গুরা গুরা...
দীপুদের স্কুলে ভর্তি হবার আগে অপু বেশ কিছুদিন সিলেটে বসবাস করে আসছিলো। সেখানে মাহী নামে তার এক বন্ধু ছিলো। হঠাতই সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে অপুর সাথে মাহীর দেখা হয়ে গেলো। দুই বন্ধুর দীর্ঘ বিরতির পর দেখা হওয়াতে অনেক সূখ দুঃখের কথা হলো রাস্তা চলতে চলতে। মাহীর বাবার চাকুরী সূত্রে মাহীরা ঢাকাতে অস্থায়ীভাবে এসেছে। বছর দুয়েক পরে আবার তারা সিলেটে চলে যাবে। মাহী কোন স্কুলে ভর্তি হয়েছে জানতে চাইলে মাহী জানায় এখনো সে ভর্তি হতে পারেনি, তবে একটা স্কুলে নাকি কথা-বার্তা প্রায় কমপ্লিট। এরপর সে যে স্কুলের নাম বললো সেটা অপুদের স্কুলের নাম। সব কিছু জানার পর অপু খুব খুশী হলো এটা জেনে যে তারা আবারো একসাথে এক স্কুলে পড়তে পারবে। তখন থেকেই মনে মনে চিন্তা করে রেখেছে সে মাহীকে কিভাবে তাদের মানে দীপু ছোটম, পাখিদের গ্রুপে পরিচয় করিয়ে দিবে। কিন্তু সেই সাথে একটা ভাবনা তাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। মাহী তো আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া শুদ্ধ বাংলায় তেমন একটা কথা বলতে পারে না। শুদ্ধ বাংলার চর্চ্চা তার মাঝে একেবারে নেই বললেই চলে। বন্ধুদের সাথে না হয় সে দোভাষী হিসাবে চালিয়ে নিতে পারবে কিন্তু স্যারেদের সাথে কি করে মাহী কথা বলবে ? বিশেষ করে বাংলা স্যারের সাথে ? !!
যা হউক দুদিনের মাঝেই মাহী দীপুদের স্কুলে ভর্তি হয়ে গেলো। প্রথম দিনেই বাংলা স্যারের সাথে পরিচয় হবার পর মাহীকে খুব সাধারন এক দুইটা প্রশ্ন করে স্যার ছেড়ে দিলেন। অপু যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো। মনে মনে হেসে বললো, যাক বাংলা স্যারের হাত থেকে আপাতত মাহী বেঁচে গেছে। পরের ক্লাস ইংরেজী। স্যার ঢুকতেই সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে মাহী স্যারের সাথে পরিচিত হয়ে নিলো।
স্যারও ছেলেটির আদব লেহাজে কিছুটা সন্তুষ্ট হয়ে চেয়ারে বসে মাহীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করলেন,
স্যারঃ বলোতো বাবা, Horse মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
মাহীর জবাবে স্যার কিছুটা থতমত খেয়ে প্রশ্ন করলেন,
স্যারঃ তবে Turn মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
এবার স্যার বেশ কিছুটা বিরক্ত হয়ে বেশ কিছুটা রাগের সাথেই বললেন,
স্যারঃ ও... আচ্ছা। Turn মানে যদি গুরা হয়, তবে Powder মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
এবার স্যার পুরা খেপে গিয়ে বললেন,
স্যারঃ এই, তুমি কি বলছো ? সব কিছুই কি গুরা নাকি ?
মাহীঃ না, স্যার ! একটা লাফাইন্না গুরা, একটা মুরাইন্না গুরা আর শেষেরটা স্যার গুরা গুরা...