What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

জাজিয়াত এর জালিম (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
জাজিয়াত এর জালিম - by bengalilolli

হাইনুরা

সূর্যের আলো মুখে এসে পরতেই আজ ঘুম ভেঙ্গে গেল মুনতাহার। সিল্কের পর্দার ফাঁক দিয়ে মিষ্টি সকালের ছোঁয়া লাগছে তাঁর সুন্দর মুখে। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে সেটা উপভোগ করছিলেন তিনি। মুনতাহা-আল-হায়দার হাইনুরা দুর্গের মালকিন, কেবল চার-ফুট এগারো ইঞ্চি উচ্চতার হলেও দুধে আলতা তাঁর গায়ের রঙ।

"সুপ্রভাত মালকিন", ডাক শুনে মুখ ঘোরাতেই পালঙ্কের পাশে কুর্নিশরত যুবকের দিকে নজর গেল তাঁর, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আড়মোড়া ভেঙ্গে বিছানাতে উঠে বসলেন মুনতাহা। পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি উচ্চতার রোগামত গড়নের ফর্সা সে যুবকের নাম আরহাব-আল-বখশ, বেশ কয়েক বছর ধরে মুনতাহার সমস্ত খেয়াল মিটিয়ে আসা খাস-গোলাম।

"আপনার দুধ চা", একটা সোনার পেয়ালা আর পিরিচ হাতে করে মালকিনের দিকে এগিয়ে দিল আরহাব। চায়ে আয়েশি চুমুক দিতে দিতে দুর্গের আঙিনার দিকে অলস দৃষ্টিতে চেয়ে সেখানকার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছিলেন মুনতাহা। জানালা দিয়ে দুর্গের মূল ফটক দেখা যায়, চারপাশে তিন তলা সমপরিমান উঁচু পাথরের তৈরি প্রাচীর ঘেরা সে দুয়ার। অবশ্য একে দুয়ার-ভবন বলাই সঠিক হবে, কেননা, ছ' ফুট পুরু পাথরের দেয়ালের সামনের ও পিছনের দিকে দুটো ওক কাঠের বিশাল দরজা, ভেতরের দিকে দুপাশে দেয়ালে সমদূরত্বে দুয়াররক্ষীদের কক্ষের প্রবেশ দুয়ার।

সাততলা দুর্গের সর্বোচ্চ ঘরে মুনতাহার শয়নকক্ষ, সেখান থেকে নিচের মানুষদেরকে বেশ ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল। নিজের অজান্তেই মুখে একটা হাসির রেখা খেলে যায় তাঁর, মনে মনে ভাবেন – "কি তুচ্ছ তাদের জীবন, আমার কথামত ওঠাবসা করা, আমার জন্য আয়েশি জীবন নিশ্চিত করাই যেন তাদের ইবাদত!" ভাবতে ভাবতে চায়ের পেয়ালায় শেষ চুমুক দিলেন তিনি, বেশ খাসা হয়েছে চা বানানো। মনে মনে খুশি হলেও এত আগে ঘুম ভাঙাতে তাঁর কপালে বেশ একটা বিরক্তির ছাপ দেখা গেল।

সেই বিরক্তি উগড়ে দিতেই কিনা মুনতাহা চায়ের পেয়ালাটা পাশের মেহগনি কাঠের সারণীর ওপর সজোরে রাখলেন। এরপর নিজের পা দুটি পালঙ্ক ঘেঁষে ঝুলিয়ে দিয়ে আরহাবের দিকে মুখ ঘুরিয়ে ইশারা করলেন। ইশারা পেয়েই হাটু গেড়ে পালঙ্কের পাশে বসে রোগামত গড়নের গোলামটা মুখ হা করে তার মালকিনের দিকে চাইল। মুহূর্তের মধ্যেই "ওয়াক থুঃ" বলে একদলা বাসি দুর্গন্ধযুক্ত থুতু ছুড়ে দিলেন মুনতাহা তার মুখে। তাড়াতাড়ি সেটা গিলে নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে মালকিনের জন্য জুতো আনতে গেল সে। খুব দ্রুত ফিরে এলো পশমের উপানৎ নিয়ে। এরপর মালকিনের পায়ে সেটা পরিয়ে তাঁর শয়নকক্ষ থেকে বিদায় নিলো।

প্রাতঃকাজ সেরে মুনতাহা নিজের ঘরে এসে সাজতে শুরু করলেন। আজ তাঁর আমন্ত্রণে দুর্গে জাজিয়াত প্রদেশের নবাবজাদী আসছেন, হাইনুরা দু্র্গ সে প্রদেশেরই এক শক্তিশালী ঘাঁটি। তাই তো সকাল সকাল এত তাড়া। ঠোঁটে গাড় লাল লিপস্টিক আর মুখে ভারি মেকআপ নিয়ে হাতে তালি বাজালেন মুনতাহা। ময়লা শ্যামলা বদনের বাঁদী তুরফা-আল-আব্দুল দরজায় এসে দাড়াতেই তাকে নিজের পোশাক আনতে হুকুম করলেন মুনতাহা।

ফিরে এসে মালকিনকে কালো চামড়ার মেঝে পর্যন্ত বিস্তৃত একটা আলখিল্লা পরিয়ে দিল তুরফা। মুনতাহার সুডৌল স্তনে আঁটসাঁট হয়ে বসে গেল আস্তিনহীন সে আলখিল্লা। পেটের মেদ ঢাকাতে ও নিজের মোটা পাছার অবয়ব বোঝাতে বেশ কার্যকর সে পোশাক, এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের জন্য এই আলখিল্লাটাই তাঁর প্রথম পছন্দ। তারপর তুরফা তাঁর গলায় হীরের ভারী কণ্ঠাভরণ ও কানে হীরের দুল পরিয়ে তাঁকে সাজিয়ে দিয়ে কক্ষ থেকে বিদায় নিল।

বাঁদী চলে যেতেই সামনের মেহগনি কাঠের সারণীর দেরাজ খুলে এক জোড়া কালো চামড়ার দস্তানা বের করলেন মুনতাহা। কনুই এর ওপর পর্যন্ত লম্বা সে দস্তানা পরা হতেই আরহাবের তলব হলো। "আমার বুটি নিয়ে এসো", হুকুম তামিল করে আরহাব এক জোড়া কালো চামড়ার বুটি নিয়ে ফিরে এলো। সেটা পরিয়ে দিয়ে জুতো জোড়ায় চুমু খেল সে।

"এখন কয়েকটা রাত এটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে, কেননা এক'দিন তো তুমি নবাবজাদী লুতফিয়ার দৈহিক ও মানসিক সকল খেয়াল রাখায় ব্যস্ত থাকবে। তিনি যেন কিছুতেই অসন্তুষ্ট না হন। বলো আরহাব, থাকতে পারবে না কয়েকদিন আমাকে না ছুঁয়ে?" "আপনার থুতু গেলার জন্যও আমি সারাজীবন অপেক্ষা করতে পারি।" মিষ্টি হেসে মুনতাহা কেদারা থেকে উঠে তাঁর শয়নকক্ষ থেকে বের হয়ে হলঘর ধরে দুর্গের মূল ফটকের দিকে রওনা দিলেন। আর মালকিনকে যেতে দেখেই আরহাব চার হাত পায়ে মাটিতে উবু হয়ে মানব চতুষ্পদের মত তাঁকে অনুসরণ করতে শুরু করল।

দুয়ার-ভবনের ভেতরের দিকে কারুকাজ করা কাঠের দরজায় দুজন সিপাহী প্রহরা দিচ্ছে, এরা দুজনেই উর্দি পরিহিত, সবুজ কোট, বুট, আর সাদা প্যান্ট। কোট আর বুটে রুপালি সূচিকর্ম জানান দিচ্ছে এরা মোটামুটি অভিজ্ঞ দুর্গরক্ষী। মুনতাহার দেহরক্ষীরা অবশ্য সবচেয়ে অভিজ্ঞ সেনা, তাদের কোট আর বুটে রয়েছে সোনালি সূচিকর্ম, যদিও সাধারন সেনাদের কোট আর বুটে কোন সূচিকর্ম থাকেনা। এদিকে দুয়ারের কাছে এসে উঁকি দিয়ে চিন্তিত মনে পায়চারী করতে লাগলেন মুনতাহা, নবাবজাদী লুতফিয়ার আসার সময় হলেও ঘোড়ার খুরের শব্দ তো পাওয়া যাচ্ছে না, তবে কি রাস্তায় কোন বিপত্তি ঘটল? আর কিসের যেন চাপা গোঙানি ভেসে আসছে দূর থেকে! ভাল করে আড়ি পেতে শব্দটার উৎস বুঝতে পারলেন তিনি- কোন মানুষের আর্তনাদ – ক্রমশ কাছে আসছে সেটা।

না, আর দেরি করা ঠিক হবে না, সিপাহীদের তৎক্ষণাৎ দুয়ার খুলতে হুকুম করলেন। যদিও দুয়ার খুলতেই সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল, দূর থেকে সে দৃশ্য দেখে দুর্গের সকলেই যারপরনাই অবাক। অপূর্ব কারুকাজ করা সোনার এক রথে চড়ে নবাবজাদী লুতফিয়া দুর্গে প্রবেশ করছেন, যেটা এক দুর্ভাগা গোলাম বহু কষ্টে টেনে আনছে। আর পেছন থেকে কিছুক্ষণ পরপরই নবাবজাদীর নিষ্ঠুর চাবুক জড়িয়ে যাচ্ছে তার খোলা পিঠের চামড়ায়। রথের পেছন পেছন আরও দুজন ঘোড়সওয়ারও প্রাসাদে প্রবেশ করল, তাদের একজনের হাতে মালবাহী ঘোড়ার লাগাম, যেটা তার পেছন পেছন হেটে আসছে।

তারা দুজনেই সবুজ উর্দি পরিহিত, কোট আর বুটের সোনালি সূচিকর্ম জানা দিচ্ছে এরা নবাবজাদীর দেহরক্ষী। তাদের কাঁধে ঝোলানো বন্দুক, যাতে ঠাসা রয়েছে অচেতন করার বুলেট, লুতফিয়ার রাজ্যে যে মৃত্যুদন্ড নিষিদ্ধ। যদিও মানবিক কারণে নয়, অচেতন বন্দীদের কারাগারে আটকে রাখা এবং জ্ঞান ফেরার পর তাদেরকে চাবকে নিজের হুকুমের গোলাম বানানো নবাবজাদীর নেশা। কেননা মৃত্যুর চেয়েও অভিশপ্ত হলো লুতফিয়ার গোলামদের জীবন, যাদের প্রতিটি মূহূর্ত কাটে নিজেদের মৃত্যুর কামনায়, সে অসহ্য জীবন থেকে তাদের মুক্তির যে ওটাই একমাত্র উপায়।

নবাবজাদী লুতফিয়া-আল-ওয়ালিদ কালো চামড়ার টেসেটার (সারা শরীর ঢাকা সম্ভ্রান্ত নারীর পোশাক বিশেষ) পরেছেন, মাথায় তাঁর রেশমের কালো হিজাব যাতে সোনার কাজ করা, হাতে কালো চামড়ার কবজি অবধি লম্বা দস্তানা আর পায়ে কালো চামড়ার বুটি। তাঁর গলায় ও হাতে মুক্তার অলঙ্কার শোভা পাচ্ছে, আর কোমরে কালো চামড়ার বেল্ট যাতে আবার সোনার নকশা করা, তাঁর মেদবহুল পেটটাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। রথটা মুনতাহার সামনে আসতেই লুতফিয়া নিজের মাথার পেছনে ছড়িয়ে তাঁর কালো মোষের চামড়ার চাবুকটা কশালেন রথ টানতে থাকা মানব পশুর পিঠে। জান্তব একটা চিৎকার দিয়ে রথ টানা থামাল সে।

নিজের সীমাহীন প্রভুত্ব জানান দিতে শেষ চাবুকটা সাংঘাতিক জোরে মেরেছেন লুতফিয়া, যার ফলশ্রুতিতে খানিকটা ছালও উঠে এসেছে সেই হতভাগ্য গোলামের পিঠ থেকে। দশ ফুট লম্বা এ চাবুকটা কেবল নবাবজাদীর রাজদণ্ডই নয়, ওয়ালিদ বংশের আভিজাত্যেরও প্রতীক। বহু পুরুষের ওপর ওটা প্রয়োগ করে তাদের নিজের হুকুমের গোলাম বানিয়েছেন তিনি। এদিকে রথ থামতেই আরহাব সেটার পাশে চার হাতপায়ে চতুষ্পদের মত অবস্থান নিল। এরই মধ্যে লুতফিয়া তার ডান হাতে চাবুক গুটিয়ে নিজের বাম পা নামিয়ে আরহাবের পিঠে ভর দিয়ে দিয়েছেন। দু'শ পাউন্ডের সে ভারী শরীরের চাপে আরহাবের পিঠে বুটির রেকাবের দাগ বসে গেল, সাথে একটা চাপা গোঙানিও বেরুলো তার মুখ দিয়ে। এরপর নিজের ডান পা-টা মাটিতে রেখে রথ থেকে নেমে এলেন লুতফিয়া।

"দুর্গে নবাবজাদীকে স্বাগতম!", বলে লুতফিয়াকে অভ্যর্থনা জানালেন মুনতাহা, "বিশেষ আলোচনা করার জন্যই আপনাকে জরুরি তলব করেছি, আর এত দ্রুত আসার জন্য ধন্যবাদ, যদিও আপনাকে বেশ ক্লান্ত লাগছে"।

লুতফিয়ার তড়িৎ উত্তর, "না না! ও তেমন কিছু নয়, আমি অনেকটা পথ ভ্রমণ করে এসেছি তো, তাই", পাশ থেকে নবাবজাদীর মানব জন্তু ব্যথায় একবার ককিয়ে উঠে আবার থেমে গেল। "আরহাব আপনাকে বিশ্রাম কক্ষ দেখিয়ে দেবে, রাতের নাহয় আমরা আলাপচারিতা করব", মুনতাহার কন্ঠে অনুরোধের সুর।

"ধন্যবাদ মুনতাহা, তবে আমার বেশিক্ষণ বিশ্রামের প্রয়োজন নেই, দুপুরের খাবার খেতে খেতেই আমরা কথা বলতে পারি। নিশ্চয়ই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আমার সাহায্য প্রয়োজন তোমার। সেটা যাই হোক না কেন, তুমি নির্দ্ধিধায় আমার পূর্ণ সহায়তা আশা করতে পার।" রথের দিকে তাকিয়ে লুতফিয়ার অনুরোধ, "আর হ্যাঁ, নাসিফকে যদি একটু কবিরাজের কাছে পাঠাতে, কেননা আমি চাইনা চাবুকের আঘাত থেকে তার পিঠে কোন সংক্রমণ হোক, ফেরার পথেও যে রথটা ওকে দিয়েই টানাতে চাই আমি"।

"তাই হবে নবাবজাদী," মুনতাহার ইশারা পেয়ে দুজন দুয়াররক্ষী নবাবজাদীর মানব পশু নাসিফ-আল-সাবা এর কাঁধ থেকে জোয়াল খুলে তাকে নিজেদের কাঁধে ভর দিয়ে কবিরাজখানার দিকে রওনা দিল। আর আরহাবও মানব চতুষ্পদের মত হামাগুড়ি দিয়ে নবাবজাদীকে তাঁর কামরার দিক পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top