What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দাওয়াতেও পরা যাবে কাফতান (1 Viewer)

আজকের নয়, বরং বেশ প্রাচীন আর অভিজাত পোশাক কাফতান। আমাদের দেশে পোশাকটি ঘুরেফিরে ফ্যাশনে এসেছে। তবে করোনাকালে পোশাকটি পেয়েছে জনপ্রিয়তা। রং-নকশার পাশাপাশি অভিনব কাটও দেখা যাচ্ছে কাফতানে ...

tf4DrJb.jpg


কাফতান মানাবে সান্ধ্য আয়োজনেওমডেল হয়েছেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ, পোশাক: ভায়োলা বাই ফারিহা, সাজ: অরা বিউটি লাউঞ্জ, স্টাইলিং: বিপাশা রায়, স্থান কৃতজ্ঞতা: জিন্দা পার্ক, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

RNx7YSr.jpg


বাইরে পরার কাফতানে দেওয়া হচ্ছে ভারী কাজ

পাশ্চাত্যে কাফতান ঘরের বাইরেই মূলত পরা হয় আরামদায়ক কাট আর নকশার জন্য। তবে আমাদের দেশে ঘরে পরার পোশাক হিসেবেই এটি বেশি পরিচিত। করোনা মহামারির এ সময়ে কাফতানের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে অনেক দেশেই।

ভারতীয় অভিনেত্রী কারিনা কাপুর করোনার ঘরবন্দী সময়ে তাঁর ইনস্টাগ্রামে কাফতান ফ্যাশনের ওপর পুরো এক অধ্যায়ই তুলে ধরেছেন। ইতিহাস ঘাঁটলে বোঝা যায়, রাজকীয় পোশাক থেকে সমুদ্রতটের পোশাক হিসেবে কাফতানের যাত্রা বেশ মজার। করোনা কিংবা আরাম—যে কারণেই হোক নতুন করে কাফতানের ব্যবহার বেড়েছে। সাধারণ ছাপা নকশা থেকে যোগ হচ্ছে জারদৌসির মতো কাজ। বাড়ির পোশাকের লেভেল থেকে বের হয়ে দাওয়াতের পোশাক হিসেবে পাচ্ছে স্বীকৃতি। আমাদের দেশে কাফতানের কাব্যে যোগ হচ্ছে নতুন এক অধ্যায়।

MZHLbkp.jpg


কাফতানে পাওয়া যায় আরাম, পোশাক: সারা লাইফস্টাইল

O7SnwJ1.jpg


কাফতান পরার চল শুরু হয়েছিল অটোমান রাজ্যের সুলতানদের রাজকীয় পোশাক হিসেবে। সেটাও চতুর্দশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর গল্প। এরপর অনেক বছর পেরিয়ে আবার দেখা মেলে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপের কিছু জায়গায়।

ক্রিশ্চিয়ান ডিওর আর বেলেনসিয়েগার মতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে তুলে ধরে কাফতানের আধুনিক চাহনি। তবে তার আগে মরক্কো আর উত্তর আমেরিকায় জায়গা করে নেয় সেখানকার পোশাক হিসেবে। প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন সাময়িকীগুলো সব সময়ই নতুন ফ্যাশন বা স্টাইল তৈরি করতে ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্রে কাফতানের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল ভোগ সাময়িকীর মাধ্যমে। সেই সময়ের ভোগ সম্পাদক ডায়ানা ভ্রিলেন্ড মরক্কো ঘুরতে গিয়ে মুগ্ধ হয়ে যান কাফতানের সৌন্দর্যে। নিজ দেশে ফেরত এসে কাজের জায়গার পোশাক হিসেবে এটি ব্যবহার করতে থাকেন। অন্যতম জনপ্রিয় পোশাক হিসেবে কাফতান স্বীকৃতি পায় ডায়ানার কাছে। এরপর ১৯৬৬ সালের মধ্যেই ভোগ বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করে এ পোশাক নিয়ে। পরবর্তীকাল ইভ সাঁ লো রো, এমিলিও পুচ্চি, অস্কার ডেলা রেন্টা ফ্যাশন শোতে তুলে ধরে তাদের নিজস্ব কাফতান।

1yquoXs.jpg


পায়ে কেডস, পরনে কাফতান। তৈরি সারা দিন ঘোরার জন্য। পোশাক: ক্লাবহাউস

j69lLyu.jpg


অভিনেত্রী এলিজাবেথ টেইলরের বিশেষ পছন্দের পোশাক ছিল কাফতান। যুক্তরাষ্ট্রে সে সময় বাড়ির দাওয়াতগুলোতে আপ্যায়নকারীরা এ পোশাক পরতেন। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কাফতানের ব্যবহার দেখা যায়।

সৈয়দ সালাহ্‌উদ্দিন জাকীর ঘুড্ডি ছবিতে কাফতান পরে ঘরের বাইরের দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। এতে বোঝা যায়, নারীদের মধ্যে তখন কাফতান পরার চল ছিল। পাশ্চাত্যে কাফতান তখন হিপ্পিদের জনপ্রিয় পোশাক। এর ধারা দেখা যায় ভারত ও বাংলাদেশেও। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে আবার কাফতানের জনপ্রিয়তা কমে আসে। সমুদ্রতটের আরামদায়ক পোশাক হিসেবে পাতলা কাপড়ের তৈরি কাফতানগুলো অবশ্য দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। তবে করোনাকালে বাংলাদেশে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে বলে জানান ক্লাবহাউসের ডিজাইনার লামিসা তাবাসসুম।

গত বছর নকশার একটি সংখ্যায় কাফতান নিয়ে করা হয়েছিল প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। সেখানে ঘরোয়া পোশাক হিসেবে কাফতানের জনপ্রিয়তার কথা তুলে ধরা হয়। ডিজাইনাররা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করছেন পোশাকের মাধ্যমে নতুন কিছু করতে। গত এক বছরে কাফতানের মূল কাটের মধ্যেই অনেক কিছু যোগ-বিয়োগ হয়েছে। লম্বা কাফতানের পাশাপাশি খাটো কাফতানও বেশ চলছে। অনায়াসেই জিনস দিয়ে পরে ফেলা যায়। পাশ্চাত্যে অবশ্য হাফপ্যান্ট বা হট প্যান্টের সঙ্গে অনেকে কাফতান পরেন। বেল্ট দিয়েও পরা যায় কাফতান।

wRPaGG7.jpg


ফ্যাশন হাউস ভায়োলা বাই ফারিহার স্বত্বাধিকারী ফারিহা তাশমীন জানালেন, বাড়ির পোশাকের পাশাপাশি রাতের ঘরোয়া দাওয়াতে, বন্ধুদের আড্ডায়, অফিসে, কেনাকাটার জায়গায় কাফতান হতে পারে বেশ মানানসই পোশাক। তবে হ্যাঁ, জায়গাভেদে বদলে যাবে নকশা, কাট আর কাপড়। যেমন রাতের দাওয়াতে পরা কাফতানের কাজ হবে একটু ভারী। কাপড়টা হতে পারে সিল্ক, সিফন কিংবা পাতলা ভেলভেটের। দিনের বেলায় কাফতান হবে এমন কাপড়ের, যার মধ্য দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারবে।

দুই পাশ আটকে রেখে কাফতানের হাতায়, কোমরের কাছে নানা ধরনের কাট আর নকশা দেওয়া হচ্ছে। প্রজাপতি (বাটারফ্লাই), বাদুড়ের ডাড (ব্যাটউইং), অফ শোল্ডার কওল, সার্কেল কাফতান, ড্রেপ কাফতান, ড্রেপ কওল কাফতান, পুল ওভার কাফতান, কেপ কাফতান, ওপেন শোল্ডার কাফতান ইত্যাদি কাট খুঁজে পাবেন। আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তা মানিয়ে বেছে নিতে পারেন। কাফতান পরার জন্য দরকার আত্মবিশ্বাস। বিশেষ করে লম্বা কাটের কাফতান। লম্বা ওড়না নয়, বরং ছোট স্কার্ফ হতে পারে কাফতানের অনুষঙ্গ। কাফতান মানাবে যেকোনো বয়সীদের, যেকোনো শারীরিক গঠনের অধিকারীদের। লামিসা তাবাসসুম জানান, যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা, তাঁদের জন্যও এটি বেশ আরামদায়ক পোশাক। ঢিলেঢালা হওয়ায় ও পায়ের দিকটা খোলা থাকায় আরাম পাওয়া যায় গরমের দিনগুলোতেও।

kOzUUf1.jpg


লেখক: রয়া মুনতাসীর, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top