব্যবসা শুরু করেন। পুরো পরিবারকে নিয়ে কলকাতায় চলে যান। কিন্তু, বাঁকুড়া শহরের কাছের কিছু জমি বিক্রী করেন নি। নাগেশ্বর ওই জমির ওপরেই নিজের মতো করে এখন একটা বাংলো বানিয়ে থাকেন। কলকাতা শহরের ভিড় আর জমজমাট তার ভালো লাগে না। কারণ, নিজের স্ত্রী মারা যাবার পরে আর কলকাতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আর ছিল না। নিজেকে একটু একা করে নিয়েছিলেন। তবে মাসে এক-দুবার কলকাতায় যান ব্যবসার কাজে। বাকি সব গ্রামে থেকেই পরিচালনা করেন। কলকাতার বাড়িতে শুধু দেবরাজ মানে তার ছেলে থাকে।

জমিদারী গেলেও, পরিবারের কিছু রীতিনীতি এখন আছে। তার একটা হলো, ছেলে হলে ২১ এর আগে আর মেয়ে হলে ১৬ র আগে বিয়ে দিতে হবে। নাগেশ্বরের বাবাও, রীতি মেনে নাগেশ্বরের বিয়ে ২১ এই দিয়ে দেন। সুন্দরী বৌয়ের সাথে ন বছর কাটিয়েছিলেন। ভালোবেসে ফেলেছিলেন খুব, নিজের স্ত্রীকে। তাই ক্যান্সারে স্ত্রী বিয়োগ হলে, মনের দুঃখে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। প্রথমে ছেলের সাথে থাকলেও, পড়াশোনার জন্য কলকাতার বাড়িতেই রাখেন। সাথে দেখাশোনা করার জন্য চাকর-বাকরও।

কিছুটা আধুনিক মানসিকতার জন্য পরিবারের রীতি মেনে নিজের ছেলের বিয়ে ২১ এর আগে দিতে চাননি। তবে এখন দেবরাজ বছর ২৬ এর যুবক। এখন তাই চেষ্টা শুরু করেছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটা মেয়ে দেখেছেন, কিন্তু নিজের চোখে ধরেনি আর ছেলের কাছ থেকেও তেমন কোন সারা পাননি। কিন্তু অনুপমাকে দেখে বেশ পছন্দ হয় তার। শুধু রূপের জন্য না, অনুপমার মধ্যে একটা স্বাধীনচেতা ভাব দেখেছেন। নিজের ছেলেকে তিনি যেটুকু চিনেছেন, তাতে এখনো মনে হয়, তার মধ্যে আত্মনির্ভরতা এখনো আসেনি। নিজের অবর্তমানে যাতে ব্যবসার হাল কেও ধরতে পারে, যে দেবরাজকে চালনা করতে পারবে সেই রকম একটা মেয়ে সে খুঁজছিল। অনুপমার মধ্যে সেই কিছু করার ভাবটা দেখেছেন। আর যাই হোক, ব্যবসাসূত্রে কম মানুষ তো ঘাটেননি।

এবার আসি, পাঠক/পাঠিকাদের আসল জানার জায়গায়। চরিত্রের দিক থেকে নাগেশ্বরকে চরিত্রহীন বলা যাবে কিনা সেটা আমি পাঠক/পাঠিকাদের হাতেই ছাড়লাম।
নিজে থেকে কামের তাড়নায় নারীসঙ্গ করে তিনি বেড়াননি। বরং স্ত্রী বিয়োগের পর প্রায় পাঁচ বছর কোনো নারীসঙ্গই তিনি করেননি। তবে, তার পুরুষালী দেহ আর ব্যক্তিত্বের আগুনে অনেক নারী পুড়তে চাইলে, নিজেকে দূরে বেশীদিন সরিয়ে রাখতে পারেননি। এর পিছনে জমিদারী রক্তও কিছুটা দায়ী। তাদের জমিদারিতে বিলাসিতার অভাব ছিল না। কিন্তু তাও অনেক ভেবে চিন্তেই সম্পর্কে জড়াতেন। যাকে তাকে বিছানায় তোলেননি। কিন্তু যে মহিলারা নাগেশ্বরের শয্যাসঙ্গী হয়েছে, তারা বারবার সুযোগ খুঁজেছে, কিন্তু নাগেশ্বর ২-৩ বারের বেশী কাওকে পাত্তা দেয়নি। শুধু দেহের জ্বালা মেটানোর জন্য সেক্স তার কোনোদিন পছন্দ হয়নি। কোথাও হলেও একটা পাপবোধ কাজ করতো। নিজের স্ত্রীকে ঠকানোর পাপ।

বিয়ে বাড়ির ঘটনার পরে একমাস পেরিয়ে গেছে। পরিমল কথা রেখেছে। নাগেশ্বরের সাথে অনুপমার বাবার পরিচয় করে দেয়। ফোনে এক রবিবার দেখে নাগেশ্বর অনুপমাদের বাড়ি যাবে, সেইরকম কথা ঠিক করে। কথামতো পরিমল আর নাগেশ্বর দুই বন্ধু অনুপমাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়।
সেখানে নতুন করে অনুপমাকে দেখে নাগেশ্বর মুগ্ধ হলো। না কামের দিক থেকে নয়। মনে মনে খুশিও। এই মেয়ের রূপের সাথে আলাদা একটা তেজ আছে। কোনো কিছু জোর করে এই মেয়েকে দিয়ে করানো যাবে না, কিন্তু নিজে থেকে এই মেয়ে অনেক কিছু করতে পারে।
কথা প্রায় ওই দিনকেই পাকা করলেন, তাও অনুপমাকে ভাবার জন্য সময় দিলেন। নাগেশ্বর চাইছিলো অন্যের চাপে মেয়েটা সিদ্ধান্ত না নিক। নিজে ভালো করে ভেবে চিন্তেই তারপরে ঠিক করুক।

অনুপমা ভেবে জানালো সে সিদ্ধান্ত নেবার আগে একবার দেবরাজের সাথে দেখা করতে চাই। নাগেশ্বর খুশী হলো। এটাই চাইছিলো সে মনে মনে। এটাই তো বুদ্ধিমতীর মতো সিদ্ধান্ত। যার সাথে বাকি জীবনটা কাটাবে, তাকে তো যাচাই করে নিতে হবে। তবে মনে একটা শঙ্কাও ছিল। দেবরাজ লাজুক প্রকৃতির ছেলে। অনুপমার মতো মেয়ের পছন্দ হবে তো আদেও। নিজের ছেলের উপর কোনো জোর করলো না। সব কিছুই ভবিতব্যের হাতে ছেড়ে দিলো।

তবে নাগেশ্বরের আশঙ্কা সত্যি হলো না। অনুপমা দেখা করে দেবরাজের সাথে কথা বলে বিয়ের জন্য মত দিলো। ঠিক হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিয়ে হবে। অতঃকিম শুভস্য শীঘ্রম। নিজের একমাত্র ছেলের বিয়েতে কার্পণ্য কিছু করেনি নাগেশ্বর। বিয়ে বাদে ছেলের বাড়ির সব অনুঠান সে গ্রামের বাড়ি থেকেই করেছিল। বৌভাত তারপরে রিসেপশন পার্টি , বেশ জাঁকজমক করে করলো। কিন্তু বিপত্তি হলো রিসেপশনের রাতে, মানে ফুলশয্যার রাতে। আর সেখান থেকেই এই গল্পের শুরু।
 
আপডেট ৩:

সারাদিনের ধকলের পরে নাগেশ্বর নিজের শোবার ঘরে বসেছিল। রিসেপশনের ধড়াচুড়ো এখনো খোলা হয়নি। একটু জিরিয়ে তারপরে চেঞ্জ করে শোবার প্ল্যান করেছিল নাগেশ্বর। অতিথি বিদায় করে সব কিছু মোটামুটি মেটাতে মেটাতে রাত সাড়ে বারোটা হয়ে গেছে। তবে ছেলে-বৌ কে আগেই ফুলশয্যার জন্য বাড়ির ভেতরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মনে মনে একটু ইমোশনাল হয়ে পড়েছিল। ভাবছিল, তার ছেলের আজ থেকে নতুন জীবন শুরু হবে। নতুন ভাবে আজ সব কিছু তার কাছে ধরা দেবে। জীবনের নানা রঙে রঙ্গিন হয়ে উঠবে তার ছেলের জীবন।
ভাবনায় ছেদ পড়লো। বাড়ির পুরানো কাজের পরিচারিকা মালতির ডাকে। যদিও মালতিকে নাগেশ্বর এখন নিজের বাড়ির একজন ভাবে।

মালতি দেখলো তার দাদাবাবু ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে। একটু ইতস্তত করে ডাকলো সে - দাদাবাবু, জেগে আছো?
- কে? মালতি! কি হয়েছে। এতরাতে আবার ডাকাডাকি করছিস কেন? ক্যাটারার কে তো বললাম কাল সকালে কথা বলবো!
- না, ক্যাটারার নই গো দাদাবাবু, বৌদিমণি, তোমাকে একবার ডাকছে। বলছে তোমার সাথে খুব দরকারি কথা আছে।
- এত রাতে বৌমা ডাকছে !
নাগেশ্বর রীতিমতো অবাক হলো। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে বললো - তোর ছোড়দাবাবু কোথায়?
- তিনিও ঘরে আছে।
- তাহলে এত রাতে কেন ডাকছে। আজকের রাতটা বাদ দিয়ে কাল সকালে কথা বলবো বল।
- আসলে দাদাবাবু, বৌদিমণি বললেন খুব জরুরী। আমি কি এখানে আসতে বলবো।

মালতির কথায় একটু চিন্তায় পড়ল নাগেশ্বর। আজকের রাতে এমন জরুরি তলব। কিছুক্ষন ভেবে বললো - না থাক, আমি যাচ্ছি চল।
মালতির সাথে নিজের ছেলের ঘরে এলেন। মালতি ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো। দৃষ্টি সীমার বাইরে কিন্তু শ্রুতি সীমার মধ্যে। নাগেশ্বর বুঝলো, মালতি লক্ষ্য রাখছে যাতে আর কেও না এসে পরে। মালতি মূর্খ্য হলেও বুদ্ধি আছে। কিছু জটিল ব্যাপার যে আছে সেটা সে আঁচ করেছে। তাই পাঁচকান যাতে না হয় তার জন্য ঘরের বাইরে পাহারা দিচ্ছে।

নাগেশ্বর ঘরে ঢুকে দেখলো, দেবরাজ ঘরের একদিকের একটা চেয়ারে মাথা নিচু করে বসে আছে। অনুপমা খাটের ধারে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে নাগেশ্বরের মনে হলো মেয়েটার মুখের সব রং যেন কেও শুষে নিয়েছে।
একটু ইতস্তত করে বৌমা কে উদ্দেশ্য করে নাগেশ্বর বললো - কি হয়েছে বৌমা। এত রাতে কি কিছু বিপদ হয়েছে?

অনুপমা মাথা হেঁট করে বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো। মনে মনে সাহস আনছিল, যেটা বলতে চাই সেটার জন্য। কিছুক্ষন পরে বললো - বাবা, আমি আপনার সাথে আলাদা করে কোথাও কথা বলতে পারি?
নাগেশ্বর চমকালো। অনুপমার গলায় একটা ব্যাথার সুর টের পেলো। দু মিনিট ভেবে বললো - ঠিক আছে বৌমা। মালতিকে বলছি ও তোমাকে আমার পড়ার ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। তুমি যাও ওর সাথে আমি যাচ্ছি।
মালতিকে ডাকতে হলোনা, সে ঘরে এসে অনুপমার হাত ধরে বললো - চলো বৌদিমণি, আমি তোমায় নিয়ে যাচ্ছি।

মালতি অনুপমাকে নিয়ে ঘরের বাইরে গেলে, নাগেশ্বর নিজের ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো - দেবু, কি হয়েছে? বৌমা কি কথা বলতে চাই আমার সাথে, যেটা সে তোর সামনে বলতে চাইছে না?
দেবরাজ মাথা নাড়লো। তাতে কি বোঝাতে চাইল তা পরিষ্কার হল না। নাগেশ্বর খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো - ঠিক আছে। তুই যখন বলবি না তখন বৌমার কাছ থেকেই শুনতে হবে মনে হচ্ছে। পুরুষমানুষের মত দাঁড়াতে কবে শিখবি দেবু?
এইটুকু বলে সে বেরিয়ে এলো। ছেলের মেরুদন্ডহীনতায় খুবই হতাশ সে। লাইব্রেরি রুমে এসে দেখলো মালতি অনুপমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে জলের গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরে ঢুকে অনুপমার দিকে খানিক তাকিয়ে তারপর মালতিকে বললো - তুই এখন যা মালতি, আর দরজাটা বাইরে লাগিয়ে দিস। তবে আশেপাশে থাকিস, ডাকলে যেন সারা পায়।

মালতি দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো। এই ঘরটা বাড়ির এক কোনে। এদিকটা সচরাচর কেও আসে না। তাও নাগেশ্বর ঝুঁকি নিলো না। বাইরে থেকে দরজা লাগানো থাকলে, কেও সন্দেহ করবে না। নাগেশ্বর একটু দূরের একটা চেয়ারে বসলো। অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো - কি হয়েছে এবার খুলে বলতো বৌমা। কোনো ভয় নেই। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, যদি দেবু কিছু অন্যায় করে থাকে তার ব্যবস্থা আমি ঠিক করবো। তুমি নির্ভয়ে মন খুলে বোলো।

কথা কটা বলে নাগেশ্বর থামলো। অপেক্ষা করতে থাকলো অনুপমার উত্তরের জন্য। এখন ধৈর্য্য ধরতে হবে, সেটা সে বুঝছে। বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে অনুপমা বললো - আপনি আপনার ছেলেকে কতটা চেনেন।

- কতটা চিনবো মানে বুঝলাম না বৌমা। তবে ও যে একটু লাজুক সেটা জানি।
একটু চিন্তা করে বললো - হঠাৎ এই কথা তা কেন বললে? তুমি নির্ভয়ে বোলো মা। কোন ভয় নেই তোমার।
তাও কিছুক্ষন চুপ থেকে অনুপমা বলল - বাবা, আমি এই বিয়েতে মত দিয়েছিলাম, আপনার ওপর ভরসা করে। হাঁ, আপনার ছেলের সাথে আলাপ করে আমার মনে হয়েছিল যে একটু লাজুক, কিন্তু এই ভাবে আমাকে ঠকাবে ভাবিনি।
- ঠকাবে মানে, ওর কি অন্য্ কোনো মেয়ের প্রতি ভালোবাসা আছে বলেছে ?
কথা বলতে গিয়ে নাগেশ্বর টের পেলো, তার মধ্যেও রাগ আর অবাক ভাব দুটোই আসছে। কিন্তু সে বুঝতে দিলো না। অনুপমা ঘাড় নাড়লো। নাগেশ্বর আরো দন্ধে পড়লো। বললো - মা, লজ্জা না করে তুমি খুলে বোলো। আমার ওপর যখন ভরসা করেছো, তখন আশ্বাস দিচ্ছি তোমার কোনো ক্ষতি হোক, সেটা আমি হতে দোবো না।

অনুপমা কিছুক্ষন চুপ থেকে মাথা তুলে নাগেশ্বরের চোখে চোখ রেখে বললো - আপনি কি জানেন, আপনার ছেলে ইম্পোটেন্ট।
নাগেশ্বর হতবম্ব হয়ে বসে রইলো। তার মাথায় বাজ পড়লে এতটা চমকাতো না মনে হয়।
অনুপমা একটু বিরতি দিয়ে আবার ধীরে ধীরে বলে চললো - স্কুলে পড়ার সময় আপনার ছেলের একটা একসিডেন্ট হয়, তাতেই ডাক্তাররা বাধ্য হয়ে অপারেশন করে।
নাগেশ্বর কোনো মতে বললো - সেকি, আমি জানলাম না।

- আপনি তখন কাজে কলকাতার বাইরে ছিলেন প্রায় মাস তিনেক মতো।
একটু চুপ করে থেকে অনুপমা বললো - দুঃখ আমার এটা এতদিন পরে কেন জানালো!
নাগেশ্বর স্থানুর মতো কিছুক্ষন বসে রইলো। তারপরে বললো - বৌমা, তুমি ঘরে যাও, আমি মালতিকে বলে দিচ্ছি, ও তোমাকে নিয়ে যাবে। আজ রাতটা আমাকে ভাবতে দাও। আমি কাল সকালে তোমার সাথে কথা বলবো। ভয় নেই বৌমা, তুমি এখন আমার বংশের কুলবধূ। তোমার ওপর অন্যায় হলে তার বিচার তুমি পাবে।

কথা গুলো বলে মালতিকে ডাকলো নাগেশ্বর। মালতি এলে বললো - মালতি বৌমা কে ঘরে নিয়ে যাও, আর তোর ছোট দাদাবাবুকে বল এখানে আসতে।
মালতি মাথা নেড়ে অনুপমা কে সাথে নিয়ে চলে গেলো। বেশ খানিক পরে দেবরাজ ঘরে এসে ঢুকলো। ছেলেকে দেখে নাগেশ্বর বললো - তুমি বাকি রাতটুকু এখানে শুয়ে কাটিয়ে দাও। আর বৌমার কাছে আমি পুরোটা শুনলাম। কাজটা ঠিক করোনি। অন্তত তুমি মালতিকে বলতে পারতে, তাহলেও আমি জানতে পারতাম। তাতে একটা মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট হতো না। তোমার সাথে যেটা হয়েছে সেটা দুর্ঘটনা, কিন্তু তুমি যেটা করেছো সেটা অন্যায়।

এইটুকু বলে নাগেশ্বর ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। ধড়াচুড়ো পরেই বিছানায় শুয়ে পড়লো। তার চোখের ঘুম আজ উধাও। মনে মনে অনেক কিছু চিন্তা করতে করতে সে ভোর রাতে ঘুমিয়ে গেলো।
 
আপডেট ৪:

সকালে ঘুম ভাঙলো মালতির ডাকে। বেলা বেশ হয়েছে। ঘড়িতে ৮ টা বাজে। নাগেশ্বর উঠে ফ্রেস হয়ে নিজের লাইব্রেরি রুমে চলে গেলো। মালতির কাছে শুনলো দেবরাজ ভোর বেলাতেই কলকাতায় চলে গেছে। ব্যবসার কি একটা জরুরি কাজ পড়েছে তাই। নাগেশ্বর বুঝলো ছেলে স্রেফ পালিয়ে গেলো। আত্মীয়স্বজন যে কজন ছিল তাদের প্রায় সবাই বিদেয় হয়েছে। থাকার মতো এখন তেমন কেও নেই। বৌমার খোঁজ নিয়ে জানলো, নিজের ঘরেই আছে। নাগেশ্বর সিদ্ধান্ত নিলো, বাড়ির আত্মীয় যা আছে তারা আগে যাক, তারপরে সে বৌমার সাথে বসবে। তার আগে আরো একবার নিজের মনে পুরো জিনিসটা ভেবে রাখতে চাইলো।

সবাই বিদেয় হলে সন্ধ্যের সময় অনুপমাকে লাইব্রেরী তে ডেকে পাঠালো নাগেশ্বর। অনুপমা ঘরে ঢুকলে বললো - বস বৌমা।

অনুপমা বসলো। কালকের ঘটনা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে নাগেশ্বর। অনুপমার দিকে ভালো করে দেখলো। বুঝলো, মেয়েটাও বেশ কাটিয়ে উঠেছে ধাক্কা টা। মনে মনে খুশির সাথে অবাকও হলো। বেশ শক্ত ধাতের মেয়ে। বিউটি উইথ ব্রেন।
নাগেশ্বর ভূমিকা করে বললো - কালকের ঘটনাটা আমি পুরো ভাবলাম বৌমা। আমার ছেলে যে অন্যায়টা করেছে তার ক্ষতিপূরণ আমি করতে পারবো না। কিন্তু তোমার জীবনটাও এভাবে নষ্ট হোক আমি চাই না। তুমি যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকো আমাকে বলতে পারো। তাতে আমার কি ক্ষতি হবে সেটা ভেবো না। তুমি কি সেরকম কিছু ভেবেছো?

অনুপমা ঘাড় নাড়লো। কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো - বাবা আপনি কি কিছু ভেবেছেন?
নাগেশ্বর কিছুক্ষন অনুপমা কে দেখলো তারপর বললো - আমি তোমাকে কিছু উপদেশ বা প্রস্তাব দিতে পারি বৌমা। তোমার যেটা পছন্দ সেটা বলতে পারো বা সব গুলো শুনে তুমি নাহয় তোমার মতামত দিও।
অনুপমা মুখে কিছু বললো না। একটু থেমে নাগেশ্বর বললো - তুমি চাইলে, আমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কোনো বিয়ে করতে পারো বৌমা। সেক্ষেত্রে আমি তোমার সমস্ত দেয় দায়িত্ব নব। তুমি চাইলে এখানে নির্দ্বিধায় থাকতে পারো বা তোমার বাপের বাড়িতে গিয়েও থাকতে পারো। আর চাইলে তুমি এই বাড়িতে তোমার অধিকারেও থাকতে পারো, কিন্তু আমি চাইনা তুমি নিজের জীবনটা এভাবে নষ্ট করো। তবে একটা কথা তোমায় বলছি বৌমা, তুমি এখানে থাকো বা না থাকো, আমার সম্পত্তির একটা অংশ আমি তোমার নামে করে দোবো।
অনুপমা মাথা তুলে তাকালো, তারপরে বললো - সেই টাকা দিয়ে আমার ক্ষতিপূরণ করতে চাইছেন বাবা।

- না বৌমা, সেটা না। তুমি ভুল বুঝছো।
- বাবা, একটু ভেবে দেখুন, আমার বাবা-মা হয়তো মেনে নেবে আপনার প্রস্তাব কিন্তু সারাটা জীবন আমাকে যে কথা শুনতে হবে লোকের, সাথে আমার বাবা মাকেও। অন্য কাওকে বিয়ে করার কথা বলছেন, ভালো কথা বাবা। কিন্তু সেই ছেলে কি বুঝবে বা সে বুঝলেও তার বাড়ির লোক কি বুঝবে? আপনার কথামতো আমি আবার নতুন জীবন শুরু করতে পারি কিন্তু লোকে তো প্রশ্ন তুলবেই। অন্তত খোঁটা দিতে তারা ছাড়বে না। আমার আত্মীস্বজন তারাও কথা শোনাবে। তাদের মুখ কি ভাবে বন্ধ করবো বলুন?
নাগেশ্বর অনুপমার কথাই চুপ করে রইলো। বেশ কিছুক্ষন পরে বললো - দেখ বৌমা লোকে কি বলবে না বলবে সেটা ভেবে নিজের জীবন নষ্ট করার তো কোন মানে হয় না। আর তুমি যাই করো কিছু লোক এই পৃথিবীতে থাকবেই যারা অন্যের নিন্দে না করে খাবার হজম করতে পারে না। আমার কথা শোনো বৌমা, আমি তোমার ক্ষতি চাই না।

মৃদু হেসে অনুপমা বললো - আমি জানি বাবা। আমার খুব ভালো লাগছে বাবা আপনি আমার জন্য এতো কিছু ভেবেছেন দেখে। কিন্তু বাবা আমি শুধু নিজের আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।

- কিন্তু এইভাবে কতদিন বৌমা?
- তা জানি না বাবা। যতদিন পারি। শুধু একটা অনুরোধ করব, রাখবেন বাবা ?
- অনুরোধ কেন বলছো বৌমা, তুমি যা বলবে আমি তাই করব।
- আমাকে খারাপ ভাববেন না বাবা। আমি চাইনা আপনার ছেলের মুখোমুখি আর হতে। এইটুকু শুধু অনুরোধ বাবা।
- কথা দিচ্ছি বৌমা, এই বাড়ির চৌকাঠ দেবুকে আমি পেরোতে দোবো না। কিন্তু লোকে কি বলবে ভেবে নিজের বুকে পাথর চাপা দিতে চাইছি, অথচ এই জিনিস বেশিদিন চাপা থাকবে না। তখন তো আরো বেশি কথা শুনতে হবে বৌমা ?
- কোন জিনিস বাবা?
- এই যে তুমি এখানে থাকবে, দেবু কলকাতায়। একদিন না একদিন তো লোকের মনে সন্দেহ জাগবেই। তখন কিভাবে সামলাবে।

অনুপমা নাগেশ্বরের কথায় চুপ করে থাকল। কিছু যেন ভাবছে সে। নাগেশ্বর ধ্যৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিল। মনে মনে ভাবল - মনে হচ্ছে মেয়েটা পাগলামীটা ছাড়ছে।
- বাবা আমি কিছুদিন সময় দেবেন?

নাগেশ্বর কথাটা লুফে নিল। - নিশ্চই বৌমা। তাড়াহুড়ো করো না। কোন সময়সীমা নেই বৌমা। আমি জানি তোমার মনের অবস্থা এখন। তুমি আগে নিজেকে গুছিয়ে নাও। তারপর ধীরে সুস্থে ভাব। কোন সাহায্য দরকার হলে নির্দ্বিধায় জানিও বৌমা। আমাকে বলতে না পারলে মালতিকে বলো।

- আর একটা অনুরোধ করব বাবা?
- বলো।
- এই বাড়িতে তো অনেকগুলো ঘর, আমি একটা ঘরে নাচের স্কুল খুলতে পারি। আসলে আমার নাচের খুব শখ, হয়ত নাচের স্কুল নিয়ে ব্যস্ত থাকলে মনটাও ভালো থাকবে আর.......
অনুপমা থামলে নাগেশ্বর অনুপমার মনের ভাব বুঝতে পেরে বলল - অতি উত্তম প্রস্তাব। আমি আজই ব্যবস্থা করছি।
 
আপডেট ৫:

এই ঘটনার পরে প্রায় ছয় মাস কেটে গেছে। সময়ের স্রোতের সাথে গা মিলিয়ে অনুপমা পুত্রবধূ পরিচয়ে নাগেশ্বরের কাছে গ্রামের বাড়িতেই থাকতে লাগলো। কিন্তু নদীর স্রোতের মতো সময়ের স্রোতেও একটা বাঁক এসে হাজির হল। হঠাৎ করেই অনুপমা তার এক কলেজের বান্ধবী সুমনার কাছ থেকে ফোন পেলো। বিয়ের সময় নিমন্ত্রণ করেছিল, কিন্তু সেই সময় সে কলকাতায় ছিল না। সদ্য বিয়ে করে হানিমুনে ছিল।

অনেকদিন পরে কথা হওয়ায় দুজনেই খুব খুশি হলো। কথাই কথাই সুমনা বললো - জানিস, বর অফিসের কাজে মাসখানেকের জন্য লন্ডন যাচ্ছে। এই কদিন একা থাকতে হবে। কি করে যে এইসময় টা কাটাবো ভেবে পাচ্ছি না?

- তোর অসুবিধা না থাকলে, তুই আমার এখানে এসে কিছুদিন থাকতে পারিস।
- মন্দ বলিস নি। কিন্তু কোন অসুবিধা হবে নাত।
- হাঁ তা হবে। তুই তো শহরের মেয়ে, গ্রামে এলে কালো হয়ে যেতে পারিস, তারপর ভালো কোন রেস্টুরেন্ট পাবি না, বিউটি পার্লার পাবি না।
- ইয়ার্কি মারছিস। আমি সিরিয়াস বলছি। তোর শশুর মশাই বা তোর বরের কাছে একবার অনুমতি নিতে বলছি।
- আরে সেটা আমার ওপর ছেড়ে দে না। ওনারা কিছু মনে করবে না। শুধু শুধু তুই টেনশন করছিস।
তারপর আর কি, সুমনা এককথায় রাজি হলো। ঠিক হলো, রাজীব মানে সুমনার বর সুমনাকে হাওড়া থেকে ট্রেনে তুলে দেবে, অনুপমা বাঁকুড়া স্টেশনে গিয়ে রিসিভ করে নেবে। দিনক্ষণ, সময় সবই সুমনা অনুপমাকে জানিয়ে দিল। সেইমতো অনুপমা সুমনাকে রিসিভ করে নিয়ে এলো। বাড়িতে এসে অনুপমা বললো - তুই এক কাজ কর, তোকে তোর ঘর দেখিয়ে দিচ্ছি, তুই ফ্রেস হয়ে নে। আমি মালতি মাসিকে বলে তোর জন্য কিছু ঠান্ডার ব্যবস্থা করছি।
- সে ফ্রেস হচ্ছি, কিন্তু তোর বর কোথায়? তাকে দেখছি নাতো?

অনুপমা একটু চমকালো। কিন্তু অস্বস্তি চেপে বললো - আর বলিস না, তার কাজের চাপ। তাছাড়া তিনি তো আসেন মাসে এক-দু বার।

- সেকিরে, এমন সুন্দরী বৌকে রেখে কেও থাকতে পারে। তোর বর কি ব্রহ্মচারী নাকি।
মাজার কথা হলেও অনুপমার ব্যথার জায়গা। কোন ভাবে নিজের মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল - অরে তা না, এখানে শশুরমশাই একা থাকেন, তাই আমি নিজে থেকেই বলেছি এখানে থাকবো।
তখন কার মতো অনুপমা এড়িয়ে গেলো, কিন্তু সুমনার মনে সন্দেহ হলো। দুপুরে খেতে বসে নাগেশ্বরের সাথে অনুপমা আলাপ করিয়ে দিলো। খাবার পরে দুই বান্ধবীতে আড্ডা দিতে বসলো। অনেকদিন পরে অনুপমা মন খুলে কথা বলতে পেরে আজ অনেক খুশি। সুমনা কথায় কথায় বললো - তুই যে বললি, তুই শশুরের দেখাশোনা করার জন্য এখানে থাকিস, আমি তো ভাবলাম তোর শশুর বোধহয় অসুস্থ, কিন্তু উনি তো দিব্ব্যি সুস্থ।

- আরে অসুস্থ কখন বললাম, বললাম উনি এক থাকেন তাই।
- ও। তবে একটা কথা মানতে হবে তোর শশুরকে যা দেখতে না, আমি তো দেখেই প্রেমে পরে গেছি। ওফফ, কি হ্যান্ডসাম।
- ওফ, তুই না মানুষ হবি না। বিয়ে হয়ে গেছে, তাও তোর ছোঁকছোঁকানি গেলো না।
- ওরে যাবে কেন। একখানা নিয়ে বুঝছি তো মজা কেমন। আর একখানা হলে ক্ষতি কি।
- তা বেশতো, আমার শশুরমশাই কে গিয়ে বল, মজা করতে চাস।
- সে সুযোগ পেলে আমি কি ছাড়বো ভেবেছিস। আচ্ছা বাদ দে, তোর হানিমুন কেমন কাটলো বল। বর তো তোকে মনে হয় আচ্ছা করে চটকেছে। তুই যা সুন্দরী, যে পুরুষ পাবে সেই চটকাবে।
- আমার টা পরে শুনবি তোর বল, তুই কেমন কাটালি। যতই হোক তুই আগে ফিতে কেটেছিস।
- কেমন আবার দারুন। যতক্ষণ হোটেলে, ততক্ষন না আমি ওকে ছেড়েছি না ও। উফফফ, কি যে মজা। এই তোর বরেরটা কত বড় রে। রাজীবেরটা আমি মেপেছি, প্রায় সাড়ে ছয় ইঞ্চি। তোর বরের টা কেমন রে।
- কেমন আবার ওই রকম। আমি ওতো মাপিনি। তুই না সেই একই রকম রয়ে গেলি।
বেশ কয়েকদিন এই ভাবে অনুপমার কাটালো। যাবার আগেরদিন শেষে সুমনা চেপে ধরলো। অনুপমার হাবভাবে তার মনের সন্দেহ বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে।
- তুই সত্যি করে বলতো, কি হয়েছে। আমার কাছে লোকাস না অনু। আমাকে খুলে বল, আমি হয়তো কোনো হেল্প করতে পারি তোকে।
অনুপমা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলো, কিন্তু সুমনা ছাড়লো না। শেষে অনুপমা সব কথা খুলে বললো। সব শুনে সুমনা বেশ কিছুক্ষন গুম হয়ে থাকলো। তারপর বললো - দেবরাজ কাজটা ঠিক করেনি। কিন্তু তুই এইভাবে নিজের জীবন নষ্ট করবি, শুধু লোকে কি বলবে ভেবে। তোর শশুরমশাই কিন্তু ঠিক কথাই বলেছে।

- আমিও মানছি উনি ঠিক কথায় বলেছেন সুমনা। কিন্তু আমার মনের অবস্থাটা একবার বোঝার চেষ্টা কর।
- কি করে একসিডেন্ট হয়েছিল জানিস?
- তখন বলেনি। পরে মালতি মাসীর কাছে শুনেছিলাম, স্কুলে পড়ার সময় ক্রিকেটের বল লেগে ফ্রাকচার হয়। হসপিটাল নিয়ে গেলে ডাক্তাররা অপারেশন করে বাদ দিতে বাধ্য হয়। সেই সময় আমার শশুর মশাই মাস তিনেকের জন্য বোম্বে গিয়েছিলেন। চাকর যে ছিল সে জানাতে চেয়েছিল কিন্তু দেবরাজ বাধা দিয়েছিল।
- হুম, বুঝলাম। তুই এককাজ করতে পারিস অনু, অন্য কারো সাথে সম্পর্ক করতে পারিস।
- মানে দেবরাজ যেহেতু একটা অন্যায় করেছে তো আমিও করতে পারি।
- তুই আমার কথাটা অন্য ভাবে নিচ্ছিস। আমি বলতে চাইছি তুই দেবরাজকে ডিভোর্স দে আর নিজে কাওকে পছন্দ করে বিয়ে কর। আমি মানছি লোকে অনেক কথা বলবে, কিন্তু জীবনের স্বাদ থেকে এইভাবে নিজেকে বঞ্চিত করিস না।
- আচ্ছা সু, বিয়ে কি মেয়ে মাত্রই করতে হবে? বিয়ে না করে কি আমি একা একা সারাটা জীবন কাটাতে পারবো না ? আর জীবনের স্বাদ মানে কি শুধুই সেক্স?
- দেখ অনু, আমি এত ত্বত্ত কথা বুঝি না। তবে তোর মনের অবস্থা আমি বুঝতে পারছি। তোর মনের ভেতর এখন অনেক কিছু ঘেঁটে গেছে। একটা পরামর্শ দোবো , মানবি?
- কি বল ?
- আগে বল মানবি কি না ?
- আগে শুনি।
- তুই কোন সাইকোলজিস্ট কে দেখা।
- মানে, তোর কি মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে গেছি?
- না। যাতে না হোস তার জন্য বলছি। আর সাইকোলজিস্টের কাছে যাওয়া মানেই কি পাগল হতে হবে ?
অনুপমা তাও কিছুক্ষন ভাবল। শেষে সুমনার পীড়াপীড়িতে রাজি হল।
সুমনা বলে চলল - আমি কালই কলকাতায় গিয়ে ভালো কোনো সাইকোলজিস্টের খোঁজ করে তার সাথে তোকে কথা বলিয়ে দিচ্ছি। কথা বল, মনে হয় কিছু না কিছু উপায় বেরোবে।
অ:- জানি না কিছু উপায় বেরোবে কিনা। আর আমার এখানের নাচের স্কুল নিয়ে আমি বেশ আছি। তবে মনে যে দুঃখ আছে সেটা অস্বীকার করছি না সু।
সু; - বেশ , ডান। আমি কালকেই খোঁজ নিচ্ছি।
 
আপডেট ৬:

সুমনা কথামতো কলকাতাতে একজন সাইকোলজিস্টের সাথে অনুপমার কথা বললো। এপয়েন্টমেন্ট ডেটও ফাইনাল করল। অনুপমা এই ব্যাপারটা যাতে তার শশুরবাড়ি বা বাপের বাড়ির লোকজন জানতে না পারে তার জন্য শশুরমশাইকে বলল কিছুদিন সে বাপের বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে চাই। বলাই বাহুল্য, নাগেশ্বরের এতে আপত্তি কিছু ছিল না। সে নিজের বাবা-মাকে জানাল এপয়েন্টমেন্টের দিন তার এক বান্ধবীর বাড়িতে যাবে। সুমনা সেই মতো তার বাবা-মাকে ফোনে জানালো। সবকিছু ঠিক করে নির্দিষ্ট দিনে অনুপমা দেখা করলো। সাইকোলজিস্ট একজন মহিলা। তিনি অনুপমার সৰকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। মহিলার নাম প্রীতি আগরওয়াল। কিন্তু জন্ম কলকাতাতেই। অনুপমা প্রথমে একটু জড়তা ছিল, কিন্তু প্রীতির ব্যবহারে নিজের জড়তা কাটিয়ে অনেকটা খোলামেলা হলো এই প্রথম। নিজেকে বোঝালো ডাক্তারের কাছে কোন কিছু লুকিয়ে লাভ কি ? সত্যি বলতে এই কয়েক মাসে সে নিজেও একটু যেন হাঁফিয়ে উঠেছে।

- আচ্ছা অনুপমা, তোমার সাথে প্রথম যখন দেবরাজের দেখা হয়, তখন তোমার কোনকিছু অস্বাভাবিক মনে হয় নি?
- সেভাবে কিছু মনে হয় নি। তবে বেশ জড়সড় ছিল। আর দেখে মনে হয়েছিল খুব লাজুক প্রকৃতির ছেলে।
- খটকা লাগলো না, একজন এতবড় ব্যবসায়ী এত লাজুক?
- খটকা যে লাগেনি বলবো না। তবে আমার বাবা খোঁজ নিয়ে জেনেছিল ব্যবসাটা আসলে আমার শশুরমশাইয়ের, আর দেবরাজ বাবার হয়ে শুধু দেখভাল করে। তো আমার মনে হয়েছিল, অল্প বয়স, ধীরে ধীরে কেটে যাবে।
- তাহলে, তুমি এই বিয়ে তে মাত্র একবার দেখা করে মত দিলে কেন?
- আসলে আমার শশুরমশাইয়ের সাথে বিয়ের আগে কথা বলে বা দেখে মনে হয়েছিল এই মানুষটার ওপর ভরসা করা যাই। আর বিয়ের আগে আমার বান্ধবীর বাবার সাথেও আমি নিজে একবার কথা বলি। উনি আর আমার শশুরমশাই ছোটবেলার বন্ধু। ইনফ্যাক্ট, আমার বান্ধবীর বিয়েতেই আমি আমার শশুরমশাইকে প্রথম দেখি। তো আমি কাকুর সাথে কথা বলে জানতে পারি উনি বেশ দায়িত্তবান আর কর্তব্যাপারাযান লোক।
- অনুপমা, একটা জিনিস আমার কাছে ক্লিয়ার হচ্ছে না, তুমি তোমার শশুরমশাইয়ের ওপর এতটা ভরসা করলে কি করে?
- মানে, ওই মানুষটা তো আমাকে ঠকায় নি। আর উনি ব্যাপারটা জানতেন না। জানলে তো বিয়ের প্রশ্নই উঠতো না।
পি; - হুম, কিন্তু তুমি তো ওনাকে বেশিদিন চেনোনি। এত অল্পসময়ে ভরসা করলে কি করে?
অ:- না মানে, ওনাকে দেখে আমার মনে হয়নি যে উনি এমন করতে পারেন।

প্রীতি এতক্ষন কথার মাঝে অনুপমাকে ভালো করে মাপছিল, সে এবার অনুপমাকে অবাক করে অন্য প্রশ্ন করলো। - তোমার কাছে তোমার শশুরমশাইয়ের কোনো ছবি আছে?
অনুপমা হাঁ বললে প্রীতি দেখতে চাইলো। অনুপমা নিজের মোবাইল থেকে নাগেশ্বরের একটা ছবি বার করে দেখালো। বিয়ের দিন এটা সে নিজেই তুলেছিল। নিজের ফেসবুক একাউন্টে দেবে বলে। প্রীতি ভালো করে ছবিটা দেখলো। তারপরে অনুপমাকে মোবাইলটা ফেরত দিয়ে বললো - তোমাকে কিছু পার্সোনাল প্রশ্ন করবো, তুমি খুব ভেবে একদম ঠিক ঠিক উত্তর দেবে, ওকে। লজ্জা করো না।
অনুপমা ঘাড় নাড়লো।

- তুমি কলেজে পড়ার সময় কোন রিলেশন করো নি?
- না।
- কেন? তুমিতো যথেষ্ট সুন্দরী। অনেক ছেলেই নিশ্চই প্রপোস করেছিল। তাহলে করোনি কেন?
- আসলে আমার তাদের কে কোন ভাবেই মনে ধরে নি। কেমন ছেলেমানুষ মনে হত।
- তুমি কি মাস্টারবেশন করো?
অনুপমা একটু ইতস্তত করল। তারপর ঘাড় নেড়েই হ্যাঁ বলল।
- ওকে, উইকলি না ডেইলি ?
অনুপমা লজ্জা পেলেও বললো - উইকলি করি।
- কতবার কর ?
- আমি বুঝতে পারছি না এইসব প্রশ্নের কি প্রয়োজন ?
- অনুপমা আমি জানি এগুলো কোন মেয়ের খুব পার্সোনাল ব্যাপার। আমিও মেয়ে। আমি বুঝি। আসলে বিয়ে ব্যাপারটার সাথে সেক্স একটা খুব দরকারি জিনিস। আর সেই জিনিসটা তুমি পাওনি। আমিও বিবাহিত অনুপমা। তারওপর সাইকোলজিস্ট। তা সত্ত্বেও, যখন আমি চাই তখন যদি আমার হাসব্যান্ড আমার সাথে সেক্স করতে চাইনা সেদিন আমার খুব খারাপ লাগে মনে। আমরা মেয়েদের অনেক বেশি স্যাক্রিফাইস করতে হয়। তা সত্ত্বেও ওই সেক্সটুকুর মাধ্যমে একটু সুখ চেয়ে সেখানেও যদি না পাই, খারাপ লাগে।

প্রীতি এতটা বলে থামল। অনুপমার থেকে সে চোখ সরায়নি। তার অভিজ্ঞ চোখ বলে দিল মেয়েটা এখন অনেকটা নরম হয়েছে। অনুপমাও বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে শেষে বলল - ঠিক আছে, তুমি বল। আমি শেয়ার করবো।
আপনি থেকে তুমিতে নামাই প্রীতি খুশি হল। ভাবল এবার একটা ধাক্কা দিয়ে দেখা যাক।

- ওকে. আমার পরের প্রশ্ন, তোমার মাস্টারবেশনের সময় কি তোমার শশুরের কথা মনে পরে আর তাতে কি তুমি আরো বেশি একসাইটেড হও?
এই প্রথম অনুপমার গলা কাঁপলো হাঁ বলতে গিয়ে। প্রীতি অনুপমার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটার গাল লাল হয়ে উঠেছে। তারপরে বললো - অনুপমা, তোমার শশুরমশাইয়ের ফটো আমি দেখলাম। যথেষ্ট আকর্ষণীয় চেহারা। ওনাকে ভেবে মাস্টারবেশন কোনো খারাপ কথা নয়। ইন ফ্যাক্ট, ওনাকে দেখে আমারও ফিলিংস আসছিল। ঐরকম হ্যান্ডসাম পুরুষ যে কোন মেয়েই সেক্সের সময় চাই।
এইটুকু বলে প্রীতি ভালো করে অনুপমার দিকে তাকালো। দেখলো, অনুপমার ভ্রূ অল্প কুঁচকেছে। প্রীতি বুঝল তার অনুমান নির্ভুল। - দেখো, তুমি চাইলে, তোমার শশুরের কথা মতো অন্য বিয়ে করতে পারো।
অনুপমা প্রীতিকে থামিয়ে দিয়ে বললো - সেটা ঠিক, কিন্তু এটাও তো দেখুন, লোকে কি বলবে?
- কিন্তু দিনের পর দিন তুমি আর দেবরাজ একে ওপরের থেকে দূরে থাকলেও যে লোকের মনে সন্দেহ বাড়বে। আর তাতেও লোক কম কথা বলবে না অনুপমা।
- জানি। সেটা ভেবেই আরো টেনশন হয়।

প্রীতি একটু থেমে অনুপমাকে ভালো করে দেখে বললো - সেটাও ঠিক। তবে অনুপমা, যদি ব্যক্তিগত মতামত চাও তাহলে আমি বলবো, তুমি সমবয়সী ছেলেদের থেকে একটু বেশি বয়সী লোক পছন্দ কর। আর তোমার সাথে কথা বলে এটুকু বুঝেছি তুমি লোক জানাজানির ব্যাপারটা এত সিরিয়াস ভাবে নিচ্ছ না।
- মানে?
- অনুপমা, কোন বয়স্ক লোকের প্রেমে পড়াটা কোন দোষের নয়। বন্ধুর মোট মতামত যদি চাও তাহলে একটা পরামর্শ দিতে পারি।
- কি?
- হয় আপোষ কর, নাহলে চেষ্টা কর।

প্রীতির কথাগুলো অনুপমার মাথায় অনুরণন হতে লাগলো। সেখান থেকে বেরিয়ে সে নিজের বাপের বাড়ি চলে এলো। এখানেই কয়েকদিন থাকবার অজুহাতে সে গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছে। কলকাতায় থাকাকালীন প্রীতির কথাগুলো তার মনে কাঁটার মতো বিঁধছিলো। প্রীতির কথার মধ্যের সূক্ষ্য খোঁচাটা তাকে জ্বালিয়ে যাচ্ছিলো।
 
আপডেট ৭:

গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসার পরে অনুপমা নিজের চিন্তায় ডুবে ছিল। তার সামনে যেন তার জীবনের রাস্তা দুটো ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। তার ওপর তার মনের ভেতরের দ্বন্ধে সে যেন জেরবার। এক মন তার বলছে, যে মানুষটার প্রতি তার ভালোবাসা জেগেছে, সেটা গ্রহণ করুক। তার দিকে এগিয়ে যাক। অন্য্ মন সাথে সাথে বিরোধ করছে। এটা পাপ, এটা অন্যায়। নিজের শশুরের প্রতি এই ভালোবাসা ঠিক নয়। সমাজ কি বলবে। তখন অন্য্ মন বিদ্রোহ করে বললো, সমাজ তো কৈ কোন শাস্তি দিলো না, যে তাকে এই পরিস্থিতি ফেলে পালিয়ে গেলো। শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও, স্বামীর কর্তব্যটুকুও তো সেই মানুষটা পালন করেনি। তাহলেও তো সে নিজেকে বোঝাতে পারতো। এই কষ্টটুকু সে সহ্য করতো। তার বদলে কাপুরুষের মতো পিঠ দেখিয়ে পালালো। অন্য্ মন বললো, কিন্তু লোকে জানতে পারলে তোকে ব্যভিচারিণী বলবে। তোর বাবা-মায়ের কি হবে। তাদেরকেও তো ছি ছি করবে লোকে। একটা মানুষের ওপর শোধ নিতে গিয়ে আরো পাঁচজনের জীবন তো নষ্ট করতে পারে না সে। অন্য্ মন আবার বলে উঠলো, শোধ তো তুলছি না, যে মানুষটার প্রতি ভালোবাসা জন্মেছে তার কাছে যেতে চাইছি। আর সমাজ জানতে যদি না পারে তাহলেই তো আর চিন্তা নেই।

অনেক দ্বিধাদ্বন্ধ কাটিয়ে অনুপমা ঠিক করলো, একদম স্থির সিদ্ধান্ত নিলো। একটা চেষ্টা সে করে দেখবে। হয়তো তার ভালোবাসা তার শশুর মেনে না নিয়ে তাকে তাড়িয়ে দিতে পারে। তবু সে চেষ্টা করবে একবার। তাড়িয়ে দিলে তখন তো রাস্তা সোজা। নিজেকে শেষ করে দেবে। জীবনে সেতো কিছু পাইনি, তাই মিথ্যার বোঝা সে বইবে না। হয় একুল থাকবে নাহলে দুকূল যাই যাক।

স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুপমার কেন জানে না অনেকটা হালকা লাগলো নিজে কে। বিয়ের পরে এই প্রথম সে মাঝরাতে আলো জ্বেলে ঘরের বড় আয়নার সামনে দাঁড়ালো। নিজেকে নিজে আয়নায় দেখলো। নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হলো। কাল পর্যন্ত এই আয়নার সামনে সে বেশিক্ষন দাঁড়াতো না। কিন্তু আজ নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। নিজের প্রেমিকের হাতে এই দেহ সে সম্পূর্ণ রূপে সোঁপে দিতে চাই। রাত্রিবাসের ওপর দিয়ে নিজের স্তনদুটো নিজের হাতে নিলো। নিজের ৩৪ডি সাইজের ভারী স্তনজোড়া তার হাতে আঁটছিলো না। নাগেশ্বরের বড় হাতের পাঞ্জায় এই স্তন নিষ্পেষিত হবে ভেবেই তার শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেলো। আয়নার দিকে তাকিয়ে কল্পনা করলো, তার এই উন্নত দুধজোড়া, তার শশুর মুঠোতে বন্দী করেছে, তার পরে ধীরে ধীরে পিসছে, খেলছে। আস্তে আস্তে নিজের রাত্রিবাস খুলে ফেললো। শরীরে শুধু প্যান্টি ছাড়া আর কিছু নেই তার। আয়নাতে নিজের ভারী স্তনজোড়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো। উত্তেজনায় তার নিপলগুলো পুরো খাড়া হয়ে আছে। ভারী নিঃশ্বাসের তালে তালে তালের মতো দুধজোড়া ওঠানামা করছে। নিজের অজান্তেই নিজের দুধের ওপর হালকা করে হাত বললো। নিজের হাতের স্পর্শেই তার শরীর যেন আরো জেগে উঠলো। কিন্তু তাতেও তার মন ভরলো না। মন চাইছে কোনো শক্ত হাতের স্পর্শ। নিজের দু পায়ের মাঝখানে ভিজে ভাব টের পেলো। আজ যেন বেশি করে ভিজে উঠেছে তার যোনী। ধীরে ধীরে নিজের দেহের শেষ কাপড়টুকু পা গলিয়ে খুলে ফেললো। যোনী তে লোমের আধিক্য। নিজের মনে একটু ক্ষুন্য হলো। মনে মনে ঠিক করলো কালকেই সে পরিষ্কার করবে। বগলের টাও।

এইসব ভাবনার মাঝেই নিজের বামহাতের আঙ্গুল দিয়ে নিজের যোনীমুখ স্পর্শ করলো। স্পর্শের অনুভূতিতে তার সারা শরীর যেন ঝিমঝিম করে উঠলো। কিন্তু অনুপমা থেমে গেলো। নিজের মনেই বললো - নাহ, আর নিজেকে দিয়ে নয়।

নিজের হাত সরিয়ে নিলো। ফিরে এলো নিজের বিছানায়। উলঙ্গ হয়েই শুয়ে পড়লো সে। তারপর ভাবতে শুরু করলো, কিভাবে এগোবে সে। অনেক ভেবে ঠিক করলো মালতীমাসির সাথে সে কাল কথা বলবে। তার ব্যাথা মাসী জানে। অনেকবার তাকে বলেছে, নাগেশ্বরের কথা মেনে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করতে। সে কি সাথ দেবে না তার। এই রিস্ক তাকে নিতে হবে। মাসী নাগেশ্বরের খুব বিশ্বাসী। তাকে হাতে রাখা মানে অর্ধেক যুদ্ধ জয়। মনে মনে স্থির করে সে ঘুমাতে গেলো। অনেক দিন পরে আজ অনুপমা একটা সুখের ঘুম দিলো।
এই বাড়ির অন্য্ ঘরে ঘুমন্ত নাগেশ্বর জানতে পারলো না, তার জীবনে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।
 
আপডেট ৮:

ঘুম থেকে উঠে আজ নিজেকে অনেক ফ্রেস লাগছিলো অনুপমার। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘড়িতে সাতটা বাজছে। মনে পড়লো তার আটটা থেকে নাচের স্কুল। এই বাড়িতেই সে স্কুলটা খুলেছে। নাগেশ্বরের কথাতেই। নিজের দুঃখ কিছুটা ভোলার জন্য নাগেশ্বরের সাথে কথা বলে সেই মতো ব্যবস্থা করেছে সে। সেই মতো আজ তিনমাস হলো সে বাচ্ছাদের জন্য স্কুল তা খুলেছে। জনা দশেক খুদে শিক্ষার্থী তার। ঝটপট নিজেকে রেডি করলো অনুপমা। আজ যেন সমস্ত কাজেই সে আলাদা উৎসাহ পাচ্ছে। সালোয়ার কামিজ পরে নিচে নেমে এলো।

রান্নাঘরে এসে দেখলো, মালতি ব্রেকফার্স্ট রেডি করে ফেলেছে। মালতিকে তারা দিলো অনুপমা। মালতি টেবিলে খাবার সাজাতে সাজতে অনুপমার দিকে একটু অবাক চোখে তাকালো। অনুপমা নাগেশ্বরের ব্যাপারে খোঁজ নিলো। তার শশুরমশাই ব্যায়াম শেষ করে নিজের ঘরেই ব্রেকফার্স্ট শেষ করেছে। বিয়ের পর থেকে দুপুর আর রাতের খাবার বাদ দিয়ে, একসাথে দেখা হয় না। কিন্তু অনুপমা আজ খেতে খেতে ববললো - মাসী কাল থেকে বাবার আর আমার ব্রেকফার্স্ট এখানেই দেবে। আমি আজ বাবার সাথে কথা বলে রাখবো।

মালতি অনুপমার কথায় খুশি হলো। বললো - সেতো খুব ভালো বৌদিমণি। মানুষটা একা একা থাকে আর তুমিও। তুমি বললে শুনবে আমি বললে পাত্তায় দেবে না। যা হয়ে গেছে তা গেছে, কিন্তু তোমরা দুজনে মুখ গোমড়া করে থাকো দেখে আমারি কষ্ট হয়।
অনুপমা এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইলো। বললো - মাসী, তুমি আজ দুপুরে কি করছো।

- তেমন কিছু না বৌদিমণি। কেন বোলো, তোমার কি কিছু করে দিতে হবে? বোলো আমি করে দোবো।
- সেরকম কিছু না মাসী, আসলে এই বাড়িতে কথা বলার কাওকে পাইনা। তাই তোমার সাথেই একটু কথা বলে সময় কাটাবো ভাবছিলাম।

মালতি আরো খুশি হলো। - ঠিক আছে বৌদিমণি, খাবার পরে আমি কাজ গুছিয়ে তোমার ঘরে চলে যাবো।
খাবার শেষ করে অনুপমা উঠে পড়লো। তার খুদেরা আসতে শুরু করেছে। আজ নাচে নিজের মনের খুশির ছোঁয়া তাদের লাগলো। তারা তো খুব খুশি। এতদিন গোমড়া মুখ দেখেছে তারা, আজ হাসিখুশি অনুপমাকে দেখে তারাও খুশি হয়ে উঠলো।
নাচের স্কুল এগারোটায় শেষ করে সে নিজের ঘরে এলো। অন্যদিন সে এই সময়টা ক্লান্ত মনে করতো, তাই শুয়ে পড়তো। কিন্তু আজ যেন তার কোনো ক্লান্তি নেই। ঘরে এসে বাথরুমে গিয়ে ভালো করে চান করলো। সাথে নিজের দেহের অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করলো। নিজের নির্লোম যোনীটা দেখে নিজেই খুশি হলো। বাথরুমের আয়নায় নিজের শরীর টা ভালো করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলো। কোথাও কোনো খুঁত রয়ে গেছে কিনা। শেষে সন্তুষ্ট হয়ে ভেজা শরীরে তোয়ালে মুড়ে বেরিয়ে এলো। আলমারি থেকে একটা কমলা রঙের শিফন শাড়ি বেছে নিলো, সাথে ম্যাচিং সায়া আর ব্লাউস। ব্রা আর প্যান্টিটা সাদা কালারের বেছে নিলো। তারপরে সময় নিয়ে সাজতে বসলো। এই করতেই তার দু ঘন্টা চলে গেলো। অন্যদিন সে শুধু সালোয়ার কামিজ পরেই থাকত, শুধু রাতে শোবার আগে চেঞ্জ করে রাত্রিবাস পড়তো। কিন্তু এখন থেকে যে নতুন জীবন সে শুরু করতে চলেছে।

কাঁটায় কাঁটায় দুপুর একটার সময় সে রান্নাঘরে চলে এলো। নাগেশ্বর দুপুরের খাবার ঠিক একটার সময় খায়। মালতি অনুপমার নূতন রূপ দেখে রীতিমতো অবাক। কিন্তু মনের কথা মনে চেপে সে খাবার পরিবেশন করতে লাগলো। নাগেশ্বরও অনুপমার এই রূপ দেখে অবাক হয়েছে। সাথে মনে মনে খুশি হলো। যাক মেয়েটা সাজগোজ করেছে, মনটা ভালো থাকবে। তাও খেতে খেতে বললো - আজ কি কোন অনুষ্ঠান আছে বৌমা।

- না বাবা। এমনি অনেকদিন সাজিনি, তাই ভাবলাম একটু সাজবো। কেন আপনার ভালো লাগছে না।
- তা কেন হবে বৌমা। তুমি সাজলে তোমাকে খুব ভালো লাগে। তোমাকে আজ বেশ হাসিখুশিও লাগছে বৌমা। এটাই তো চাই বৌমা। তুমি মুখ ভার করে থাকো, আমারি কষ্ট হয়।
- ঠিক আছে বাবা, এবার থেকে আমি সেজে গুজেই থাকবো। মুখ ভার করবো না বাবা।
- না না, আমি তোমাকে জোর করছি না, বৌমা।
- না বাবা, আমি নিজের মন থেকেই বলছি বাবা। সাজার পরে আমার নিজের মনটাও খুব ভালো লাগছে। তাই আমিও ঠিক করেছি, আমি এবার থেকে সেজেগুজেই থাকবো। আমি নিজের মতো সাজলে আপনার অসুবিধা নেই তো বাবা।
- আমার কেন অসুবিধা হবে। তুমি নিজের মতো করে সাজলে, সেটাই তো সবচেয়ে ভালো সাজ। তাতেই তো তোমাকে সুন্দরী লাগবে। জোর করে সাজলে সেটা ঠিক যেন মানায় না। তবে যাই বোলো বৌমা তোমাকে আজ হাসিখুশি দেখে আজ আমার মনটাও বেশ ভালো লাগছে।
- থ্যাংকস বাবা। আর একটা দাবি আছে বাবা।
- ওরে বাবা , কি দাবী।
- কিছু না, কাল থেকে আপনি এই নীচেতে বসেই ব্রেকফাস্ট করবেন। আপনার ছেলের জন্য আমি চাইনা আপনি শুধু শুধু কষ্ট পান।
- কষ্ট তো শুধু আমার একার না বৌমা, আর তার জন্য নয়, আমি তোমার জন্য কষ্ট পাই।
- যে আমার কোনো কিছুরই দায়িত্ব নেয়নি, তার কথা আমি আর ভাবতে চাইনা বাবা। আমি ওটা ভুলতে চাই। ওটা একটা দুর্ঘটনা হিসাবে শুধু মনে রাখতে চাই।
- বেশ, তাই হবে বৌমা। ভালো কথা মনে করালে। এতদিন আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। কিন্তু আজ নিয়ে নিলাম।
- কিসের ব্যাপারে বাবা।
- তেমন কিছু না, পরে বলবো তোমায়।

খাবার পরে নাগেশ্বর নিজের ঘরে চলে এলো। আজ তার মন থেকে একটা বোঝা নেমে গেছে। নিজের স্ত্রীর প্রতি কোনো দায়িত্ব দেবরাজ পালন করেনি। তাই তিনি মনে মনে ঠিক করেছিলেন কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। কিন্তু আজ নিয়ে নিলেন। তাই নিজের ঘরে এসে নিজের পরিচিত এক উকিল কে ফোন করলেন। তাকে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সেই মতো ব্যবস্থা করতে বললেন।

এদিকে মালতি নিজের হাতের কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি অনুপমার ঘরে এসে হাজির হলো। তার মন বলছিলো, আজ কিছু একটা ঘটবে।
মালতিকে আসতে দেখে অনুপমা খাটে হেলান দিয়ে বসলো। মালতি মাটিতে বসতে গেলে অনুপমা বাধা দিলো। বললো - মাসী, তুমি এই বাড়ির কাজের লোক নও, বাবা তোমাকে এই বাড়ির একজন ভাবে। আর আমিও, তাই আর কখনো মাটিতে বসবে না।
মালতি কথা না বাড়িয়ে খাটের এক কোনে বসলো।

অনুপমা মালতির কাছ থেকে এই বাড়ির পূর্বইতিহাস জানতে লাগলো। কথায় কথায় অনুপমা জিজ্ঞাসা করলো - আচ্ছা মাসী একটা কথা বলবে।

- হাঁ বোলো বৌদিমণি।
- বাবা, আর বিয়ে করলেন না কেন? আমার শাশুড়ি মা মারা যাবার সময় ওনার বয়স তো বেশি ছিল না ?
- তোমার মতন বৌদিমণি। দাদাবাবুর বাবা অনেক বলেছিলেন কিন্তু দাদাবাবু রাজি হননি। আসলে দাদাবাবু খুব ভালোবাসতেন বৌদিমণিকে , মানে তোমার শাশুড়িকে।
- কিন্তু এত দিন ধরে নিজেকে শুধু শুধু কষ্ট দিলেন। ছেলেও তো বাবার কথা একবার ভাবলো না ওনার ভাগ্যটাই খারাপ।
- তা যা বলেছো বৌদিমণি। তোমার আর দাদাবাবুর ভাগ্য যেন এক। কিছু মনে করো না বৌদিমণি, মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেলো।
- না মনে করিনি মাসী। আচ্ছা মাসী, তোমাকে বলেই জিজ্ঞাসা করছি, শুধু মেয়েলি কৌতূহল। বাবা কি তাহলে তারপর থেকেই এই রকম নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন।

মালতি বুদ্ধিমতী মেয়ে। অনুপমার এই কথায় সে ভালো করে অনুপমা কে দেখলো। তার কাছে অনেকটাই যেন পরিষ্কার হলো অনুপমার আজকের এই বদলের কারণ। বেশকিছু অল্প বয়সী মেয়েও তো দাদাবাবুর শয্যাসঙ্গী হয়েছে সে জানে। দাদাবাবুর ওই রূপের আগুনে পুড়েছে। তাদের কে সাজিয়ে গুছিয়ে সেই তো পাঠিয়ে ছিল। দাদাবাবুর কোনটা ভালো লাগে তা সে জানে। দাদাবাবুই তাকে বলেছিলো। অনুপমা অস্বস্তিতে পড়লো। মালতির তার দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকাটা সে সহ্য করতে পারলো না। নিজের থেকেই সে মাথা নিচু করে নিলো। মালোতি একটু চুপ করে থেকে উঠে দাঁড়ালো। অনুপমা ভয় পেলো, তাহলে কি তার সব কিছু বৃথা হয়ে গেলো। কিন্তু অনুপমাকে অবাক করে মালতি ঘরের দরজাটা ভালো করে লাগিয়ে দিয়ে আবার খাটে এসে বসলো। তারপর বললো - বৌদিমণি, তুমি নির্ভয়ে এবার বোলো। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, প্রাণ থাকতে আমার কাছ থেকে কেও কোনো কথা বার করতে পারবে না। কেও না বুঝুক, আমি তো বুঝি বৌদিমণি, তোমার কষ্ট।
অনুপমা চোখ তুলে তাকালো মালতির দিকে। তার অজান্তেই তার চোখ ছলছল করে উঠলো। কিন্তু একটু সামলে বললো - মাসী আমাকে খারাপ মেয়ে ভাববে নাতো।
মালতি অনুপমার কাছে এগিয়ে এসে বসলো, তারপর নিচু গলায় বললো - যদি ভাবতাম, তাহলে দরজাটা বন্ধ করতাম না মা।
এই মেয়েটার প্রতি মালতির একটা দুর্বলতা হয়ে গেছে। নিজের ছেলে পুলে নেই তার। তাই মনে মনে অনুপমাকে মালতি মেয়ের চোখেই দেখে এখন। মালতির কাছে মা ডাক শুনে অনুপমা আরো নরম হলো। বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকলো। মালতি অপেক্ষা করছিলো। নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে অনুপমা বললো - আসলে, মাসী, মনে মনে আমি ভালোবেসে ফেলেছি ওই মানুষটাকে। এতদিন ভাবতাম, যাই মানুষটাকে তো চোখের সামনে দেখতে পাবো। কিন্তু কালকে সিদ্ধান্ত নিলাম, একবার চেষ্টা করে দেখিনা, যদি ওনার মনে আমার একটা জায়গা তৈরী করতে পারি। এখন তুমি যদি হেল্প কোরো মানে সাহায্য করো। তোমাকে লোকাতে চাইনি, তাই তোমাকে বললাম।

- চাওনি ভালো করেছো বৌদিমণি, আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারতে না। তবে তুমি চিন্তা করো না বৌদিমনি, আমিও চাই তোমাদের দুজনের একটা হিল্লে হোক। তোমাদের দুজনের গোমড়া মুখ দেখতে দেখতে আমার জীবনটা ঝালাপালা হয়ে গেলো।
মালতীর কপট রাগের কথাই অনুপমা হেসে ফেললো। বললো - ঠিক আছে মাসী, এবার তাহলে তুমি বোলো কি করবো। তোমার বেশ বুদ্ধি আছে। তোমার দাদাবাবুকে কি ভাবে ঘায়েল করতে পারা যাই বোলো।
অনুপমার কথায় মালতিও হেসে ফেললো, বললো - তার আমি কি জানি ছুড়ি, তুই মতলব করছিস, তুই ভাব কিভাবে আমার দাদাবাবুকে পটাবি।
- ইস, মাসী, কি অসভ্য তুমি।
বলে খিলখিল করে হেসে ফেললো। মালতিও যোগ দিলো। হাসি থামলে মালতি বললো - আমার কাছে উপায় জানতে হলে তো, পারিশ্রমিক লাগবে আমার।
- তাই তা কি দিতে হবে বোলো।
- কিছু না, আমাকে তাড়াতে পারবি না, ব্যাস।
- শুধু শুধু তোমাকে তাড়াতে যাবো কেন।
- তা কি জানি, তোমরা দুজনে দুধে আমে মিশে যাবে মাঝখান থেকে আমি আঁটি হয়ে গড়াগড়ি খাবো।
 
আপডেট ৯:

অনুপমার মনের ভয় মালতির কথায় পুরো কেটে গেল। বললো - মাসী, এবার বোলো। কথা দিচ্ছি তোমাকে কেও তাড়াবে না।
- আচ্ছা, কি জানতে চাস বল?
- ওই যেটা জিজ্ঞাসা করলাম তখন।
- ও। তা দাদাবাবু সেক্স কেন করবে না, করছে। তবে ছুড়ি একটা কথা বলি দাদাবাবু কিন্তু পাকা খেলোয়াড়।
- তাই, তুমি কি করে জানলে।
- কি করে আবার, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম তো। আচ্ছা শোন্, দাদাবাবু, একটু গা দেখানো শাড়ি বা চুড়িদার খুব পছন্দ করে।
- তাই। কিন্তু শাড়ি তো নাহয় ঠিক আছে কিন্তু চুড়িদারে গা দেখাবো কি করে।
- মানে, ওই টাইট চুড়িদার পড়োনা তোমার, সেগুলোর কথা বলছিলাম আর কাল থেকে এইরকম পোশাক পরো বৌদিমণি।
অনুপমা মালতির দোলাচল বুঝলো, তাই কখনো তুই আবার তুমি টা গায়ে মাখলো না। সে বুঝেছে মালতি কি বলতে চায়।
মালতি বলে চললো - তবে দাদাবাবু কিন্তু বেশি ঢলানি মেয়ে পছন্দ করে না। তাই বেশি গায়ে পড়বে না বৌদিমণি। বেশ চালাক চতুর কথাবার্তা মেয়ে দাদাবাবুর পছন্দ।
- হুম, তাহলে এখন কি করতে বোলো মাসী।
- এককাজ করো, বৌদিমণি, তুমি আগে ওই রকম পোশাক পরে দাদাবাবুর সামনে বেশ কিছুদিন ঘোরাফেরা করো। দাদাবাবুর হাবভাব আমি তো জানি, সেরকম কিছু হলে তখন আবার ভাববো।
- সেই ভালো মাসী। মাসী আমি যা করতে চলেছি তুমি সত্যি মন থেকে আমাকে খারাপ ভাবছো নাতো?
মালতি একটু হেসে বললো - বৌদিমণি আমি লেখাপড়া জানি না, তবে একটা মেয়েমানুষ আর একটা পুরুষমানুষ যদি সমাজের ভয়ে কষ্ট নাকরে একটু সুখে থাকতে চাই তাতে আমি কোনো দোষ দেখিনা বৌদিমণি, আর তোমাদের দুজনে যদি সুখী হও, তাহলে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হব্।

অনুপমাকে চুপ থাকতে দেখে মালতি উঠে পড়লো। বললো - বৌদিমণি, অনেক কাজ পরে আছে, রাগ করো না, আমি যায়। অনুপমা হেসে হাঁ বললো। মালতি চলে গেলে অনুপমা একা ঘরে বসে ভাবতে লাগলো, প্রথম দিন অনেকটা কাজ সে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার মালতির সম্মতি আছে জেনে সে একটু ভরসা পেলো। বেশ কিছুক্ষন পরে উঠে সে নিজের কাপড়ের আলমারী খুললো। মালতির কথা মতো কাপড়জামা সে খুঁজতে লাগলো। দু-তিনটে শাড়ি খুঁজে পেলো। এগুলো সে বিয়ের জন্য কিনেছিলো। এইগুলো পড়তে মন চাইলো না তার। আর সেই রকম কুর্তি বা লেগ্গিংস সে পেলো না। মনে মনে একটা প্ল্যান করলো। দেবরাজের জন্য কেনা কাপড়গুলো সে বার করে ফেলে দিলো। নুতুন জীবন নতুন ভাবে শুরু করতে চাই সে।
কাপড়গুলো নিয়ে সে মালতির কাছে এলো। মালতি রান্নাঘরে ছিল। তাকে ডেকে বললো - মাসী, এই কাপড় আমি ফেলে দিতে চাই। তুমি দেখো যদি তোমার কোনো কাজে লাগে তো।
মালতি জিজ্ঞাসু চোখে দেখলো তাকে। ইশারায় কেন জানতে চাইলো। অনুপমা মুচকি হেসে বললো - এগুলু আমার বিয়ের জন্য মাসী। কিন্তু সেই স্মৃতি আমি রাখতে চাই না। আমি নতুন করে শুরু করতে চাই।
মালতি এবার বুঝলো। মাথা নেড়ে সমর্থন করলো। সেখান থেকে অনুপমা নাগেশ্বরের অফিস ঘরে এলো। এটা বাড়ির সামনের দিকে ঘরটা। এখানে বসেই নাগেশ্বর তার অফিসের সমস্ত কাজ করে। অফিস ঘরে ঢোকার আগে অনুপমা খেয়াল করলো কেও নেই। অনুপমাকে নিজের অফিস ঘরে দেখে নাগেশ্বর অবাক হলো। কিন্তু চেপে গিয়ে বললো - এসো, বৌমা বসো। কিছু কি দরকার বৌমা।
- হাঁ বাবা, আপনি কি কাল গাড়ি করে কোথাও বেরোবেন।
- না, সেরকম কোনো প্ল্যান নেই। কেন বলতো ?
- না মানে, আমি তাহলে একটু শপিং করতে যাবো ভাবছিলাম।
- ও এই কথা, ঠিক আছে বৌমা, আমি ড্রাইভারকে বলে রাখবো। তুমি যখন যাবে ওকে বলবে।
- ঠিক আছে বাবা।

অনুপমা চলে যেতে নাগেশ্বর অফিসের কাজে মন দিলো। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তার মধ্যে একটা চাপা কৌতূহল কাজ করছিলো। কিন্তু তিনি জানেন, সময় এলেই সব পরিষ্কার হবে।
পরের দিন দুপুরের খাবার পর অনুপমা বেরিয়ে গেলো। সঙ্গে মালতিকেও নিলো। শপিং শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেলো। অনুপমা শপিং করতে করতেই আরো খুঁটিয়ে জেনে নিচ্ছিলো নাগেশ্বরের পছন্দ আর অপছন্দ। রাত হওয়ায়, খাবার বাইরে থেকে কিনে নিলো।
বাড়ি ফিরলে, অনুপমার কেনাকাটার বাহার দেখে নাগেশ্বর মজা করে বললো - একি, বৌমা, তুমি তো পুরো বাজার তুলে এনেছো দেখছি।
- না বাবা, বেশি না। আপনি হাত ধুয়ে খাবার টেবিলে আসুন। আমি খাবার বাইরে থেকে কিনে এনেছি। মাসী খাবারটা গরম করে দিচ্ছে, একসাথে বসে খাবো।
নাগেশ্বর হেসে চলে গেলো। তার ভালো লাগছিলো। অনুপমার এই প্রাণবন্ত রূপ। খেতে বসে নাগেশ্বর আর কৌতূহল চাপতে পারলো না। বলেই ফেললো - তুমি কি করে জানলে এইগুলো আমার পছন্দের।
তারপরেই বললো - ও আচ্ছা বুঝেছি, মালতির কাছ থেকে।

- হাঁ বাবা। এত রাত হয়েছে, তাই ভাবলাম যদি আপনি রাগ করেন, তাই মাসীর কাছ থেকে জেনে আপনাকে ঘুষ দেবার জন্য আপনার পছন্দের খাবার নিয়ে এলাম।
- বাহ্, শশুরকে হাতে রাখার ভালো প্ল্যান করেছো দেখছি।
- বা রে, আপনার দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব এখন আমার। তা জন্য না আপনার কোনটা পছন্দ আর কোনটা অপছন্দ।

নাগেশ্বর হেসে ফেললো। অনুপমার কথার গভীরতা সে এখনো আন্দাজ করতে পারে নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই মালতিকে বললো - কিরে, তোর বৌদিমণি তো দেখছি তোর পেট থেকে বেশ কথা বার করে নিচ্ছে।
মালতি হেসে বললো - তা দাদাবাবু, বৌদিমণি এখনকার দিনের চালাক চতুর মেয়ে, আমি সেকেলে তার ওপর মুখ্য। ওতো কি বুঝি। বৌদিমণি জানতে চাইলো তাই বললাম।

- হুম, তাই বৌদিমণি বললো, আর আমি গড়গড় করে বলে দিলাম। বৌমা, কেমন মেয়ে বুঝতে পারছো তো। বেশি গোপন খবর যেন মালতির সামনে বোলো না। নাহলে আবার কার কাছে যে গড়গড় করে বলবে।
- আহ, বাবা, আপনি শুধু শুধু মাসীকে বকছেন। মাসী তো শুধু আপনার পছন্দের খাবার টুকুই বলেছে আর কিছু তো বলে নি। আপনি এত বকাবকি করছেন যেন মাসী আরো কি না কি বলে দিয়েছে।
কথাটা সামান্য, কিন্তু নাগেশ্বর মনে মনে চমকে উঠলো। চেপে গিয়ে মজার সুরেই বললো - বকলাম কোথায় বৌমা। একটু তো মস্করা করছি। মনে হচ্ছে আমার নাম বেশ বৌদিমণির কাছে অভিযোগ করেছিস। এখন তো দেখছি বৌদিমনিও তোকে গার্ড করছে।
- নাগো দাদাবাবু। তোমার নামে অভিযোগ করি আর তুমি কি আমায় ছাড়বে।
- মাসী, তোমার কোনো ভয় নেই। বাবা কিছু বললে তুমি আমাকে জানাবে। তারপর দেখবো বাবা তোমায় কি করতে পারে।
এইভাবে আড্ডা-ঠাট্টার মধ্যে দিয়ে রাতের খাবার শেষ হলো। বাড়িটা যেন আবার নতুন প্রাণ ফিরে পাচ্ছে।
 
আপডেট ১০:

সকালে উঠে অনুপমা নাচের স্কুল শেষ করলো। তার আগে ব্রেকফাস্ট টেবিলে আর একপ্রস্থ গল্পগুজব। নাগেশ্বর যথারীতি মালতির পিছনে লাগলো আর অনুপমা বাঁচানোর ভূমিকায়। নাচের স্কুল শেষ করে অনুপমা ভালো করে চান করলো। তারপর আগের দিনের বেছে রাখা লেগ্গিংস আর কুর্তি পরে নিলো। হালকা সবুজ রঙের কুর্তিটা ফুল হাতা। লেগ্গিংস সাদা। কিন্তু বেশ টাইট ফিটিংস আর কুর্তির দুপাশ কাটা হবার জন্য অনুপমার সুডৌল নিতম্ব আর দাবনার গুরুত্ব খুব ভালো ভাবে বোঝা যাচ্ছিলো। কুর্তির বুকের কাছটা চৌকো গলার। তাতে অনুপমার দুই উন্নত মাংসল পাহাড়ের গিরিপথ দেখা না গেলেও তাদের আকার আর আয়তন সম্পর্কে খুব স্পষ্ট ধারনা উৎসুক দর্শকের চোখে ঠিক ধরা দেয়। ওড়না নিলো না অনুপমা।

নিচে নেমে সে রান্না ঘরে এসে মালতিকে সাহায্য করতে লাগলো। কাজের ফাঁকে মালতি ইশারা করে জানালো, দারুন লাগছে। একটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে অনুপমা নিজের থেকেই নাগেশ্বরের অফিস ঘরে চলে গেলো।

- বাবা চলুন খেতে চলুন।
- হাঁ বৌমা।

নাগেশ্বর মাথা তুলে শুধু এইটুকুই বলতে পারলো। সামনে অনুপমাকে এই প্রথম এই পোশাকে দেখে নাগেশ্বর থমকে গেলো। অনুপমা নিজের শশুরের অবাক দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে একটু লজ্জা পেলো। লজ্জা পাওয়া গলায় বললো - কি দেখছেন বাবা।

- কিছু না বৌমা।
- আমাকে কি ভালো লাগছে না। কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন আমি আমার পছন্দ মতো সাজতে পারি।
- কখন বললাম, তোমাকে খারাপ লাগছে। খুব ভালো লাগছে বৌমা। আমি তোমাকে এই সাজে প্রথম দেখলাম, আর তোমার রূপে এই বুড়ো থতমত খেলে সেটা কার দোষ বোলো বৌমা।
- থাকে বাবা, অনেক প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তাতে পেট ভরবে না, চলুন খেয়ে নেবেন চলুন।

নাগেশ্বর হেসে অনুপমার পিছন পিছন যেতে শুরু করলো। যেতে যেতে তার চোখ অনুপমার ভরাট পাচার ওপর পড়লো। মনে মনে অনুপমার ভরাট পাছার তারিফ না করে পারলো না নাগেশ্বর। অনুপমার হাঁটার তালে তালে তার পুস্ট পাছায় যে হিল্লোল উঠছিলো তাতে নাগেশ্বর উপলব্ধি করলো তার বহুদিনের উপোসী লিঙ্গে সেই চেনা সুখের অনুভূতি জাগছে। কিন্তু জোর করে নিজের মন অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো। খেতে খেতে আগের মতই গল্পগুজব চললো। খাবার টেবিলে নাগেশ্বর আর অনুপমা একদম মুখোমুখি বসেছে। ফলস্বরূপ অনুপমা যখনই ঝুঁকছে তার চৌকো গলার কুর্তির ফাঁক থেকে তার নরম মাংসল পাহাড়ের কিছু ঝলক নাগেশ্বরের দৃষ্টিসীমাতেও পড়ছে। অনুপমা একদম স্বাবাভিক রাখলো নিজেকে। যেন কিছুই হয়নি। নাগেশ্বর স্বাভাবিক থাকলেও মাঝে মাঝে আড় চোখে অনুপমাকে জরিপ করছিলো। খাওয়া হলে নাগেশ্বর আগের মতো নিজের অফিস ঘরে চলে গেলো। অনুপমা মালতিকে সাহায্য করতে লাগলো।

দুপুরে অনুপমা আর মালতি অনুপমার সবার ঘরে এলো গল্প করার জন্য। কিছুক্ষন হাসিঠাট্টার পরে মালতি বলল - যাই বলো বৌদিমণি, আজ তোমাকে দেখে দাদাবাবু পুরো ভিরমি খেয়েছেন। এই পোশাকে তোমাকে কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে। যেন তোমার রূপ পুরো ফেটে বেরোচ্ছে।

- তাই মাসী। তা কি মনে হলো মাসী তোমার দাদাবাবুকে দেখে।
- দাঁড়া ছুরি, এত তাড়াতাড়ি কি করে বলি। দাদাবাবু সেয়ানা মানুষ।
- সেতো জানি মাসী, কিন্তু তোমার দাদাবাবু ঘায়েল হচ্ছে কিনা সেটা জিজ্ঞাসা করছি।
- আহ, আর এক-দুদিন দেখতে দে ছুরি।
বিকেলে অনুপমা নাগেশ্বরের লাইব্রেরি ঘরে এসে বই নিয়ে নাড়াঘাঁটা করতে লাগলো। নাগেশ্বর অফিস ঘর থেকে বেরিয়ে লাইব্রেরি ঘরে অনুপমাকে দেখে অবাক হলো।
নাগেশ্বরকে দেখে অনুপমা বললো - বাবা, সময় কাটানোর জন্য ভালো বই খুজছিলাম।
- বেশতো, তোমার পছন্দ মতো বই দেখো। এই সবই তোমার সম্পত্তি বৌমা।
- তা কেন বাবা। এই সম্পত্তি নিয়ে কি করবো। যদি সাথে থাকার মতো কাওকে না পাই।
- আপাতত তোমার এই সম্পত্তিতে এই বুড়োও আছে, যত দিন না ফেলে দিচ্ছ।
- আপনাকে আমি কোনো দিন ফেলে দোবো না বাবা। আমার সবকিছু দিয়ে আগলে রাখবো। আর এইসব কথা বলবেন না। এখন আপনি আপনার কাজ করবেন আর আমি আমার কাজ। নো ফাঁকি।

অনুপমার কপট ধমকে নাগেশ্বর হেসে নিজের পড়ার টেবিলে গিয়ে বসলো। অনুপমা ঘুরে ঘুরে পুরো লাইব্রেরি দেখতে লাগলো। আর নাগেশ্বর অনুপমাকে। নির্জন ঘরে অনুপমার পুরো শরীরের বাঁক আড় চোখে আজ নাগেশ্বর খুঁটিয়ে দেখছিলো। আঁটোসাঁটো লেগিংসের ওপর দিয়ে দুই সুডৌল নিতম্বের ভার নাগেশ্বর নিজের অভিজ্ঞ চোখে মেপে নিচ্ছিল। সাথে সরু কোমরের পরিধী। বুকের ভারী মাংসপিন্ডের দৃঢ়তা, তাদের আকার, সবই নাগেশ্বর চোখে মেপে যাচ্ছিল।
অনুপমা মাঝে মাঝে টুকটাক প্রশ্ন করছিলো। নাগেশ্বর জবাব দিচ্ছিলো।দুখানা বই পছন্দ করে অনুপমা নাগেশ্বরের টেবিলে এসে বসলো।

- বাবা আজ থেকে যদি আমি এখানে বই পরে সময় কাটাই আপনার আপত্তি নেই তো।
- আপত্তি কেন হবে বৌমা। সারা দিন একা থাকি, তুমি এখানে এলে তাও তো দুটো কথা বলতে পারবো।
- ঠিক আছে বাবা, এবার থেকে আমি এখানে বিকেল বেলা করে চলে আসবো। আপনার কালেকশনে অনেক বই আছে দেখলাম। এতদিন সময় কাটানোর তেমন কিছু পাচ্ছিলাম না।
- এই বয়সে বৌমার সানিধ্য পাবো, এই বুড়োর কাছে তো স্বর্গ।
- যাহ, আপনি মোটেও বুড়ো নন। বারবার বুড়ো বুড়ো করবেন নাতো। এখনো যা শরীর স্বাস্থ্য আপনার, অনায়াসে যেকোনো মেয়ে পটিয়ে বিয়ে করতে পারেন।
অনুপমার কথায় নাগেশ্বর মজা পেলো। বললো - সেতো বুড়ি জুটবে, তোমার মতো সুন্দরী কি আর রাজি হবে নাকি। যখনই বয়স শুনবে আমাকে ঝাঁটা নিয়ে তারা করবে।
রসিকতায় অনুপমাও হেসে ফেললো। - আপনার সাথে কথাই পারবো না বাবা। যদি বলেন তো আমি খুঁজে খবর নিতে পারি।
- কিসের?
- কেন আপনার বিয়ের জন্য কনের।
- এই বুড়ো বয়সে এত কিছু শরীরে সইবে না বৌমা। এবারের মতো নিস্তার দাও।
- ঠিক আছে, দোব কিন্তু একটা শর্তে।
- শর্ত ! কি শর্ত ?
- নিজেকে বুড়ো বলা বন্ধ করতে হবে নাহলে আমি কালকেই কাগজে বিজ্ঞাপন দিচ্ছি।

তারপরে অনুপমা বিজ্ঞাপন পাড়ার ভঙ্গি করে, বললো - এতদ্বারা, জানানো যাইতেছে যে, মধ্য চল্লিশের সুপাত্রের জন্য একজন অল্প বয়সী অতি সুন্দরী পাত্রী চাই।
অনুপমার কথা বলার ভঙ্গিতে নাগেশ্বর হা হা করে হেসে ফেললো। ঠিক আছে, বৌমা আর বলবো না। এইরকম শাস্তির ব্যবস্থা করছো জানলে আমি কেন কেও বলবে না।
হাসি ঠাট্টা আর বই পরে দুজনের বেশ কাটলো সন্ধ্যে টা। রাতে অনুপমা আর নাগেশ্বর ডিনারের পরে নিজের নিজের ঘরে শুতে গেলো। ঘরে এসে নাগেশ্বর মালতিকে ডেকে পাঠালো।
মালতি এলে নাগেশ্বর সরাসরি জিজ্ঞাসা করলো - বৌমার ব্যাপারটা কি কিছু জানিস?

- না দাদাবাবু। বৌদিমণির এই হঠাৎ পরিবর্তন আমাকেও অবাক করেছে।
নাগেশ্বর ভালো করে মালতিকে জরিপ করলো। তারপর বললো - পরিবর্তন হবার পিছনে কোনো না কোনো কারণ থাকে। সেটা জানার চেষ্টা কর।
- ঠিক আছে দাদাবাবু। তবে আমার মনে হয়, বৌদিমণি কারো সাথে প্রেম করছে।
- যদি তাই হয়, তাহলে তো খুব ভালো। আমারও তাই মত। কিন্তু পুরো নিশ্চিত হতে চাই আমি। তুই কি কোনো কিছু দেখেছিস বা শুনেছিস।
- না দাদাবাবু। এখনো পর্যন্ত কিছু পাইনি।
- ঠিক আছে তুই যা।
মালতি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। যাক, দাদাবাবু ধরতে পারেনি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top