What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review নেটওয়ার্কের বাইরে’ ভালো লেগেছে (1 Viewer)

mLjYDBl.jpg


'নেটওয়ার্কের বাইরে' প্রথম দিনই দেখেছিলাম রাত জেগে। চার বন্ধু মিলে ঢাকার বাইরে যাওয়াটাই তো দারুণ। বাসে উঠতেই গান। আমার মনে পড়ছিল সেই সময়ের কথা, যখন আমরা যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাশের স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতাম। সব বন্ধুরা এক বগিতে। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী। সেই নব্বই দশকের শেষের দিনগুলোতে। ঝমঝম রেলগাড়ি সঙ্গে বন্ধুদের কোরাস গান। আমরা মুখর করে রাখতাম পুরো জার্নি।

বন্ধুত্বের সেইসব দিন ফেলে এসেছি প্রায় কুড়ি বছর। সেই জায়গাটায় ঝাঁকি খেয়েছি অনেকদিন পর। পুরনো বন্ধুদের মুখ মনে পড়েছে। বন্ধুদের অনেকেই মারা গেছে, অনেকেই পাড়ি জমিয়েছে বিদেশে, কেউ কেউ ফিরে গেছে গ্রামে। যোগাযোগ নেই অনেকের সাথেই। কিন্তু জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় তো কাটিয়েছি ওদের সাথেই। সেইসব স্মৃতি যেন ফিরে এলো এই 'নেটওয়ার্কের বাইরে' দেখতে বসে।

আমি গল্পটা বুঝি। অভিনয় বুঝি না, বুঝি কে আমাকে ঝাঁকি দিতে পারলো। নির্মাণ বুঝি না, কিন্তু আমি চোখের আরাম খুঁজি। গল্পটা গতানুগতিক, ভালো গল্প। খুব ভালো গল্প বলা যেতো, যদি শেষে ওই 'ওর মতো কি আমারেও খাইয়া দিবি' সংলাপ ঘিরে যেটুকু জি বাংলার প্লট। এই অংশ বাদ দিলে গল্প নিয়ে বলতাম, অসামান্য। তবে গল্পে থেকে থেকে মোচড়টা দারুণ। সমুদ্র আমার সবচেয়ে প্রিয়। সেই সমুদ্র এত সুন্দর, আহা দেখতে দারুণ লাগবেই, লেগেছে এত নিপুণ দৃশ্যায়নের কল্যাণেই।

5ySKyYa.jpg


অভিনয়ে চোখ আটকে দিয়েছেন শরিফুল রাজ। পরিণত বয়সে যখন তাকে দেখা যায়, এই লোকটাকে দিয়ে নির্মাতারা বিভিন্ন থ্রিলারে চমক লাগাতে পারে। দেখলেই বলা যায় 'আরেসসালার লুক রে'। আর খায়রুল বাশার নিয়ে বলতে হয়, আমরা যে আসাদুজ্জামান নূর কিংবা আলী যাকেরের কণ্ঠ ও এক্সপ্রেশনের পারদর্শিতা একত্রে দেখতাম, তার মধ্যে সেই বিপুল সম্ভাবনা আছে। এই তরুণ আগামীতে নাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত। অর্ষার অভিনয় সবাইকে ছাপিয়ে গেছে। সে অসামান্য। একটা পিচ্চি মেয়ে ছিল। সে অনবদ্য। প্রতিভার খনি মনে হয়েছে এই রাজকন্যাকে। এই পিচ্চির অংশ্তুকু কতবার টেনে টেনে দেখলাম। এত সাবলীল সে, আহা।

গান নিয়ে আর কী বলব। বললেই বলবেন 'স্বজনপ্রীতি'। একজন সোমেশ্বর অলি আমাদের ইন্ডাস্ট্রির আশীর্বাদ। আমার গাওয়া 'ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো' দিয়ে অলির যাত্রা শুরু। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি, অলির সঙ্গে সতেরো বছর আগে আমার দেখা হয়েছিল বলে। না হলে আমি কি আর তার নাগাল পেতাম? 'চল বন্ধু চল' এক অসামান্য সৃষ্টি। এটা থেকে যাবার গান। এই গান হারিয়ে যাবে না। সাজিদ সরকার আসলেই দারুণ। রেহান রাসুল আর অবন্তী সিঁথির গানটাও দারুণ। তবে সন্ধির 'পথের গান' আসলে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে বেশি আক্রান্ত করেছে। এমনিতেই সন্ধির গায়কীর ফ্যান আমি। তবে এই গানে তিনি ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছেন। কামড়ে ধরে। আমাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায় আটানব্বই/নিরানব্বই সালের দিকে, যেন ট্রেনে আমরা কোরাস গাইছি। সন্ধিকে স্যালুট।

মিজানুর রহমান আরিয়ান, আপনি মানুষের আবেগ নিয়ে ভালো নাড়াচাড়া করতে জানেন। আপনার জন্য এক সমুদ্র ভালোবাসা।

আমি কোনও পেইড রিভিউ লেখক না। আমার যখন যার কাজ ভালো লাগে, লিখি। 'নেটওয়ার্কের বাইরে' ভালো লেগেছে।

* লিখেছেন: লুৎফর হাসান
 

Users who are viewing this thread

Back
Top