What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পোকার কামড়ে কী করবেন (1 Viewer)

নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ—যে কেউ যেকোনো সময় পতঙ্গের আক্রমণের শিকার হতে পারেন; কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি বেশি। অনেক সময় পতঙ্গের এই হঠাৎ আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হয় মারাত্মক।

মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল, ভ্রমর, বিষপিঁপড়া, বিছা, শুঁয়াপোকা, এঁটেল পোকা, ডাঁশ মশা ইত্যাদি কীটপতঙ্গ আমাদের চারপাশে বিদ্যমান। যেগুলো হুল ফুটালে, কামড় দিলে কিংবা শরীরের কোনো অংশের সংস্পর্শে এলে দেহে বিভিন্ন অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া হয়। কোনো কোনো কীটপতঙ্গের কামড় সাপের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি বিষাক্ত। এদের কামড়ে প্রাণসংশয়ও হতে পারে। আবার কোনো কোনো পোকার কামড়ে মারাত্মক অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু পতঙ্গ আবার ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিভিন্ন সংক্রামক রোগের বাহক হিসেবে ভূমিকা পালন করে। তাই কোনো পতঙ্গ কামড় দিলে বা হুল ফোটালে অবহেলা না করে সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

9FT56zx.jpg


কোনো পোকা কামড়ালে আক্রান্ত স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন, ছবি: সংগৃহীত

কী কী হতে পারে

পোকামাকড়ের রকম এবং ব্যক্তিভেদে এসবের কামড়ের কারণে শারীরিক প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন। তবে সাধারণত কোনো পোকার কামড়ের পর কামড়ের স্থানে ত্বকে লাল চাকা, দাগ, ব্যথা, ফোলা, ফুসকুড়ি হতে দেখা যায়; ক্ষেত্রবিশেষে ফোসকাও পড়তে পারে। সাধারণত এসব উপসর্গ ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেরে যায়। কিন্তু কামড়জনিত প্রদাহ বেশি হলে সেলুলাইটিস নামের প্রদাহও হতে পারে। এ ছাড়া মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হলে বমিভাব, বমি, মাথা ঝিমঝিম, ঠোঁট ও জিব ফুলে যাওয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, প্রচুর ঘাম হওয়া, ঢোঁক গিলতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

অতি তীব্র অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার কারণে অ্যানাফাইলেকটিক শক হতে পারে, যেখানে আকস্মিক রক্তচাপ কমে যাওয়া, দ্রুত হৃৎস্পন্দন, পেটে-বুকে-মাথায় ব্যথা, সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি ঘটনাও বিরল নয়। এ ছাড়া পোকার হুল ফোটা বা কামড়ের তিন থেকে পাঁচ দিন পরে আক্রান্ত স্থানে ব্যাকটেরিয়ার সেকেন্ডারি সংক্রমণ বা প্রদাহ হতে পারে। এ রকম হলে ক্ষতস্থানে লালচে ভাব বৃদ্ধি পাবে, আক্রান্ত স্থান থেকে পুঁজ বের হওয়া অথবা ব্যথা আরও তীব্রভাবে বেড়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

কী করবেন, কী করবেন না

মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুলের মতো পোকার হুল শরীরে ফুটলে কষ্ট লাগলেও ক্ষতস্থানের জায়গাটা যতটা সম্ভব স্থির রাখতে হবে। কারণ, যত বেশি হাত-পা নাড়াচাড়া করা হবে, তত দ্রুত রক্তপ্রবাহে বিষ ছড়িয়ে যেতে শুরু করবে। হুল ফুটে গেলে এবং হুল ভেঙে চামড়ার ভেতরে গেঁথে থাকলে, তা যত দ্রুত সম্ভব উঠিয়ে নিতে হবে।

কোনো পোকা কামড়ালে কামড়ানোর স্থানে ছাই বা গোবর-জাতীয় কিছু প্রয়োগ কিংবা নখ দিয়ে খোঁটা থেকে বিরত থাকতে হবে। আক্রান্ত স্থান যত দ্রুত সম্ভব জীবাণুনাশক সাবান এবং পরিষ্কার পানি ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরোয়া টোটকা হিসেবে পোকার কামড়ের স্থানে কিছুটা অ্যালোভেরা জেল, তুলসীপাতার রস, ল্যাভেন্ডার অয়েল কিংবা ইউক্যালিপটাস তেল লাগিয়ে নিলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। আক্রান্ত স্থান ফুলে গেলে সেখানে ২০-২৫ মিনিট ধরে ঠান্ডা সেঁক; অর্থাৎ আইস বা বরফ প্রয়োগ করা যেতে পারে। পাশাপাশি ওই স্থানে অ্যান্টিহিস্টামিন কিংবা ক্যালামাইন-জাতীয় লোশন বা ক্রিমও ব্যবহার করা যেতে পারে। তীব্র অ্যালার্জি বা চুলকানি হলে মুখে অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধও সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। আক্রান্ত স্থানে ব্যথা হলে প্যারাসিটামল-জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।

তবে শ্বাসকষ্ট, ক্ষতস্থান বেশি ফুলে যাওয়া, চোখ-মুখ-গলা ফুলে যাওয়া, ঢোঁক গিলতে কষ্ট হওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, জ্বর, বমি বা অচেতন হয়ে পড়া ইত্যাদি দেখা দিলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া ক্ষতস্থানে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ ধরা পড়লেও দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। এসব ক্ষেত্রে কোনো ঝাড়ফুঁক কিংবা কোনো ওঝা-কবিরাজের কাছে গিয়ে কালক্ষেপণ না করাই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত।

লেখক: ডা. হিমেল ঘোষ | চিকিৎসা কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুমুরিয়া, খুলনা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top