What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নতুন দম্পতিকে যে ৭টি প্রশ্ন করবেন না (1 Viewer)

NJIwdML.jpg


নতুন দম্পতি। হোক না তাঁরা অনেক দিনের চেনা বা সদ্য পরিচিত; নতুন পরিবেশ, নতুন অভিজ্ঞতায় মানিয়ে নিতে একটু সময় তো লাগবেই। এ সময় তাঁদের মধ্যে কাজ করে কত উৎকণ্ঠা, লজ্জা। নতুন দম্পতিকে অনেকে আবার নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন করে। বন্ধুরাও ঠাট্টাচ্ছলে অনেক প্রশ্ন করে। পাড়াপ্রতিবেশীর মধ্যেও নবদম্পতিকে কিছু প্রশ্ন করার প্রবণতা আছে। নবদম্পতির সঙ্গে আপনার যেমন সম্পর্কই থাকুক, কিছু প্রশ্ন তাঁকে করতে পারেন না। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এমন ৭টি প্রশ্ন।

১. একসঙ্গে থাকবে, নাকি আলাদা বাসা নেবে

nD59Rwm.jpg


কোন বাসায় থাকবেন সেটা নিজেরা মিলেই ঠিক করে নেওয়া ভালো। মডেল: শুভ ও বেনজীর

যে পরিবারে এক ছেলে, সাধারণত সে পরিবারের অভিভাবকেরা চান, ছেলে তাঁদের সঙ্গেই থাক, পরিবারের দায়িত্ব নিক। বিয়ের পরপরই অনেকে তাই কৌতূহলী হয়ে জানতে চান, 'একসঙ্গে নাকি আলাদা থাকবে?' কেউ কেউ আবার ভালো পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, 'আলাদা হতে চাইলে এখনই হয়ে যাও। বেশি মিশে গেলে পরে আর পালানোর অবস্থা থাকবে না।' এমন কথাবার্তায় শুরুতেই নবদম্পতির মধ্যে একধরনের সংকট তৈরি হয়। সম্পর্ক তৈরি না হওয়ার আগেই সন্তান ভাগাভাগি হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে দম্পতি আর বাকি পরিবার। হবু দম্পতিদের তাই বিয়ের আগেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো ঠিক করে নেওয়া ভালো। এ প্রশ্নগুলো নতুন দম্পতির সামনে এনে অযথা দ্বন্দ্ব তৈরি করার কোনো মানে হয় না।

২. বাসররাত কেমন কাটল

প্রশ্নটা যেমন অশোভন, কাউকে করাটাও তেমনি অরুচিকর। এটা নতুন দম্পতির একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। যিনি এ প্রশ্নের উত্তর দেন, তিনি অজান্তেই নিজেদের সম্পর্ককে হালকা করে ফেলেন অন্যের কাছে। তাই এ প্রশ্ন এড়িয়ে চলাই ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। অনেক সময় তাঁদের সঙ্গে যাঁদের ঠাট্টার সম্পর্ক, এই যেমন বন্ধু, দুলাভাই, দাদা-দাদি, নানা-নানি, বড় ভাবি—এই মানুষেরা এমন প্রশ্ন করে বসেন। এটা খুবই অনুচিত। বিশেষ করে একাধিক মানুষের সামনে এ প্রশ্ন করা মানে সরাসরি নতুন বর-বউকে একটা বিব্রত পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেওয়া।

৩. বাচ্চা কখন নেবে

প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ ভেবে আগ বাড়িয়ে অনেকেই করেন। গুরুজনেরা ভাবেন, মাত্র বিয়ে করেছে, বয়স কম, পরামর্শ দিয়ে উপকার করি। এ ধারণা থেকে প্রশ্নটা করেন তাঁরা।

jHvP2v5.jpg


পরিবার পরিকল্পনা স্বামী–স্ত্রী মিলে ঠিক করুন, সেখানে তৃতীয় কারও না ঢোকাই ভালো।

শুধু প্রশ্ন নয়, একই সঙ্গে দ্রুত সন্তান নিতে উৎসাহও দেন। এ ধারণা বর-কনের মনকে যেমন দুর্বল করে, তেমনি একধরনের চাপেও ফেলে। কেউ কেউ নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেয়ে অন্যের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে সবদিক না বুঝেই সন্তান নিতে আগ্রহী হয়ে পড়েন। স্বামী-স্ত্রীর একজনের হয়তো অমত আছে, কিন্তু অন্যজনের চাপাচাপিতে রাজি হয়ে যান। এতে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত স্ত্রীরাই বেশি প্রভাবিত হন।

যেকোনো দম্পতিরই একটা নিজস্ব পরিকল্পনা থাকে। সেখানে ক্যারিয়ার, সংসার, পরিবার, জীবনযাপনের নানা বিষয় নিয়ে নিজেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। তাই কোনো দম্পতিকে সন্তান নেওয়ার মতো প্রশ্ন করে অযথা চাপে ফেলা মানে আপনার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি ঘটানো।

৪. শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন নাও তো?

এ ধরনের প্রশ্ন যিনি করেন, তাঁর কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে, এটা ভেবে নিতেই পারেন। কারণ, ছেলে বা মেয়ের মা-বাবা সবারই একই কষ্ট। ছেলের মা-বাবা যেমন তাঁকে বড় করতে কষ্ট করেন, মেয়ের মা-বাবার কষ্ট বা পরিশ্রমও তাঁর তুলনায় কম নয়। একই সঙ্গে এ প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি বর বা কনের মা-বাবাকে একধরনের খোঁচা দিলেন। বোঝাতে চেষ্টা করলেন, 'তোমার মা-বাবা এখন তোমাদের জন্য একটা বোঝা। গুরুজনের সেবা করা প্রতিটি সন্তানের জন্যই কর্তব্য।' কিন্তু নতুন বউকে এ প্রশ্ন করা মানে আপনি মনে করছেন, সে না-ও করতে পারে।

GIVdpap.jpg


গুরুজনদের যত্ন করা প্রতিটি সন্তানের জন্যই কর্তব্য

আর নতুন বরকে এ প্রশ্ন করার আগেও ভেবে নিন। কারণ, কনের ভাই না থাকলে তাঁর মা-বাবার কাছে সেটা অনেক সময় মানসিক চাপের মতো হতে পারে। বরের বা কনের মা-বাবা তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারেন। এ থাকা আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে খুবই চেনা। তাই আপনার এমন প্রশ্ন সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে, যা নতুন দম্পতিকে জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

৫. বাবার বাসা থেকে কী দিয়েছে

এ প্রশ্নের সম্মুখীন বেশি হন মেয়েরা। 'তোমার শ্বশুরবাড়ি থেকে কত ভরি গয়না দিয়েছে?' 'তোমার মা–বাবা কী কী দিয়েছেন?' এ ধরনের প্রশ্ন করা মানে যিনি আপনাকে দাওয়াত দিয়েছেন, তাঁকে ছোট করা। তাই অযথা নতুন সম্পর্ককে ছোট করা থেকে বিরত থাকুন। দুই পরিবারের আত্মীয়তার মধ্যে আর্থিক অবস্থান সবার সমান হবে, এটা ভাবা ভুল। ভালোবেসে বিয়ে হলে তো বটেই, ঘটকালির বিয়েতেও নানা বিষয় জেনেবুঝে দুটি পরিবার সম্পর্কে জড়ায়। তাই নতুন বউকে এমন প্রশ্ন করা মানে তাঁর পরিবারকে ছোট করা। আবার বউয়ের সামনে স্বামীকে এ ধরনের প্রশ্ন করার মানেও কিন্তু আপনি তাঁর শ্বশুরবাড়িকে ছোট করছেন। তাই কারা কী দিয়েছে, এ প্রশ্ন না করে বরং দুই পরিবারের ভালো দিকগুলো নিয়ে কথা বলুন।

৬. এখনো চাকরি করবে কিংবা বর চাকরি করতে দেবে?

এ প্রশ্ন খুবই আপত্তিকর। প্রথমত, বিয়ে হয়ে যাওয়ার আগেই এসব বিষয়ের মীমাংসা হয়ে যাওয়ার কথা। চাকরিজীবী কোনো নারীকে ছেলের বউ করে আনা হলে এ প্রশ্ন তোলাটাই অযৌক্তিক। কারণ, চাকরি করতে দেওয়া না দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা এই প্রথম উঠল, ভাবাটাই তো ভুল।

5WmF46u.jpg


এই সময়ে দাঁড়িয়ে নারীদের অফিস নাকি সংসার—এই প্রশ্ন করা বোকামি

অনেক পরিবার চায়, ছেলের বউ কাজ করুক, নিজের আলাদা একটা সত্তা তৈরি করুক। কষ্ট করে পড়াশোনার পর চাকরি করলে বরং তাঁরা খুশি হন। স্বামীরও যদি কোনো আপত্তি থাকে, সেটা বিয়ের আগেই মিটমাট হয়ে গেছে ভাবুন। তাই নতুন করে এ প্রশ্ন তোলা মানে আপনি একটা কনফিউশন তৈরি করছেন। পরিবার গোড়া হলে ছেলের বউ চাকরি করবেন, সেটা তারা মেনে না–ও নিতে পারেন। সেটাও বিয়ের আগে জেনেবুঝেই হয়তো বিয়েতে মত দিয়েছেন কনে। তাই এ প্রশ্ন বিয়ের পর নতুন দম্পতিকে করবেন না।

৭. সাবেক প্রেমিক/প্রেমিকার কথা কি এখনো মনে পড়ে

এ ধরনের প্রশ্ন আপনি হয়তো একান্তে করছেন। তারপরও সেটা ঠিক নয়। কারণ, এ সময়ের ছেলেমেয়েরা যখন একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসে, তার মানে তাঁরা সেটা মন থেকে মুছে ফেলতে চায়। আর চায় বলেই বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়ান। এর মানে পুরোনোকে ভুলে নতুন করে শুরু করতে চাইছেন তিনি। ফলে ভুলে যাওয়া সম্পর্ককে সামনে এনে তাঁকে বিব্রত করছেন। তাই তাঁদের এ কথা বলে কষ্ট দেওয়া বা বিভ্রান্ত করাটা একদম অনুচিত।

লেখক: হুরায়রা শিশির, বিয়েবিষয়ক পরামর্শক
 

Users who are viewing this thread

Back
Top