What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শেষ থেকে শুরু... (1 Viewer)

juliaparvin333

Senior Member
Joined
Dec 12, 2019
Threads
2
Messages
630
Credits
51,829
শেষ থেকে শুরু...


এই ডিসেম্বর মাসটা পড়লেই আমার ক'বছর থেকে কেমন যেন শরীর-মনে একটা প্যালপিটেশন্ শুরু হয়ে যায় - আর ডিসেম্বরের শেষ রাত্তিরটায় তো আমি স্বেচ্ছাবন্দী-ই হয়ে থাকি । আসলে, ক'বছর বলছি কেন - নির্দিষ্ট করে বললে ঠি-ক তিন বছর । তার আগে তো প্রতীক্ষার প্রহর-ই গুনতাম আমরা এই দিনটির বা বলা ভাল এই রাতটির জন্যেই । ও , ''আমরা'' শব্দটিতে হোঁচট লাগলো বুঝি ? না, আমি গৌরবে বহুবচন হয়ে ''আমরা'' হচ্ছে মোটেই তা' নয় - আসলে, আমি আর বিশাল । সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী না হলেও চলতি ইংরাজি গ্রামার মতে এ তো 'প্লুরাল' - বহুবচন । - অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে , দুই বাড়িরই মতামত সম্মতির তোয়াক্কা না করেই আমরা বিয়ে করেছিলাম । নামেই হয়তো ধরে ফেলেছেন - 'বিশাল' জন্মগত 'বাঙালি' নয় । ওরা আসলে ভূপালের মানুষ । কিন্তু পারিবারিক ব্যবসা আর শৈশব থেকেই বাংলা স্কুলে পড়া বিশাল শুধু খানিকটা অ-বাঙালীত্ব বয়ে বেড়াচ্ছিল তার পিতৃদত্ত নামটুকুতেই বোধহয় - বাকি সবকিছু মিলেই বিশালের মধ্যে , না , ষোল আনা নয় , বরং আঠারো আনা-ই ছিল বাঙালীয়ানা । - তবে , আমি কিন্তু ওর ''বিশালত্ব'' অনুভব করতাম ওর ''বিশেষ'' একটি জায়গায় । আর , সেটি-ই হয়তো আমাকে খুব দ্রুত-ই ওর কাছাকাছি এনে দিয়েছিল । ... একই অফিসে এ ঘর ও ঘরে বসতাম আমরা । অফিস বসের ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠানের অ্যারেঞ্জমেন্ট আমাদের খুব কাছাকাছি এনে দিয়েছিল । সাধারণ বাঙালি মেয়েদের বিবাহ-বয়সের অনুপাতে আমার বয়স বেশ খানিকটা বেশী-ই হয়ে গেছিল । ঠিক করেছিলাম বিয়ে করবই না । চাকরি সূত্রে যা ইনকাম করি আর মা-বাবার এক সন্তান হওয়ার সুবাদে পারিবারিক সম্পদের একমেবাদ্বিতীয়ম মালিকানা আমারই - তাই আর্থিক প্রয়োজনে কোন পুরুষের অনুবর্তী হওয়ার দরকার আমার ছিল না । তাছাড়া , আমার বারো ক্লাসে পড়াকালিনই আমার বিদেশ থেকে আসা তুতো দাদা যে অভিজ্ঞতার অন্ধকূপে ফেলে দিয়েছিল আমায় তার পর পুরুষ-সঙ্গ আমাকে যেন ভয়-ই দেখাতো । কিন্তু আমার উনত্রিশ বছর বয়সে নিউ ইয়ার্স ঈভে সব হিসেবপত্রই কেমন যেন উলটপালট হয়ে গেল । ত্রিশের বিশাল উনত্রিশের আমাকে ঐ রাতেই আসন্ন ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠানের কিছু উপহারসামগ্রী কেনা আর চয়েস করার অনুরোধ জানাতেই আমিও এক কথায় সম্মতি দিয়েছিলাম । বিশালের আচরণ কথাবার্তা সাজপোশাক আর কাজকর্মের ধরণ - সবকিছু মিলেই বোধহয় আমারও একটি সফ্ট কর্ণার তৈরি হয়েছিল । ওর গলার আওয়াজ পেলে ভাল লাগতো , অনেক সময় হাত হাত ছুঁয়ে গেলে সেই কিশোরীবেলার মুকুলিকা-শিহরণ অনুভব করতাম যেন শরীরে । শিরশিরানির সেই রেশটি অনেক অনেকক্ষণ যেন আচ্ছন্ন করে রাখতো আমায় । - তারপর যা' হয় । বিপরীত পক্ষেও যে সম্পর্কের একটি মধু-রসায়ণ ঘনীভূত হয়ে চলেছিল সেটিই যেন ডালপালা মেললো ঐ ডিসেম্বরের শেষ রাতে পার্ক স্ট্রীটের সেই বিখ্যাত রেস্তোঁরায় কফির কাপ-কে সাক্ষী রেখে ।...


উত্তরবঙ্গের একটি সীমান্তবর্তী শহর থেকে মহানগরে আসা আমার একার ছোট্ট আস্তানায় তারপর বিশালের আসা । সেই রেস্তোঁরা থেকে পছন্দ-করা দামী উপহারসামগ্রী সহ । আমারই আমন্ত্রণে অবশ্যই । - সময়ের কী মহিমা ! দেখতে দেখতে চলে গেছে প্রায় ন' ন'টি বছর । উনত্রিশের আমি আজ প্রায় চল্লিশ-ছুঁতে চলা আটত্রিশ প্লাসের ভরন্ত যুবতী । - যুবতী ? কে জানে ! আসপাশের নানান বয়সী পুরুষ-দৃষ্টি তো সে কথা-ই বলে যেন । ''তুমি এখনও যুবতী । শুধু যুবতী না । সদ্যো-যুবকদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেবার মালমশলা-পোরা ফায়ারি-মিলফ্ !'' . . . বিশালও ঠিক ওইরকম কথা-ই বলতো । বিয়ের আগে সেই প্রথম ৩১ ডিসেম্বর ''যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে...'' - সে রাতেও যেমন , বিয়ের পরে আমাদের সাজানো সংসারের ছ'টি বছরও যেন ভালবাসার জোয়ারে ভেসেছিলেম আমরা । আর প্রত্যেক নিউ ইয়ার্স ঈভে সন্ধ্যার খানিকটা সময় বাইরে কাটিয়ে , রেস্টোরান্টে খেয়ে আমরা ঘরে ফিরে যেন শ্লিপিং ব্যাগে ঢুকে পড়তাম । বাইরের পৃথিবী আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো একেবারেই । পরস্পরের মধ্যে আমরা যেন ডুবুরি হয়ে একে অন্যের গভীর থেকে গহীনতম কন্দর সেঁচে মুক্তা তুলে আনার প্রাণপণ চেষ্টা করে করে রাতের অন্ধকার থেকে ভোরের আলোয় পৌঁছে যেতাম । - তিন বছর আগের সেই সন্ধ্যাটির সূচনা-ও ওইরকমই হয়েছিল - কিন্তু দু'দিন পর একটি নামকরা নার্সিং হোমের বেডে আমি যখন চোখ মেললাম তখন ডক্টরেরা বলছিলেন আমার বিপদ নাকি কেটে গেছে । ওরা জানতেনই না বিপদ তো আমার কাটেই নি , বরং জীবনব্যাপী একমাত্র বিপদ-ই আমার সঙ্গী হয়ে গেছে । - অবশ্য সেই মুহূর্তে আমারও জানা ছিল না পিছন থেকে আসা ব্রেক-ফেইল-করা ডাম্পারটা আমাকে কতোখানি নিঃস্ব করে দিয়েছে । মেয়ের এই অকাল-বৈধব্যের খবর বিচলিত করেছিল আমার সম্পর্ক-ছিন্ন বাবা-মাকেও । দু'দিন পর আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মায়ের প্রায়-অশ্রুত ফোঁপানি-কান্না যা' জানানোর জানিয়ে দিয়েছিল আমাকে । - ছ'বছর ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে-থাকা বিশাল চলে গেছে এই বিশাল বিশ্বে আমাকে একা করে দিয়ে । ... . . .



না, কাজটাকেই আরো যেন আঁকড়ে ধরলাম তারপর থেকে । বাবা মা উত্তরবঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিল । এমনকি মা আমার সাথে কলকাতায় থাকারও কথা বলেছিল । কোনটাতেই রাজি হ'ইনি । মা এখানে এসে থাকলে বাবার এই বয়সে নানান অসুবিধা হবে - এই যুক্তিতে নিরস্ত করেছিলাম ওদের ।. . . - সময়ের স্রোত তো থেমে থাকে না । অফিসে আমার অনলস শ্রম আর যোগ্যতা স্বীকৃতি পেয়েছে । একসাথে দুটো ধাপ প্রমোশন দিয়েছে আমাকে ম্যানেজমেন্ট । অ্যাডিশনাল ম্যানেজার হিসেবে আলাদা চেম্বার , ফোন , পি.এ বরাদ্দ হয়েছে আমার । তিন তিনটে বছর কোথা দিয়ে যে কাটিয়ে দিলাম ভাবলেই কেমন যেন মনে হয় আর ঐ ডিসেম্বর এলেই যেন কেমন একরকম প্যানিকি হয়ে পড়ি । মনযোগে চিড় ধরে , কাজকর্মে কনসেন্ট্রেট করতে বেশ কষ্ট হয় । সময় একদিন হয়তো সব কিছুর উপরেই মলম লাগিয়ে দেবে , হয়তো চলছেও সেই প্রক্রিয়া , কিন্তু এখনও, এই ডিসেম্বর , বিশেষত ক্রিশমাস ঈভ সিন্ড্রোম থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারিনা যেন । - ব্যাপারটা ওর-ও নজর এড়ায়নি - সুমন্ত - আমার ম্যানেজমেন্ট-প্রদত্ত পি.এ । খানিকটা ইতস্তত করে খুব আন্তরিক গলায় জানতে চাইলো - ''ম্যাডাম , আপনাকে বেশ আপসেট দেখাচ্ছে । কোনো প্রবলেম ম্যাম ?'' আমি এড়িয়ে যেতে চাইলেও ঐ সদ্যো-এমবিএ মাত্র বছর বাইশের, আমার তুলনায় প্রায়-বাচ্চা, ছেলেটির তীক্ষ্ণ নজর আর নিপাট-আন্তরিকতার কাছে হার মানতে হলো । ঝরঝর করে আদ্যোপান্ত সবটাই বলে গেলাম ওকে । বলতে বলতে কখনো উচ্ছ্বল হলাম আনন্দে , কখনো ভাসলাম চোখের জলে । মুগ্ধ আর নিবিষ্ট শ্রোতা হয়ে শুনে গেল সুমন্ত । - অফিস তো অফিসিয়্যালি ছুটি । বড়দিনের । কাজের নেশায় আমিই কেবল এসেছি । আর, আমার পি.এ - সুমন্তকেও তাই আসতে হয়েছে । - ''ম্যাম্ , প্রায় ছ'টা বাজে - আমি যদি আপনাকে এক কাপ কফি খাওয়াতে চাই ম্যাম...চলুন না ম্যাম...'' - সুমন্তর সকাতর আর্তিটাকে ফিরিয়ে দিতে মন চাইলো না । হেসে বললাম - ''একদম ছেলেমানুষ ! আচ্ছা চলো । কিন্তু তোমার গার্ল ফ্রেন্ডকে এই সন্ধ্যেটা দিলেই তো পারতে ।'' - ''ঠিক বলেছেন ম্যাম্ '' - হেসে উঠে সুমন্ত বললো - ''কিন্তু মাথা থাকলে তো মাথা ব্যথার গল্প আসবে ম্যাম - তাই না ?'' - আমাকেও যেন কেমন রঙ্গ-তামাসায় পেয়ে বসেছে । বললাম - ''তাহলে শোনো - আজ থেকেই অ্যাক্টিভ হও যাতে নিউ ইয়ার তোমার কাছে সত্যি সত্যিই হ্যাপি হয়ে ওঠে । - ওয়েট । ওয়াশরুম থেকে আসছি । তুমিও তৈরি হয়ে নাও ।''...


ইতিহাস নাকি ফিরে ফিরে আসে । শুনেছিলাম । - সে-ই ন বছর আগের রেস্তোঁরাটিতেই সুমন্ত নিয়ে এলো কফি খাওয়াতে । কফি কেক জনস্রোতে পা মিলিয়ে চলা চার্চে গিয়ে দেখা - ভূতগ্রস্ত আমি - প্রায় উনচল্লিশের আমি রাত্রির আঁচল ধরতে ছুটে-চলা পরিণত-সন্ধ্যায় আমার পি.এ বাইশ বছরের সুমন্তকে আমন্ত্রণ করলাম আমার বাসায় । . . . বাকিটা ইতিহাস । যা পুনরাবৃত্ত হবে । হচ্ছে-ও । উদ্যোগটা ছিল প্রাথমিকভাবে আমার দিক থেকেই । স্বাভাবিক । তবে 'অ-স্বাভাবিক' ছিল ওর - 'ওটা' । বিশালেরটা গ্রহণেই আমার মধ্যে যেন গ্রহণ লাগতো । প্রথম প্রথম তো অবশ্যই । আর সেই সন্ধ্যায় মনে হলো সুমন্ত-র 'ওটা'র পাশে বিশালেরটা নেহাৎ-ই এলেবেলে । - বহুযুগ পর যেন শাপমুক্তি ঘটলো আমার । বছরের শেষ রাত একদিন অমাবস্যার নিকষ কালো রঙে লেপে দিয়েছিল আমার জীবনটা । আর ন'বছর পরের আরেকটি বছর-ফুরানো রাত্রি যেন জ্বেলে দিলো আলো পূবে পশ্চিমে আমার নতুন-করে পাওয়া জীবনে । বাইরেও তখন ৩১ ডিসেম্বরের রাত ভোর হয়ে আসছে - পরস্পরকে আঁকড়ে রয়েছি আমরা , সুমন্ত আরো বড় , আরো মোটা , আরো কঠিন কঠোর হয়ে আমার ভিতরে প্রোথিত । নিশ্চলতা আমার পছন্দ নয় । কোত্থাওই । সুমন্তর বুকের নীচ থেকে উছাল দিয়ে জানান দিলাম - থেমে থেকো না - জীবনের অন্য নাম ওঠা-নামা নামা-ওঠা ... - ধরে নিলো সুমন্ত - শুধু বলে উঠলো - ''ম্যাম, এ হলো শেষ থেকে শুরু...'' -সুমন্তর কোমরের ওঠা পড়া গতি পেলো - ''আমার রাত পোহালো...'' - নাইবা হলো ''শারদ প্রাতে'' - এই শীতেই বেজে উঠেছে আমার বেদনা-রাহুমুক্তির বাজনা - ঢাকের তালে নয় - আমার ''বিশাল-পালঙ্কের'' ছন্দায়িত শব্দ-মূর্চ্ছনা
য় - পকাৎৎ পকক্ পপককাাৎৎ পঅঅক্ককক্ . . . . . ( শে-ষ নাহি যে...)
 
Last edited:
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top