What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected অন্ধ ভালোবাসা (1 Viewer)

Able31

Community Team
Elite Leader
Joined
Sep 21, 2021
Threads
25
Messages
5,639
Credits
31,893
Automobile
Mosque
Audio speakers
Watermelon
Thermometer
Pistol
ছোট গল্প: অন্ধ ভালোবাসা
লেখক: কামরুজ্জামান রাকিব।


ঘড়ির কাঁটা বলে দিচ্ছে সময় এখন রাতের একটা। তবে আমার ভেতরের অবস্থা বারোটা। বাসার সামনে আমার বয়-ফ্রেন্ড আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। দুপুর থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে বাসার সামনে। আমার সঙ্গে দেখা করবে বলে দীর্ঘ লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকা থেকে চিটাগাং এসেছে। ফেসবুকে পরিচয়, তারপর অনলাইনে এক মাসের রিলেশনে কেউ যে এতটা পাগল হতে পারে তা আমার ধারনার বাহিরে। আমিও কম কোথায়? দিনে বাসা থেকে বের হতে পারিনা বলে রাতে বের হব, রাতেও যেন কোনো ঝামেলার মুখোমুখি হতে না হয় তাই রাতের খাবারে স্পেশাল বিরিয়ানি রান্না করেছিলাম। মূল কথা হচ্ছে বিরিয়ানিতে এক্সট্রা ঘুমের মসলা দিয়ে দিয়েছিলাম। যাতে করে আমার অবর্তমানে তাদের ঘুমের ঘাটতি না হয়।

আরিয়ান যেমন ভালোবাসার টানে সেই ঢাকা থেকে ছুটে আসতে পেরেছে এবং দুপুর থেকে এখন অব্দি পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুধুমাত্র আমার জন্য। আমিও তেমন ভালোবাসার টানে আরিয়ানের সঙ্গে একটু দেখা করব বলেই এমন কিছু করতে পেরেছি। আরিয়ান প্রায় সময় একটা কথা বলে, ভালোবাসা নাকি অন্ধ হয়। একটা সময় ছিল অন্যদের লাভ স্টরি শুনলে শুধু হাসি পেত আমার, ভাবতাম মানুষ এতটা পাগল হয় কি করে? কিন্তু এখন আমার বুঝতে বাকি নেই ভালোবাসা আসলেই অন্ধ। ভালোবাসার মাঝে এমন ছোটখাট পাগলামিগুলো ভালোবাসা টা বাড়িয়ে তোলে। তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ভালোবাসার মাঝে এমন কিছু পাগলামি না থাকলে নাতি-নাতনিদের কিসের গল্প শোনাবো?।

আরিয়ান হয়তো আরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কিন্তু আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিনা। সবাই ঘুমিয়েছে কিনা চেক করে ধীরপায়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম। এত সহজে বের হতে পারতাম না, যদি রাতে রান্না করা বিরিয়ানি দারোয়ান চাচা কে না দিতাম। গেট দিয়ে বেরিয়ে এসে ডানে-বামে মাথা ঘুরিয়ে দেখে নিলাম কিন্তু কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা, আরিয়ান কে ও না, তাই হাতে থাকা ফোনে আরিয়ানের নাম্বারে কল দিব অমনি দেখতে পেলাম আরিয়ান আসছে, ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে, ল্যাম্পপোস্টের আলোতে স্পষ্টভাবেই আরিয়ানকে দেখা যাচ্ছে।

এই প্রথম আরিয়ানকে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে আমি যেন পাথর মূর্তি তে রুপান্তরিত হচ্ছি, উপরিভাগ যতটা শক্ত হয়ে আসছে ভেতরে ততোই ঝড় তুফান বয়ে যাচ্ছে। মন বলছে দৌড়ে গিয়ে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরি। তবে লজ্জাবোধ সেটা সম্ভব হতে দিচ্ছে না। আরিয়ান কি যেন বলছে, হাতের ইশারায় আমাকে কাছে ডাকছে, আমার কি করা উচিত কিছুই যেন মাথায় ঢুকছে না, মূর্তির নেয় দাঁড়িয়ে আছি গেটের সামনে। আরিয়ান আমার কাছে এসে হাত ধরে একটু ঝাকিয়ে বলল,

"কি ব্যাপার সিনথিয়া? তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? কেউ দেখে ফেলবে তো এখান থেকে চলো।

আরিয়ানের মিষ্টি কন্ঠ শুনে আমি যেন আরও ঘোরের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছি কিছুই বিশ্বাস করতে পারছি না। আরিয়ানের চোখে চোখ রেখে এতটাই ডুবে যাচ্ছি মনে হচ্ছে পুরোটাই আমার স্বপ্ন।

"কি হয়েছে তোমার? এই সিনথিয়া কথা বলছো না কেন? এখান থেকে চলো কেউ দেখে ফেললে ঝামেলায় পড়বে তো।

"কোথায় যাবো?

"যেখানেই যাই আগে এখান থেকে চলো।

আমি পা নাড়ানোর আগেই আরিয়ান আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগল। আরিয়ানের স্পর্শ আমার শরীরের উপরিভাগ ও ভেতরের অংশ উভয় জায়গাতেই অনুভব করতে পারছি। এমন অনুভূতি এর আগে কখনোই আমার হয়নি। হবেই বা কি করে আগে কারো স্পর্শেই তো আসিনি। মুখ ফুটে বললাম,

"কোথায় যাচ্ছি আমরা?

"আপাতত তোমার বাসার এরিয়া থেকে দূরে কোথাও।

একটি বাইকের সামনে এসে থেমে দাঁড়ালো আরিয়ান। মুখ ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসি দিলো, এতেই আমার ভেতরে যেন ভুমিকম্প বইতে শুরু করল। তারপর বলল,

"কেমন আছো তুমি?

"ভালো, তুমি?

"অনেক অনেক ভালো। আচ্ছা আগে বল বাসার সবাই ঘুমাচ্ছে তো?

"হ্যাঁ ঘুমাচ্ছে।

"আশেপাশে কেউ নেই তবুও আরিয়ান আমার কানের কাছে এসে নিম্নস্বরে বলল,

"কুরিয়ার করে তোমাকে যে গিফট দিয়েছিলাম গিফটের সঙ্গে যে ঘুমের ওষুধ দিয়েছি ওইটা.......?

"হ্যাঁ ওইটাও দিয়েছি। রাতে বিরিয়ানি রান্না করে বিরিয়ানিতে দিয়ে দিয়েছিলাম। কাজ হবে তো?

"হ্যাঁ হ্যাঁ হবে। যতটুকু দিয়েছি পুরোটা দিয়েছিলা নাকি কম দিয়েছো?

"হ্যাঁ পুরোটাই দিয়েছি।

আরিয়ান লজ্জিত কণ্ঠে বলতে লাগলো,

"দেখো সিনথিয়া, কাজটা ঠিক হয়নি জানি। আমি কিন্তু এই যে ঘুমের ওষুধ খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা টা তোমার ভালোর জন্যই করেছি। আমি কোনরকম রিক্স নিতে চাই না, তোমাকে কোন বিপদে ফেলতে চাইনা। আর এই ঔষধের ফলে কোন ক্ষতি হবে না, জাস্ট ঘুমটা একটু বাড়তি হবে আর গভীর।

"হ্যাঁ আমি ভালো করেই জানি। তোমাকে এসব বলতে হবে না, কাজটা তো তুমি করনি আমি নিজের ইচ্ছায় করেছি। তুমি শুধু ঘুমের ওষুধ টা পাঠিয়ে ছিলে।

"আচ্ছা আসার সময় তোমার বাসার দরজা আর বাড়ির মেইন গেটের দরজা খোলা রেখে এসেছ তো?

"হ্যাঁ খোলা রেখেই এসেছি।

"কথাটা জিজ্ঞেস করলাম এই জন্য যাতে করে ফিরে যেতে তোমার কোন ঝামেলা পোহাতে না হয়।

"আরে বাবা জানি আমি, তোমার এত টেনসন নিতে হবে না। তুমি কি ঢাকা থেকে বাইক চালিয়ে চিটাগং এসেছো?

"হুম। শুধু তোমার জন্য। তোমাকে একটু সামনে থেকে দেখব বলে এত কিছু। ভালোবাসা অন্ধ করে দেয় মানুষকে। যেমনটা করেছে তোমাকে ও আমাকে। এখানে বেশি সময় থাকা যাবেনা চলো বাইকে ওঠো।

"কেন কোথায় যাবা?

"ভুলে গিয়েছো কি পরিকল্পনা করেছিলাম আমরা?

"আমি ভীত কন্ঠে বললাম,

"না ভুলিনি, কিন্তু ভয় হচ্ছে, যদি কেউ দেখে ফেলে কিংবা পুলিশ ধরে বসে।

"এখানে ভয় পাওয়ার কী আছে, তোমার সঙ্গে আমি আছি তো। আর এতোটুকু আসতে পেরেছো বাকি পরিকল্পনাটা ও পরিপূর্ণ করে ফেলি যা আছে কপালে।

আর কোন কথা না বলে বাইকে উঠে বসে পড়লাম। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম বাইকে চড়বো কিছু সময়, টং এর দোকানে গিয়ে চা খাব, গল্প করব, তারপর ফিরে আসবো বাসায়। আরিয়ানের ফোন বাজতে লাগল। আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,

"ফ্রেন্ড কল দিয়েছে। রিসিভ করব?

"আচ্ছা।

"হ্যালো, হ্যাঁ দোস্ত সিনথিয়া আমার কাছেই। হ্যাঁ তুই আর কোন টেনশন নিস না। যত দ্রুত যত সাবধানে পারিস থাকবি, আব্বু আম্মু যেন টের না পায়।

ফোন রেখে সঙ্গে সঙ্গে বাইক স্টার্ট দিল, আরিয়ানের কথা আমি বুঝতে পারলাম না, তাই জিজ্ঞেস করলাম।

"কি বললে তোমার ফ্রেন্ডকে? আব্বু আম্মু যেন টের না পায়, যতদ্রুত,,,, বুঝলাম না কিছু।

"তোমাকে তো বলা হয়নি আমি বাসায় জানিয়ে আসিনি, আমি এখানে আসছি। তাই বাসায় বলেছি আমি আমার ফ্রেন্ডের বাসায় থাকব। একটু সাবধান করে দিলাম আব্বু আম্মু যেনো বুঝতে না পারে আমি ওর সঙ্গে নেই।

"ও আচ্ছা।

তারপর প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ আরিয়ানের সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছি, মুহূর্তটাকে যতটা রোমান্টিক করতে চেয়েছিলাম তার চাইতেও অধিক রোমান্টিক হয়েছে। গভীর রাতে ঘুমন্ত নগরীতে বাইকে ঘুরে বেড়া, টং এর দোকানে বসে চা খাওয়া, আরিয়ান এর সঙ্গে হাত ধরে হাটা, কতটা যে আনন্দময় এটা বলে বোঝানোর মত না। একটা মেয়ে মানুষের জন্য প্রথমবার তার পছন্দের পুরুষ মানুষের সংস্পর্শে আসার অনুভূতি কখনোই লিখে কিংবা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। ভেবেছিলাম আরিয়ানের সামনে আমি কোন কথাই বলতে পারব না, লজ্জায়। অথচ হয়েছে তার উল্টো, কিছু সময় কেটে যেতেই আমি যেন আমার অস্তিত্ব টাকে ভুলে গিয়েছিলাম। সব শেষে আবারো ফিরে এলাম বাসার নিকটে, এখন বিদায় বেলা। খুব ইচ্ছে হচ্ছে আরিয়ানকে একটু জড়িয়ে ধরতে কিন্তু কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারছি না। আরিয়ানের কি একটুও ইচ্ছে হচ্ছেনা আমাকে জড়িয়ে ধরতে? একটিবারের জন্যেও আমি এমন কোন ইঙ্গিত পাই নি। যদি কোনো ইঙ্গিত দিত আমি আর দেরি করতাম না। তবুও মুখ ফুটে বললাম,

"তোমাকে একটু ধরা যাবে?

আরিয়ান হেসে হেসে উত্তর দিলো,

"এতক্ষণ কি আমার হাত না ধরে তুমি কোন ভূতের হাত ধরে রেখেছিলা?

"না মানে।

আরিয়ান তখন সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,

"হুম বুঝতে পারছি। না এখন এমন কিছুই করবো না যেটা তোমার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। যা কিছু হবে সব বিয়ের পর।

আরিয়ানের মুখে বিয়ে শব্দ উচ্চারিত হতেই আমি আর না বলে থাকতে পারলাম না, মুখ ফুটে বলেই দিলাম।

"না আমি তোমাকে একটিবার শুধু জড়িয়ে ধরতে চাই। এতদিন কল্পনায় তোমার বুকে মাথা রেখেছি, আজ তোমাকে সামনে পেয়ে একটিবার জড়িয়ে না ধরলে এর আক্ষেপ হয়তো অনেক দিন থাকবে।

"থাকুক না, চাহিদাটা মনের মধ্যেই থাকুক। এমন আক্ষেপ যত বৃদ্ধি পাবে ভালোবাসাটা ততোই মজবুত হবে। আর আমি নিশ্চিত হয়েই বলতে পারি সকালে যখন তোমার ঘুম ভাঙবে তুমি এই ভেবে আনন্দ পাবে আমাকে জড়িয়ে ধরোনি। আক্ষেপের ছিটেফোঁটাও থাকবে না।

"কচু।

আরিয়ানের ফোনে তখন একটি মেসেজ আসে। মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে মেসেজটা দেখে স্ক্রিনের দিকে চোখ রেখে বলল,

"আচ্ছা তুমি এত বোকা কেন?

হঠাৎ আরিয়ানের মুখে এমন কথা শুনে আমি আসলেই বোকা হয়ে গেলাম। তাই রাগ হয়ে বললাম,

"একটু জড়িয়ে ধরতে চেয়েছি বলে আমি বোকা হয়ে গেলাম?।

"না সেটা না, আমি এত দূরে থেকে তোমার সব চুরি করে নিয়ে গেলাম। আর তুমি বোকার মত কিছুই বুঝতে পারলে না।

"মানে? কি বলছো তুমি?

"আরে তোমার মন, তোমার ভালোলাগা, খারাপ লাগা, সব কিছুই তো এখন আমার কাছে।

"আমি চুরি করতে দিয়েছি বলেই তো তুমি চুরি করতে পেরেছ।

"ঠিক বলেছ, তুমি সাহায্য না করলে এতকিছু চুরি করা আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল। হায়রে ভালোবাসা, অন্ধ ভালোবাসা। ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করে দেয়। আচ্ছা আমি তাহলে যাই। এখন রওনা না হলে দেরি হয়ে যাবে।

"যাই বলো কেন? বল আমি এখন আসি।

"আচ্ছা, আমি এখন আসি। আর হ্যাঁ তোমার জন্য একটা গিফট আছে।

"কি গিফট? তোমাকে না বারন করেছি আমার জন্য কিছু নিয়ে আসতে।

"কিছু নিয়ে আসিনি। এই ছোট্ট একটা কাগজ। এটা এখন খুলবেনা আগামীকাল যখন ঘুম ভাঙবে তখন খুলবে কেমন?

"আচ্ছা।

আরিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে যেতে লাগলো। যতটা সময় আরিয়ানকে দেখা গিয়েছে দাঁড়িয়ে থেকে দেখে নিয়েছি। তারপর সোজা বাসায় ফিরে এসেছি। যাক কেউ ঘুম থেকে জাগেনি, সবাই গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। কোন সাড়া শব্দ না করে নিজের স্থানে গিয়ে আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুম ভাঙলো চিৎকার-চেঁচামেচি এবং দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়ার শব্দে। শোয়া থেকে উঠে জলদি করে দরজাটা খুলে দিলাম। দরজা খুলতেই আব্বু আম্মু ভাই বোন সবাই এক এক করে আমার রুমে ঢুকে পড়ল। সবার মুখেই হতাশার ছাপ স্পষ্ট। আমি কিছু বলে ওঠার আগেই আব্বু জিজ্ঞেস করল।

"এখন ঘুম ভাঙলো?

বাবার প্রশ্নের উত্তর দেবার আগেই আম্মু চিৎকার করে কাঁদতে লাগল এবং বলতে লাগল,

"হায় হায় সিনথিয়ার রুমের আলমারি ও ভাঙ্গা। সব নিয়া গেছে। চোরের দল সব নিয়া গেছে।

আমি আমার রুমে থাকা আলমারির দিকে তাকিয়ে দেখি আলমারী টা খোলা, ভেতরে আমার জামা কাপড় কিছুই নেই। বাসায় চুরি হয়েছে বিষয়টা অনুধাবন করার আগেই আম্মু সেন্সলেস হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেল। সবাই তখন আম্মুকে নিয়ে ব্যস্ত, আমি তখন গভীর চিন্তায় মগ্ন। হচ্ছেটা কি এসব? বাসায় চোর ঢুকলো কখন? হায় আল্লাহ আমি যখন দরজা খোলা রেখে বাহিরে গিয়েছিলাম তখন তাহলে বাসায় চোর এসেছিল?। এখন তো নিশ্চিত গেটে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করবে পুলিশ ও আসবে। আমিও ধরাটা খাব। কি করি এখন?।

এক্ষুনি বাসা থেকে পালিয়ে যেতে হবে, আর নয় তো আমি শেষ। সঙ্গে সঙ্গে ফোন হাতে নিয়ে আরিয়ানের নাম্বারে কল দিতে লাগলাম কিন্তু কল ঢুকছেনা নাম্বার বন্ধ বলছে। বিপদের এমন মুহূর্তে বিপদ বৃদ্ধি পাবে এমনটাই স্বাভাবিক কিন্তু নিজেকে শান্ত রেখে ভাবতে হবে। আমি এক্ষুনি বাসা থেকে বেরিয়ে যাব। আরিয়ান হয়তো ফোন বন্ধ রেখে ঘুমাচ্ছে। মেসেঞ্জারে গিয়ে বিষয়টা আরিয়ানকে জানিয়ে রাখি ঘুম ভাঙলে যেন আমাকে নিতে চলে আসে।

একি অবস্থা? আরিয়ানের আইডি কোথায়? আরিয়ানের করা কোনো মেসেজ ওতো নেই। আরিয়ান কি আমাকে ব্লক করে দিয়েছে? কিছুই মাথায় ঢুকছেনা সবকিছুই কেমন ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ মনে পড়ল আরিয়ান একটি কাগজ দিয়েছিল যেটা ঘুম ভাঙ্গার পর দেখতে বলেছে। জলদি করে বালিশের নিচে থেকে কাগজটা হাতে নিয়ে ভাঁজ খুলে কাগজে লিখে রাখা কথাগুলো পড়তে লাগলাম।

"এখন হয়তো বুঝতে পারছো তোমাকে আমি বোকা বলেছিলাম কেন?। ভয় পেয়ো না, তোমার বাসার সিসি টিভি ফুটেজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বলতে পারো সিসি ক্যামেরা সহ মনিটর যা কিছু আছে সব কিছুই চুরি করে নিয়ে এসেছি। আমার আসল নাম আরিয়ান না, এখন আমার নতুন নাম ফায়াজ, এটাও সাময়িক সময়ের জন্য। কাউকে অন্ধের মত ভালবাসা ঠিক নয়, এই শিক্ষাটা তোমার জীবনে অনেক কাজে আসবে। তবে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা আমার পেশা। আর তোমার জন্য এটা একটা শিক্ষা। এটাই ছিল আমার পক্ষ থেকে তোমার জন্য অনেক বড় একটি সারপ্রাইজ গিফট।

কিছুই মাথায় ঢুকছেনা, এতো বড় ধোকা খেয়ে কষ্ট পাবো? নাকি শিক্ষার জন্য আনন্দ পাব? বাসায় চুরি হয়েছে এর জন্য কষ্ট পাবো? নাকি চুরির পেছনে আমারও হাত রয়েছে এর জন্য ভয় পাব?। তৎক্ষণাৎ আমার সাত বছরের বোন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল,

"আপি একটা বিষয় বুঝতে পারছি না, আমাদের সবার রুমের দরজা খোলা ছিল, কিন্তু তোর রুমের দরজা বন্ধ ছিল ভেতর থেকে, তাহলে তোর রুম থেকে চুরিটা হলো কি করে?

এখন আমি কি বলবো?

সমাপ্ত।

সিনথিয়া হয়তো বুঝতে পারছে না কি করা উচিত, আমিও জানিনা সিনথিয়ার এই মুহূর্তে কি করা উচিত। তবে এটা জানি, আপনাদের এই ছোট্ট গল্প থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, কাউকে অন্ধের মত ভাল না বাসা উচিত। অন্ধের মতো ভালোবাসতে চাইলে নিজেকে ভালোবাসুন, অপরকে নয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top