What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পাহাড়ের গহীনে (মনোয়ারা ফুফুর যৌবনজ্বালা) (1 Viewer)

Kaptan Jacksparoow

Community Team
Elite Leader
Joined
Apr 6, 2019
Threads
328
Messages
5,981
Credits
45,360
T-Shirt
Profile Music
Recipe sushi
Rocket
Euro Banknote
Butterfly
পাহাড়ের গহীনে
-শিমুল দে



(১)

আমি শফিক, সংসার কী তা জানা হয়নি কখনও, জানিনা কখনো জানা হবে কিনা! তাই নিজের পরিচয় দেয়ার মতো খুব বেশি কিছু আমার নেই। যখন বুঝতে শিখলাম, দেখি মানুষ হচ্ছি এক এতিমখানায়! বাবা- মা কী জিনিস তাই তা জানিনা। আমার দুই চাচা আর চার ফুপু আছেন। কিন্তু তারা কেউ আমায় চাননি, শুধু সেঝো ফুপু ছাড়া। বড় হয়ে জেনেছি, তিনি আমাকে আশ্রয়ও দিতে চেয়েছিলেন, তবে তার শ্বশুরবাড়ির কেউ তা মেনে নিতে রাজী ছিল না। আমার এই সেঝো ফুপুই সবার অলক্ষ্যে আমায় জামা-কাপড়, আর পড়াশোনার টাকা জুগিয়েছেন। তাই এই ফুপুর ঋণ শোধ করা আমার পক্ষে অসম্ভব। জীবনে এত কষ্ট করেছি যে তার সব গল্প বলতে গেলে পাঠকের বিরক্তি সৃষ্টি হবে। তাই সে চেষ্টা করব না। ভালো ছাত্র ছিলাম বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজার উপযোগী একটা বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যাই।পড়াশোনা শেষ হয়ে গেছে গত বছর। এখন রাঙামাটি থাকি। একটা কলেজের লেকচারার। এ চাকরিটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম । ভেবেছিলাম অন্তরালে চলে যাাব। আর কখনো এ ভালোবাসাহীন সমাজে আসব না। রাঙামাটির জীবনে তাই শক্ত করে চেপে বসি। বেতন ভালো পাই, আর ছেলে পড়ানোর আয় সবই জমছে। কিন্তু এই ২৭ এর জীবনে কী যেন নেই, সবসময় একটা হাহাকার, শূন্যতা!



(২)
দুই মাস আগের ঘটনা। যে ভালোবাসার জন্য এত হাহাকার তার সন্ধানে চলেছি। হঠাৎ খবর এল - মেঝো ফুুুপা আর তার ২০ বছরের একমাত্র ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তড়িঘড়ি করে রাতের গাড়িতে উঠে ঢাকা রওয়ানা হলাম। সকালে জানাজা, তাই পৌঁছাতে হবে দ্রুত। আটটায় ফুপুুুর বাড়ি পৌঁছে গেলাম, জানাজা দশটায়। আত্মীয়স্বজনরা আসতে শুরু করেছে, কান্নাাকাটির ঢল নেমেছে বাড়িতে, ফুপুও আমাকে ধরে কতক্ষণ কাঁদলেন। জানাজা শেষ করে লাশ দাফন করে বাড়ি আসলাম, দেখলাম ফুপু খুব ভেঙে পড়েছেন, আর অন্য সকলে তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। এর বাইরে সকলে আমার খোঁজও নিচ্ছে, আমি কী করি, কোথায় থাকি এসব আরকি। আশেপাশে ঘুরে আর আত্মীয়দের সাথে কথা-বার্তায় তিন দিন কেটে গেল। ফুপুর সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিল, তিনি এখন কোথায় থাকবেন! ৪২ এর বিধবার এদেশে আর বিয়ে হয় না। আর ছেলে সন্তান না থাকলে সবাই ছিড়ে খেতে চায়। ফুপুর তো কেউ রইল না! আমার চাচীরা খুব হারামি টাইপের মানুষ, কেউ কোনো কথা বলছে না, যদি তাদের দায়িত্ব নিতে হয়! আর অন্যদের কথা কী বলব! আমার চেয়ে বেশি আর কে তাদের চেনে! তাই টের পাচ্ছিলাম আমার ফুপুকে আশ্রয় হয়ত কেউই দিবে না।এমন সময় আমার কূটবুদ্ধির বড় চাচা বললেন- মনোয়ারারও কেউ নেই, আর শফিকের ও মা-বাপ নাই, মনোয়ারা ওর কাছে থাকতে পারে। আমি খুুুব বিস্মিত হলাম না কিন্তু ফুপু এ প্রস্তাব শুনে ক্ষেপে উঠলেন। বললেন- 'তোমরা সব অমানুষ! যখন এ ছেলেটার বাপ- মা মরল তখন তোমরা কী করেছ! আজ ওর ঘাড়ে আমার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছ! আমি ওর কাছে যাব না। ওরে তোমরা মুক্তি দাও।' ওর কারো প্রতি কোনো দায় নেই। কিন্তু সত্য আমি জানি। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম মনোয়ারা ফুপু আমার সাথে যাবেন। আমি এ কথা জানালে - ফুপু আর প্রতিবাদ করল না। শুধু আমার চোখে একবার চোখ রেখে নিঃশব্দে নিজের ঘরে চলে গেল। আর বাকি সকলে দায়মুক্তির হাসি হাসল! ফুপার চারদিনের অনুষ্ঠান শেষ করে আমি আর মনোয়ারা ফুপু দুুদিন পরেই পাহাড়ের অজানায় যাত্রা করলাম।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top