What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কৌশিকি ।। কৌশিকি - এক সমভ্রান্ত প্রফেসর গৃহবধু ।। A Well-Known Professor Housewife (1 Viewer)

Black Knight

Not Writer or Creator, Only Collector
Staff member
Supporter
Joined
Mar 6, 2018
Threads
265
Messages
25,763
Credits
560,184
Birthday Cake
Billed Cap
Rocket
Pizza
Mosque
Pizza
কৌশিকি
লেখক- Nirjonsakhor


সকালে চা খেতে খেতে খবরের কাগজটা দেখছিল কৌশিকি।মানদা'র ডাকে হুশ ফিরলো।
"বৌদি খাবার বেড়ে দিয়েছি।চলে এসো।"
কৌশিকি ঘড়ির দিকে তাকিয়েই বুঝলো ন' টা বাজে।৯:৩৫ তাকে ৩৬/B বাস ধরতে হবে।যাওয়ার সময় ঋতমকে স্কুল বাসে তুলে দিতে হবে।
কৌশিকি সেনগুপ্ত।ইতিহাসের অধ্যাপিকা।সুদীপ্তের সাথে বিয়েটা হয়েছিল মাত্র এক বছরের পরিচয়ে।কৌশিকি বরাবরের মেধাবী ছাত্রী ছিল।বিশ্বভারতী থেকে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করে সবে তখন কলকাতায় অধ্যাপনা শুরু করেছে।সুদীপ্ত তখন কেন্দ্র সরকারের কোল বিভাগে চাকরি পেয়েছে।আর্ট গ্যালারিতে আলাপ হয়েছিল সুদীপ্তের সাথে কৌশিকির তারপর আসতে আসতে সম্পর্কটা গড়ে ওঠে দু'জনের।সুদীপ্তের মা তখনও বেঁচে।কৌশিকির সাথে অনুষ্ঠানেই বিয়ে হয়।ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কৌশিকি আধুনিকা হলে উগ্র মডেলার দের মত নয়।কৌশিকি শাঁখা-সিঁদুর না পরাতে সুদীপ্ত বা তার শাশুড়ির কোনো আপত্তি ছিল না।তবে কৌশিকি শাড়ি পরতেই ভালো বাসে।বাড়ীতে গাউন বা নাইটি পরলেও বাইরে সবসময়ই শাড়ি পরে।ঋতম জন্মাবার দুই বছর পর কৌশিকির শাশুড়ি গত হন।বলতে বলতে কৌশিকি ৩৫ এ পা দিয়েছে।রূপের ছটা এখনও কমেনি।গায়ের রং এমনিতেই খুব ফর্সা।তার ওপরে স্লিম চেহারা হলেও মডেলদের মত রুগ্ণ নয়।যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমনই।মুখের মধ্যে একটা বাঙালি মিষ্টতা রয়েছে।যেকোনো মানুষ যে কৌশিকির রূপে মূগ্ধ হবে তা নিশ্চিত।সুদীপ্তের এক ছবি আঁকিয়ে বন্ধুতো কৌশিকির ছবি আঁকবার জন্য একদা প্রায়ই বলতো।সেই সাথে কৌশিকির ব্যক্তিত্ব কলেজের ছাত্রী থেকে অধ্যাপকরাও সমীহ করে।এমনিতে কৌশিকি সামাজিক হলেও নির্জনতা পছন্দ করে।সুদীপ্ত সে জন্যই বেলঘরিয়ার এক হাইওয়ে ধারে বিস্তীর্ন মাঠের মাঝে বড় জমি কিনে বাড়ী করেছে।কৌশিকি মানদা না থাকলে নিজেই সব কাজ সামলায়।ঋতমটাও যত বড় হচ্ছে দুস্টুমি বাড়ছে।কৌশিকি নিজের কলেজ, বাড়ী,ঋতমকে সামলানো সবই একসাথে করে।
কৌশিকি শাড়ি পরছিল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।মানদার চোখ পড়ছিল কৌশিকির দিকে।সত্যিই বৌদি কি সুন্দরী।
মানদা কৌশিকিকে দেখে মুগ্ধ হয়।এ বাড়িতে সে ঋতমের জন্মের সময় থেকে কাজ করছে।কৌশিকির কলেজে চারদিন ক্লাস থাকে।বাকি দিন গুলো তাকে বাড়ীতে একাই কাটাতে হয়।অবশ্য একা থাকলে বই তার সঙ্গী আর মানদা যতক্ষন থাকে তার সাথে কথা বলে কেটে যায়।কৌশিকি ঋতমকে বাসে তুলে নিজে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল।
এই জায়গাটা বাসস্টপ নয়।হাইরোডের ধারে কৌশিকি হাত দেখালেই বাস দাঁড়িয়ে যায়।প্রতিদিনের যাত্রী বলে বাস এখানে দাঁড়ায়।কৌশিকির মনে হল বাস বোধ হয় আজ দেরি করছে।
গরমের দিন।তার ওপর সিল্কের শাড়ি পরলে ঘামে শরীর ভিজে যায়।কৌশিকি একটা পুরোনো পরিত্যাক্ত দোকানঘরের ছায়া তলে দাঁড়িয়েছিল।হঠাৎ কৌশিকি দেখলো সামান্য দূরে যেখান থেকে ফ্লাইওভার শুরু হয়েছে তার তলায় একটা পাগল বসে বিড়ি টানছে।লোকটাকে আগে কখনো দেখেনি কৌশিকি।লোকটার পরনে ঝোলা একটা পুরোনো ছেঁড়া জামা।জামাটা এতোটাই ময়লা তার রং চেনা মুস্কিল।গাল ভরতি দাড়ি।তার সাথে কুৎসিত দর্শন।তবে লোকটা ভিখারি বা পাগল হলে কি হবে।চেহারা দেখে মনে হয় খেতে পায়।লম্বায় প্রায় ৬'ফুট।একসময় মনে হয় ভালো চেহারা ছিল।বয়স বোঝা মুস্কিল।ঠিক সেসময়ই কৌশিকি দেখলো বাস আসছে।হাত দেখাতেই বাস দাঁড়িয়ে পড়লো।বাসে উঠতেই জানলার পাশে একটা সিট পেয়ে বসতে গিয়ে কৌশিকির নজর আবার একবার জানলার বাইরে ওই লোকটির দিকে পড়তেই কৌশিকি দেখলো লোকটি একটা লাঠি ধরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।লোকটির একটি পা' নেই।হাঁটুর কাছ থেকে পা'টা কাটা।

থার্ড পিরিয়ডে ক্লাস থেকে ফিরেই স্টাফরুমে এসে বিশ্রাম নেয় কৌশিকি।পাশের টেবিলে চারুশীলা দি বসে টিফিন করছিলেন।চারুদি কলেজের সবচেয়ে বয়স্ক অধ্যাপিকা।একমাস পরই রিটায়ার্ড নিচ্ছেন।কলিগদের সাথে কৌশিকি ভালো ব্যবহার রাখলেও চারুদিই কৌশিকির কাছের।অবসরের পর চারুদি ছেলের কাছে ইউএসএ চলে যাবেন।চারুদির ছেলে নিউজার্সিতে থাকে।কৌশিকিকে দেখেই চারুদি বলল,'তোর ফোনটা বেশ বাজছিল,সুদীপ্ত ফোন করেছিল।আমি অবশ্য ধরিনি।'
কৌশিকি ক্লাসে গেলে ফোনটা রেখে যায়।ফোনের দিকে তাকাতেই নজরে এলো চারটে মিসড কল।সুদীপ্ত ফোন করেছিল।
কৌশিকি ফোন ঘোরাতেই সুদীপ্ত বলল;
'কোথায় ছিলে?ক্লাসে?'
'হ্যা, খেয়েছো?,ডিউটি যাবার আগে একবার ফোন করো।কাল মানদা আসবে না।ঋতমের আবার সকাল স্কুল।কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না!'
'কাল দিনটা না হয় ছুটি নিয়ে নাও।'
'তাই করতে হবে,'
'জানো রাঁচিতে খুব বৃস্টি হচ্ছে।'
তবু ভালো।এখানে গরমে আগুন ঝরছে।তোমার আবার ঠান্ডার ধাত আছে সাবধানে থেকো।
কৌশিকির সাথে সুদীপ্তর ফোনে কথা খুব অল্প সময় হয়।ফোনটা কাটবার পর চারুদি নীচুস্বরে বলল,'শুনেছিস তমালিকার আর মৃন্ময়ের ব্যাপারটা?'
চারুদি গসিপ ভালোবাসে,কৌশিকি ভালো করেই জানে।কৌশিকির অবশ্য গসিপ একেবারেই না-পসন্দ।তমালিকা কৌশিকির কলিগ,ইংরেজী বিভাগের।ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের আর এক অধ্যাপক মৃণ্ময়ের স্ত্রী।সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে একথা বহুবার কৌশিকি চারুদির মুখ থেকে শুনেছে।তমালিকার এক্সট্রাম্যারিটাল এফেয়ার আছে।
চারুশীলা ফুসফুসিয়ে বলল,'ওদের সামনেই ডিভোর্স।'
কৌশিকি মৃন্ময় দা'র কথা ভাবছিল।বেশ হাঁসিখুশি মানুষ।তমালিকাও তাই।ওদের জীবনে এরকম নেমে আসাটা সত্যিই অকল্পনীয়।

****
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top