What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

‘নতুন সেন্ট মার্টিন’ পাটোয়ারটেক (1 Viewer)

Laal

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Mar 4, 2018
Threads
103
Messages
3,574
Credits
23,646
Lollipop
Red Apple
prothomalo-bangla%2F2022-05%2F7f7cda04-f674-4448-b56c-13ba757cde96%2FCoxs_Bazar_DH0497_20220509_Patuartek_2.JPG


সড়কের পূর্ব পাশে উঁচু পাহাড়, পশ্চিম পাশে পাথুরে সৈকত পাটোয়ারটেক। ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন এ সৈকতে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, পাটোয়ারটেক সৈকত দেখতে অনেকটা বঙ্গোপসাগরের মধ্যে অবস্থিত আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের মতোই। সৈকতজুড়ে গোলাকৃতির পাথরখণ্ড। পর্যটক টানছে পাহাড়কূলের নতুন এই সেন্ট মার্টিন।

সেন্ট মার্টিনে পাহাড় নেই। পাটোয়ারটেক সৈকতের উঁচু পাহাড়সারি এবং পাহাড়ের পাদদেশের সুপারিগাছে ভরপুর সবুজ পল্লি পর্যটকদের ভ্রমণে এনে দিচ্ছে নতুন মাত্রা। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এ পাথুরে সৈকতকে ঘিরে গড়ে উঠছে অসংখ্য দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জায়গাজমি কিনে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

৮৪ কিলোমিটারের 'কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের' ঠিক মধ্যভাগে উখিয়ার পাটোয়ারটেক সৈকত। বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় গত ১ এপ্রিল থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ আছে। পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু হবে আগামী নভেম্বরে। সে জন্য পাটোয়ারটেক সৈকতে গিয়ে সেন্ট মার্টিনের রূপ-লাবণ্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন অনেকে।

প্রবালদ্বীপের মতো সৈকতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট অসংখ্য চুনাপাথর। পর্যটকেরা পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ ধারণ করছেন ভিডিও চিত্র। বৈরী পরিবেশে সমুদ্র উত্তাল, বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। মুহূর্তে লোনাপানি ভিজিয়ে দিচ্ছে পাথরখণ্ডের ওপর দাঁড়ানো মানুষের পা-শরীর।

বালুচরের একটি পাথরখণ্ডে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মাহবুব-কাকলী দম্পতি। ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে এসে পাটোয়ারটেক সৈকতে নেমেছেন তাঁরা। মাহবুব উর রহমান (৩৭) বলেন, 'মেরিন ড্রাইভ দিয়ে টেকনাফ যাচ্ছিলাম, দেখি এই সৈকতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম। আমরাও নেমে পড়লাম।' তাঁর স্ত্রী কাকলী বলেন, বালুচরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য পাথরখণ্ড দেখে অবিকল সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মতো মনে হচ্ছে। জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যেতে না পারলেও পাটোয়ারটেক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সাধ পূরণ করছে।

স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে সৈকতে ভ্রমণে আসেন ঢাকার বাড্ডার ব্যবসায়ী মোস্তাকিম মাহমুদ (৫০)। তিনি বলেন, পাটোয়ারটেক সৈকতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে উল্টো পাশের উঁচু পাহাড়সারি ও সুপারিবাগানসমৃদ্ধ সবুজ গ্রামটি। তবে স্বচ্ছ নীল জলের সেন্ট মার্টিনের পাথরস্তূপে নানা প্রজাতির মাছের বিচরণ-পাটোয়ারটেক সৈকতে নেই। তিনি আরও বলেন, অপরিকল্পিত দোকানপাট ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনা পাটোয়ারটেক সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে। বিশেষ করে সৈকতে বিচ-বাইকের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা উচিত। লোকজন বাইকে উঠতে না চাইলেও চালকেরা পর্যটকদের পেছনে পেছনে গাড়ি চালিয়ে উঠতে বাধ্য করেন। তা না হলে দুর্ব্যবহার করেন। ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার আয়তনের ছোট্ট সৈকতে ২০ থেকে ২৫টি বাইকের দৌড়ঝাঁপ বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বখাটে তরুণ-যুবকেরা মোটরসাইকেল নিয়ে বালুচরে নেমে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করেন।

prothomalo-bangla%2F2022-05%2F8ad0cb46-83db-4c2b-b832-59c6c20ff2c7%2FCoxs_Bazar_DH0497_20220509_Paroartek_11.JPG


সৈকতকে ঘিরে মেরিন ড্রাইভের পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ। গভীর রাত পর্যন্ত লোকসমাগম থাকায় চাঙা ব্যবসা-বাণিজ্যও। তবে কয়েকটি রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দামে খাবার বিক্রির অভিযোগ আছে। রেস্তোরাঁ ও দোকানপাটের সামনে, সড়কে এবং সৈকতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে পলিথিন, ময়লা-আবর্জনা ও প্লাস্টিকের সামগ্রী। বালুচরে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বর্জ্য জোয়ারের পানিতে ভেসে সাগরে চলে যাচ্ছে। বালুচর থেকে পাথরখণ্ড তুলে সৈকত থেকে হেঁটে রেস্তোরাঁয় যাতায়াতের রাস্তাও বানানো হয়েছে। সৈকতে দৌড়ঝাঁপ করে পর্যটকবাহী দ্রুতগতির অসংখ্য মোটরযান 'বিচ-বাইক। তাতে লাল কাঁকড়া, বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনার মৃত্যুসহ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। তবে এসব দেখার কেউ নেই এখানে।

পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, পাটোয়ারটেক সৈকত এখন পর্যটকে ভরপুর, সেখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারও ঘটছে। কিন্তু শুরুতেই পাথুরে সৈকতটিকে শেষ করে ফেলা হচ্ছে যেখানে–সেখানে ময়লা–আবর্জনা ফেলে। ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা অপচনশীল প্লাস্টিকের বর্জ্য, যেমন মিনারেল ওয়াটারের বোতল, চিপসের প্যাকেট, কোমল পানীয়র ক্যান-বোতল, সিগারেটের ফিল্টার, পলিথিন ফেলছেন সৈকতে। ময়লা–আবর্জনা ফেলার জন্য সেখানে কোনো ডাস্টবিন নেই। অথচ প্রতিদিন ৫ থেকে ১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটছে এখানে। মেরিন ড্রাইভের পাশ ঘেঁষে অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ তৈরির হিড়িক পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে রেস্তোরাঁগুলোর আলোকসজ্জা এবং সৈকত আলোকিত থাকায় ডিম পাড়তে পারছে না গভীর সমুদ্র থেকে ছুটে আসা মা কচ্ছপ।

prothomalo-bangla%2F2022-05%2F4a082788-7a23-4c99-91a3-1520cb5eda15%2FCoxs_Bazar_DH0497_20220509_Patuartek_5.JPG


পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কে পাটোয়ারটেক, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানীসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পর্যটকের সমাগম ঘটছে। কিন্তু পর্যটকবাহী শত শত বিচ–বাইকের দৌড়ঝাঁপে বালুচরের রাজকাঁকড়াসহ জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে সেখানে জমছে ময়লা-আবর্জনা; যদিও প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এই সমুদ্রসৈকতে বিচ–বাইক চলাচল এবং ময়লা–আবর্জনা নিক্ষেপ নিষিদ্ধ। জনবলসংকটের কারণে এসবের ঠিকমতো তদারকও করা যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার শহরের কলাতলী, সুগন্ধা, সিগাল ও লাবণী পয়েন্টের চার কিলোমিটারে দৈনিক আড়াই লাখ পর্যটকের সমাগমও ঘটেছে। পর্যটকের গিজগিজ অবস্থা দূর করতে মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাটোয়ারটেকসহ বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকটি পয়েন্ট সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে। এসব পয়েন্টে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের নিরাপত্তা, ময়লা–আবর্জনা পরিষ্কার, পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা এবং ব্যবস্থাপনায় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সূত্র: প্রথম আলো​
 

Users who are viewing this thread

Back
Top