What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected শৈশবস্মৃতি (1 Viewer)

Mahadi_Pages

New Member
Joined
Mar 10, 2018
Threads
11
Messages
18
Credits
3,214
বাবা মার খুব আদরের দুই ছেলে অপু ও তপু। বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ভাকোয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। ছাত্র হিসেবে দু'জনের যেমন সুনাম রয়েছে দুষ্টামিতেও তাদের নাম কম নয়। দুই ভাই খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সকল কাজ শেষ করে স্কুলের উদ্দেশে হাঁটতে থাকে। বাড়ি থেকে স্কুলে যেতে সময় লাগে প্রায় ত্রিশ মিনিট। অপুর ক্লাসে রোল এক আর তপুর দুই। দু'জনের পড়ালেখায় খুব মনোযোগ, যখন পড়তে বসবে তখন সব কিছু ভুলে শুধু পড়বেই আর যখন দুষ্টামি করবে তখন তাতেও মনোযোগ কম থাকে না। বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় কার গাছে আম পেকেছে, কার গাছে লেবু বড় হয়েছে, কার গাছের ফলের রঙ লাল হয়েছে তা দেখতে একেবারেই ভুল করে না, শুধু দেখেই ক্ষান্ত নয় ব্যাগে করে তা স্কুলে নিয়ে যাবে এবং স্কেল দিয়ে কেটে সবাইকে নিয়ে খাবে।
গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ আমের বাহার এলে তো কোন কথায় নেই কাঁচা আমের সাথে মরিচের গুঁড়া দিয়ে লবণ সাথে থাকবেই। তাদের এসব কর্মকা- পাড়ার সকলেই জানে। দিনে তাদের বাবা মার কাছে কয়েকটি নালিশ যাবে তাদের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে পাড়ার সামাদ সাহেবের ছেলেকে মেরে শার্ট অর্ধেকটি ছিঁড়ে ফেলেছে তার জন্য তার বাবা মাকে জরিমানাও দিতে হয়েছে। তা ছাড়া স্কুলের পাশে বারেক মিয়ার কয়েকটি লেবুর বাগান রয়েছে প্রতিদিনই অপু, তপু ও তার বন্ধুরা ঐ বাগানে লেবু আনার জন্য হামলা চালায়, বারেক মিয়ার সাথে বাজারে অপু তপুর বাবার দেখা হলেই হলো তাদের নামে হাজারে নালিশ শুনতে হয়। দুই ছেলের জ্বালায় বাবা ঠিকমতো বাজারেও যেতে পারে না। তবু ছেলেদের কিছু বলে না তার বাবা মা, তাদের ধারণা ছোট ছেলে, না বুঝে দুষ্টামি করে তা ছাড়া পড়ালেখা তো তাদের ঠিকই আছে। পড়ালেখায় না হলেও দুষ্টামিতে ক্লাসের সকলেই তাদের দু'জনকে খুব ভালো করে চিনে।
অপু ও তপুর বাবা-মা তাদের খুব স্নেহ করে যখন যা বায়না ধরে বাধ্য বাবা মার মতো তখন তাই কিনে দেয়। তবে পাড়ার অনেকেই তাদের দুষ্টামিতে বিরক্ত হয়ে নানান নালিশ নিয়ে বাড়িতে তো আসেই, রাস্তায় তাদের বাবা মার সাথে দেখা হলেও তাদের নামে নালিশ শোনা যায়। অপুদের বাড়ি থেকে একটু দূরে এক বাড়ির পাশে আমগাছে মৌমাছি বাসা বেঁধেছে। বাড়িওয়ালা খুব সতর্কতার সাথে তা দেখে দেখে রাখছে তার ইচ্ছা সামনের পূর্ণিমাতেই তা থেকে মধু সংগ্রহ করবে। কিন্তু তা আর হলো কিভাবে স্কুলে যাওয়ার পথে এক ঢিলে দিল তা ভেঙে, বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়িওয়ালা তাদের কান্ড দেখে হাতের কাছের লাঠি নিয়ে তাদের পিছু তাড়া করছে। তাদের সাথে পারে কে, এক দৌড়ে স্কুলের ক্লাস রুমের ভেতর। গত রমজানে বাবা নিয়মিত মসজিদে যায় নামাজ পড়তে, তাদের বায়না ২৭ তারিখ তারও বাবার সাথে মসজিদে যাবে। প্রথমে বাবা নিতে রাজি হয়নি পরবর্তীতে তাদের মার অনুরোধে নিতে রাজি হলো। তবে শর্ত হচ্ছে একেবারে দুষ্টামি করা যাবে না, তারাও শর্ত মেনে নিলো। কিন্তু মসজিদে যেতে দেরি হলেও বাইরে বের হতে দেরি হয়নি, বাইরে বের হয়ে অন্যের বাড়ির কোলিং বেল চেপে লুকিয়ে থাকে তা ছাড়া টিনের চালে ঢিল মেরে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসব তাদের নিত্য দিনের কাজ। পড়ালেখার রুটিনের মধ্যে দুষ্টামিও যেন যোগ হয়ে গেছে, বিশেষ করে স্কুলে যাওয়ার সময় তা যেন আরো ভালো করে জেগে উঠে সে দুষ্টামির প্রবণতা।
তাদের বাবা মা সিদ্ধান্ত নিল তাদের দু'জনকে দু'টি সাইকেল কিনে দিবে যার ফলে এতো দুষ্টামি করার সুযোগ পাবে না, সাইকেলে করে সোজা স্কুলে চলে যাবে আবার ক্লাস শেষে বাড়িতে চলে আসবে। যেই সিদ্ধান্ত সেই কাজ। তাদের দুই ভাইকে নতুন দুটি সাইকেল কিনে দিল, দু'জনেই নতুন সাইকেল পেয়ে মহা খুশি। কিন্তু প্রথম দিনই অপু সাইকেল এক মহিলার ওপর দিয়ে উঠিয়ে দিল যদিও তেমন ভালো করে সে সাইকেল চালাতে পারে না। এভাবেই চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণী শেষ করলে অপু ও তপুকে ভর্তি করে দিল শহরের একটি স্কুলে। মাঝে মাঝে স্কুল বন্ধ পেলে বেড়াতে আসে তাদের গ্রামে, এখন তাদেরকে দেখলে মনে হয় তাদের থেকে ভদ্র ছেলে এ গ্রামে নেই। তবে গ্রামের সকলের মতো শৈশবের সেই ক্লাস ফোর ও ফাইভের সময়টা বড্ড বেশি মনে হয়, রাস্তা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় মনে হয় এখানেই তো জড়িয়ে আছে হাজারো শৈশবস্মৃতি।


লেখক - শামীম শিকদার
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top