What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মা কে নিয়ে কিছু কথা (1 Viewer)

  • Thread starter Sabrina Roy
  • Start date
  • Tagged users None

Sabrina Roy

New Member
Joined
May 3, 2021
Threads
46
Messages
110
Credits
34,344
মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা আজ থেকে নয় এটা অনন্তকাল থেকে প্রবাহমান। প্রত্যেক সন্তান তার মাকে ঘিরে যেমন কল্পনার অন্ত নেই ঠিক তেমনিভাবে প্রত্যেক "মা" তার সন্তানকে নিয়ে হাজারো সপ্ন দেখেন। "মা" তো "মা"-ই। যাকে কার সাথে তুলনা করা সম্ভব নয় কিন্তু বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে মায়ের তেমন কদর হচ্ছে না বলে আমার ধারণা। "মা"য়ের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সন্তানের কাছে একটা বুঝা সরূপ হয়ে দাড়ায়। "মা"য়ের জন্য আমাদের সময় কেবলই ফুরিয়ে যাচ্ছে। একটি বারও মাথায় আসে যে, এই "মা"-ই আমাকে পৃথিবীর আলো বাতাস দেখিয়েছেন। শুধু তাই নয় দীর্ঘ দশটি মাসেরও উপর গর্ভে ধারন করে অতি যত্নে অসমযন্ত্রনা ধৈর্য ধরে প্রতিনিয়ত সন্তানকে নিয়ে সপ্ন দেখেছেন। যে নারী মা হয়েছেন সে-ই এর উপলব্ধি বুঝতে পেরেছে।

অপরদিকে যারা পিতার আসনে আছে তারা শুধুই অনুভব করেছে । আমি আমার "মা" সম্পর্কে বলার পূর্বে সৃষ্টির সংগে স্রস্টার যে একটা অনাবদ্ধ প্রেম রয়েছে তার কিছুটা উপলব্ধি আমার ভিতর এইভাবে সৃষ্টি হয়েছে যে,সৃষ্টিকর্তাকে আমরা অনেক ভাবেই অনেক নামেই ডাকি বা স্বরণ করি। সচরাচর যারা মুসলিম সম্প্রদায়ের তারা সকলেই "আল্লাহ" বলে স্বরণ করি ।"আল্লাহ"তালার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আমার ক্ষুদ্র মগজে সম্ভব নয়। তারপরও "মা"য়ের সংগে "আল্লাহ"র যে একটা সম্পর্ক খুজে পাই তার কিছুটা না লিখলে ভিতরের যে অদেখা সত্তাটা রয়েছে তার কাছে কিছুটা দায়বদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। "আল্লাহ্‌" লিখতে গেলে প্রথমে 'আ' শব্দটি চলে আসে। আবার অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের প্রথম অক্ষর শিখাতেও বলি 'আ' তে "আল্লাহ্‌" অর্থ্যাৎ 'আ'এর ভিতর সৃষ্টি জগতের অধিপতি বা মালিকের নাম চলে আসে। আবার "মা"এমন একটি শব্দ যাকে লম্বা করলে শেষে 'আ' শব্দটি চলে আসে। সৃষ্টিকর্তার প্রথমে এবং মা শব্দটির শেষে 'আ' যুক্ত হয়েছে। "আল্লাহ"এবং "মা" এই দুয়ের মাঝে একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে যার ফলশ্রুতিতে "মা"কে "তিনি"(আল্লাহ্‌) ই খুবই সম্মানের আসনে বসিয়েছেন।আর একারনেই হয়তো সৃষ্টিকর্তার যতসব সৃষ্টি রয়েছে তার মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিটিই বোধহয় হচ্ছে "মা"। মায়ের সঙ্গে বিধাতার যেমন সম্পর্ক ঠিক মায়ের সঙ্গে তার সন্তানের তদ্রূপ সম্পর্কই পরিলক্ষিত হয়। আর একারনেই প্রতিটি "ম" তার সন্তান যদি তার কাছ থেকে শত সহস্র মাইল দূরেও থাকে তবু সন্তানের আবেগ অনুভূতি বা কোনো সমস্যায় পরলে ঠিকই বুজতে পারতেন। এটা বুঝার জন্য কোন তথ্য প্রযুক্তি বা ইথার মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। শুধু মায়ের মনটা সচল থাকলেই মূহুর্তেই বুজতে পারেন ।
"মা"কে নিয়ে বলার পূর্বে মায়ের কিছু বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম লিপিবিদ্ধ না করলে আমাদের উপলব্ধিটা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে।যদি আমরা মানব জাতি থেকে অন্য প্রাণী জাতির দিকে কিছুটা চোখ ফেলি তথাপিও সেই একই দৃশ্যের চিত্র ফুটে উঠে।

আমরা সকলেই মুরগি এবং মুরগির ছানা দেখেছি। মুরগি যখন তার ছানাগুলোকে আঙ্গিনায় খুটে খাওয়ার ট্রেনিং দেয় তখন আকাশে যদি কোন চিল বা কাককে দেখা যায় তবে তৎক্ষনাৎ সতর্ক করিয়ে সব ছানাগুলোকে তার দু'টি পাখার নীচে লুকিয়ে রাখে যেন আকাশের সেই প্রাণীটি ছানাগুলোকে দেখতে না পারে। যদি কেউ তার(মুরগি) ছানাগুলোকে ধরতে বা স্পর্শ করতে আসে তবে সঙ্গে সঙ্গে তার উপর হায়নার মতো ঝাঁপিয়ে পরে ছানাদের রক্ষা করে। ঠিক একই রকম সকল প্রাণীরা তার সন্তানদের এভাবেই আগলে রাখেন।
এই হচ্ছে "মা"।
"মা"এর আবেগ এবং অনুভুতি সম্পর্কে একটি ছোট গল্প না বললেই নয়। জাপানিরা একসময় সভ্য জাতি থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিল। সে দেশের রীতি বা রেওয়াজটা ছিল এরকমের যে, মা-বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাদেরকে কোন উচু স্থান বা পাহাড়ের চূড়া থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলা হত। এটাই ছিল তখনকার সে দেশের নিয়ম। একদা এক সন্তান তার বৃদ্ধ মাকে কাঁদে নিয়ে পাহাড়ের চূড়া থেকে ফেলে মেরে ফেলার জন্য রওনা হয়েছেন।
ছেলে মাকে কাঁদে করে নিয়ে যাচ্ছেন আর মা কাঁদে বসে গাছের ডাল-পালা ভেঙ্গে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছেন। যখন পাহাড়ের চূড়ার কাছাকাছি চলে আসে তখন মায়ের ডাল ভাঙ্গার হুচুটে ছেলের পা থমকে দাঁড়াল। ছেলে বলে উঠল কিরে মা তুই সারা পথ ডাল পালা ভেঙ্গে ভেঙ্গে রাস্তায় ফেলে আসলি কেন ? "মা" তখন অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলল বাবারে তুইতো কিছুক্ষণ পরই ফেলে দিবি। তুই যেন পথ ভুলে গভীর ঢুকে না পরিস, রাস্তা যেন ভুলে না যাস তার জন্য। তুই যদি বনে চলে যাস তাহলে তো তোকে হিংস্র প্রাণীরা খেয়ে ফেলবে। তোর ঘরে যে আমার আদরের নাতি আছে তারা তো বাবা হারাবে। তোর বাড়ী যেতে যেন কষ্ট না হয়, তুই যেন তোর সন্তানের কাছে ফিরে যেতে পারিস তাই আমি সারা পথ ডাল-পালা ফেলে এসেছি। সন্তান তখন পাথরের মতো স্থির হয়ে গেল।মূহুর্তেই ভাবলেন যেই মাকে আমি মেরে ফেলার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে এসেছি -মা মৃত্যু কুলে উপনীত হওয়ার সময়ও যেই মা তার সন্তানের কথা ভেবে ভেবে অস্থির সেই মা-কে আর মারা যাবে না। তাকে পরম যত্নে লালনপালন করতে হবে।ছেলে মাকে নিয়ে ঘরে ফিরে এলো। তখন থেকে মাকে মারা বন্ধ হলো আর জাপানিরাও সভ্য হলো। এই হল মায়ের চিন্তা চেতনা। মৃত্যু কুলে ঢলে পরেও মা সন্তানের চিন্তায় মগ্ন থাকেন। "মা" মা-ই। মাকে নিয়ে লেখা ফুরাবার নয়। যে সন্তান মাকে সম্মান করলো না সেবা করলো না। সে সন্তান না সে হচ্ছে কুসন্তান।
মায়ের কুল যেমন শিশুর নিরাপদ আশ্রয়স্থল তেমনি মায়ের পূর্ণতাও আসে সন্তানের মাধ্যমে। যে সংসারে সন্তানের আবির্ভাব হয়নি সে সংসার শুধু সংসারই হয় সুখের সংসার আর হয় না। শত প্রচেষ্টা করেও অনেক দম্পতি সন্তানের মুখ দেখতে পায় না। এমন অনেক দম্পতি আছে একটি সন্তানের জন্য লক্ষ-কোটি টাকা ব্যয় করেও সন্তানের মা- বাবা ডাক শুনতে পায় না। এটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তার উপরই নির্ভর করে। যাকে ইচ্ছা দেন আবার যাকে ইচ্ছা করেন দেন না। প্রতিটি "মা" যখন সন্তান গর্ভে ধারন করে তখন সে প্রথম থেকেই খুব। সাবধানতা অবলম্বন করেন। ভারী কাজকর্ম করে না কারন গর্ভের সন্তানের যদি কোন অসিবধা হয়। শেষ মুহুর্তের গর্ভকাল অর্থ্যাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছুকাল পূর্বের দিকে তাকানো যায় তবে লোমহর্ষক হ্নদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
এই দৃশ্যটা শুধু মায়েরাই উপভোগ করে। তারপরও দূর থেকে যতটুকু দেখেছি ততটুকু সম্পর্কে আমার যে উপলব্ধিটা প্রকাশ পেয়েছে সেটা হচ্ছে যখন মায়ের সন্তান প্রসবের সময় হয় তখন তার মুখের দিকে তাকানো যায় না। অসম যন্ত্রণা আর কষ্ট সহ্য করতে হয়। হাত দুটিকে বিছানার চাদরকে কুঁচকিয়ে ধরে শুধু আল্লাহ আল্লাহ ডাকতে থাকে আর মাথাকে এপাশ-ওপাশ করে নীরবে চিৎকার করতে থাকে ব্যাথার যন্ত্রনায়। এটা যে কি বড় একটি জীবনের অংশ সেটা শুধু "মা"ই বুঝতে পারেন। আল্লাহর কাছে সকলেই সেই মূহুর্তে প্রার্থনা করতে থাকে আর ধৈর্য ধারনের ক্ষমতা আল্লাহতালা মায়ের কাছে এমনিতেই পাঠিয়ে দেন। সন্তানের পায়ের পাতার আঘাতে মায়ের কলিজা ও ভিতরের সবকিছু ব্যাথায় যখন অস্থির ঠিক তখনই নতুন অথিতি পৃথিবীর আলো-বাতাস উপভোগ করে। মায়ের মুখে অনাবিল হাসি আর আনন্দ চোখে মুখে ফুটে উঠে। সকল কষ্ট সকল যন্ত্রনা মূহুর্তেই বিলীন হয়ে যায়। পরম যত্নে সন্তানকে সৃষ্টিকর্তার অশেষ নিয়ামত বুকের দুধ পান করিয়ে ধীরে ধীরে মা তার সমস্ত ভালোবাসা উজার করে সন্তানকে বড় করে তুলে।
এই হচ্ছে "মা"।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top